সিশেলসের বিপক্ষে বাংলাদেশের কঠিন লড়াই আজ

বছর ঘুরে আজ আবার আরেকটি ম্যাচ সিলেটে। মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে গত বছর মার্চে গোলহীন খেলা হয়েছিল বাংলাদেশের। এবার সিশেলস। এই দলটির বিপক্ষেও শেষ ম্যাচ ড্র হয়েছিলো ১-১ গোলে। আন্তর্জাতিক ফুটবল ম্যাচ সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে। বিকাল পৌনে ৪টায়। দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথমটি আজ, দ্বিতীয়টি ২৮ মার্চ সিলেটেই।

রমজানের মাস। ইফতারের আগেই খেলা শেষ হয়ে যাবে। তাতেও যদি দর্শক আসে। সিলেটের দর্শক খেলাধুলা প্রিয়। খেলা হলে তারা মাঠে ছুটে আসেন। ফিফা টায়ার ওয়ান ম্যাচটি দেখতেও আসবেন বলে বিশ্বাস জেলার কর্মকর্তাদের। ফ্লাড লাইট জ্বলবে না, সেটা বহু পুরোনো কথা। কারণ, বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে বছর হতে চলল। নানা কারণে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ বিল দিতে রাজি না।

সিশেলস অবশ্য রাখঢাক না করে সোজাসুজি যুদ্ধ ঘোষণা করে দিয়েছেন। অ্যামেচার ফুটবলার হলেও তারা স্থানীয় লিগে বেশ প্রতিযোগিতামূলক ফুটবল খেলে। অন্তত চার-পাঁচটা দল নিয়মিতই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য সমানতালে লড়াই করে। সেই অভিজ্ঞতা আন্তর্জাতিক মঞ্চেও কাজে লাগাতে চায়। বাংলাদেশের মাটিতে বাংলাদেশকে দুই ম্যাচে হারিয়ে ইন্ডিয়ান ওশেন গেমসের জন্য প্রস্তুত হতে চায় দলটি। সিশেলসের অধিনায়ক স্টেনিও মারি। তিনি নাবিক হিসেবে কাজ করেন। পাশাপাশি ফুটবল খেলেন। গতকাল সিলেটে সংবাদ সম্মেলনে বললেন, ‘আমরা দুটি ম্যাচেই জিততে চাই।’ কোচ নেভিল বোথও একই কথা বললেন।

সিশেলস আফ্রিকান দেশ। ছোট্ট এক দেশ। আয়তন মাত্র ৪৫২ বর্গকিলোমিটার। জনসংখ্যা লক্ষাধিকও নয়। তবে ফুটবল নিয়ে তাদের আগ্রহ বেশ। জনসংখ্যা কম হলেও ফুটবলার তুলনামূলকভাবে অনেকই বলা যায়। কোচ নেভিল জানালেন, পাঁচ শতেরও বেশি।

বাংলাদেশ প্রস্তুতি নিচ্ছে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য। কয়েক মাস পরই ভারতের বেঙ্গালুরুতে হবে দক্ষিণ এশিয়ার সেরা ফুটবল আসর। সেই আসরে ভালো করতে চান জামাল ভুঁইয়ারা। এই অধিনায়ক বললেন, ‘আমাদের সামনে আছে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ। সিশেলসের বিপক্ষে খেলে আমরা আসন্ন টুর্নামেন্টের জন্যই প্রস্তুতি নিতে চাই।’

সিশেলস অপেশাদার ফুটবলার নিয়েও ভালো করছে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে। বাংলাদেশ এত সুযোগ-সুবিধা নিয়েও কেন পারছে না? এমন এক প্রশ্নের জবাবে জামাল বলেন, ‘আমরা পারফর্ম করতে পারছি না। এটাই মূল কারণ। ওরা (সিশেলস) সময়মতো পারফর্ম করতে পারছে।’

গতকাল সিলেটে সংবাদ সম্মেলনে জামাল ভুঁইয়া বললেন, ‘ঐ ম্যাচে প্রথম হাফে আমরা অনেক ভালো খেলেছি, এরপর দ্বিতীয় হাফে আমরা কিছু পরিবর্তন আনি এবং শেষ মুহূর্তে গোল হজম করতে হয়। ওদের শক্তির জায়গাটা হচ্ছে কাউন্টার অ্যাটাক। ওদের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে আমরা কাউন্টার অ্যাটাকে গোল হজম করেছিলাম। এবার আমাদের সেই দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।’

