সরকারের উন্নয়ন তৃণমুল পর্যায়ে পর্যন্ত পৌছে গেছে -এমপি খোকন

রাস্তা-ঘাট, ব্রীজ কালভার্ট, স্কুল কলেজ, মাদ্রাসার বহুতল ভবন নির্মাণ, গাংনী উপজেলার প্রশাসনিক ভবন, সাব রেজিস্ট্রার ভবন, মসজিদ নির্মাণ, নদী খনন থেকে শুরু করে বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, শিশু ভাতা সব কিছুর উন্নয়ন হয়েছে। সাংবাদিকদের উচিৎ সরকারের উন্নয়নগুলো তুলে ধরা। তিনি বলেন সাংবাতিকতায় দল মতবাদ থাকতে পারে। কিন্তু দেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রে চিত্রটি তুলে ধরা উচিৎ।

আজ সোমবার সকাল ১১ টার সময় গাংনী উপজেলা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন এমপি মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন।

গাংনী উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি এম এ লিংকনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময়কালে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, তেঁতুলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও গাংনী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হুদ বিশ্বাস পচু, রাইপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি সামসু্জ্জামান মঙ্গল, সাহারবাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মশিউর রহমান, গাংনী পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রাহিবুল ইসলাম।

গাংনী উপজেলা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আমিরুল ইসলাম অল্ডামের সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, গাংনী উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান পাভেল, সিনিয়র সাংবাদিক জুলফিকার আলী কানন, সাহাজুল সাজু, মাসুদ রানা প্রমুখ। এসময় গাংনী উপজেলা প্রেসক্লাবের সকল সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

এমপি সাহিদুজ্জামান খোকন আরও বলেন, আমি এমপি হওয়ার আগে গাংনী উপজেলার শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করতে চেয়েছি। আমার স্বপ্ন ছিল প্রত্যন্ত গ্রামে বসবাস করে আমাদের ছেলে মেয়েরা উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হবে। এমন স্বপ্ন থেকে মহান জাতীয় সংসদে একাধিকবার বিশ্ববিদ্যালয় দাবী করেছি। মাননীয় প্রধান মন্ত্রী আমাদের জেলাতে মুজিবনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দিয়েছেন। মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়ক নির্মাণ ফোর লেনসহ বারবার দাবী করেছি প্রধানমন্ত্রী আমাদের মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়কটি ফোর লেনসহ অনুমোদন দিয়েছেন। যা এখন চলমান রয়েছে। যেসব এলাকার রাস্তা-ঘাটে কাঁদায় চলাচল করা যেতো না সেইসব রাস্তাগুলি এখন পাকা রাস্তায় পরিণত হয়েছে। মানুষ স্বচ্ছন্দে চলাচল করছে। এলাকার উন্নয়নের পাশাপাশি আইন শৃংখলার প্রভূত উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। এখন গোয়ালের গরু পাহারা দেওয়া লাগেনা। রাতে কৃষকরা তাদের গোঁয়ালে গরু রেখে আরামে ঘুমাতে পারেন।

এমপি খোকন আরও বলেন, ব্যবসায়ীরা এই সরকারের আমলে আরামে ব্যবসা বানিজ্য পরিচালনা করছেন। কেউ তাদের কাছে গিয়ে চাঁদা দাবী করেনা। জোর জুলুম বা মাস্তানী নেই। এই উপজেলার মানুষ এখন রাজনৈতিক হানাহানি থেকে মুক্ত রয়েছেন।




গাংনীতে দুই দিন ব্যাপি মাছ চাষ বিষয়ক দক্ষতা প্রশিক্ষণ

পলাশীপাড়া সমাজ কল্যাণ সমিতি (পিএসকেএস) কর্তৃক সমন্বিত কৃষি ইউনিটভুক্ত মৎস্যখাত এর আওতায় দুই দিন ব্যাপি উন্নত ব্যবস্থাপনায় মাছ চাষ বিষয়ক দক্ষতা উন্নয়নমূলক শীর্ষক প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়েছে।  উক্ত প্রশিক্ষণ পিএসকেএস খামার ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে, অনুষ্ঠিত হয়।

