চুয়াডাঙ্গায় ডাকাতি মামলায় ১২ জনের ১০ বছর কারাদন্ড

চুয়াডাঙ্গায় ডাকাতি মামলায় ১২ জনের ১০ বছর করে কারাদন্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সাথে তাদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ৩ মাস করে কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে চারজনকে।

আজ সোমবার দুপুর ১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মোহাম্মদ মাসুদ আলী আসামীদের উপস্থিতিতে ওই রায় দেন।

কারাদন্ড প্রাপ্তরা হলেন-জীবননগর উপজেলার নিধিকুন্ডু গ্রামের ছোট আলীর ছেলে কবির হোসেন, একই উপজেলার করচাডাঙ্গা গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে সোলেমান হক, একই গ্রামের মেহের আলীর ছেলে বকুল মিয়া, মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে আনোয়ার হোসেন, ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার খাঁ পুরন্দপুর গ্রামের মৃত সোহরাব হোসেনের ছেলে মাসুদ রানা, জীবননগর উপজেলার করচাডাঙ্গা গ্রামের মেহের আলীর ছেলে রহম আলী, একই গ্রামের হযরত আলীর ছেলে আরজ আলী, আখের আলীর ছেলে ফারুক হোসেন, খালেক মিয়ার ছেলে বকুল মিয়া, সীর মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ আলী, আমজাদ হোসেনের ছেলে আব্দুল হান্নান, একই উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের জুলফিকার আলীর ছেলে তবি মিয়া।

এদের মধ্যে পলাতক রয়েছেন আব্দুল হান্নান নামে এক আসামী। বেকসুর খালাস পেয়েছেন-জীবননগর উপজেলার করচাডাঙ্গা গ্রামের মৃত হযরত আলীর ছেলে আখের আলী, একই গ্রামের মৃত হাজারী মন্ডলের ছেলে আব্দুল খালেক, মৃত রহিম মন্ডলের ছেলে হায়দার আলী ও ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলার তালসার গ্রামের এলাহী বক্সের ছেলে সোহেল রানা।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালের ৭ এপ্রিল গভীর রাতে জীবননগর উপজেলার নিধিকুন্ডু গ্রামের চান মিয়া ব্যাপারীর ছেলে নুর ইসলামের বাড়িতে হামলা চালিয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অজ্ঞাতনামা ১০-১৫ জন মুখোশধারী ডাকাত দল। এসময় তার ঘরে থাকা স্টিলের বাক্স থেকে নগদ ২৩ হাজার টাকা, বিছানার নিচ থেকে ১১ হাজার ৫০০ টাকা, তার স্ত্রীর কানে থাকা ১০ হাজার টাকা মূল্যের পাঁচ আনা ওজনের একজোড়া স্বর্ণের দুল এবং তার চাচাতো ভাই কবির হোসেনের বাড়ির শো-কেজ থেকে নগদ ৭ হাজার ৩০০ টাকা ডাকাতি করে তারা।
পরে নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে ১০-১৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে জীবননগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন । মামলাটি অধিকতর তদন্ত শেষে ২০১১ সালের ১৬ এপ্রিল ১৭ জনকে আসামী করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক মহব্বত আলী। পরে ১৭ জনের মধ্যে ১০ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আজ দুপুরে ওই রায় ঘোষনা করেন বিচারক।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী গিয়াস উদ্দিন জানান, পলাতক আসামীকে গ্রেফতারে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

আসামীপক্ষের আইনজীবী ফজলে রাব্বী বলেন, এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।




চুয়াডাঙ্গায় ব্যবসায়ীদের নিয়ে নিরাপদ খাদ্য ও নৈতিকতা বিষয়ক আলোচনা সভা

চুয়াডাঙ্গায় ব্যবসায়ীদের অংশগ্রহনে ভোক্তা অধিকার, নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থা ও কৃষি বিপণনে শুদ্ধাচার ও নৈতিকতা বিষয়ক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার বেলা বারোটায় চুয়াডাঙ্গা বড় বাজারে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল কাদের জগলু। এতে সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা। সভাটি ব্যবস্থাপনা করেন, জেলা প্রশাসন চুয়াডাঙ্গা । আর সভাটি সার্বিক ভাবে সহযোগিতা করেন, চুয়াডাঙ্গা দোকার মালিক সমিতি, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, কৃষি বিপণন অধিদপ্তর ও জেলা তথ্য অফিস চুয়াডাঙ্গা।

