অন্তর্বর্তীকালিন জামিন পেলেন সাংবাদিক তুহিন আরন্য
মেহেরপুরে চাঞ্চল্যকর আটলান্টিকা হোটেল কাণ্ড ঘটনায় চাঁদাবাজি ও পর্ণগ্রাফি মামলায় এক সপ্তাহ কারাবাসের পর অন্তর্বর্তীকালিন জামিন পেলেন সাংবাদিক তুহিন আরন্য।
আজ সোমবার সকাল ১১ টার দিকে মেহেরপুর জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ শহিদুল্লাহের আদালতে জামিন আবেদন করলে বিজ্ঞ বিচারক অন্তর্বর্তীকালিন জামিন আদেশ দেন। মামলার পরবর্তি ধার্য দিনগুলোতে হাজির হওয়ার শর্তে এ আদেশ দেন।
সাংবাদিক তুহিন আরন্য বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন বাংলাভিশনের আঞ্চলিক প্রতিনিধি এবং জাতীয় দৈনিক দেশ রুপান্তর ও বিডিনিউজ২৪ডটকম এর মেহেরপুর প্রতিনিধি।
মামলায় আসামি পক্ষে মারুফ আহমেদ বিজনসহ একদল আইনজীবী এবং রাষ্ট্রপক্ষে পাবলিক প্রসিকিউটর পল্লব ভট্টাচার্য আইনজীবীর দায়িত্ব পালন করেন।
আগে গত মঙ্গলবার (২০ জুন) মেহেরপুরের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আবু বকর সিদ্দিক তার জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে জেলে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর পল্লব ভট্টাচার্য বলেন, আসামির জামিনের বিরোধীতা করেছিলাম। বিজ্ঞ বিচারক আসামির অন্তর্বর্তীকালিন জামিন আদেশ দিয়েছেন।
আসামির পক্ষের আইনজীবী মারুফ আহমেদ বিজন বলেন, অধিকাংশ আইনজীবী আসামির পক্ষে আদালতের জামিনের জন্য দাড়িয়েছিলেন। বিজ্ঞ আদালত জামিন মঞ্জুর করেছেন। এর বেশি কিছু তিনি বলতে চাননি।
তার কয়েকদিন আগে ১৫ জুন চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আবু বকর সিদ্দিক ডিবিসির মেহেরপুর প্রতিনিধি আবু আক্তার করণ, দেশটিভির প্রতিনিধি রেক্সোনা আরা ও কথিত সমাজকর্মী নিলুফার ইয়াসমিন রুপাকে জামিন না দিয়ে জেল হাজতে পাঠায় আদালত।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, বাংলাভিশনের সাংবাদিক তুহিন আরন্য, ডিবিসি চ্যানেলের সাংবাদিক আবু আক্তার করণ, দেশ টিভির সাংবাদিক রেক্সোনা আরা ও নিলুফার ইয়াসমিন রুপাসহ ১৭ আসামিকে অভিযুক্ত করে হোটেল আটলান্টিকা কাণ্ড মামলায় পুলিশ আদালতে চার্জশিট দেয়। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ৪১৭/৩৮৫/৩৮৬/৫০৬ ধারাসহ ২০১২ সালের পর্নোগ্রাফী নিয়ন্ত্রণ আইনের ৮(১),৮(২), ৮(৩), ৮(৪) ধারায় অপরাধ প্রাথমিকভাবে সত্য বলে প্রমানিত হওয়ায় আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
চার্জশিটে অভিযুক্তরা হলেন- বাংলাভিশনের মেহেরপুর প্রতিনিধি মুস্তাফিজুর রহমান ওরফে তুহিন আরন্য, ডিবিসি টেলিভিশনের মেহেরপুর প্রতিনিধি আবু আক্তার করন, দেশ টিভির প্রতিনিধি রোকসানা আরা, এশিয়ান টিভির প্রতিনিধি মিজানুর রহমান জনি, কথিত সাংবাদিক নাজনিন খান প্রিয়া, ছন্দা খাতুন, আটলান্টিক হোটেল মালিক মতিয়ার রহমান, তার ছেলে মামুন জোয়ার্দার, আব্দুস সালাম, হাসিবুল হক জয়, নেহাল আল মুকিত, শাহাজান আলী, মোছা. রুপা, নুসরাত, বর্ষা, সুমন রহমান বিমান ও বিপাশা।
পুলিশের চার্জশিট থেকে জানা যায়, একটি নারী চক্র গড়ে তুলে মেহেরপুর শহরের আভিজাত শ্রেনীর হোটেল আটলান্টিকার মালিক মতিয়ার রহমান ও তার ছেলে মামুন বিভিন্ন ব্যবসায়ী, সরকারি কর্মকর্তা বা অভিজাত শ্রেনীর মানুষকে সুন্দরী নারী দিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে তা ভিডিও ধারণ করেন। এবং সেই ভিডিও দিয়ে ব্লাকমেইল করে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিল। এই চক্রে বিভিন্ন এলাকার প্রায় ডজনখানেক সুন্দরী নারী জড়িত ছিলো।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২২ নভেম্বর মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি গ্রামের মনোয়ার হোসেন নামের এক এনজিও কর্মী সদর থানায় নারী চক্রের প্রধান হোতা প্রিয়া খানকে আসামি করে দণ্ডবিধির ৪১৭/৩৮৫/৩৮৬/৫০৬ ধারায় একটি মামলা করেন।
এ সংক্রান্ত নিউজ আরও পড়ুন
মেহেরপুরে আটলান্টিকা হোটেল কাণ্ড মামলায় সাংবাদিক তুহিন আরন্য জেলে