সারাদেশে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা চুড়ান্তভাবে প্রকাশ করা হয়েছে-মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ২২ টি বাদে সারা দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা চুড়ান্তভাবে প্রকাশ করা হয়েছে। উপজেলা ভিত্তিক মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা মন্ত্রণালয়ের ওয়েব সাইটে দেওয়া হয়েছে। তবে, উপজেলা পর্যায়ের যাচাই বাছাই কমিটি যাদের নাম মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা থেকে নামুঞ্জর করেছে তাদেরকে আপিল করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এখনো ২২ টি উপজেলাতে যাচাই বাছাইয়ের কাজ বাকি আছে। সেজন্য অল্পকিছু মুক্তিযোদ্ধাদের আপিল নিস্পত্তি অপেক্ষামান। সেগুলো আগামী জুন মাসের মধ্যে নিস্পত্তি হয়ে যাবে।

আজ ১৭ এপ্রিল ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে আয়োজতি দিনব্যাপি বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিয়ে স্মৃতিসৌধে পুস্পার্ঘ অর্পণশেষে সাংবাদিকদের দেওয়া বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি। এসময় বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

রাজাকারদের তালিকা প্রণয়ন প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, আগে রাজাকারদের তালিকা তৈরী করার বৈধ কোনো এখতিয়ার জাতীয় মুক্তিযোদ্ধ কাউন্সিলের ছিলনা। বিগত দিনে এ নিয়ে জাতীয় সংসদে আইন পাশ করা হয়েছে। ৭১ সালে যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করেছিল। রাজাকার আলবদর আল সামস স্বাধীনতা বিরোধীদের তালিকা প্রস্তুত করার জন্য এবং কি প্রক্রিয়ায় হবে সেটিই সংসদে পাশ করা হয়েছে।

এখন আমরা মুক্তিযুদ্ধ সংসদীয় কমিটির সভাপতি শাহাজান খান এমপিকে আহবায়ক করে কমিটি গঠণ ও রাজাকারদর তালিকা প্রনয়নের দায়ীত্ব দেওয়া হয়েছে। সেই কমিটির মাধ্যমে খুব অল্পদিনেই রাজাকারদের তালিকা প্রণয়নের কাজ শুরু করা হবে।

সামনের জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উগ্র সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদের কোনো আবির্ভাব লক্ষ করছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, উগ্র মৌলবাদ, জঙ্গী তৎপরতা প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। ১৯৭১ সালে যারা আমাদের এই মহান স্বাধীনতাকে মেনে নেননি, সেইদিনেও তারা বিরোধীতা করেছিল, তাদের বংশধরেরা এখন আরও বেশী সংঘবদ্ধ। তারা যখনি কোনো সময় সুযোগ পাই, তখনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার স্বপক্ষের সরকারকে বিব্রত এবং মহান স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য অব্যাহতভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আজকের সফল রাষ্ট্র নায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই সরকার ওই সব অপশক্তিকে দমণ করে রেখেছে।

তবে, দেশী বিদেশী প্ররোচনায় ওই অপশক্তি দেশের স্বাভাবিক অবস্থাকে দিগম্বর করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এই অপশক্তি যাতে এইদেশে শিকড় গাড়তে না পারে সেই জন্য সরকার, আইনশৃংখলাবাহিনী, জনগণ ও মুক্তিযুদ্ধের সকল পক্ষ সচেতন রয়েছে।




জাতীয় পতাকা উত্তোলন মুজিবনগর দিবসের কর্মসূচী শুরু

আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, মুজিবনগর স্মৃতিশৌধে পুস্পমাল্য অর্পণ, গার্ড অফ অনার প্রদান ও কুচকাওয়াজ প্রদর্শণের মধ্য দিয়ে ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়েছে।

সকাল ৯ টার সময় মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে আনুষ্ঠানিকভাবে পতাকা উত্তোলন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।

আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, জনপ্রশাসন প্রতমিন্ত্রী, মেহেরপুর জেলা প্রশাসন মুজিবনগর স্মৃতি সৌধে পুস্পমাল্য অর্পণ করেন।

মুজিবনগর আম্রকাননে শেখ হাসিনা মঞ্চে সকাল ১০.৪৫ টায় মুজিবনগর দিবসের বিশাল জন সভায় অনুষ্ঠিত হবে।

মেহেরপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিশাল জন সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখবেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খাজা মিয়া, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাসিম এমপি, মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক এমপি, অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, মেহেরপুর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের উপদফতর সম্পাদক সায়েম খান, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সদস্য পারভীন জামান কল্পনা এমপি, গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার এমপি, মেহেরপুর-২ আসনের এমপি ও গাংনী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন এমপি, মেহেরপুর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও গাংনী উপজেলা চেয়ারম্যান এম এ খালেক ।

এছাড়া যোগ দেবেন বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন জেলার এমপিসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।

সকাল ৬ টার সময় মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে আনুষ্ঠানিকভাবে পতাকা উত্তোলন করে মুজিবনগর দিবসের কর্মসূচীর উদ্বোধন উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনিমেষ কুমার ও মুজিবনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী রাসেল।




মুজিবনগরের নতুন প্রকল্পের কাজ শুরু কবে ?

মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশের প্রথম সরকারের শপথের স্মৃতিবিজড়িত স্থান মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলা। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল প্রথম সরকারের শপথের মধ্যে দিয়ে যার নামকরণ করা হয় মুজিবনগর। স্বাধীনতার ৫২ বছরে মুজিবনগরে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্র, ৫০০ মিটার দৈর্ঘ্যর স্বাধীনতা সড়ক বাস্তবায়ন হয়েছে। যে সড়ক দিয়ে যাত্রী পারাপার ও পণ্য আমদানী রপ্তানীর জন্য গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে স্থলবন্দরের। সে গেজেট প্রকাশও বছর গড়িয়েছে। এছাড়া নতুন করে চারশ নয় কোটি নয় লক্ষ টাকা বরাদ্দের আন্তর্জাতিক মানের ‘মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প’ নামে প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে।

নতুন প্রস্তাবিত প্রকল্প সম্পন্ন হলে পাল্টে যাবে মুজিবনগরের চিত্র। মুজিবনগরকে দেখেই পুরো মুক্তিযুদ্ধের চিত্রপট পর্যটকের চোখের সামনে ভেসে উঠবে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওবেয়সাইট থেকে জানা গেছে, ২০২১ সালের ২০মে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং সেখান থেকে কিছু সংশোধনী দেওয়া হয়েছে। সে সংশোধনীতে এখনো আটকে রয়েছে প্রকল্পটি।

নতুন প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক স্কাল্পচার গার্ডেন, বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার মেমোরিয়াল মুর‌্যাল ও শপথ গ্রহণের গ্রাউণ্ড, শেখ হাসিনা মঞ্চ, প্যানোরমা ও অ্যাম্পি থিয়েটার, হিস্টোরি ওয়াক, ৩ তলা বিশিষ্ট অ্যাডমিন ব্লক, ২ তলা বিশিষ্ট মাল্টিপারপাস ব্লক, ৪তলা বিশিষ্ট ট্রেণিং সেন্টার, ৪তলা বিশিষ্ট অফিসার্স ও স্টাফ কোয়ার্টার, সুইমিং পুল, ফুড জিয়স্ক ও রেস্ট রুম, রেন্টাল সপ, ওয়াচ টাওয়ার, ভিভিআইপি ও ভিআইপি পার্কিং, সাধারণ পার্কিং, মাছ ধরার ডেক, রোপ ওয়ে, ২তলা বিশিষ্ট বোট ক্লাব, সুপেয় পানির ডিসপেনসার, ব্যাংক প্রটেকশনসহ লেক, ব্রীজ, কনটোর্স, আইসল্যাণ্ড, ওয়াচ ওয়ে, চালকদের আবাসন, শিশু পরিবার ও ডরমেটরি, ২তলা বিশিষ্ট স্কুল, টেনিস কাম বাস্কেটবল কোর্ট, প্লে গ্রাউণ্ড, লেজার শো ওয়াটার শিল্ড।
আর এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে হলে নতুন ৫৬.০৫ একর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। সবমিলিয়ে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্রটি ১২৭ একরে রুপ নেবে। জমি অধিগ্রহণসহ নতুন প্রকল্প বাস্তবায়নে বরাদ্দ ধরা হয়েছে প্রায় ৪১০ কোটি টাকা। প্রয়োজনে প্রকল্পের অর্থের বাড়ানো হবে এমনটা জানা গেছে।