সভার শুরুতে আলোচনা করা হয় নিত্যপণ্যসহ সবধরনের বাজারদর ও বাজারের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হয়। আলোচনায় উঠে আসে বাজারের কোনো পন্যের তালিকায় মুল্য লেখা থাকে না। দিন দিন বাজার অস্বাভাবিক কেন হয় তা নিয়েও আলোচনা করেন। বাজার তদারকি ও বাজার মনিটরিং কিভাবে আরো জোরদার করা যায় সেই লক্ষে কাজ করা হবে। এতে বাজারের পণ্যের দাম ঠিক রাখতে হলে যা করণিয় তা করতে হবে বলে আলোচনা করা হয়।

এসময় সভার প্রধান অতিথি চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা বলেন, সব মানুষই ভোক্তা। যিনি বিক্রেতা তিনিও কখনো কখনো ক্রেতা। আমাদের নৈতিকতা ঠিক থাকলে ভোক্তা হিসেবে আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। আমরা নিরাপদ খাদ্য পাবো। আর বাজারের নৈতিকতা ঠিক রেখে ব্যবস করতে হবে। অসাধু ভাবে ব্যবসা করা যাবে না। বাজার সবসময় পরিস্কার রাখতে হবে। বাজারের বর্জ মাতাভাঙ্গা নদীতে ফেলা যাবে না। ব্যবসায় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে চাই। তাহলে ব্যবসার মর্যাদা থাকবে।

সভায় উপস্থিত ছিলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নাজমুল হামিদ রেজা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার( অর্থ ও প্রশাসন) রিয়াজুল ইসলাম, পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর আলম মালিক খোকন, বাজার কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম, ভোক্তা অধিকর সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক সজল আহমেদ, চুয়াডাঙ্গা দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইবরুল হাসান জোয়ার্দ্দার, প্রচার সম্পাদক মাফিজুর রহমান মাফি, প্রমুখ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, চুয়াডাঙ্গা বড় বাজারের ব্যবসায়ীগণ।




এতদিন পশুর উন্নয়নে কাজ করেছি, এবার মানব উন্নয়নে কাজ করতে চান- জাহাঙ্গীর আলম

চুয়াডাঙ্গা ২ আসেনর স্বতন্ত্র এমপি প্রার্থী হিসেবে পল্লী পশু চিকিৎসক ও বীমা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম গণসংযোগ ও সেবামূলক কর্মকাণ্ডে নিজেকে সম্পৃক্ত করেছেন।

কথায় আছে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো কিন্তু জাহাঙ্গীর আলম এর ক্ষেত্রে ঘটেছে ভিন্ন ঘটনা, দীর্ঘ ১১ বছর ধরে হাউলী ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন বন্ধ থাকায় তার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের ভোট করার স্বপ্ন পূরণ হয়নি। তাই এবার তিনি ১২ তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চুয়াডাঙ্গা-২ সংসদীয় আসন থেকে স্বতন্ত্র এমপির প্রার্থী হিসেবে নিজেকে তুলে ধরতে গণসংযোগ অব্যাহত রেখেছেন। এ যেন ঘোলের স্বাদ দুধে মেটানো।

বিগত দুই বছর তিনি নিজ উদ্যোগে পশু চিকিৎসার পাশাপাশি সমাজের তৃণমূল ও পিছিয়ে পড়া মানুষের উন্নয়নে কাজ করে চলেছেন। তাই এবার আসন্ন নির্বাচনে চুয়াডাঙ্গা ২ আসনের স্বতন্ত্র এমপি প্রার্থী হিসেবে গণসংযোগ শুরু করেছেন।