উক্ত প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ রোকনুজ্জামান, গাংনী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা খোন্দকার সহিদুর রহমান, এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মোঃ আশরাফুল আলম মন্ডল, সহকারি পরিচালক (প্রশিক্ষণ); সংস্থার মৎস্য কর্মকর্তা ও মৎস্য চাষীসহ মাছ চাষে সফল খামারি।

এ সময় মাছ চাষ ব্যবস্থাপনা, গুনগত মানসম্পন্ন মাছের বৈশিষ্ট্য, মাছ চাষে সরকারের নানা পদক্ষেপ ও সফলতা, দেশী মাছ চাষের গুরুত্ব, উত্তম ব্যবস্থাপনায় মাছ চাষ ব্যবস্থাপনা, পুকুর ব্যবস্থাপনা ও মজুদকালীন ব্যবস্থাপনা, পুকুর পাড়ে চাষযোগ্য সবজি ও এর উপকারিতা নিয়ে আলোচনা, প্রাথমিক খাদ্য পরীক্ষা, মাছের সাধারন রোগ ও প্রতিকার, সমন্বিত মাছ চাষের উপকারিতাসহ চাষ সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়ে আলোকপাত করা হয়। উক্ত প্রশিক্ষণে উপকারভোগীদের পানি পরীক্ষা করার নিয়মাবলী সরেজমিনে দেখানো হয়। উক্ত কার্যক্রমে আর্থিকভাবে সহায়তা করছে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)।




অনলাইন জুয়ার মাস্টার এজেন্ট রুবেলসহ তিন জন গ্রেফতার

মেহেরপুরে অনলাইন জুয়ার মাস্টার এজেন্ট ইসতিয়াক ই আজম রুবেলসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। অভিযানে রুবেলের ভাড়া বাড়িতে তল্লাশি করে ৫ বোতল ফেন্সিডিলও উদ্ধার করে পুলিশ।

গত শিুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর শহরে ডিবির ওসির সাইফুল আলমের নেতৃত্বে ডিবি পুলিশের একটি টিম এ অভিযান পরিচালনা করেন।

গ্রেফতারকৃত বাকিরা হলেন- মহাজনপুরের শাহিন রেজা এবং গোপালপুরের নয়ন শাহ।

ডিবি পুলিশ জানায়, ২০২২ সালের ২০ অক্টোবর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অনলাইন জুয়ার মুজিবনগর থানার ১১ নম্বর মামলার আসামি শাহিন রেজাকে চুয়াডাঙ্গার সরোজগঞ্জ থেকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশের ওসি সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন একটি দল। শাহিন রেজার স্বীকারোক্তী অনুযায়ী মামলার অন্যতম আসামি গোপালপুর গ্রামে ইসতিয়াক ই আযম ওরফে রুবেলকে আটক করতে মেহেরপুর শহরের স্টেডিয়াম পাড়ার ভাড়া বাসাতে অভিযান চালায় পুলিশের ওই টিম। অভিযান চলাকালে রুবেল ঘর তল্লাশি করে একটি কাঠের বাক্স থেকে ৫ বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধার করে এবং নয়ন শাহ নামের আরও একজনকে আটক করে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে নয়ন শাহ জানায়, রুবেল ও সে মিলে মাদকের ব্যবসা করে। যে কারণে ওই ৫ বোতল ফেন্সিডিল সেখানে রাখা হয়েছে।

অভিযানে ইন্সপেক্টর আমিনুল ইসলাম, এস আই অরুন কুমার দাস, এস আই মনিরুজ্জামান মিলন, এস আই কাজী মহসিন অভিযানে অংশ নেন।

ডিবির এস আই অরুন কুমার দাস বাদী হয়ে মেহেরপুর সদর থানায় আসামিদের বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।

ডিবির ওসি সাইফুল আলম বলেন, আসামীদের মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এবং একই সঙ্গে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে শোন এরেষ্ট দেখানো হয়েছে। আদালতের আদেশ পেলে তাদের রিমাণ্ডের আবেদন করা হবে।