প্রায় দুই যুগ আগে ৭২ একর জমি অধিগ্রহণ করে প্রায় তিনশ কোটি টাকা ব্যয়ে বৈদ্যনাথতলায় নির্মাণ করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্র। তবে নির্মিত বেশ কিছু স্থাপনায় ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে। প্রকল্পের মধ্যে ৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত মুক্তিযুদ্ধে সেক্টর ভিত্তিক বাংলাদেশ মানচিত্র নির্মাণ কাজ শেষ হয়ে ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়নি। মানচিত্রে পুরো বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন চিত্র ফুটে উঠলেও মুজিবনগরের শপথ নেওয়ার কোন চিত্র সেখানে স্থান পায়নি। গার্ড অব অনারের ভাস্কর্যে ১২ জন আনসার সদস্যর বিপরীতে দেখানো হয়েছে ৮ জনকে। মানচিত্রে সেক্টর ভিত্তিক কমাণ্ডারদের ভাস্কর্যও নেই।

মানচিত্রের বাইরে নির্মিত বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের ভাস্কর্যসহ অন্যান্য ভাস্কর্যগুলো এতটাই নিম্ম মানের যা মাঝে মধ্যেই ভেঙ্গে পড়ে। অনেকগুলোর ভেতরের রডের বদলে চিকন তার দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে শিলাবৃষ্টি বা ঝড় হলে সেগুলো ভেঙে যায়। কয়েকদফা সেগুলো পুনরায় রিপিয়ারিং করাও হয়েছে। এছাড়া প্রতিবছর ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসকে ঘিরে রিপিয়ারিংসহ পালিশ করে দৃষ্টিনন্দন করে তোলা হয়।

আন্তর্জাতিক মানের করে ১৭ এপ্রিল ১৯৭১ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম সরকারের শপথ গ্রহণের স্থান, ঐতিহাসিক ঘটনা প্রবাহের স্মৃতি, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও চেতনা সমৃদ্ধ তথ্য ও নিদর্শন দেশবাসী ও তথা ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এবং বিদেশীদের কাছে মূর্ত করে তুলতে শত শত কোটি টাকা ব্যয়ে স্মৃতিকেন্দ্র নির্মান করা হয়েছে । অথচ উদ্বোধনের আগেই নষ্ট হয়ে যাওয়াতে পর্যটকরা আহত হচ্ছেন।

মেহেরপুর গণপূর্ত বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৮ সালে কাজ শুরু করে মাঝে প্রকল্প কাটাছেড়া করা হয়। ফলে কাজটি শেষ হয় ২০১১ সালে। অতিনিম্নমানের কাজ হবার কারণেই ভাষ্কর্যগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। প্রকল্পর অন্যান্য কাজ এখনও অসমাপ্ত আছে।

আমবাগান পরিচর্যার জন্য অপেক্ষা
ঐতিহাসিক আম্রকাননে বর্তমানে ১১০৭টি গাছ বেঁচে রয়েছে। পরিচর্যার অভাবে ইতোমধ্যে শতাধিক গাছ মারা গিয়েছে। ফলে বাগানটি ক্রমশই শ্রীহীন হয়ে উঠছে। জীবিত ১১০৭টি গাছের পরিচর্যার জন্য মেহেরপুর হর্টিকালচার সেন্টার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সমন্বয়ে ৮০ লাখ টাকা ব্যয় নির্ধারণ করে একটি প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে। কয়েক মাস আগে কৃষি মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক খান মুজিবনগর পরিদর্শনে গিয়ে ওই প্রকল্পটি উদ্বোধন করেন। একটি গাছকে পাইলট হিসেবে ধরা হয়েছে। ফলাফল আসলে পুরো প্রকল্পটি শুরু হবে।

স্বাধীনতা সড়ক
১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগদিতে ভারতের কলকাতা থেকে যে মেঠোপথ ধরে জাতীয় চার নেতাসহ দেশ-বিদেশের সাংবাদিকরা এসেছিলেন সেই মেঠপথটিকে স্বাধীনতার অর্ধশত বছর উৎযাপন উপলক্ষে বর্তমান সরকার ‘স্বাধীনতা সড়ক’ নামে নামকরণ করেছেন। ওই মেঠপথটির বাংলাদেশের অংশ ৫০০ মিটার সড়ক ১ কোটি ৪ লাখ টাকা ব্যায়ে ইতিমধ্যে পাকাও করা হয়ে গেছে। ২০২১ সালের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে এ সড়কের উদ্বোধন করেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী।