জানাগেছে দামুড়হুদা উপজেলার হাউলী ইউনিয়নের ছোট দুধপাতিলা গ্রামের মৃত মাও: জালাল উদ্দীন ছেলে পশূ চিকিৎসক জাহাঙ্গীর আলম। তিনি ব্রাকের (কৃত্রিম প্রজনন) কর্মী ও ফারইস্ট লাইফ ইন্সুরেন্স কো: লি: এর জেলা জোনাল ম্যানেজার পদে নিযুক্ত আছেন।

গত দুই বছর ধরে দামুড়হুদা, হাউলী, দর্শনা, কুড়ালগাছি, জুড়ানপুর, নতিপোতা, নাটুদাহ, উথলী সহ বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করছেন, সেইসাথে অসংখ্য মানুষের মধ্যে তিনি ফলজ ও বনজ গাছের চারা বিতরণ, সেলাই মেশিন, গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি বিতরণ, ঔষধ ও চিকিৎসা সেবা প্রদান করে গ্রামের বঞ্চিত ও অবহেলিত মানুষের প্রিয় পাত্র হয়ে উঠেছেন।




বিশ্ব মঞ্চের স্থান পুনরুদ্ধার করছে বাংলাদেশ

ফ্রান্সসহ বিশ্বের গণমাধ্যমগুলো গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশিত হয়েছে রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর বাংলাদেশ সফর। তারা এটাকে ইন্দো-প্যাসিফিক সম্পর্ক দৃঢ়তার অংশ হিসেবে দেখছে।

এএফপির বরাত দিয়ে আরএফআই লিখেছে, ফ্রান্সের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলকে “দৃঢ়তা” আনতে এবং চীন কেন্দ্রিক রাজনীতি ও কূটনীতিকে মাথায় রেখে রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ সোমবার বাংলাদেশে গেছেন। গণমাধ্যমগুলো প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ ও প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার ছবিও প্রকাশ করেছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীন বিস্তৃত অঞ্চলে প্রভাবের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে এবং ম্যাক্রোঁ ফ্রান্সকে একটি বিকল্প প্রস্তাব হিসাবে হাজির হয়েছেন বলে ফ্রান্সের গণমাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে। “বাংলাদেশ ধীরে ধীরে বিশ্ব মঞ্চে তার স্থান পুনরুদ্ধার করছে” বলে মন্তব্য করেছেন ম্যাক্রোঁ। প্রতিবেশি ভারতে অনুষ্ঠিত জি-২০ নেতাদের শীর্ষ সম্মেলন শেষ হওয়ার পর রোববার ঢাকায় আসার পর একথা বলেন ম্যাক্রোঁ। ক্রমবর্ধমানশীল অর্থনীতি ও ১৭ কোটি মানুষের সম্ভাবনাময়তার দেশ হিসেবে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে “অসাধারণ সাফল্য” অর্জনকারী বলেও মনে করেন তিনি।

এর আগে রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় দিল্লি থেকে ঢাকায় এসে পৌঁছান ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট। বিমানবন্দরে তাকে অভ্যর্থনা জানান প্রধানমন্ত্রী। সেখানে ম্যাক্রোঁকে লাল গালিচা সংবর্ধনা এবং গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।

বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট ও অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি বিবেচনায় নিলে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফর অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলছেন আন্তজার্তিক বিশ্লেষকেরা। জাতিসংঘে ভেটো ক্ষমতার অধিকারী ফ্রান্স এবং একই সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সবচেয়ে শক্তিশালী দুটি রাষ্ট্রের একটি হচ্ছে দেশটি।

এএফপির বরাত দিয়ে ফ্রান্স২৪ একই সংবাদ প্রচার করেছে। যেখানে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ তার অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। তিনি বলেন, আমরা আমাদের অংশীদারদের ধমক দেওয়া বা তাদের একটি অস্থিতিশীল পরিকল্পনার দিকে নিয়ে যাওয়ার পক্ষপাতি নই। বরং গণতান্ত্রিক নীতি এবং আইনের শাসনের উপর ভিত্তি করে আমরা তৃতীয় উপায় প্রস্তাব করতে চাই।

