কুষ্টিয়ায় কলেজ ছাত্রকে হাত-পা বেঁধে ছাদ থেকে ফেলে হত্যা

কুষ্টিয়া শহরের একটি চারতলা ভবনের ছাদ থেকে ফেলে রুবেল হোসেন (২২) নামে এক কলেজছাত্রকে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কোর্টপাড়া এলাকার বনফুড গলিতে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত কলেজছাত্র রুবেল হোসেন কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে। সে কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পাওয়ার ডিপার্টমেন্টের ৬ষ্ঠ সেমিস্টারের ছাত্র ছিলেন। কুষ্টিয়া শহরের কোর্টপাড়া এলাকার একটি চারতলা ভবনের তৃতীয় তলায় ছাত্রাবাসে থাকতেন তিনি।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রশি দিয়ে হাত-পা ও কাপড় দিয়ে মুখ বাধা অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে স্থানীয়রা। অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাওয়ার পথে রাত সাড়ে ১২টার দিকে রুবেলের মৃত্যু হয়।

নিহত রুবেলকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া মেসের বাসিন্দা আনিসুর রহমান বলেন, তিন তলায় তিনটি রুমে আমরা ৯ জন থাকতাম। রুবেলের রুমে তিনজন থাকত। রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে চিৎকারের শব্দ শুনে নিচে নেমে এসে দেখি হাত-পা ও মুখ বাধা অবস্থায় রুবেল পড়ে আছে। তখন স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসি। অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠাতে বলেন।

কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক মিঠুন চক্রবর্তী বলেন, আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাত ১১টার দিকে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। মাথায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।

কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবু রাসেল বলেন, রশি দিয়ে হাত-পা ও কাপড় দিয়ে মুখ বাধা অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে স্থানীয়রা। পরে তাকে রাজশাহী নেওয়ার পথে মারা যায়। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।




এইচএসসি পাসে সুপারভাইজার নিচ্ছে আগোরা

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে সুপার শপ আগোরা লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির পেরিশেবল/ফুড/নন ফুড বিভাগ সুপারভাইজার পদে একাধিক জনবল নিয়োগ দেবে প্রতিষ্ঠানটি।

প্রতিষ্ঠানের নাম : আগোরা লিমিটেড

পদের নাম : সুপারভাইজার পদসংখ্যা : নির্ধারিত নয় অভিজ্ঞতা : কমপক্ষে ০৩ বছর

বয়সসীমা : উল্লেখ নেই

কর্মস্থল : চট্টগ্রাম, ঢাকা, সিলেট (সিলেট সদর)

বেতন : আলোচনা সাপেক্ষে

আবেদন শুরুর তারিখ : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

কর্মঘণ্টা : ফুলটাইম

কর্মক্ষেত্র : সুপার শপে

প্রার্থীর ধরন : নারী-পুরুষ (উভয়)

আবেদনের শেষ সময় : ২৬ অক্টোবর ২০২৪

শিক্ষাগত যোগ্যতা : এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ

অন্যান্য যোগ্যতা : গ্রাহক সেবা ও স্টক যাচাইকরণে দক্ষতা অন্যান্য সুবিধা : প্রতি বছর বেতন পর্যালোচনা, বছরে ২টি উৎসব বোনাস।

যেভাবে আবেদন করবেন : আগ্রহীরা আবেদন করতে ও বিস্তারিত বিজ্ঞপ্তিটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
সূত্র: কালবেলা




মেহেরপুরে তিনটি দোকানে ভোক্তার অভিযান জরিমানা আদায়

ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করা ও মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য রাখার অপরাধে তিনটি মুদি দোকানে অভিযান চালিয়ে ১৩ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

আজ বুধবার (২ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, মেহেরপুর জেলা কার্যালয় মেহেরপুর শহরের বড়বাজার এলাকায় এই অভিযান পরিচালনা করে।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সজল আহমেদ জানান, পুর্বে সতর্ক করা স্বত্ত্বেও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মুল্যতালিকা প্রদর্শন না করার অপরাধে মেসার্স গিয়াস বাণিজ্যালয়কে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৩৮ ধারায় ২ হাজার, মেসার্স জুয়েল স্টোরকে ১ হাজার টাকা ও মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য রাখার অপরাধে মেসার্স বিশ্বাস স্টোরের মালিককে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের ৩৮ ও ৫১ ধারায় ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