দুই যুগ আগে স্থাপিত মুজিবনগর কমপ্লেক্সে বর্তমানে যা আছে:
১১টি মন্ত্রনালয়ের প্রায় ৩’শ কোটি টাকা বরাদ্দে গড়ে উঠেছে মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্র । এর মধ্যে পর্যটক মোটেল, শপিংমল, শিশু পরিবার, ডাকঘর, হেলিপ্যাড, টেলিফোন এক্সচেঞ্জ, ছয় দফা ভিত্তিক মনোরম গোলাপ বাগান, অত্যাধুনিক মসজিদ, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বাংলাদেশের মানচিত্র ও জাদুঘর। এখন পর্যন্ত এসব কোন স্থাপনাই আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়নি। অথচ প্রকল্পের প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ধাপের কাজ শেষ হয়েছে অন্তত ১০ বছর আগে। সবশেষে সাড়ে আট কোটি টাকা ব্যয়ে বড় মিলনায়তন নির্মাণের কাজও শেষ হয়েছে।

তবে এখনো প্রশাসনিক প্লাজা, অ্যাপ্রোচ রোড, বিদ্যুৎ, জেনারেটর ক্রয় (১০০-কেভিএ), মানচিত্রে স্টেজে কাঠের কাজ, সিঁড়িতে এসএস রেলিং, জলছাদ র‌্যাম্প ও এসপিএমসিবি পাওয়ার সকেট, আন্ডার গ্রাউন্ড সার্ভিস লাইন কাজ আজও শেষ হয়নি।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপটেন (অব) আব্দুল মালেক বলেন, ১৭ এপ্রিল আমাদের গৌরবের, অহংকারের। দিবসটিতে শুধু মুজিবনগর উপজেলায় ছুটি ঘোষনা নয়, জাতীয় শপথ দিবস করে দিনটি সরকারি ছুটি ঘোষনা করার দাবী জানাচ্ছি।
মেহেরপুরের গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শম্ভু রাম পাল বলেন, ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে যাদুঘর সংস্কার, রাস্তা সংস্কার, রঙ করা সহ কমেপ্লক্স চত্ত্বর পরিস্কার পরিচ্ছন্নসহ প্রায় ২৬ লাখ টাকা বরাদ্দ ধরে সংস্কার কাজ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম বলেন, সর্বশেষ যে প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে তা কোন অবস্থায় আছে আমার জানা নেই। এটি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিষয়। তবে মুজিবনগর দিবসকে ঘিরে জেলা প্রশাসন সকল ধরণের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব আবু বাকের তৌহিদ বলেন, মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পটি প্লানিং কমিশনে পাঠানো হয়েছিলো । সেখানে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা হয়েছে। সভা থেকে কিছু সংশোধনী দেওয়া হয়েছে। সংশোধন করে আবার প্লানিং কমিশনে পাঠানোর প্রক্রিয়ায় রয়েছে।
যেভাবে ১৭ এপ্রিল:

অনেক জীবন এবং এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ পেয়েছিল তার আসল বাস্তবতা। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞগণ বাঙালী জাতির আন্দোলনের কারণ সম্পর্কে সেই ১৮৮৫ সাল থেকে শুরু করে ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচন পর্যন্ত অনেক ঘটনায় উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশীদের স্বপ্ন চূড়ান্তভাবে বাস্তবায়িত হয়েছিল ১৯৭১ সালে ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর আম বাগানে। যেখানে বাংলাদেশের প্রথম সরকার শপথ নিয়েছিল। সেখানে সেই মহতী অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করেছিলেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সাংবাদিক, পর্যবেক্ষক এবং বিশিষ্ট বাজনীতিবিদগণ। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র নামে একটি রেডিও সেন্টার স্থাপন করে প্রথম সরকারের শপথ অনুষ্ঠান সারাদেশে সম্প্রচার করা হয়েছিল এবং মুজিবনগর সেদিন পেয়েছিল ঐতিহাসিক মর্যাদা।
১০ এপ্রিল ১৯৭১ এক ঘোষনার মাধ্যমে গণ-প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়েছিল যা মুজিবনগর থেকে ইস্যু করা হয়েছিল । এখানে উল্লেখ্য এই ঘোষনা বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পূর্বের ঘোষনাকে দৃড়ীকরন করে। বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে বাংলাদেশের প্রথম প্রবাসী সরকারের রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম এবং প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন তাজউদ্দীন আহমেদ।