প্রেসিডেন্টের এলিসি প্যালেস অফিস বলেছে, ঢাকা সফরে “একটি দেশের সাথে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক গভীর করার একটি সুযোগ যেটি দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথও উন্মোচন করবে।

ফ্রান্সের গণমাধ্যমে ম্যাক্রোঁর ঢাকা সফরকালে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে লেখা হয়েছে। প্যারিসে ফেরার আগে সোমবার ম্যাক্রোঁ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনার পাশাপাশি তার পিতা বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিসৌধ পরিদর্শন করবেন বলেও উল্লেখ করা হয়।

৩৩ বছর পরে ফ্রান্সের কোনও প্রেসিডেন্টের এটি প্রথম ঢাকা সফর। তবে ১৯৯০ সালে ফ্রাঁসোয়া মিতেরার সফরের সঙ্গে এই সফরের গুণগত অনেক পার্থক্য রয়েছে। কারণ, গত ৩০ বছরে অনেক পথ পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশ এখন দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি।

প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর সম্মানে দেওয়া নৈশভোজে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অভিন্ন সমৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক একটি কৌশলগত অংশীদারত্বে পৌঁছাবে বলে আশা প্রকাশ করেন। ঢাকার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে ফরাসি প্রেসিডেন্টের সম্মানে আয়োজিত ভোজসভায় বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ইন্দো-প্যাসিফিক এবং এর বাইরেও সকলের অভিন্ন সমৃদ্ধির জন্য কৌশলগত সম্পর্কের দিকে এগিয়ে যেতে পারে বলে আমি আত্মবিশ্বাসী।’




বাংলাদেশের মানচিত্র পাকিস্তানকে উপহার দিতে চায় কারা?

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ যে স্বাধীনতা অর্জন করলেও স্বাধীনতাবিরোধীদের কাছ থেকে মুক্তির জন্য যুদ্ধ চলছে আজও। বাংলাদেশ যতবার উন্নয়নের শিখরে পৌঁছাতে ধারাবাহিক পথ পাড়ি দিচ্ছে, বিশ্ব দরবারে সকলের সামনে মর্যাদা নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াচ্ছে ঠিক ততবার তার ওপর আঘাত করা হয়েছে। একসময়ের প্রধান বিরোধী দল যখন তাদের আন্দোলনের প্রধান স্লোগান ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’ নির্ধারণ করে তখন আবারও প্রশ্ন উত্থাপিত হয়- এরা কারা, যারা পাকিস্তানকে বাংলাদেশের মানচিত্র উপহার দিতে চায়?

মুক্তিযুদ্ধ গবেষকরা বলছেন, এটা খুবই স্পষ্ট যে কারা মুক্তিযুদ্ধবিরোধী কর্মকান্ডে আজও যুক্ত এবং কারা বিভিন্ন সময়ে বক্তব্য রেখেছে যে, পাকিস্তানের কাছে ফিরে যেতে চায়। এখন দরকার এই টেক ব্যাক বাংলাদেশবিরোধী একটা অবস্থান নেওয়া এবং এদের প্রতিরোধ করা। আমাদের শক্তি হলো, যখনই বাংলাদেশের ওপর কোনো আঘাত এসেছে তখনই আমাদের তরুণ প্রজন্ম তা রুখে দিতে সক্ষম হয়েছে। এবারও পারবে।

আর এই প্রতিরোধের অংশ হিসেবে তরুণ প্রজন্ম মাঠে কাজ করছে নানাভাবে। এবার তারা টেক ব্যাক বাংলাদেশকে সমালোচনা করে ঢাকার রাস্তায় নতুন গ্রাফিতি নিয়ে হাজির হয়েছে।