অভিযান সহযোগিতায় ছিলেন জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা মো: রিয়াজ মাহমুদ ও মেহেরপুর জেলা পুলিশের একটি টিম।

অভিযান চলাকালিন সময়ে ব্যবসায়ীদের আইন মেনে ব্যবসা পরিচালনা, মুল্যতালিকা প্রদর্শন ও ক্রয় বিক্রির ভাউচার সংরক্ষণ এবং অতিরিক্ত দাম নেয়া থেকে বিরত থাকার জন্য সতর্ক করা হয়েছে।




ক্ষুধা লাগলে যে কারণে মেজাজ খিটখিটে থাকে

ক্ষুধার্ত অবস্থায় আমাদের মধ্যে ক্লান্তি, বিভ্রান্তি বা রাগের মতো আবেগগুলো সক্রিয় হয়ে ওঠে। আর এসব কিছুর জন্য দায়ী হলো চিনি-বিশেষত গ্লুকোজ, যা আমাদের রক্তে সঞ্চালিত হয়। যখন এর মাত্রা কমে যায়, তখন আমাদের শরীর তা পুনরুদ্ধারে ধারাবাহিক কিছু প্রতিক্রিয়া দেখায়।

কিন্তু গ্লুকোজ ঠিক কী ভূমিকা পালন করে? এটি কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?

এই ধরনের চিনি আমাদের অঙ্গ তৈরি করা কোষের শক্তির প্রধান উৎস। উদাহরণ দিয়ে বলা যায়, এর ওপর মস্তিষ্ক প্রায় একচেটিয়াভাবে নির্ভর করে। এটা ছাড়া মস্তিষ্ক তৈরি করা ১০০ বিলিয়ন স্নায়ু কোষ নিজেদের কাজ ভালোভাবে করতে পারবে না।

দুর্বল ও খিটখিটে বোধ করা, মাথা ঘোরা এবং মনোযোগে অসুবিধার মতো বিষয়গুলো দিয়ে বোঝা যায় যে মস্তিষ্ক পর্যাপ্ত পরিমাণে গ্লুকোজ পাচ্ছে না।

আর এই মাত্রা অনেক বেশি বেড়ে গেলে অর্থাৎ খুব দীর্ঘ সময়ের জন্য চিনি সরবরাহে ঘাটতি হলে মানুষ কোমাতেও চলে যেতে পারে।

আবেগ পরিচালনাকারী কর্টিসল

কিছু লক্ষণ আছে যা রক্তে শর্করার মাত্রা ফিরিয়ে আনতে আমাদের যে খেতে হবে, সেই সংকেত প্রদান করে থাকে এবং বিভিন্ন পুষ্টির গন্তব্য অর্থাৎ আমাদের শরীর জুড়ে ছড়িয়ে থাকা কোষে পৌঁছানোর মহাসড়ক হয়ে কাজ করে। এই ধরনের পরিস্থিতিতে ধারাবাহিকভাবে বেশকিছু মনস্তাত্ত্বিক প্রতিক্রিয়া ঘটে।

মলিকিউলার পর্যায়ে বিভিন্ন হরমোন নিঃসৃত হয়। এগুলোর একটি ঘ্রেলিন, যা পাকস্থলীর কোষ থেকে উৎপাদিত হয়ে হজমের প্রক্রিয়ায় কাজ করে। এই প্রাকৃতিক যৌগ ক্ষুধার অনুভূতি সৃষ্টি করে এবং খাবার গ্রহণের মাধ্যমে শরীর শক্তি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে।

কিন্তু আমরা কেন খাচ্ছি না সেই পরিস্থিতি না জেনেই ঘ্রেলিন সমান্তরালেই পরোক্ষভাবে অ্যাড্রিনাল গ্রন্থি দ্বারা উৎপাদিত চাপ সৃষ্টিকারী কর্টিসলকে উদ্দীপিত করে।

রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াতে কর্টিসল গ্লুকোনোজেনেসিস নামে পরিচিত একটি প্রক্রিয়া সৃষ্টি করে। এটি লিভারে সঞ্চিত ফ্যাটি অ্যাসিড এবং প্রোটিনের ভাঙ্গন থেকে গ্লুকোজ উৎপাদনের উপর নির্ভর করে এবং দ্রুততার সঙ্গে আমাদের শরীরে শক্তি সরবরাহ করে।

