আলমডাঙ্গায় শ্রমিক সংকটে বিপাকে পড়েছে কৃষকেরা
চলতি বোরো মৌসুমে আলমডাঙ্গা উপজেলার বিভিন্ন মাঠে হাজার হাজার হেক্টর পাঁকা ধান। প্রতিদিন রোদ মেঘের খেলায় আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে কৃষকেরা। এদিকে, ধান কাটতে চাপ বাড়ায় অধিক টাকা ব্যয় করেও শ্রমিক মিলছে না কৃষকদের। ধান কেটে ঘরে তোলা নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন তারা। গত বছর স্থানীয় শ্রমিকেরা ধান কাঁটা ও বাঁধায় বিঘা প্রতি ২ হাজার টাকা নিলেও বর্তমানে তা বেড়ে ৩ হাজার টাকায় পৌঁছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চলতি মৌসুমে আলমডাঙ্গায় বোরো চাষ হয়েছে ১৪ হাজার হেক্টর জমিতে।
কালিদাসপুর গ্রামের কৃষক মনজু আহমেদ নামে এক কৃষক বলেন, তীব্র দাবদহে পর থেকে প্রকৃতির বৈরিতা চলছে। পরপর ২ দফায় কাল বৈশাখী তাণ্ডব চালিয়েছে মাঠগুলোতে। ফলে অনেক গাছ মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে। বৃষ্টির পানির পরিমাণ কম হলেও নিচু জায়গা গুলোতে হঠাৎ বৃষ্টিতে প্লাবিত হবার শঙ্কায় রয়েছে কৃষকেরা। ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর ফলন হবে অনেক কম। গেলো বছরগুলোতে প্রতি বিঘা জমিতে ২৫-২৮ মণ ধান পাওয়া গেছে। এ বছর ১৮-২০ মণ ধান পাওয়া কঠিন। সব মিলিয়ে হতাশার মধ্যে আছি।
আইলহাঁস গ্রামের কৃষক মফিজ উদ্দীন জানান, একদিকে মাঠের পর মাঠ ধান নুয়ে পড়ে আসে কিন্তু কাটার মতো শ্রমিক নেই। অল্প কিছু শ্রমিক কাজ করছে। তারপর তাদের কাজ দিতে হচ্ছে উচ্চ মূল্য। গত বছর এক বিঘা জমির ধান কাটতে কাটতে খরচ হয়েছে ২ হাজার টাকা, এ বছর লাগছে ৩ হাজার টাকা। এরপরও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না।
নাগদাহ গ্রামের কৃষক সারোয়ার হোসেন জানান, এ বছর সবদিক দিয়ে কৃষকের লোকশান। একদিকে শ্রমিক সংকট অন্যদিকে বাজারে দাম পাওয়া যাচ্ছে না।
তিনি আরো জানান, আকাশে রোদ মেঘের খেলায় আতঙ্কের মধ্যে যাচ্ছি। ৫ বিঘা জমির ধান ক্ষেতে পড়ে আছে। ঝড় বৃষ্টি হলেই ধান ঝরে পড়বে। এতে বড় লোকসানের মধ্যে পড়তে হবে। সরকারি দাম ১২’শ টাকা নির্ধারণ করলেও খুচরা বাজারে ১ হাজার থেকে ১১’শ টাকায় ক্রয় করছে আড়ৎ মালিকেরা।
আলমডাঙ্গা মিল মালিক সংগঠনের সভাপতি আশরাফুল ইসলাম জানান, উঠতি মৌসুমের ধান ইতোমধ্যে বাজারে আসতে শুরু করেছে। বর্তমানে বাজারে আসা ধানে আদ্রতা ও চিটার পরিমাণ অনেক বেশি। ফলে এসব ধান বেশি দামে কিনলে লোকশান গুনতে হবে আমাদের। তাই বাজারে ধানের দাম কিছুটা কম।
আলমডাঙ্গা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জানান, এরইমধ্যে সরকারিভাবে ধান সংগ্রহ শুরু হয়েছে। সরকারের শুরু হওয়া ধান ক্রয় কার্যক্রম বেগবান হলেই বাজারে ধানের দাম বাড়বে বলে আশা করা যাচ্ছে।