বাংলাদেশকে পিছনের দিকে টানছে বিএনপি নেতারা- জোরসে বলো হেইয়ো, টেকব্যাক বাংলাদেশ, পিছিয়ে দাও বাংলাদেশ। ঢাকার বিভিন্ন দেয়ালে শোভা পাচ্ছে আরও অনেক গ্রাফিতি। যার একটিতে দেখা যায় পাকিস্তানের পতাকা আকৃতির এক ডাইনোসরকে বাংলাদেশের মানচিত্র খেতে উদ্বুদ্ধ করছে তারেক জিয়ার আদলের এক ব্যক্তি। আর লেখা আছে টেক ব্যাক বাংলাদেশ। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও তারেক জিয়া বাংলাদেশকে শিকল দিয়ে টেনে পিছনে নিতে চেষ্টা করছেন ‘টেক ব্যাক বাংরাদেশ’ স্লোগান দিয়ে।

ইতিহাস বলছে, একমাত্র জার্মানির নাৎসি পার্টি ছাড়া বিশ্বের কোন রাজনৈতিক দল, তার দেশকে পিছনের দিকে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেনি। ১৯২০ সালে উগ্র জাতীয়তাবাদী চেতনা নিয়ে হিটলারের নেতৃত্বে ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলের উত্থান ঘটে। তখন তারাও স্লোগান দিয়েছিল ‘টেক ব্যাক জার্মানি।’ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানিতে কমিউনিস্ট উত্থান ঠেকাতে কট্টর জাতীয়তাবাদের বিষবাম্প ছড়িয়ে দিয়েছিল নাৎসিরা।

বিএনপি পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করলো। কিছুদিন ধরে বিএনপি ‘এক দফা’ আন্দোলনে ব্যস্ত। একদিকে বিএনপি একদফা ঘোষণা করেছে। অন্যদিকে সরকারের কাছে খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ এক গুচ্ছ দাবি দাওয়া উত্থাপন করেছে। এসব দাবির কোনটা আসল আর কোনটা নকল সেই ভাবনার মধ্যে গুরুতর অভিযোগ তাদের স্লোগানকে ঘিরে। ঠিক কোন পরিস্থিতিতে ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’ বলতে পারে একটি রাজনৈতিক দল।

‘টেক ব্যাক জার্মানির’ পরিণাম কি হয়েছিল আমরা সবাই জানি। ঠিক একশো বছর পর হিটলারের স্লোগান ফিরে এসেছে বাংলাদেশে, বিএনপির হাত ধরে। অবশ্য নাৎসি পার্টির পুরো নামের সঙ্গে বিএনপির পুরো নামের মিল আছে। হিটলারের দলের পুরো নাম ‘ন্যাশনাল সোশালিস্ট জার্মান ওয়ার্কাস পার্টি।’ রাজনৈতিক দল বা নেতারা জনগণকে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখান, আগামীর পরিকল্পনার কথা বলেন। বারাক ওবামা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে স্লোগান দিয়েছিলেন ‘চেঞ্জ’ পরিবর্তনের ডাক দিয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে সামনে এগিয়ে নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। নেলসন ম্যান্ডেলা মুক্তি পেয়ে বলেছিলেন ‘লুক ফরোয়ার্ড।’ বিএনপি বলছে ‘টেক ব্যাক।’ বাংলাদেশকে টেনে হিঁচড়ে বিএনপি কোথায় নিয়ে যেতে চায়? কোন আমলে?

সম্প্রতি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, – ‘পাকিস্তান আমল ভালো ছিলো।’ বিএনপি কি তাহলে বাংলাদেশকে আবার পাকিস্তান বানাতে চান? ৭৫ এর নারকীয় ঘটনার আসল উদ্দেশ্য ছিলো বাংলাদেশকে আবার পাকিস্তানে ফেরানো। সামরিক এক নায়ক জিয়াউর রহমান ছিলেন তার স্বপ্নদ্রষ্টা। ৭ নভেম্বর ক্ষমতা দখল করে তিনি পাকিস্তান অভিমুখে নিয়ে যেতে থাকেন বাংলাদেশকে। ‘জয় বাংলা’ হয়ে যায় ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।’ ‘বাংলাদেশ বেতার’ হয় ‘রেডিও বাংলাদেশ’। সেটা ছিলো প্রথম ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’ উদ্যোগ।