অনলাইন জুয়ার আরও সংবাদ পড়ুন

মেহেরপুরে অনলাইন জুয়ার দূর্গে হানা

বিকাশকর্মী থেকে কোটি কোটি টাকার মালিক আনোয়ার,নেপথ্যে অনলাইন জুয়া




শেষ পৃষ্ঠা




তৃতীয় পৃষ্ঠা




দ্বিতীয় পৃষ্ঠা




প্রথম পৃষ্ঠা




সরকার বিদ্যুতের আলো জ্বালাবে আরও দুর্গম দ্বীপে

দেশের পটুয়াখালি জেলার বিচ্ছিন্ন উপজেলা রাঙ্গাবালি একসময় ছিল অন্ধকারে। ভরসা ছিল শুধু সৌর বিদ্যুৎ, মোমবাতি কিংবা হারিকেনের আলোতে। সদর উপজেলা থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে বিচ্ছিন্ন এই উপজেলায় নদীর তলদেশ দিয়ে সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে সরকার। আর তাতে পাল্টে গেছে রাঙ্গাবালির অর্থনীতি। কলকারখানা থেকে শুরু করে নতুন নতুন ব্যবসার দ্বার খুলে গেছে সেখানে। একই সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে দেশের আরও তিনটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপে। সেগুলো হচ্ছে- হাতিয়া , নিঝুমদ্বীপ এবং কুতুবদিয়ায়। এর মধ্য দিয়ে এই তিন জনপদে নিরবচ্ছিন্ন ও নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সরবরাহের মাধ্যমে ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ ও সেবার গুণগত মান উন্নয়ন করা সম্ভব হবে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বিদ্যুৎ বিভাগের উদ্যোগে নেওয়া এ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পটি গত ১২ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি একনেকে অনুমোদন করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন – ‘কেউ অন্ধকারে থাকবে না, সব ঘরেই আলো জ্বলবে’। তারই প্রতিফলন এসব দুর্গম এলাকায় শতভাগ বিদ্যুতায়নের উদ্যোগ।

রাঙ্গাবালী উপজেলার মানুষ সূর্য ডোবার পর ঘর থেকে বের হতেন খুবই কম। নিম্ন আয়ের মানুষ কুপি জ্বালিয়ে এবং মধ্যম আয়ের মানুষ সোলার প্যানেলের মাধ্যমে কোনোরকম একটি বাতি জ্বালাতেন। গরমে ফ্যান পর্যন্ত চালানোর উপায় ছিল না। অন্ধকারে থাকা এই উপজেলার মানুষ তাই আলোর খোঁজে পাড়ি জমাতেন শহরের দিকে। দুর্গম এই এলাকার মানুষ বিদ্যুৎকে মনে করেন স্বপ্নে দেখা এক আকাঙ্ক্ষা, যা সহজে পূরণ হওয়ার নয়। তবে মানুষের সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। পুরো উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে।

নিঝুমদ্বীপ নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় অবস্থিত বঙ্গোপসাগরের ছোট্ট একটি দ্বীপ। প্রায় ১৪ হাজার ৫০ একর আয়তনের এই দ্বীপটি শীতকালে পর্যটকদের জন্য অন্যতম একটি গন্তব্য। শীতকালে হাজারো অতিথি পাখির আগমন ঘটে। এছাড়া হরিণ দেখার জন্য প্রতিবছর এই দ্বীপে অসংখ্য পর্যটক ছুটে আসেন, করেন রাত্রি যাপন। তবে বিদ্যুৎ না থাকায় তেমন কোন সুযোগ সুবিধা পায়নি এই দ্বীপে আসা পর্যটকরা। সন্ধ্যা হলে বাজারে জ্বলে সৌরবিদ্যুতের আলো, আর তার সঙ্গে অনেকেই লাইনে দাড়িয়ে অপেক্ষা করেন মোবাইলে চার্জ দেওয়ার জন্য। এই দ্বীপে বিদ্যুৎ পৌঁছালে সাধারন মানুষের জীবনমানের এমন পরিবর্তন আসবে যা আগে কেউ কল্পনা করেনি। বিদ্যুতের ফলে পর্যটকদের জন্য বাড়বে ভালোভাবে থাকার সুবিধা, যা এখন খুবই সামান্য। পর্যটকের আনাগোনা বাড়লে দ্বীপের মানুষের অর্থনৈতিক ভাগ্য ঘুরে দাঁড়াবে।