ক্ষুধার্ত অবস্থায় রক্তে কর্টিসলের উপস্থিতি মস্তিষ্কের কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করে, অনেকটা পুতুলের মতো খেলায়। এটি ইতিবাচক আবেগ এবং চাপের উপলব্ধির সঙ্গে সম্পর্কিত ডোপামিন এবং সেরোটোনিনের মতো নিউরোট্রান্সমিটারের মাত্রা পরিবর্তন করে। এই সম্মিলিত প্রভাবের ফলেই ক্ষুধার্ত থাকা অবস্থায় স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বিরক্ত বা রাগ লাগে।

কেবল মানুষের ক্ষেত্রেই এমন হয় না। জেব্রাফিশের আচরণ নিয়ে করা এক গবেষণায় দেখা গেছে, ক্ষুধার্ত বোধ করলে এই প্রাণীগুলোও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে।

বিবর্তনের কারণে পরিবর্তিত আচরণ

যেমনটি আমরা দেখেছি, আমাদের মেজাজ অনেক জৈব রাসায়নিক মিথস্ক্রিয়া ফলাফল, আর একটি হরমোন আছে যে এর প্রধান চরিত্র, এনিয়ে আমরা এখনও কথা বলিনি।

আপনি সম্ভবত আপনার জীবনের কোনো ক্ষেত্রে এটি নিয়ে শুনেছেন, বিশেষ করে মারাত্মক খেলাধুলার ক্ষেত্রে। আপনি ঠিক অনুমান করেছেন, এর নাম অ্যাড্রেনালিন।

কর্টিসলের মতো এটিও অ্যাড্রিনাল গ্রন্থি দ্বারা উৎপাদিত হয় এবং চাপযুক্ত পরিস্থিতির সাথে যুক্ত। এটি শরীরের ‘লড়ুন বা পালান’ ভূমিকার জন্য পরিচিত, যা মূলত হুমকির মুখে একটি শারীরবৃত্তীয় প্রতিক্রিয়া।

ক্ষুধার্ত অবস্থায় অ্যাড্রেনালিন এবং কর্টিসল উভয়ই একসাথে আমাদের মেজাজকে প্রভাবিত করে এবং আমাদের আরও রাগান্বিত বা বিরক্ত করে তোলে। এর একটি বিবর্তনীয় ব্যাখ্যা আছে বলে মনে করা হয়: খাদ্য ঘাটতি থেকে বাঁচার জন্য- এবং এভাবে সেই সব সম্পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের সাথে প্রতিযোগিতা করার জন্য– সেই সময়কার শিকারি বা খাবার সংগ্রহকারীদের জন্য আক্রমণাত্মক হওয়া সুবিধাজনক ছিল।

আজকাল যদিও আমরা আর খাবারের জন্য একইভাবে প্রতিযোগিতা করি না, তবে ক্ষুধা লাগলে শরীর কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায় তা জানা থাকলে আবেগকে সামলানো সহজ হতে পারে।

আপনি যদি রাগান্বিত বা বিরক্ত বোধ করতে শুরু করেন তবে মনে রাখবেন- এটি না খেয়ে থাকার কারণে হতে পারে। নিজের সঙ্গে স্বাস্থ্যকর খাবার রাখা কেবল শক্তিই জোগাবে না, এটি আপনাকে আরও ভারসাম্যপূর্ণ মেজাজে রাখতেও সহায়তা করবে।

সূত্র: ইত্তেফাক




মাশরাফির উপস্থিতিতে অস্ত্র দেখিয়ে আমাকে হুমকি দেওয়া হয়: সারোয়ার

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) দল সিলেট স্ট্রাইকার্সের মালিকানা অস্ত্রের মুখে দখলের অভিযোগ উঠেছে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক এবং সাবেক সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মর্তুজার বিরুদ্ধে। সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সিলেট স্ট্রাইকার্সের সাবেক মালিক সারোয়ার চৌধুরী ফ্র্যাঞ্চাইজি দলটির সাবেক অধিনায়কের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

যদিও এক বিবৃতিতে অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে সিলেট কর্তৃপক্ষ। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক দীর্ঘ স্ট্যাটাসে নিজের অবস্থান পরিস্কার করেছেন অভিযোগকারী সারোয়ার। দ্রুতই প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে সব কিছু বিস্তারিত জানাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

