মেহেরপুরে চাঞ্চল্যকর আটলান্টিকা হোটেল কাণ্ড ঘটনায় চাঁদাবাজি ও পর্ণগ্রাফি মামলার আসামি বর্ষা, নুসরাত ও বিপাশার জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধি করেছেন আদালত।
বুধবার দুুপুরে মেহেরপুরের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আবু বকর সিদ্দিকের আদালতে বর্ষা, নুসরাত ও বিপাশা জামিন আবেদন করে আত্মসমর্পণ করলে বিজ্ঞ বিচারক তার জামিনাদেশ বৃদ্ধি করে পরবর্তি শুনানির দিন ধার্য করেছেন।
মামলায় আসামি বিপাশার পক্ষে আলমগীর হোসেন, নুসরাত ও বর্ষার পক্ষে ইয়ারুল ইসলাম এবং সরকারি পক্ষে কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক কৌসুলির দায়িত্ব পালন করেন।
বিপাশার আইনজীবী আলমগীর হোসেন বলেন, বিপাসার শিশু সন্তান অসুস্থ থাকায় মানবিক বিবেচনায় বিজ্ঞ বিচারক তারসহ অপরাপর তিন আসামির জামিনাদেশের মেয়াদ বৃদ্ধি করে আগামী ৬ জুলাই শুনানীর দিন ধার্য করেছেন।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার একই আদালত একই মামলায় বাংলাভিশনের সাংবাদিক তুহিন আরন্যকে এবং গত বৃহস্পতিবার ডিবিসির মেহেরপুর প্রতিনিধি আবু আক্তার করণ, দেশটিভির প্রতিনিধি রেক্সোনা আরা ও কথিত সমাজকর্মী নিলুফার ইয়াসমিন রুপাকে জামিন না দিয়ে জেল হাজতে পাঠায় আদালত।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, বাংলাভিশনের সাংবাদিক তুহিন আরন্য, ডিবিসি চ্যানেলের সাংবাদিক আবু আক্তার করণ, দেশ টিভির সাংবাদিক রেক্সোনা আরা ও নিলুফার ইয়াসমিন রুপাসহ ১৭ আসামিকে অভিযুক্ত করে হোটেল আটলান্টিকা কাণ্ড মামলায় পুলিশ আদালতে চার্জশিট দেয়। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ৪১৭/৩৮৫/৩৮৬/৫০৬ ধারাসহ ২০১২ সালের পর্নোগ্রাফী নিয়ন্ত্রণ আইনের ৮(১),৮(২), ৮(৩), ৮(৪) ধারায় অপরাধ প্রাথমিকভাবে সত্য বলে প্রমানিত হওয়ায় আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
চার্জশিটে অভিযুক্তরা হলেন- বাংলাভিশনের মেহেরপুর প্রতিনিধি মুস্তাফিজুর রহমান ওরফে তুহিন আরন্য, ডিবিসি টেলিভিশনের মেহেরপুর প্রতিনিধি আবু আক্তার করন, দেশ টিভির প্রতিনিধি রোকসানা আরা, এশিয়ান টিভির প্রতিনিধি মিজানুর রহমান জনি, কথিত সাংবাদিক নাজনিন খান প্রিয়া, ছন্দা খাতুন, আটলান্টিক হোটেল মালিক মতিয়ার রহমান, তার ছেলে মামুন জোয়ার্দার, আব্দুস সালাম, হাসিবুল হক জয়, নেহাল আল মুকিত, শাহাজান আলী, মোছা. রুপা, নুসরাত, বর্ষা, সুমন রহমান বিমান ও বিপাশা।
পুলিশের চার্জশিট থেকে জানা যায়, একটি নারী চক্র গড়ে তুলে মেহেরপুর শহরের আভিজাত শ্রেনীর হোটেল আটলান্টিকার মালিক মতিয়ার রহমান ও তার ছেলে মামুন বিভিন্ন ব্যবসায়ী, সরকারি কর্মকর্তা বা অভিজাত শ্রেনীর মানুষকে সুন্দরী নারী দিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে তা ভিডিও ধারণ করেন। এবং সেই ভিডিও দিয়ে ব্লাকমেইল করে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিল। এই চক্রে বিভিন্ন এলাকার প্রায় ডজনখানেক সুন্দরী নারী জড়িত ছিলো।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২২ নভেম্বর মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি গ্রামের মনোয়ার হোসেন নামের এক এনজিও কর্মী সদর থানায় নারী চক্রের প্রধান হোতা প্রিয়া খানকে আসামি করে দণ্ডবিধির ৪১৭/৩৮৫/৩৮৬/৫০৬ ধারায় একটি মামলা করেন।