আয়তন ও জন সংখ্যার দিক থেকে হাতিয়া উপজেলা নোয়াখালী জেলার একটি বৃহত্তম উপজেলা। ২১০০ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এই দ্বীপাঞ্চলে যেতে পাড়ি দিতে হয় বিশাল জলরাশি। এখানে বাস করেন সাড়ে চার লাখেরও বেশি মানুষ। হাতিয়া ও নিঝুম দ্বীপের একটি বড় অংশ ছিল বিদ্যুৎ সুবিধা বঞ্চিত। তাই পর্যটকদের জন্য বিশেষ কোন সুবিধা এমনকি রাত্রিযাপনের জন্য তেমন কোন ব্যবস্থা ছিল না।

সাগরকন্যা হিসেবে পরিচিত কুতুবদিয়া কক্সবাজার জেলার অন্তর্গত একটি দ্বীপ উপজেলা। নানান রকম বৈচিত্র্য পরিপূর্ণ এই দ্বীপটির আয়তন প্রায় ২১৬ বর্গ কিলোমিটার। এই দ্বীপে রয়েছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র, সমুদ্র সৈকত, লবণ চাষ, বাতিঘর এবং কুতুব আউলিয়ার মাজার। এখানেও বিভিন্ন সময়ে পর্যটকরা যাতায়াত করেন। তবে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা এবং সুযোগ সুবিধা কম থাকায় সেখানে দিনে গিয়ে দিনে চলে আসেন বেশিরভাগ পর্যটক।
‘হাতিয়া দ্বীপ, নিঝুম দ্বীপ ও কুতুবদিয়া দ্বীপ শতভাগ নির্ভরযোগ্য ও টেকসই বিদ্যুতায়ন (১ম সংশোধিত)’ শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বাবিউবো)।

সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেওয়া ৩৮৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি চলতি ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে শতভাগ বাস্তবায়নের কথা থাকলেও তা সম্ভব হয়নি। এ কারণে প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বাড়িয়ে ২০২৫ সালের জুলাই মেয়াদে শতভাগ বাস্তবায়নের লক্ষ্য স্থির করে একনেক অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, হাতিয়া দ্বীপ শতভাগ বিদ্যুতায়ন করা, সাবমেরিন ক্যাবল দ্বারা মুকতারিয়া-নিঝুমদ্বীপ খাল পারাপার করে নিঝুম দ্বীপ ও কুতুবদিয়া চ্যানেল পারাপার করে কুতুবদিয়া দ্বীপ শতভাগ বিদ্যুতায়ন করা এবং হাতিয়া দ্বীপ, নিঝুম দ্বীপ ও কুতুবদিয়া দ্বীপের শতভাগ গ্রাহককে নির্ভরযোগ্য ও টেকসই বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনাই এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য।

এদিকে পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানিয়েছে, প্রকল্পের কর্মপরিধিতে পরিবর্তন ও বিভিন্ন অঙ্গে ব্যয় কমানো-বাড়ানো এবং প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব করায় প্রকল্পে সংশোধনী এনেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। সংশোধিত প্রস্তাবে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৩ সালে থেকে বাড়িয়ে ২০২৫ সাল এবং ব্যয় ৩৮৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬৪৭ কোটি ১২ লাখ টাকা করা হয়েছে। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব অর্থায়নের পরিমাণ ৫৯৭ কোটি ১২ লাখ ২০ হাজার টাকা। এ ছাড়াও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বাবিউবো) নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেবে ৫০ কোটি টাকা। নোয়াখালী ও কক্সবাজার জেলার হাতিয়া ও কুতুবদিয়া উপজেলা জুড়ে বাস্তবায়িত হবে প্রকল্পটি।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্র আরও জানিয়েছে, প্রকল্পের আওতায় নতুন ৪টি ৩৩/১১ কেভি উপকেন্দ্র নির্মাণ (হাতিয়া দ্বীপে ৩টি ও কুতুবদিয়া দ্বীপে ১টি), মুকতারিয়া-নিঝুমদ্বীপ খালে দেড় কিলোমিটার ১১ কেভি সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন করা হবে। কুতুবদিয়া চ্যানেলে ৫ কিলোমিটার ডাবল সার্কিট ৩৩ কেভি সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন করা হবে। নতুন মোট ১ হাজার ৪৮৬ কিলোমিটার বিতরণ লাইন নির্মাণ করা হবে। বিদ্যমান ৩৫ কিলোমিটার বিতরণ লাইন রেনোভেশন করা হবে। মোট ৩ হাজার ২৫০টি পোল মাউন্টেড বিতরণ ট্রান্সফরমার স্থাপন করা হবে এবং অফিস ভবন কাম রেস্ট হাউজ, ডরমিটরি, সীমানা দেওয়াল ইত্যাদি নির্মাণ করা হবে।