সিশেলস এবার আরো শক্তিশালী হিসেবেই জামালদের সামনে এসেছে। চেলসিতে খেলা ৩৫ বয়সী ফুটবলার মাইকেল মাসিয়েন শক্তি বাড়িয়েছেন। একসময় ইতালিয়ান জায়ান্ট ক্লাব জুভেন্টাসের বিপক্ষেও খেলেছেন তিনি চেলসির জার্সিতে। বর্তমানে খেলছেন বারটন, আলবিওনের জার্সিতে (ইংলিশ লিগ ওয়ানে)। তাছাড়া ইংল্যান্ডে খেলা ২৪ বছরের তরুণ ফুটবলার ড্যারিল লুইসও তো আছেন। সিশেলসের বিপক্ষেও তাই নিশ্চিত করে কিছু বলার উপায় নেই।

কোচ কাবরেরা অবশ্য বাংলাদেশের মানুষের সামনে দৃষ্টিনন্দন ফুটবলই উপহার দিতে চান। ফিফার র‍্যাংকিংয়ে সিশেলস ১৯৯ বাংলাদেশ ১৯২ নম্বরে। আফ্রিকার দেশ সিশেলস ফুটবল দলে যারা খেলছেন তারা এক-দুই জন ছাড়া সবই অন্য পেশার মানুষ। নানা পেশায় যুক্ত রয়েছেন। সাগরে কাজ করেন, দোকানে কাজ করেন, মেরামতের কাজও করেন। এসব কথা সিলেশসের কানে ঢুকছে না। সিলেটে এসে ওরা বলল, পারলে জিতে দেখাও। সিশেলস গত ৯ ম্যাচে জয়ের দেখা পায়নি। সর্বশেষ গত বছর সেপ্টেম্বরে স্যান ম্যারিনোর বিপক্ষে খেলতে নেমে গোল শূন্য ড্র করে তারা।




দর্শনায় ইয়াবাসহ আটক ১

চুয়াডাঙ্গা জেলা গোয়েন্দা পুলিশ মাদক বিরোধী বিশেষ অভিযান চালিয়ে ১শ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ একজনকে আটক করেছে।

গতকাল শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৫ টার দিকে জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ শেখ সফিকুর রহমানের নেতৃত্বে এসআই শিহাব উদ্দিন, এএসআই বিজন কুমার ভট্টাচার্য, এএসআই আবেদুর রহমান, গোপন সংবাদের সঙ্গীয় ফোর্সসহ মাদক বিরোধী বিশেষ অভিযান পরিচালনা করেন দর্শনা থানাধীন আজমপুর মাঠপাড়ায়।

এ সময় পুরাতন ইট ভাটার মাঠের মধ্যে হতে কুষ্টিয়ার মিরপুর দক্ষিনকাড্ডা গ্রামের আলমগীর হোসেনের ছেলে মোঃ হাসান (২৮)কে চ্যালেন্জ করে।এসময় তার পরিহিত প্যান্টের ডান পকেট হতে ১শ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ গ্রেফতার করেন।
গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে দর্শনা থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে।




রমজানের প্রথমদিনই জমে উঠেছে কুষ্টিয়ার ইফতার বাজার

বছর ঘুরে আবারও শুরু হয়েছে মাহে রমজান। পবিত্র রমজানের প্রথম দিনেই জমে উঠেছে কুষ্টিয়ার ইফতার বাজার। বেলা যত গড়িয়েছে ততই জমজমাট হয়ে উঠেছে ইফতার বাজার। তাই পাল্টে গেছে চিরচেনা এ কুষ্টিয়া শহরের চিত্রও।

শুক্রবার শহরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রচলিত ইফতারির পাশাপাশি নানান স্বাদের বাহারি আয়োজন সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। বাহারি এসব ইফতারির স্বাদ নিতে দুপুরেই দূর-দূরান্ত থেকে ভোজনবিলাসীরা ছুটে এসেছেন। বাহারী ধরনের ইফতারি কিনতে দেখা গেছে দীর্ঘ জটলা।