বুধবার (২ অক্টোবর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে সারোয়ার লেখেন, আপনারা অনেকেই হয়তো আমাকে চিনবেন সিলেট স্ট্রাইকারস-এর মাধ্যমে। ২০২৩ বিপিএলে সিলেট স্ট্রাইকারস নিজেদের প্রথম সিজনেই ফাইনাল খেলে, রানার্স আপ হয়। মাঠের সফলতা ছিল অসাধারণ, কিন্তু আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে সবচেয়ে বড় অর্জন ছিল আমাদের দেশি খেলোয়াড়দের চমৎকার পারফরম্যান্স।

দ্বিতীয় মৌসুমে বাধার মুখোমুখি হওয়ার অভিযোগ তুলে তিনি আরও লেখেন, মাঠে খেলা ভালোই হয়েছিল, তাই না? সফল একটা সিজন গড়েছিলাম আমরা। সেই সিজনে আমি ছিলাম দলের চেয়ারম্যান; স্বপ্ন বড় হচ্ছিল, স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য। কিন্তু ২০২৪ সালের বিপিএলের আগে হঠাৎ করেই এক অপ্রত্যাশিত বাঁধার মুখোমুখি হই। মাঠের সফলতা সত্ত্বেও আমি পরের সিজনে দলের সাথে থাকতে পারিনি, তারা আমাকে থাকতে দেয় নাই। এবং সিলেট ৭ দলের মধ্যে ৬ নাম্বার পজিশনে থেকে বিপিএলটা শেষ করে। আর সিলেট যে আগের সিজনের মত উজ্জীবিত ছিল না, এমনটা দর্শকরাই মনে করেছেন এবং প্রফেশনালিজমের অভাব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন।

এরপর মাশরাফির সঙ্গে পরিচয় প্রসঙ্গে সারোয়ার লেখেন, আমি মূলত আমেরিকায় ব্যবসা করি, এছাড়াও আমি নিউইয়র্কভিত্তিক (NYBCL Cricket League) এনওয়াইবিসিএল এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং দীর্ঘ ৫ বছর এই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি এবং নিউইয়র্ক ভিত্তিক বাংলাদেশ ক্রিকেট লীগে আমার হেলাল বিন ইউসুফের সাথে পরিচয় এবং তার মাধ্যমেই আমার মাশরাফি বিন মর্তুজার সাথে পরিচয় হয়। হ্যাঁ, মাশরাফি বিন মর্তুজা বাংলাদেশ দলের আমার অন্যতম প্রিয় একজন প্লেয়ার ছিলেন। আর সেই প্রিয় প্লেয়ার যখন নিজেই আমাকে বিপিএলে দল নেওয়ার আহ্বান করলেন, তখন আমি সানন্দে, বিশ্বাসের সাথে তা গ্রহণ করলাম। কিন্তু তখনও আমি জানতাম না যে এক পর্যায়ে যেয়ে, যাকে আমি এতটা পছন্দ করতাম সেই মাশরাফির রাজনৈতিক অফিসে, তার এবং যার মাধ্যমে এখানে আশা সেই হেলাল বিন ইউসুফে শুভ্রের উপস্থিতিতে অবরুদ্ধ করে এবং অস্ত্র দেখিয়ে আমাকে হুমকি দেওয়া হবে। আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না-যাকে এতটা ভালোবাসতাম, সেই মানুষই এমনভাবে আমার বিরুদ্ধে দাঁড়াবে! এটা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে দুঃসহ অভিজ্ঞতা।

তিনি আরও লেখেন, মাশরাফি বিন মর্তুজা এতদিন বাংলাদেশের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিদের একজন ছিলেন। ক্রিকেটার হিসেবে তার অবশ্যই অনেক জনপ্রিয়তা ছিল/আছে। আমি নিজেও উনার এই অজানা হিংস্র চরিত্র দেখার আগে অনেক বড় ফ্যান ছিলাম এবং আমি জানি তখন হয়তো কেউ অভিযোগ করলে আমারও বিশ্বাস করতে কঠিন হত। আমার জন্য সবচেয়ে কঠিন বিষয় ছিল মাশরাফিকে নতুনভাবে দেখা। তিনি শুধু বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়কই নন, তিনি তখন সরকার দলীয় এমপি, এবং সেই সরকার ছিল স্বৈরাচারী। এমন একজন প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়ানো প্রায় অসম্ভব ছিল। তাই আমি আমার এবং আমার পরিবার-পরিজনের যারা অনেকেই বাংলাদেশেই বসবাস করেন তাদের নিরাপত্তার কথা ভেবে কিছু করতে পারিনি।