একনেকের অনুমোদন সুপারিশ করে পরিকল্পনা কমিশনের মতামতে বলা হয়েছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) আওতাধীন হাতিয়া দ্বীপ, নিঝুম দ্বীপ ও কুতুবদিয়া দ্বীপে বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার সম্প্রসারণ এবং মানোন্নয়ন নিশ্চিত করে নিরবচ্ছিন্ন ও নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সরবরাহের মাধ্যমে ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ ও সেবার গুণগত মান উন্নয়ন করা সম্ভব হবে।




মানবাধিকার কর্মীদের অপরাধের বিচার করা যাবে না?

ধরুন, আপনি সারাজীবন আপনার প্রতিবেশীর সঙ্গে অত্যন্ত ভদ্র আচরণ করেছেন, কখনও আপনার নিজ বাসায় আপনি উঁচু স্বরে কথা বলেননি। দান খয়রাতে আপনার হাত ভালো, মানুষের বিপদে আপনি বেশিরভাগ সময় সাড়া দেন। আপনি একজন আসলে ভালো মানুষ। কিন্তু কাজের জায়গায় আপনার বিরুদ্ধে ঘুষ খাওয়ার অভিযোগ করেন অনেকে। সেটা হয়তো আপনার প্রতিবেশী বা পরিবারের মানুষদের জানা নেই। লুকিয়ে ছাপিয়ে দুর্নীতি এমন করেছেন যে একসময় প্রতারিত মানুষেরা এক হয়ে আপনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলো। প্রথম কাজ হিসেবে তারা আপনার ঘুষের তথ্যগুলো প্রকাশ করলো। এরপর একে একে আপনার যাবতীয় অপকর্ম বেরিয়ে আসতে থাকলো এবং আপনি আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর হাতে ধরাও পড়লেন। এখন, আপনি ভালো লোক, দানশীল, মানবিক, তাই বলে আপনার সেই অপকর্মের বিচার হবে না?

মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’-এর সম্পাদক আদিলুর রহমান খান শুভ্র এবং পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিন এলান ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে ৬১ জনের মৃত্যুর বানোয়াট, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রতিবেদন তৈরি ও প্রচার করে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি করে আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নের অপচেষ্টা চালান। বিভিন্ন গণমাধ্যমের ও সরকারের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে, তার তালিকার ৬১জন মৃত ব্যক্তি আসলে মৃত নন। পরে তাদের বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের ৫৭ ধারার মামলা হয়। ২০১৩ সালের ৪ মে শাপলা চত্তরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে অভিযানে নিহতের সংখ্যা প্রকাশ নিয়ে দায়ের করা মামলায় আদিলুর ও এলানের দুই বছর করে কারাদণ্ড দেন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াত৷

এরপরই শুরু হয় মানবাধিকার নিয়ে বিশ্বমোড়লদের নতুন বয়ান। দণ্ডাদেশ বাতিল করে তাঁদের নিঃশর্ত মুক্তি চেয়েছে ৭২টি মানবাধিকার সংগঠন। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ বিভিন্ন দেশের এই সংগঠনগুলো। কোনো ধরনের ভয়ভীতি, হয়রানি ও প্রতিহিংসা ছাড়াই মানবাধিকারকর্মীদের প্রয়োজনীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ কাজ করার সুযোগ দেওয়া উচিত। মানবাধিকার লঙ্ঘনের তথ্য প্রকাশ করায় তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা ও শাস্তি না দিয়ে, বরং যারা মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির আওতায় আনতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয় ৭২ সংগঠনের বিবৃতিতে।
আদৌ এই সংগঠনগুলো প্রকৃত ঘটনা বুঝতে সক্ষম কিনা সেই প্রশ্ন তোলার আগে দেখা দরকার যে, ২০১৩ সালের সেইদিন শাপলা চত্বরে কী ঘটেছিলো। এবং আদিলুরের সংগঠন অধিকারের পরবর্তীতে ভূমিকা কী ছিলো?