সে সময় পাকিস্তানী সামরিক বাহিনী মেহেরপুরকে করতলে নিলেও পৌঁছুতে পারেনি বৈদ্যনাথতলায়। তদানীন্তন মেহেরপুর মহাকুমার বাগোয়ান ইউনিয়নের নিভৃত পল্লী বৈদ্যনাথতলা। স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সমস্ত সময়টুকু এ জায়গাটি ছিল নির্বিঘ্ন। বি্িরটশ শাসনামলে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার অন্তর্গত মেহেরপুর ছিল মহাকুমা শহর । সে সুবাদে কলকাতার সাথে এই বৈদ্যনাথতলার সরাসরি সড়ক যোগাযোগের ব্যাবস্থা ছিল। সরকার গঠনের পর মুজিবনগরকে অন্তর্র্বতীকলিন রাজধানী ঘোষনা করা হয়েছিল। পাশাপাশি স্বাধীতার ফরমান জারি করে মুক্তিযুদ্ধ শুরু করা হয়েছিল। ওই সময় ও শপথ গ্রহণের স্থানকে চিরস্মরণীয় করে রাখতে বৈদ্যনাথতলা নাম পরিবর্তন করে নাম রাখা হয় মুজিবনগর। তখন থেকে ১৭ এপ্রিলকে বলা হয় মুজিবনগর দিবস। এবং সেই থেকেই এই দিনটি মুজিবনগর দিবস হিসাবে পালিত হয়ে আসছে। মুজিবনগর সরকার দেশকে ৬টি জোনাল কাউন্সিলে ভাগ করেছিল যা জনগনের সমস্যার দেখভাল করত। সে সময় মুজিবনগর হয়ে উঠেছিল বাংলাদেশের প্রেরণার উৎস এবং জাতির ভাবমূর্তি অক্ষ্ন্নু রাখতে যথাসম্ভব যাকিছু করার ছিল তাই করেছিল। মুজিবনগরে বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠন আমাদের মুক্তি সংগ্রামে এবং ইতিহাসে এক মাইল ফলক। যা বিশ্বকে সাহায্য করেছিল আমাদের মুক্তিয্দ্ধুকে সমর্থন করতে। পরবর্তীতে ৯মাস যুদ্ধ শেষে চুড়ান্তভাবে স্বীকৃত পেয়েছিল একটি নতুন স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে।

আজকের কর্মসূচী
সকাল ৯টায় মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, গার্ড অব অনার প্রদান। সকাল ১০টায় শেখ হাসিনা মঞ্চে জাতীয় ও স্থানীয় নেতাদের সমন্বয়ে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম পর্বের অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবে। পরে সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে শেখ হাসিনা মঞ্চে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলির সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ। অতিথি হিসেবে থাকবেন উপদেষ্টামণ্ডলির সদস্য খায়রুজ্জামান লিটন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাসিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ও মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরহাদ হোসেনসহ আশেপাশের জেলার সংসদ সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন বলে জেলা প্রশাসন থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে।




চুয়াডাঙ্গায় নাগরিক সুরক্ষায় সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের খোলা চিঠি

চমৎকার চুয়াডাঙ্গার প্রত্যাশায় সকলকেই আইন মেনে চলার অনুরোধ জানিয়ে অতি সাম্প্রতিক তীব্র দাবদাহ এবং ঈদ উপলক্ষে সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য নির্দেশনা দিয়ে খোলা চিঠি প্রদান করেছেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীম ভূইয়া।
খোলা চিঠিতে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীম ভূইয়া বলেন ১. বিশেষ প্রয়োজন না হলে সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত বাসা থেকে বের না হওয়ার অনুরোধ রইল। ২. হিট স্ট্রোক রোধে প্রচুর পরিমাণ নিরাপদ পানি, ফলের ঠান্ডা রস খাওয়ার জন্য বলা হলো। (বিশেষত রোজাদার,শিশু, বয়স্কদের জন্য)
৩. কমিউনিটি ক্লিনিক গুলোতে খাবার স্যালাইন মজুত রয়েছে। প্রয়োজনবোধে কমিউনিটি ক্লিনিক এর সেবা নেয়া যেতে পারে।
৪. ভুট্টার জমিতে ময়লা / ভুট্টার অবশেষ না পোড়ানোর জন্য কঠোর ভাবে নির্দেশনা দেয়া হলো। ৫. সিগারেটের অবশিষ্টাংশ / কয়েল থেকে যেন আগুন না লাগে সে বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। ৬. মার্কেট/ বাজার গুলোতে নাইট গার্ড এর ব্যবস্থা / সিসিটিভি লাগানোর নির্দেশনা রইল। ফায়ার এক্সটিংগুসার ইন্সটল করতে হবে বাধ্যতামূলকভাবে। ৭. ঈদ উপলক্ষে বর্ধিত বাস/ গাড়ি ভাড়া না নেয়ার কঠোর ভাবে নির্দেশনা দেয়া হলো। ৮. মহাসড়কে আঁকাবাঁকা ভাবে মোটর সাইকেল চালানো সম্পুর্ণ ভাবে নিষেধ করা হলো। ৯.ঈদ উপলক্ষে ডিজে পার্টির নামে শব্দদূষণ করা যাবে না। ১০. ৯৯৯ এ ফোন করে অভিযোগ জানানো যাবে। এছাড়াও সদর থানায় অথবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর কার্যালয়ে অভিযোগ দেয়া যাবে।