গতকাল  বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) রাতে প্রথম তারাবি ও সেহেরির পর শুক্রবার বিকেলের মূল কেন্দ্র বিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে ইফতার। আর দিনটি সাপ্তাহিক ছুটি হওয়ায় দুপুরে গড়িয়ে বিকেল হতেই কাঠফাটা রোদ উপেক্ষা করে মানুষ এখন ভিড় করছেন ইফতার সামগ্রী বিক্রির দোকানগুলোতে। রমজানের প্রথমদিনের তাই ধুম পড়ে গেছে ইফতার কেনাকাটার।

শহরের প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে পাড়া-মহল্লার গলি পথেও ঐতিহ্যবাহী ইফতার সামগ্রী নিয়ে বসে গেছেন মৌসুমি দোকানিরা। শহরের এনএস রোড, বড়বাজার, থানা মোড়, ছয় রাস্তা মোড়, চৌড়হাস মোড়, জেলখানা মোড়, মজমপুর গেট, মঙ্গলবাড়ীয়াসহ বিভিন্ন স্থানে পসরা সাজিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে ইফতার। ক্রেতাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখেই দোকানগুলোতে রকমারি ইফতার তৈরি হয়েছে এ বছরও।

ঘিয়ে ভাজা ইরানী জিলাপি, রেশমি জিলাপি, স্পেশাল ফিরনি, ক্ষিরসা, ফালুদা, স্পেশাল পরোটা, চিকেন মসলা, রেশমি কাবাব, বটি কাবাব, স্বামী কাবাব, কাচ্চি বিরিয়ানি, চিকেন ফ্রাই, মাঠা-ঘোল ও নানা রকমের জুসসহ জনপ্রিয় ইফতার সামগ্রীগুলো এবারও শুরুতেই মন কাড়ছে কুষ্টিয়ার মানুষের। তবে ফলমূলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে বলে অভিযোগ অনেকের। প্রথমদিন ইফতারে স্বাদের ভিন্নতা ও বৈচিত্র্য আনতে সাধ ও সাধ্যমত সবাই প্রাণপণ চেষ্টা করছেন।

এদিকে শহরের বিভিন্ন এলাকার হোটেল-রেস্তোরাঁর সমানে বাহারি ইফতারের পসরা সাজানো হয়েছে। সামনে পণ্যের তালিকা সম্বলিত ব্যানারও টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। রোজাদারদের আকর্ষণ করার জন্য হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোর সামনে ডেকোরেশন করা হয়েছে। ইফতার সামগ্রী বিক্রির জন্য। এছাড়া বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরাঁ রকমারি ইফতার দিয়ে সাজিয়েছেন ইফতারের প্যাকেজ। তবে মৌবন নির্দিষ্ট পরিমানে ইফতার সামগ্রি কিনলে রোজাদারদের জন্য দিচ্ছেন বিভিন্ন অফার।

শহরের ব্যস্ততম সড়ক এনএস রোডের মৌবনে গিয়ে দেখা যায়, ইফতার সামগ্রী বিক্রির জন্য মৌবন চত্বরে সাজসজ্জা এবং রোজাদারদের আকর্ষণ করার জন্য বিভিন্ন ব্যানার ফেস্টুনে আবৃত।

শহরের পিটিআই রোড থেকে এসেছেন মৌবনে ইফতারী কিনতে এসেছেন নাজমুল পলাশ। পরিবারের জন্য প্রথম রোজার ইফতারে বাহারি আইটেমের সংযোজন করতেই তিনি এসেছেন এখানে। তিনি বলেন, প্রতি বছর প্রথম রোজায় এখানে আসি। এখানে বাহারী ধরনের ইফতার সামগ্রি পাওয়া যায়। খাসির লেগপিসের জন্য কুষ্টিয়ার মৌবনই সেরা। যা অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। মৌবনের স্পেশাল শরবত ইরানী জিলাপিসহ বেশ কিছু আইটেম কিনেছি। এই ইফতারির স্বাদ আর কোথাও পাওয়া যাবে না। সুযোগ থাকলে প্রতিদিন আসতাম।

ইফতার কিনতে আসা থানাপাড়া এলাকার ক্রেতা ইয়াসিন আলী বলেন, আজকে রহমতের প্রথমদিন। আর এদিনে পরিবার-পরিজন সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে ইফতার করবেন। যার জন্য রেশমি জিলাপি, স্পেশাল ফিরনি, গাজর হালুয়াসহ মৌবনের স্পেশাল পরোটা ও কাবাব কিনেছেন।