গুম হওয়ার ভয়ে এতদিন আইনি লড়াইয়ে নামেননি উল্লেখ করে তিনি লেখেন, বিশেষ করে আমাকে যখন অবরুদ্ধ করে হুমকি দেওয়া হল, এবং সেই সময় সরকারের প্রভাবশালী কারও বিরোধিতা করলে গুম হওয়া খুব অবাস্তব আশঙ্কা ছিল না। তাই হুমকি আমাকে সিরিয়াসভাবেই নিতে হয়েছে। কিন্তু এখন? এখন সময় বদলেছে, ছাত্রদের নেতৃত্বে ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনের সফলতার পর দেশ নতুন আলোর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, এখন আমি ন্যায়বিচার পাবার ব্যাপারে আশাবাদী। আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশ ক্রিকেট এবং বাংলাদেশ একদিন সমস্ত বাধা অতিক্রম করবে। জীবনের হুমকি একবার সামনে আসার পর স্বাভাবিকভাবে নিরাপত্তার চিন্তা রয়েই যায়। কিন্তু মহান আল্লাহর উপর ভরসা রেখে আমি আইনি লড়াইয়ে নেমেছি এবং লড়াই চালিয়ে যাব, আমি শীঘ্রই একটি প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে সবকিছু পরিষ্কারভাবে তুলে ধরব, ইনশা আল্লাহ্‌। আশা করি আপনারা পাশে থাকবেন এবং আমাদের জন্য দোয়া করবেন।

এর আগে সিলেট স্ট্রাইকার্সের ফেসবুক পেজে একটি বিবৃতিতে মাশরাফির মালিকানা দখলের অভিযোগ দেয়। বিবৃতিতে বলা হয়, সিলেট স্ট্রাইকার্সের এক শতাংশের মালিকানাও মাশরাফি বিন মর্তুজার কখনো ছিল না। এখনও নেই। জোর করে মালিকানা লিখে নেওয়ার প্রশ্নই আসে না। ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিকানার যে কাগজপত্র বিসিবির কাছে আছে, সেখানেও মাশরাফির নাম নেই।

সূত্র: ইত্তেফাক




গাংনীতে অন্যকে ফাঁসাতে গিয়ে অস্ত্রসহ ১জন আটক

মেহেরপুরে গাংনীতে অন্যকে ফাঁসাতে গিয়ে রাশেদুল ইসলাম (৪৬) নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে র‌্যাব। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সোয়া ২ টার দিকে র‌্যাব-১২ এর মেহেরপুর ক্যাম্পের সদস্যরা গাংনী উপজেলার জুগিন্দা গ্রামে অভিযান চালিয়ে রাশেদুলকে অস্ত্রসহ আটক করে।

এসময় ১টি ওয়ান শার্টারগান ও ১টি হাসুয়া উদ্ধার করা হয়।

আটককৃত রাশেদুল জেলার গাংনী উপজেলার ধানখালা ইউনিয়নের জুগিন্দা গ্রামের মৃত কুদরত উল্লাহ ওরফে ভাদু মীরের ছেলে।

আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র‌্যাব-১২ এর মেহেরপুর ক্যাম্প কমান্ডার ও সহকারি পুলিশ সুপার এনামুল হক।

তিনি জানান, পূর্ব শত্রুতার কারণে আটককৃত রাশেদুল ইসলাম জুগিন্দা গ্রামের মৃত হানিফ শেখের ছেলে আব্দুল আলীম শেখকে ফাঁসানোর জন্য তার বসত ঘরের দক্ষিণ পাশে একচালা টিনের ছাউনি ও বাঁশের চাটাইয়ের বেড়া দ্বারা নির্মিত রান্না ঘরের ভিতরে ১টি শার্টারগান ও ১টি হাসুয়া লুকিয়ে রেখেছিল। তারপর সে কৌশলে র‌্যাবকে খবর দেয়। তার তথ্যের ভিত্তিতে অভিযানের সময় রাশিদুলের কথাবার্তা সন্দেহ মনে হলে তাকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে অন্যকে ফাঁসানোর কথা স্বীকার করে ।