জীবননগরে দিনের বেলায় বাড়িতে ভয়াবহ অগ্নিকান্ড ২লক্ষ টাকার ক্ষতি

জীবননগরে দিনের বেলায় বাড়িতে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। আজ রবিবার বিকাল ৪ টার সময় জীবননগর উপজেলার বাকা ইউনিয়নের প্রতাবপুর গ্রামের মৃত মোতালেব হোসেনের ছেলে বাবলু মন্ডলের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে এতে ২লক্ষ টাকার ক্ষতিসাধন হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী সুত্রে জানা গেছে, প্রতিদিনের ন্যায় আজ রবিবার বিকালে রান্না শেষে রান্না ঘর থেকে বেরিয়ে আসে বাবলু মন্ডলের স্ত্রী এ সময় হঠাৎ রান্না ঘরের চুলা থেকে আগুনের উৎপত্তি হয়। গোটা রান্না ঘর আগুনে পুড়ে যায় এক পর্যায় রান্না ঘরের পাশে থাকা খড়ির ঘর, বিচালী ঘরে আগুন ধরে ভয়াবহ রুপ ধারন করে।

এ সময় স্থানীয় লোকজন আগুন নিয়ন্ত্রনে আনার চেষ্ঠা করে। অবশেষে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আগে জীবননগর ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা ঘটনা স্থানে ছুটে এসে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে।




জীবননগরে ছিন্নমূল মানুষের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ

জীবননগরে ছিন্নমূল মানুষের মাঝে ঈদ উপহার পোশাক বিতরণ করা হয়েছে। আজ রবিবার বিকাল ৩টার সময় জীবননগর ইয়ুথ এ্যাসেম্বলির আয়োজনে উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের ধোপাখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে অসহায় দরিদ্র মানুষের মাঝে পাঞ্জাবী, শাড়ী ও ফতুয়া বিতরণ করা হয়।

জীবননগর ইয়ুথ এ্যাসেম্বলির সভাপতি মিঠুনর মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা লোকমোর্চার সভাপতি এ্যাড. মোঃ বেলাল হোসেন ।

বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, জীবননগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আবু মোঃ আব্দুল লতিফ অমল, মনোহরপুর ইউনিয় পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন খান, ওয়েভ ফাউন্ডেশনের সিনিয়ার কর্মকর্তা মোঃ কামরুজ্জামান যুদ্ধ, ওয়েভ ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম লিটন, রইচ উদ্দিন, মিরাজ হোসেন, জীবননগর ইয়ুথ এ্যাসেম্বলির সদস্য লাবনী খাতুন, ঐশ্বর্য সাহা , ঐশী, মেহেদী হাসান প্রমুখ।

উক্ত অনুষ্ঠানটি সার্বিক পরিচালনা করেন জীবননগর ইয়ুথ এ্যাসেম্বলির সদস্য তুহিনুজ্জামান।




চুয়াডাঙ্গায় হায়দার পুর যুবসমাজের উদ্যোগে ইফতার মাহফিল

চুয়াডাঙ্গা সদরের হায়দার পুর গ্রামের যুবসমাজের উদ্যোগে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ রবিবার সন্ধা ছয়টার সময় চুয়াডাঙ্গা সদরের হায়দার পুর গ্রামের জামে মসজিদে এই ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে পদ্মাবিলা ৫নং ওয়ার্ড সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবলীগের আহবায়ক ও চুয়াডাঙ্গা জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক নঈম হাসান জোয়ার্দার।

