মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার হাড়াভাঙ্গা গ্রামের আবু হানিফ দেড় লাখ টাকায় গরু কিনে কোরবানি দিয়েছেন। তার ইচ্ছে ছিল ধর্মীয় নিয়মনীতি অনুসারে কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রি করে সেই টাকা আশপাশের দরিদ্র মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দিবেন। কিন্তু দেড় লাখ টাকা দামের গরুর চামড়ার দাম ব্যবসায়ীরা বলছেন মাত্র ১০০ টাকা।
আবু হানিফ বলেন, ঈদুল আজহার নামাজের জামাত শেষ হওয়ায় কিছুক্ষণ পর থেকেই শুরু হয় বৃষ্টি। একদিকে বৃষ্টিতে যেমন কোরবানির পশু জবাই ও মাংস কাটতে ভোগান্তি হয়; অন্যদিকে কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রি করার জন্য কোন চামড়ার ব্যবসায়ী না পেয়ে ভোগান্তি আরও বাড়ে। চামড়ার একদিকে চাহিদা কম অন্যদিকে দু’একজন ব্যবসায়ী এসে নিজ ইচ্ছেমতো দাম বলছে। কিছুই করার নেই দেড় লাখ টাকার গরুর চামড়া অল্প দামেই বিক্রি করতে হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সাহেবনগর, হাড়াভাঙ্গা, কাজিপুর, নওদাপাড়া সহ বেশকিছু এলাকায় ঘুরে সর্বত্র এমনই চিত্রের দেখা মেলে। এমন অবস্থায় পশুর চামড়া নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন কোরবানিকারীরা।
কোরবানির পর চামড়া কিনতে আসছেন না কোনো ব্যবসায়ী। কোনো কোনো এলাকায় দু’একজন ব্যবসায়ীকে পাওয়া গেলেও দাম বলছেন খুবই কম। গরুর চামড়া আকার ভেদে ১০০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত বলছেন। ছাগলের চামড়ার ক্ষেত্রে বিষয়টা আরও করুণ। এ চামড়ার কোনো ক্রেতাই নেই। তারপরও দুয়েকটা বড় বড় ছাগলের চামড়া ১৫ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে কিনেছে চামড়া ব্যবসায়ীরা।
একই উপজেলার সাহেবনগর গ্রামের মোখলেছুর রহমান বলেন, একটি ছাগল কোরবানি দিয়েছিলাম; চামড়া বিক্রি করতে গিয়ে ১৫ টাকা দাম পেয়েছি।
হাড়াভাঙ্গা গ্রামের জিল্লুর রহমান বলেন, কোরবানি পশু ছাগলের চামড়া বিক্রি করতে না পেরে অবশেষে ফেলে দিতে হয়েছে। একজন চামড়া ব্যবসায়ী এসে ছাগলের চামড়াটি দেখে কোন দামই বলেনি। নেওয়াই নাকি সম্ভব না বললেন তিনি।
কথা হয় এক চামড়া ব্যবসায়ীর সঙ্গেও। গরুর চামড়ার দাম একেবারেই কম কিন্তু ছাগলের চামড়া বিক্রি না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে চামড়া ব্যবসায়ী শরিফুল ইসলাম বলেন, যেটার কোন চাহিদা নেই সেটা কিনছি না৷ চামড়ার দাম তো আমি কমাচ্ছি না। আমি যেখানে বিক্রি করবো সেখান থেকে কম দামেই কিনতে বলা হয়েছে।