আমেরিকান তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী রবার্ট ওপেনহাইমার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় লস অ্যালামোস ল্যাবরেটরির পরিচালক ছিলেন এবং ম্যানহাটন প্রকল্পে ভূমিকার জন্য তাকে ‘পারমাণবিক বোমার জনক’ হিসাবে কৃতিত্ব দেওয়া হয়। বলা হয়ে থাকে, তিনিই গবেষণার অংশ হিসেবে প্রথম পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করেছিলেন।
আর সেই রবার্ট ওপেনহাইমারের জীবনের দুঃসাহসিক নানা অভিজ্ঞতা নিয়েই চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন বিখ্যাত লেখক ও পরিচালক ক্রিস্টোফার নোলান। সিনেমার নাম ‘ওপেনহাইমার’। ২১ জুলাই মুক্তি পাবে প্রেক্ষাগৃহ যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে।
সিনেমাটিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করছেন ‘পিকি ব্লাইন্ডার্স’ ধারাবাহিকের তারকা সিলিয়ান মারফি। তিনি বলেছেন, পারমাণবিক বোমার পিতার চরিত্রে অভিনয় করা ‘ভয়ঙ্কর এবং উত্তেজনাপূর্ণ’।
অভিনেতা সিলিয়ান মারফিকে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে ওপেনহাইমার চলচ্চিত্রে প্রধান চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়।
সম্প্রতি এম্পায়ার ম্যাগাজিনের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে সিলিয়ান মারফি বলেন, আশা করি সবকিছু ভালো হবে। এই ধরনের ব্যক্তির (রবার্ট ওপেনহাইমার) চরিত্রে অভিনয় করা সবসময়ই কঠিন বিষয়।
পুলিৎজার পুরস্কার বিজয়ী উপন্যাস ‘আমেরিকান প্রোমিথিয়াস: দ্য ট্রায়াম্ফ অ্যান্ড ট্র্যাজেডি অফ জে রবার্ট ওপেনহেইমার’ থেকে নেওয়া হয়েছে এই চলচ্চিত্র। যে সময়টিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার ‘বৈশ্বিক সংঘাতের দ্রুত অবসান ঘটাতে সক্ষম’ একটি অস্ত্র তৈরির জন্য লড়াই করে।
তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন ডেলানো রুজভেল্টের নির্দেশে জেনারেল লেসলি গ্রোভস (ম্যাট ডেমন) ড. ওপেনহাইমারকে দেশের সর্বশ্রেষ্ঠ বুদ্ধিজীবীদের একত্রিত করার জন্য বলা হয়। ইতিহাসের গতিপথ পরিবর্তন করতে নেওয়া হয় এমন উদ্যোগ।
ড. ওপেনহাইমার তার ম্যানহাটন প্রকল্পের লক্ষ্যগুলো বাস্তবায়নের পরে শেষ পর্যন্ত নিজের ভয়ানক সৃষ্টির জন্য অবশ্য আফসোস করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘কিছু লোক কেবল বিশ্বকে জ্বলতে দেখতে চায়।’
কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করা সিলিয়ান মারফি বলেন, ড. ওপেনহাইমার একটি বিভাজনমূলক চরিত্র। তিনি খুব কঠিন ও জটিল চরিত্র, যা অনেকটাই অজানা। এটি একজন পুলিশ অফিসারের চরিত্রে অভিনয় করার চেয়ে আলাদা।
তিনি বলেন, আমি মনে করি এটি একটি অপরিহার্য সিনেমাটিক অভিজ্ঞতা। এতে এমন কিছু মুহূর্ত রয়েছে যা মানুষের ঢাকনা উড়িয়ে দেবে।
সিলিয়ান মারফি ছাড়াও সিনেমাটিতে অভিনয় করছেন হলিউডের এ-লিস্টের গুরুত্বপূর্ণ অনিনেতা-অনিনেত্রী। যাদের মধ্যে রয়েছেন, ম্যাট ডেমন, এমিলি ব্লান্ট, রবার্ট ডাউনি জুনিয়র, ফ্লোরেন্স পুগ, জোশ হার্টনেট, মাইকেল অ্যাঙ্গারানো, কেনেথ ব্রানাগ, রামি মালেক, অ্যালডেন এহরেনরিচ, ডেভিড ডাস্টমালচিয়ান, ডেন ডিহান, জ্যাক কোয়াইড, ম্যাথিউ মোডিন, ডিলান আর্নল্ড এবং ডেভিড ক্রুমহোল্টজের মতো তারকারা।
ক্রিস্টোফার নোলান তার স্ত্রী এমা থমাস ও চার্লস রোভেনের সঙ্গে যৌথভাবে চলচ্চিত্রটি প্রযোজনা করেছেন।