ইফতার ও দোয়া মাহফিলে আরও উপস্থিত ছিলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবলীগ নেতা মাসুম আহমেদ, সৈকত আহমেদ, পদ্মবিলা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি বনফুল, হায়দার পুর জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি সরুপ মন্ডল, সহ-সভাপতি মইনুল হোসেন,যুবলীগ নেতা রুবেল, আমান, ফাহাদ, নয়ন, তাসফির, খোকন, আসিফ, আলি, হাসিবুল, জামান, ইসরাফিল, মামুন সহ হায়দার পুর গ্রামবাসী।




জীবননগরে জমে উঠছে ঈদের বাজার

ঈদের আর মাত্র ৪ দিন বাকি। এরই মধ্যে জীবননগর উপজেলার বিভিন্ন মার্কেট ও ফুটপাতে জমে উঠছে ঈদের কেনাকাটা। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত দেখা গেছে ক্রেতাদের আনাগোনা। বিপণিগুলোয় বাড়ছে ভিড়। তৈরি পোশাক কেনার পাশাপাশি নতুন পোশাক বানাতে আগেভাগেই পছন্দের কাপড় কিনছেন তরুণ-তরুণীরা।

বিক্রেতারা জানিয়েছেন, ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে, ক্রেতাদের ভিড় ততই বাড়ছে। তবে দেশে নিত্যপণ্যসহ সবকিছুর দাম বৃদ্ধির ফলে ক্রেতারা ঈদ বাজারে এসে একটু চিন্তা-ভাবনা করেই কেনাকাটা করছেন।

এবার ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে জমে উঠেছে পোশাকের বেচাকেনা। শপিংমলগুলোর পাশাপাশি ফুটপাতেও ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে। ক্রেতাদের উপস্থিতিতে জমজমাট হয়ে উঠেছে জীবননগর পৌর শহরের ঈদবাজার। ঈদ সামনে রেখে মাকের্টগুলোয় দেশি-বিদেশি নানা রঙের ও ডিজাইনের বাহারি পোশাক উঠেছে। উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রতিবছরই যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী নতুন পোশাক কেনে। প্রতিবারের মতো এবারও অনেকটা আগে থেকেই চলছে কেনাকাটার ধুম। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শপিং মল ও বিপণিবিতানে বাড়ছে ভিড়।

ক্রেতাদের এমন ভিড়ে খুশি ব্যবসায়ীরাও। তবে এবারের ঈদকে কেন্দ্র করে রোজার শুরু থেকে ক্রেতাদের মার্কেটগুলোয় ভিড় করতে দেখা গেছে। বিক্রেতারা বলছেন, অন্যান্যবারের মতো এবারের ঈদেও তরুণীসহ নারীদের প্রধান আকর্ষণ নতুন কালেকশন।

প্রতিদিন সকাল থেকে জীবননগর পৌর শহরের , মোল্লা মাকেট,তরফদার মাকেট,ইভা টাওয়ার ,নুর টাওয়ার এলাকার বিভিন্ন মার্কেটগুলোয় ভিড় করছেন ক্রেতারা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনার কারণে গত দুই বছর তাদের লোকসান হয়েছে। তবে এবার রোজা শুরুর আগে থেকেই দোকানে ক্রেতার উপস্থিতি ভালো। প্রতিদিন বাড়ছে বেচাকেনা।

গৃহিণী সাজেদা খাতুন এসেছেন পরিবারের সদস্যদের জন্য পোশাক কিনতে। তিনি জানান, দিন যত যাবে তত ঝামেলা বাড়বে। তখন জিনিসপত্র থাকলেও তেমন পছন্দ হবে না । তাই আগে থেকে কাজ সেরে নিচ্ছি।
এদিকে ক্রেতাদের সামলাতে ব্যাস্ত সময় পার করছেন দোকান মালিক ও কর্মচারীরা। জীবননগর পৌর শহরের তরফদার মাকেট,মোল্লা মাকেট,ইভা টাওয়ার,নুর টাওয়ারের মার্কেটের বেশ কয়েকজন দোকানদারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত দুই বছরের চেয়ে এবারের বেচাকেনা অনেকটাই ভালো। , রমজান শুরুর পর থেকেই এবার ক্রেতারা কেনাকাটা শুরু করেছেন। আমরাও ক্রেতাদের চাহিদামতো পোশাক সরবরাহ করতে চেষ্টা করছি।