শহরতলীর মোল্লা তেঘরিয়া এলাকার কিরন মাহমুদ বাজারে ইফতার সামগ্রির দাম গতবারের চেয়ে একটু বেশি হয়েছে। ইফতারীতে ভাজাপোড়ার সাথে ফলমূল না হলে চলে না। অবশ্য সেই ফলমূলের দাম বেড়েছে দ্বিগুণ।
শহরের মৌবনের ম্যানেজার আশিকুজ্জামান রনি জানান, তারা সব রকমের ইফতারের আইটেমই তুলে এনেছেন। যাতে সবারই দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারা যায়। যেমন তাদের আছে স্পেশাল ফিরনি, শিক কাবাব, বটি কাবাব, নাড়ারা কাবাব, স্বামী কাবাব, মাটন লেগ রোস্ট, ইরানী জিলাপি, রেশমী জিলাপি স্পেশাল শাহী পরোটা। এছাড়া ছোলা, পিয়াজু, বেগুনিসহ অন্যান্য নিয়মিত ইফতার আইটেম তো রয়েছেই।

তিনি বলেন, আমাদের কাছে শতাধিকেরও বেশি আইটেম ইফতারি আছে। নির্দিষ্ট পরিমানে ইফতার সামগ্রি কিনলে রোজাদারদের জন্য বিভিন্ন উপহার সামগ্রী তুলে দিচ্ছি। পাশাপাশি আমরা কর্পোরোট হাউসগুলোতেও ইফতারীর অর্ডার নিয়ে থাকি।

শহরের মজমপুর গেট এলাকায় ইফতার নিয়ে বসেছেন মতিয়ার রহমান। তিনি বলেন, গত দুই বছর তো করোনার জন্য ব্যবসাই করতে পারিনি। এবার তেমন বাঁধা নাই। তবে কিছু নির্দেশনা দিয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে। আজ মোটামুটি ব্যবসা ভালো হচ্ছে। এই যে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসছে ইফতারি কিনতে। এখন পর্যন্ত বিক্রি করে কুলাতে পারছি না। সন্ধ্যার আগ মহূর্তে এই ভিড় আরও বাড়বে বলে জানান এই ব্যবসায়ী।

শিশির বেকারীর পরিচালক তানভীর শিশির বলেন, পেঁয়াজু, আলুর চপ, বেগুনি ও জিলাপিসহ বিভিন্ন ইফতার পণ্যের দাম এবার গত বছরের চেয়ে বেশি। প্রায় প্রতিটি পণ্যের মূল্য রমজান শুরু হওয়ার আগে যা ছিল রমজানের প্রথম দিনেই সেই সব পণ্যের মূল্য বেড়েছে। তাই অনেকটা বাধ্য হয়ে বেশি দামেই স্বাদ ও সাধ্যের সমন্বয় ঘটানোর চেষ্টা করছেন ক্রেতারা।




মেহেরপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় স্কুলছাত্র নিহত

মেহেরপুরে শহরে মোটরসাইকেলের ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনায় আরাফাত রহমান নূর (১৫) নামের এক স্কুলছাত্র নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে সজিব (২০) ও মতিয়ার রহমান মতু (৩৫) নামের আরো দুজন। নিহত যুবক মেহেরপুর সদর উপজেলার কলাইডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে ও সজিব একই গ্রামের রতন আলীর ছেলে এবং মতু চাঁদবিল গ্রামের জমসেদ শেখের ছেলে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মেহেরপুর শহরের পৌর বাসটার্মিনাল এলাকায় এই মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, ঘটনার সময় আরাফাত রহমান নূর ও সজীব মেহেরপুর থেকে মোটরসাইকেল যোগে বাড়ী ফেরার পথে শহরের পৌর বাসটার্মিনাল এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা মোটরসাইকেলের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে রাস্তার উপরে ছিটকে পড়ে তিন জনই গুরুতর আহত হয়।

খবর পেয়ে মেহেরপুর ফায়ার সার্ভিসের একটি দল তাদেরকে উদ্ধার করে মেহেরপুর-২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। আহত আরাফাত রহমান নূর এর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন পরে রাত তিনটার দিকে আরাফাত রহমান নুরের মৃত্যু হয়।