আটককৃত আসামীকে আলামত সহ গাংনী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।




গাংনী পৌর আ. লীগ সভাপতি বাবলু ও সাবেক কাউন্সিলর নবির উদ্দিন আটক

গাংনী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সানোয়ার হোসেন বাবলু (৫৫) ও গাংনী পৌর যুবলীগের সহসভাপতি সাবেক পৌর কাউন্সিলর নবির উদ্দিনকে আটক করেছে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব—১২)।

মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১০ টার দিকে যুবলীগ নেতা ও গাংনী পৌরসভার সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র নবীর উদ্দিনকে কাঁচাবাজারে তার নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে এবং পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি সানোয়ার হোসেন বাবলুকে তার বাড়ি মহিলা কলেজপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে আটক করেন র‌্যাবের পৃথক দুটি টিম।

র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব—১২) সিপিসি—৩ গাংনী ক্যাম্পের কমান্ডার সিনিয়র এএসপি এনামুল হক এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, সুনিদৃষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাদের বাড়ি ও ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে এই দুজন নেতাকে আটক করা হয়েছে।
এসময় তাদের ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে।

র‌্যাব কমান্ডার জানান, আটককৃতদের ক্যাম্পে এনে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। বুধবার (২ অক্টোবর) সকালে দিকে এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে।




মেহেরপুরে জিয়া মঞ্চের ৩১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন

মেহেরপুরে জিয়া মঞ্চ এর ৩১ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (১ অক্টোবর)  বিকেলে ৫টার সময় বড় বাজার জেলা বিএনপির কার্যালয়ে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

মেহেরপুর জেলা জিয়া মঞ্চের আহবায়ক অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আলমগীর খান সাতু।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর জেলা বিএনপি’র যুগ্ন সম্পাদক ফয়েজ মোহাম্মদ, মেহেরপুর জেলা যুবদলের যুগ্ন সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম দুলাল।

মেহেরপুর জেলা জিয়া মঞ্চের সদস্য সচিব মনিরুল ইসলাম মনির সঞ্চালনায় আরো উপস্থিত ছিলেন নজরুল ইসলাম, ফুর্তি হাসান, রনি হোসেন, ইদ্রিস আলী সহ বিভিন্ন নেতাকর্মীরা।




জনবল নেবে আইপিডিসি ফাইন্যান্স

জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি অ্যাসিস্ট্যান্ট এক্সিকিউটিভ/সিনিয়র এক্সিকিউটিভ পদে একাধিক জনবল নিয়োগ দেবে। আগ্রহী প্রার্থীরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। নির্বাচিত প্রার্থীরা মাসিক বেতন ছাড়াও প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা অনুযায়ী আরও বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাবেন।

পদের নাম ও সংখ্যা: অ্যাসিস্ট্যান্ট এক্সিকিউটিভ/সিনিয়র এক্সিকিউটিভ, পদ : ১ জন।

আবেদনের যোগ্যতা: প্রার্থীর স্নাতক ডিগ্রি থাকতে হবে। এ ছাড়া কমপক্ষে ১ থেকে ৫ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। নারী-পুরুষ উভয়ে আবেদন করতে পারবেন। বয়সসীমা নির্ধারিত নয়। কর্মস্থল ঢাকায়।

বেতন: মাসিক বেতন আলোচনা সাপেক্ষে নির্ধারণ করা হবে। এ ছাড়া প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র্যাচুইটি, সাপ্তাহিক ২দিন ছুটি, বিমা, পারফরম্যান্স বোনাস এবং বছরে ২টি উৎসব বোনাস দেয়া হবে।

আবেদনের নিয়ম: আগ্রহীদের অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে।

আবেদনের সময়সীমা: আগামী ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত আবেদন করা যাবে।
সূত্র: কালেবেলা




গাংনীতে দুই শিক্ষিকার বিচার চেয়ে ইউএনও’র দ্বারস্থ শিশু শিক্ষার্থীরা

‘কারনে অকারনে আমাদের অকথ্য ভাষায গালিগালাজ করে, কান ধরে উঠাবসা করিয়ে নেয়। প্রতিদিনই মারধর করে স্কুলের দুই শিক্ষিকা। প্রধান শিক্ষককে অভিযোগ করেও উপকার পাইনি। উপরন্ত প্রধান শিক্ষক আমাদের কথা বলতে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছে। দুই শিক্ষিকার হাতে নির্যাতিত চোখ মুছতে মুছতে নির্যাতনের এমন বর্ণনা করছিলেন প্রাথমিক পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা।