পৌর শহরের বড় বড় শপিংমলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে জমে উঠেছে ফুটপাতের বেচাকেনাও। ফুটপাতের ক্রেতা-বিক্রেতারা জানান, ফুটপাতের দোকানগুলোর জন্য হাজার হাজার টাকা ভাড়া দিতে হয় না। ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য নেই কোনো আলোর ঝলকানি। ফলে স্বল্প লাভে ফুটপাতের বিক্রেতারা ক্রেতাদের দরদামে পোশাক দিয়ে থাকেন, ক্রেতারাও স্বচ্ছন্দে নিয়ে থাকেন। ক্রেতা অনিক রহমান রনি জানান, বড় দোকানগুলো থেকে আমার পক্ষে প্যান্ট কেনা সম্ভব নয়। এজন্য ছেলেকে এখানে নিয়ে এসেছি প্যান্ট কিনতে। ছেলের পছন্দমতো ৪৫০ টাকা দিয়ে জিন্স প্যান্ট কিনে দিলাম।

ফুটপাতের দোকানদার আলতাফ হোসেন জানান, নিজেরাই ব্যবসা করি। এতে কর্মচারীর বেতন, আলোর ব্যবস্থাসহ নানা ধরনের খরচ হয় না। তাই স্বল্প লাভে বড় দোকানের তুলনায় কম দামে পোশাক বিক্রি করতে পারি।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের চুয়াডাঙ্গা জেলার সহকারী পরিচালক মো. সজল আহম্মেদ জানান, সুযোগ বুঝে অতিরিক্ত দাম নেয়া যাবে না। যারা এমন করছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ভোক্তাস্বার্থ রক্ষায় নিয়মিত অভিযান চলমান রয়েছে।




নিখোঁজের ১২ ঘন্টা পর গাংনীতে শিশুর মরদেহ উদ্ধার

পুকুরে নিখোঁজের ১২ ঘন্টা পর সাব্বির হোসেন (১২) নামের এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত সাব্বির হোসেন গাংনী উপজেলার জোড়পুকুরিয়া গ্রামের জাহিদ হোসেন ও সৌদি প্রবাসী শাবানা খাতুনের ছেলে।

আজ  রবিবার দুপুর তিনটার দিকে জোড়পুকুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় পুকুরের সিড়ির নিছ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পুকুরের সিড়ির নিচে আটকে তার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পরিবারের লোকজন।

জাহিদ হোসেন জানান, গতকাল শনিবার দুপুরে ছোট ভাই ও বন্ধুদের সাথে স্কুলের পুকুরে গোসল করতে যায় সাব্বির। খেলতে গিয়ে অসাবধানতা বসত পুকুরের সিড়ির নিচে আটকে পড়ে শিশুটি। সবাই পুকুর থেকে উঠে পড়লেও সাব্বিরকে খুজে পাওয়া যাচ্ছিলনা।

বিষয়টি তার বন্ধুদের নজরে ছিল না। গোসল শেষে তারা বাড়ি ফিরলেও সাব্বির বাড়ি ফেরেনি। তখন থেকে খোঁজাখুজি শুরু হয়। এক পর্যায়ে তার পিতার সন্দেহ হলে আজ রবিবার দুপুরের দিকে তিনি ওই পুকুরে গিয়ে ছেলের খোঁজ করতে থাকেন। এসময় সিড়ির নিচে আটকে থাকা সাব্বিরের মরদেহ উদ্ধার করেন তিনি।
গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক এতথ্য নিশ্চিত করেন।




দামুড়হুদা হাউলী ইউনিয়নে ভিজিএফএর চাউল বিতরণ 

দামুড়হুদা উপজেলার হাউলী ইউনিয়ন পরিষদে অসহায় ও হতদরিদ্র মানুষের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার হিসেবে ভিজিএফএর চাউল বিতরণের শুভ উদ্বোধন করা হয়েছে।

আজ রবিবার সকাল ৯টার সময় ইউনিয়নের ২৬১০ জন উপকারভূগীর মাঝে জন প্রতি ১০কেজি করে চাউল বিতরণ করা হয়।

আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে অসহায় মানুষের মাঝে সুষ্ঠ ও সমভাবে চাউল বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলেন হাউলী ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন, সচিব নাঈম হোসেন, ট্যাগ অফিসার আতিকুর রহমান, ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম, আ: হান্নান পটু, শাহজামালসহ সকল ইউপি সদস্য, মহিলা ইউপি সদস্য, গ্রাম পুলিশ সহ উপকারভূগীরা উপস্থীত ছিলেন।