নুর মোমিনপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী নুরের বাবা একজন কৃষক এক ভাই এক বোন। বাবার বড় স্বপ্ন ছিল তাকে লেখাপড়া শিখিয়ে বড় কিছু হবার স্বপ্ন ছিল সেই স্বপ্ন নিমেষেই শেষ হলো।




চুয়াডাঙ্গায় ট্রাফিক সার্জেনের মোটরসাইকেলের ধাক্কায় বৃদ্ধার মৃত্যু

চুয়াডাঙ্গা ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন সেলিমের মোটরসাইকেলের ধাক্কায় সুফিয়া খাতুন (৮০) নামে এক বৃদ্ধা নিহতের ঘটনা ঘটেছে।

শুক্রবার দুপুর ১ টার দিকে চুয়াডাঙ্গা শহরের কোর্ট মোড়ের কাছে ১ নাম্বার পানির ট্যাঙ্কের নিকটে এ দূর্ঘটনা ঘটে। পরে ওই বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হলে কিছুক্ষন পরে মৃত্যু হয় তার।
বৃদ্ধা সুফিয়া খাতুন চুয়াডাঙ্গা শহরের সাদেক আলী মল্লিকপাড়ার মৃত. আব্দুল মজিদের স্ত্রী।

নিহত সুফিয়া খাতুনের বোনের মেয়ে সাজিদা খাতুন বলেন, প্রায় ৮ মাস পূর্বে আমার খালা সুফিয়া খাতুনের চোখ অপারেশন করা হয়েছিল। এরপর থেকে চোখে কম দেখতেন। আমি রাস্তার একপাশে দাঁড়িয়ে ছিলাম। আমার খালা রাস্তা পার হয়ে আমার কাছে আসছিলেন। এ সময় রাস্তা পারপারের সময় পুলিশের সার্জেন সেলিমের মোটরসাইকেলে ধাক্কা লেগে রাস্তায় ছিটকে পড়ে যান। পরে ওই পুলিশ আমার খালাকে কোলে করে নিয়ে দ্রুত চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে কিছুক্ষন পর খালার মৃত্যু হয়।

তিনি আরও বলেন, পুলিশের মোটরসাইকেলের গতি খুবই কম ছিল। আমার খালা চোখে কম দেখতেন বলে এঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে আমাদের কোন অভিযোগ নেই। বিনা ময়নাতদন্তে আমরা মরদেহ নিয়ে যেতে চায়।
জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. নূর জাহান রুমি বলেন, সড়ক দূর্ঘটনা আহত অবস্থায় ওই বৃদ্ধাকে জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে কিছুক্ষন পর তার মৃত্যু হয়। মাথায় অতিরিক্ত আঘাতের ফলে তার মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

মরদেহের সুরতহাল প্রস্তুতকারি চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) হাসানুজ্জামান বলেন, ওই বৃদ্ধা চোখে কম দেখতেন। রাস্তা পারাপারের সময় ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন সেলিমের মোটরসাইকেলে ধাক্কা লেগে আহত হন তিনি। হাসপাতালে নেয়ার পর বৃদ্ধা মারা যায়। অভিযোগ না থাকায় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে পরিবারের নিকট হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলবে বলেও জানান তিনি।




আলমডাঙ্গার নাগদাহ ইউপি নির্বাচনে সহিংসতায় আহত কর্মী মৃত্যু, প্রতিবাদ সমাবেশ 

আলমডাঙ্গার নাগদাহ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সহিংসতার ঘটনায় দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত নৌকা সমর্থনকারী দবির আলীর মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসার ১৩ দিনপর শুক্রবার (২৪ মার্চ) সকাল ১০ টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মৃত দবিরের লাশ শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টায় আলমডাঙ্গায় পৌঁছাই। মৃত্যুর ঘটনায় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সমর্থনকারীরা লাশ নিয়ে পৌর এলাকার স্বাধীনতা স্তম্ভ প্রাঙ্গণে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। মিছিলে দ্রূত আসামীদের গ্রেফতারের দাবি জানায়।