এই টেক ব্যাক বাংলাদেশ বলার সাহস কীভাবে হয় উল্লেখ করে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবীর বলেন, এই ঘাতক গোষ্ঠী বারবারই বাংলাদেশকে পাকিস্তানে ফিরিয়ে নিতে ষড়যন্ত্র করেছে। তারেক জিয়ার পাকিস্তান প্রেম নতুন কিছু না। কয়দিন আগে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বললেন, পাকিস্তান আমলে ভালো ছিলাম। জামায়াত ইসলামী ও বিএনপি একই মায়ের পেটে সহোদর বারবার ঘোষণা দিয়েছে। এগুলো নতুন না তাদের জন্য। তারেক জিয়ার বরাবরের উদ্দেশ্য বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানাতে হবে। আর এর বিপরীতে বাংলাদেশের তরুণরা বারবার রাস্তায় নেমেছে। এবারেও এই বিষয়টি নানাভাবে তুলে ধরা উচিত। টেকব্যাক বাংলাদেশ যে ঘটতে দেওয়া যাবে না তরুণদের এই সচেতনতার জন্য তাদের অভিনন্দন। এটা মূলধারার গণমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া উচিত।




মুজিবনগরে যুবমহিলা লীগের সমাবেশ ও উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত

সরকারের সাফল্য ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের ধারা তৃণমূল পর্যায়ে পৌছে দিতে মুজিবনগরে যুব মহিলা লীগের সমাবেশ ও উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার বিকেলে মুজিবনগর উপজেলার ভবেরপাড়া গ্রামে মুজিবনগর আম্রকানন মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে বাগোয়ান ইউনিয়ন যুবমহিলালীগের আয়োজনে এই সমাবেশ ও উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

মুজিবনগর উপজেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি তকলিমা খাতুন এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এমপি।

অনুষ্ঠানে মেহেরপুর জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড: রুতশোভা মন্ডলের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ যুব মহিলালীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি সৈয়দা মোনালিসা ইসলাম।

অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাগোয়ান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আয়ুব হোসেন।

এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা যুবমহিলা লীগের সভাপতি সমিউন বাসিরা পলি, মুজিবনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম তোতা, সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, মুজিবনগর উপজেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক তহমিনা খাতুন।

এর আগে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এমপি ও বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-সভাপতি সৈয়দা মোনালিসা ইসলাম অনুষ্ঠানের স্থলে পৌঁছালে তাদেরকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন যুব মহিলা লীগের নেতাকর্মীবৃন্দ।




গাংনীতে সমবায় সমিতির সদস্যদের দিনব্যাপী ভ্রাম্যমান প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায় সম্ভাবনাময় সমবায় সমিতির সদস্যদের অংশগ্রহনে দিনব্যাপী ভ্রাম্যমান প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) গাংনী উপজেলা সমবায় অফিসের আয়োজনে বিআরডিবি হলরুমে সমবায়ীদের অংশগ্রহণে দিনব্যাপী এই ভ্রাম্যমাণ প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়।

গাংনী উপজেলা সমবায় অফিসার মাহবুবুল হক মন্টুর সভাপতিত্বে ভ্রাম্যমান প্রশিক্ষণে অতিথি বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) নাদির হোসেন শামীম, গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসেন ও মেহেরপুর জেলা সমবায় অফিসের উপ-সহকারী নিবন্ধক এনামুল হক।

এসময় অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম মাস্টার, মেহেরপুর জেলা সমবায় অফিসের প্রশিক্ষক নূরুজ্জামান ও সহকারী পরিদর্শক রুহুল কুদ্দুস, হাফিজুর রহমান।