হেফাজতে ইসলাম ২০১৩ সালের ৫ মে ঢাকায় মতিঝিলের শাপলা চত্বরে বিতর্কিত ১৩ দফা দাবিতে অবরোধ কর্মসূচি পালনের নামে দিনব্যাপী তাণ্ডব চালায়। সন্ধ্যার পরে তারা রাতেও অবস্থানের ঘোষণা দিলে সেখান থেকে তাদের জোর করে সরিয়ে দেওয়া হয়। তারা উল্টো দাবি ‘শতশত হেফাজত কর্মী নিহত হয়েছে’ দাবি করলেও এর স্বপক্ষে কোনও তথ্য প্রমাণ আজ পর্যন্ত উপস্থাপন করতে পারেনি সংগঠনটি। জানা যায়, ৯ বছর আগে রুদ্ধদ্বার এক বৈঠকের লিখিত সিদ্ধান্তের মাধ্যমে শাপলা চত্বরে অবস্থান নিয়েছিল হেফাজতে ইসলাম। ২০১৩ সালেন ৪ মে লালবাগ জামিয়া কোরয়ানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসায় সংগঠনের শীর্ষ নেতারা ওই রূদ্ধদ্বার বৈঠকটি করেন। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, যে কোনও মূল্যে ঢাকা ঘেরাও করা হবে এবং অবরোধ পরবর্তী সমাবেশ শেষে অবস্থান কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। সংগঠনটি যদিও সেদিন দোয়া মাহফিল করতে শাপলা চত্বরে আসার কথা বলেছিল। সেদিন মতিঝিল এলাকায় প্রায় ৮ ঘণ্টা তাণ্ডব চালায় হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে রাতে বিজিবি, ব়্যাব ও পুলিশের যৌথ বাহিনী মতিঝিলকে ঘিরে অভিযান চালালে পিছু হটে তারা।

পুলিশের তদন্ত মোতাবেক, ২০১৩ সালে অধিকার থেকে প্রকাশ পায় ‘হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর সমাবেশ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন’ শীর্ষক প্রতিবেদন। যেখানে উল্লেখ করা হয় ওই সমাবেশে ৬১ জন হেফাজত নেতাকর্মী নিহত হয়েছে। তবে প্রতিবেদনে একই ব্যক্তির নাম কয়েক জায়গায় উল্লেখ করে নিহতের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। পুলিশের প্রতিবেদনে বলা হয়, ৫টি ক্রমিকে একই ব্যক্তির নাম দুইবার দেয়া হয়েছে। সেইসাথে জীবিত ব্যক্তিকে মৃত হিসেবে দেখানো হয়েছে ৪ স্থানে। অন্যদিকে, ৭ জনের নামে ভুল তথ্যসহ তালিকায় কাল্পনিক চরিত্রের নাম ঢোকানো হয়েছে আরও ১১টি। নিহতের তালিকা পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ওই তালিকায় নিহত ৬১ জনের মধ্যে ৩৪ জনের নামের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছে।