এর আগে মেহেরপুর প্রতিদিনে অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিলো যা লিঙ্কে গাংনীতে দুই সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ

বলছিলাম, গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে বিচার চাইতে আসা মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার বাঁশবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কথা।

আজ মঙ্গলবার (১অক্টোবর) দুপুরে গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে দলবেধে বিচার চাইতে আসে বাঁশবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেনী থেকে পঞ্চম শ্রেনীর প্রায় অর্ধশত কমলমোতি শিক্ষার্থী।

শিক্ষার্থীরা জানায়, বাঁশবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আমরা। আমাদের স্কুলের শিক্ষিকা সাম্মিয়ারা দিপ্তী ও মোছাঃ রুহিনা খাতুন শ্রেনী কক্ষে আসার সময় হাতে ছড়ি নিয়ে আসেন। আমাদের বিনা কারনে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। কান ধরে উঠাবসা করিয়ে নেয় এবং প্রতিনিয়ত মারধর করে। আমাদের অনেক জোরে জোরে মারে। তখন আমাদের চোখের পানিতে বুক ভেসে যায়। সাম্মিয়ারা দিপ্তী ও মোছাঃ রুহিনা খাতুন স্যার ক্লাসে এসে চেয়ারে বসে শুধু ঘুমাই। কেউ কথা বল্লেই আমাদের মানসিক ও শারীরীক নির্যাতন করে। প্রধান শিক্ষককে বিষয়টি আমরা একাধিকবার জানিয়েছি । প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের পক্ষে কথা বল্লে তাকেও ওই শিক্ষক সাম্মিয়ারা দিপ্তী ও মোছাঃ রুহিনা খাতুন প্রধান শিক্ষককে গালিগালাজ করে। আজ মঙ্গলবার সকালেও আমাদের বিনা কারনে গালিগালাজ করেছে, আমাদের বাবা মায়ের নামে আজেবাজে কথা বলেছে। আমরা সকল শিক্ষার্থীরা এক কিলোমিটার পায়ে হেটে ওই দুই শিক্ষিকার বিচার চাইতে এসেছি। ইউএনও স্যারের কাছে। ইউএনও স্যার আমাদের বিচার না করলে আমরা কেউ ঘরে ফিরে যাবনা। আমাদের আসতে দেখে উপজেলা নির্বাহী অফিসার উপর থেকে নেমে আসেন এবং আমাদের সভাকক্ষে বসিয়ে মনযোগ সহকারে আমদের কষ্টের কথা শোনেন।

প্রথম শ্রেনীর শিক্ষার্থী তাসমিম বলে, সাম্মিয়ারা দিপ্তী ম্যাডাম আমাকে কান ধরে টান দেয় এবং ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়। এতে আমি পায়ে খুব আঘাত পেয়েছি। দ্বিতীয় শ্রেনীর শিক্ষার্থী মুন্না বলে,ম্যাডাম আমাকে ডাস্টার দিয়ে মাথায় মেরেছে। চতুর্থ শ্রেনীর শিক্ষার্থী আছিয়া খাতুন বলে,ওই দুই ম্যাডাম ক্লাসে এসে আমার বাবা ও মায়ের সম্পর্কে আজেবাজে কথা বলে। পঞ্চম শ্রেনীর শিক্ষার্থী দোয়ামনি বলে, আমরা কোন দোষ করিনি তবুও আমাদের মারধর আর গাল দেয়। পঞ্চম শ্রেনীর শিক্ষার্থী সাবিহা, তৃতীয় শ্রেনীর শিক্ষার্থী সাদিয়া বলে, ওই দুই ম্যাডাম ক্লাসে এসে টেবিলে মাথা দিয়ে ঘুমিয়ে যায়। কেই একটু কথা বল্লেই আমাদের হাতে ও পিঠে ছড়ি দিয়ে মারেন। শুধু মারনই না ওই দুই শিক্ষক মাসে দুই -একদিন স্কুলে আসেন, হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে চলে যান এমন অভিযোগ তোলেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের দেখে হতবাক হয়ে পড়েন উপজেলা নিবাহী কমকর্তা। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ শুনতে অফিস থেকে নেমে সভাকক্ষে বসেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা। গাংনী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নাসিরুদ্দিন, নির্বাচন কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম, ক্লাস্টার অফিসার মোঃ আলাউদ্দিন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছাঃ নুরুন্নাহার এসময় উপস্থিত ছিলেন।