প্রশিক্ষণে ৬ টি সমবায় সমিতির মোট পঁচিশ জন সদস্য অংশগ্রহণ করেন।




কোটচাঁদপুরে মধ্য বয়সি এক নারীর আত্মহনন

গলায় দড়ি দিয়ে সবুরা খাতুন (৬৩) নামের মধ্য বয়সি এক নারী আত্মহত্যা করেছেন। সে কোটচাঁদপুর উপজেলার ইকড়া গ্রামের ফজলুল হকের স্ত্রী।

জানা যায়,সবুরা খাতুন (৬৩)। সে কোটচাঁদপুর উপজেলার ইকড়া গ্রামের ফজলুল হকের স্ত্রী। সোমবার সকালে ঘরের আড়ার বাশের সঙ্গে গলায় দড়ি দিয়ে ফাঁস দেন। পরে তাঁর স্বজনরা দেখতে পেয়ে উদ্ধার করেন। খবর পেয়ে কোটচাঁদপুরের তালসার পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) আজগর আলী মৃত দেহটি ময়না তদন্তের জন্য ঝিনাইদহ মর্গে পাঠিয়েছেন।

বিষয়টি নিয়ে মৃতের ছেলে হাবিবুর রহমান বলেন,আমার মা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ্য ছিলেন। কোমরের যন্ত্রণায় প্রায় সময় ছটফট করতেন। আমি জানতাম মা এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে পারে।

এ জন্য আমি দুই বছর যাবৎ পাহারা দিয়ে রাখতাম। এ দুই বছরের একদিনও আমি রাতে ঘুমাইনি। আজ আমরা যখন সবাই খেতে খামারে কাজে চলে গেছি,ঠিক সে সময় আমার থাকা ঘরের পাশের একটি ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় দড়ি দেন। আমরা যখন দেখতে পেয়েছি, সে সময় আমার মা আর নাই। আমি পাহারা দিয়েও শেষ রক্ষা করতে পারলাম না।

তিনি বলেন,আমার মা যে অসুস্থ্য ছিল, তাঁর সকল কাগজপত্র আমার কাছে আছে। মাকে অনেক ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেছি,মাঝার ব্যাথার জন্য।

এ ব্যাপারে কোটচাঁদপুর থানাধীন তালসার পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) আজগর আলী বলেন, এটা নিছক আত্মহত্যার ঘটনা। ময়না তদন্তের জন্য মৃত দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে,ওই নারী দীর্ঘদিন ধরে কোমরের ব্যাথায় ভূগছিলেন। জ্বালা সইতে না পেরে গলায় রশি দিয়েছেন।




ঝিনাইদহে অমিতাভ সাহা হত্যা মামলার আসামি গ্রেফতার

ঝিনাইদহের আলোচিত অমিতাভ সাহা হত্যা মামলার এজাহার নামীয় প্রধান আসামী রাজলু হোসেন ওরফে রাজুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গতকাল রবিবার মেহেরপুর জেলার ভারতীয় সীমান্ত থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত রাজলু সদর উপজেলার হাটগোপালপুর এলাকার মুনাব্বর হোসেনের ছেলে।

এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন ঝিনাইদহের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার ইমরান জাকারিয়া।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গত ৩ সেপ্টেম্বর শহরের ধোপাঘাটা ব্রীজ এলাকা থেকে অমিতাভ সাহা নামের এক যুবককের অর্ধগলিত বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী দাবীকৃত তিশা নন্দী বাদী হয়ে রাজলু হোসেন ওরফে রাজুকে প্রধান আসামী করে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার হলে দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়। এরই প্রেক্ষিতে পুলিশের একাধিক টিম হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন ও আসামীদের ধরতে অভিযান শুরু করে। গতকাল রাতে মেহেরপুরের ভারতীয় সীমান্ত থেকে আসামী রাজুকে গ্রেফতার করা হয়। তবে মামলার অধিকতর তদন্তের স্বার্থে হত্যাকাণ্ডের রহস্য এখনি বলা যাচ্ছে না।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর আবিদুর রহমান, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ সোহেল রানা, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি শাহীন উদ্দিনসহ জেলা পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের কর্মকর্তাবৃন্দ।




রূপায়ণ গ্রুপে চাকরির সুযোগ