শাপলা চত্বরে অবস্থান নিয়ে দিনব্যাপী তান্ডব চালানোর সেই দিন যারা স্মরণ করতে পারেন তারা কি নিজেদের একটা প্রশ্ন করবেন? ওই দিন রাতের ঘটনার পরে যখন ৬১জন নিহতের মিথ্য তালিকা কোন মানবাধিকার সংগঠন সামনে আনে তখন তাকে বিচারের মুখোমুখি করা কীভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়? তিনি মানবাধিকার সংগঠন করেছেন, সেই সংগঠনের তিনি নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তি। তিনি বেশকিছু মিথ্য তথ্য দিয়ে যদি ঘোলাটে ও রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করে তোলেন তাকে কী করা উচিত ছিলো বলে মনে করেন? আর দশজন মানুষ কোন কাজ করলে যে প্রক্রিয়ায় তাকে শাস্তি পেতে হতো, সেই একই প্রক্রিয়া আদিলুরের বেলায় কেনো নেওয়া যাবে না? একই রাষ্ট্রে কীভাবে একই অপরাধে দুইরকম নিয়ম হতে পারে। ফলে যারা দাবি করছেন, এই রায় বাতিল করতে হবে, আদিলুর ও এলানকে মুক্তি দিতে হবে তারা আইনের শাসনের কথা পরবর্তীতে বলতে পারবেন তো? বিস্ময় জাগে যখন মানবাধিকার নিয়ে যারা কাজ করেন তারা এমনভাবে বিষয়টি উত্থাপন করছেন যে আদিলুরকে বিচারের মুখোমুখি করলে মানুষ মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে ভয় পাবে। এবং একজন অধিকার কর্মীকে শাস্তি দেওয়ার মধ্য দিয়ে মানুষের অধিকার নিশ্চিতের বিষয়টি ব্যাহত হবে। আসলেই কি তাই? মানবাধিকারকর্মী বা তার প্রতিষ্ঠান থেকে যখন ভুল তথ্য ছড়ানো হবে তখন কী আদৌ তিনি বা তার প্রতিষ্ঠান মানবাধিকার নিয়ে কাজ করার যোগ্যতা রাখেন? সেই জায়গায় প্রশ্ন উত্থাপন করতে আমরা ব্যর্থ হয়েছি।




দর্শনা সীমান্তে বিজিবির মহা পরিচালক সাথে বিএসএফের সৌজন্য বৈঠক ও মতবিনিময়

দর্শনা সীমান্ত বিজিবি-বিএসএফের সৌজন্য পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠক শেষে বিজিবি কর্মকর্তার সাথে মতবিনিময় করেছে (বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড) বিজিবির মহা পরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হোসাইন।

গতকাল রোববার ১৭ সেষ্টম্বর দুপুরে দর্শনা আইসিপি সীমান্তে পতাকা বৈঠক ও আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই মত বিনিময়ে অনুষ্ঠিত হয়।

চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবি ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লেঃ কর্নেল সাঈদ মোহাম্মদ জাহিদুর রহমান জানান, গতকাল রোববার দুপুর ২ টার দিকে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা সীমান্ত চেকপোস্ট পরিদর্শন এসে পৌঁছান (বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড) বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হোসাইন। এ সময় চেকপোস্ট বিজিবি সম্মেলন কেন্দ্রে বিজিবির অভ্যর্থনা ও সালাম গ্রহন করেন। চুয়াডাঙ্গার দর্শনা সীমান্তের ৭৬ পিলারের বিপরিতে ভারতীয় অংশে বিজিবি-বিএসএফের সাথে সৌজন্য বৈঠক শুভেচ্ছা ও মত বিনিময় করেন।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় বিএসএফের কলকাতা বিএসএফের ভারপ্রাপ্ত আইজি ডিআইজি অমরেশ কুমার আরিয়া, সীমানগর ৩২ ব্যাটেলিয়ানের কমান্ডেন্ট সুজিত কুমার সহ বিএসএফের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা।

বিজিবির পক্ষে আরো উপস্থিত ছিলেন (বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড) বিজিবির পরিচালক প্রশাসন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খাইরুল কবির, যশোর বিজিবির রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহমেদ, কুষ্টিয়া বিজিবি সেক্টর কমান্ডার কর্নেল এমারত হোসেন, চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবি ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লেঃ কর্নেল সাঈদ মোহাম্মদ জাহিদুর রহমান, মহেষপুর -৫৮ ব্যাটালিয়ন বিজিবি ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর রাকিবুল ইসলাম , কুষ্টিয়া সেক্টরের জিটু মেজর মেহেদী হাসান, মেজর সেলিম, কুষ্টিয়া ৪৭ ব্যাটালিয়ন উপ-অধিনায়ক মেজর রফিকুল ইসলাম চুয়াডাঙ্গা-৬ ব্যাটালিয়নের সরকারি পরিচালক হায়দার আলী , মহেশপুর ৫৮ ব্যাটালিয়নের সহকারী পরিচালক সাইফুল প্রমুখ।

বৈঠকে দু দেশের সীমান্তরক্ষীদের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। উভয় বাহিনীর মধ্যে মিষ্টি ও উপহার বিনিময় করা হয়। বৈঠক শেষে বিজিবি কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় শেষে বিকাল সাড়ে ৩ টায় দর্শনা ত্যাগ করেন।