সভাকক্ষে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রীতম সাহা সকল শিক্ষার্থীদের কথা শুনছেন। শিক্ষার্থীরা শিক্ষক কর্তৃক তাদের নির্যাতের বর্ণনা করছে। শিক্ষকের তাৎক্ষণিক বিচার চেয়ে অনড় শিক্ষার্থীরা।
বর্ণনা শুনে তাৎক্ষনিক ভাবে প্রধান শিক্ষককে তলব করে শিক্ষার্থীদের সামনে উপস্থিত করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। শিক্ষার্থীদের মুখে নির্যাতনের বর্ণনা শুনে হতবভম্ব হয়ে পড়েন কক্ষে থাকা সকলেই। পরিস্থিতি সামলাতে অভিযুক্ত শিক্ষক সাম্মিয়ারা দিপ্তী ও মোছাঃ রুহিনা খাতুনকে ওই বিদ্যালয় থেকে অন্যত্র সংযুক্তি করা হয় এবং তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়। পরে শিক্ষার্থীরা শান্ত হলে সকল শিক্ষার্থীকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একটি বাস যোগে আবারও বিদ্যালয়ে রেখে আসেন।

জানাগেছে, ১৯৩৩ সালে বাঁশবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়ে মোট ৬জন শিক্ষক রয়েছে। প্রধান শিক্ষক মোছা: নুরুন্নাহার যোগদান করেন ১৯৯৫ সালে, শিক্ষক তহমিনা খাতুন ১৯৯০ সালে, ফারহানা লাইলি ২০০৮ সালে, মাজহারুল ইসলাম ২০০৮ সালে, সাম্মিয়ারা দিপ্তী ২০১০ সালে এবং রুহিনা খাতুন যোগদান করেন ২০২০ সালে। বিদ্যালয়ে বর্তমানে মোট শিক্ষার্থী রয়েছে ১৪৫জন।

শিক্ষার্থী অভিভাবক রিপন আলী ও গোলাম মস্তফা বলেন, মাঝে মধ্যেই আমার মেয়ে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি যায়। পরের দিন আর স্কুলে আসতে চাইনা। মাঝে মধ্যে রাতে ঘুমের মধ্যেও মারছে মারছে বরে চিৎকার করে ওঠে। আমরা ওই শিক্ষকের বিচার চাই।

প্রধান শিক্ষক মোছা: নুরুন্নাহার বলেন, আমি এর আগেও শিক্ষার্থীদের মারধর করা নিয়ে ওই দুই শিক্ষককে নিষেধ করি। পরে তারা আমার সাথেও মারমুখি আচরণ করে। এবং বিভিন্ন খারাপ ভাষায় গালিগালাজ করে। আজকে শিক্ষার্থীরা নির্যাতনের শিকার হয়ে আমাকে কিছু না জানিয়ে বিচার চাইতে এসেছে।

গাংনী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো: নাসিরুদ্দিন বলেন, এর আগে একবার ওই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিল কয়েকজন শিক্ষার্থী। তাদের সতর্ক করে দেয়া হয়েছিল। আবারও তারা শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। প্রাথমিক ভাবে ওই দুই শিক্ষককে অন্যত্র সংযুক্তি করা হবে।

গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা বলেন, আমি অফিসে একটি মিটিং করছিলাম। হঠাৎ সিসি ক্যামেরায় দেখি স্কুল ড্রেস পরে অফিসের নিচে দাঁড়িয়ে আছে প্রায় অর্থশত শিক্ষার্থী । আমি মিটিং শেষ না করেই দ্রত নিচে নেমে আসি। তাদের কথা শুনি এবং তাৎক্ষণিকভাবে উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে ডেকে অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে অন্যত্র বদলির ব্যবস্থাসহ তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। পরে ওই শিক্ষার্থীদের আমি সাথে নিয়ে স্কুলে পৌছে দিয়ে এসেছি। এবং শিক্ষার্থীদের যেন কোনরকম হয়রানী বা ভয়ভীতি দেখানো না হয় সে ব্যপারেও সতর্ক করা হয়েছে।