স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, গত ১৬ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় নাগদাহ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। নির্বাচনকে ঘিরে গত ১১ মার্চ রাতে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রার্থী হায়াত আলি ও স্বতন্ত্র চশমা প্রার্থীর সমর্থকের মধ্যে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে উভয় পক্ষের ১১ জন আহত হয়। নৌকার সমর্থকের একই পরিবারের দুই ভাইসহ তিনজন গুরুত্বর আহত হয়। আহতের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। গুরুত্বর আহত অবস্থায় দবির উদ্দীনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত ১২ দিন লাইফ সাপোর্ট (আইসিউতে) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সকাল ১০ টায় তিনি মারা যায়। শুক্রবার বিকেলে লাশ ময়নাতদন্ত শেষে আলমডাঙ্গার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। রাত ১০ টার দিকে আলমডাঙ্গা পৌর শহরের স্বাধীনতা স্তম্ভের নিকট পৌঁছালে স্থানীয় নেতারা লাশবাহী এ্যাম্বুলেন্স সহ প্রতিবাদ সমাবেশ করে। এসময় উপস্থিত ছিলেন নাগদাহ ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও নৌকার প্রার্থী হায়াত আলি সহ দুই শতাধিক নেতাকর্মী। প্রতিবাদ সমাবেশে নিহত দবির আলীর দ্রূত গ্রেফতারসহ ফাঁসির দাবি জানান।

নিহত দবির আলী ছেলে মোস্তাফিজুর ওরফে খোকন বলেন, আমার বাবা নাগদহ ইউনিয়ন পরিষদের নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মতিয়ার রহমান হায়াতের কর্মী ছিলেন। গত শনিবার (১১ মার্চ) রাত ৮টার দিকে জহুরুলনগর গ্রামে আমার বাবাসহ কর্মীরা নির্বাচনী প্রচারণার কাজ করছিলেন। এসময় পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী (বর্তমানে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত) নিজে উপস্থিত থেকে তার কর্মীরা হামলা চালায়। এতে আমার বাবা দবির আলী সহ আমার কয়েকজন কর্মী আহত হন। রাতেই আমার বাবাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিউতে ভর্তি করা হয়। টানা ১৩ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে হেরে গেলেন বাবা। আমি এই হত্যার বিচার চাই। আজ রাতে কিংবা আগামীকাল মরদেহ ময়নাতদন্ত ও আইনি প্রক্রিয়া শেষে চুয়াডাঙ্গায় নিয়ে আসা হবে।

আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল আলিম বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের মারামারিতে আহত দবির উদ্দিন গতকাল শুক্রবার সকালে রাজশাহী মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে বলে জেনেছি। এ ঘটনার পূর্বে মারধরের মামলা করেছিলেন নিহতের ছেলে। নিহতের পরিবার হত্যা মামলা দায়ের করলে আমরা গ্রহন করব।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) অনুষ্ঠিত নাগদহ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী ইমতিয়াজ বিপুল জোয়ার্দ্দার চশমা প্রতীক নিয়ে ৪ হাজার ৮০ ভোট পেয়ে বেসরকারি ভাবে বিজয়ী হয়েছেন।




আলমডাঙ্গায় তামাক ঘরে অগ্নিকান্ড,৭০ হাজার টাকার ক্ষতি

আলমডাঙ্গার কাশিপুর গ্রামে তামাক জ্বালানো পাইপের মাধ্যমে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় তামাকের ঘরে থাকা প্রায় ৭০ হাজার টাকার তামাক পুড়ে ছাই হয়েছে। ঘটনাটি শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪ টায় বেলগাছি ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামে ঘটেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, উপজেলার বেলগাছি ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামের মুনছুর আলীর ছেলে কৃষক তাজ উদ্দীন আহমেদ। তিনি শুক্রবার বিকেলে তামাকে ঘরে আগুনের তাপ দিচ্ছিলো। এসময় তামাকে পাইপের তাপে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ঘরে থাকা প্রায় ৭০ হাজার টাকার তামাক পুড়ে ভস্কিভুত হয়। খবর পেয়ে আলমডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।




শাকিব-পূজা: গত ঈদে সঙ্গী, এই ঈদে প্রতিদ্বন্দ্বী!

দুজনের বয়সের ব্যবধান প্রায় দ্বিগুণ। তবে সেই ব্যবধান তুচ্ছ করে পর্দায় তারা ফুটিয়ে তুলেছেন প্রেম-রসায়ন। সামগ্রিক বিচারে তাদের জুটিবদ্ধ ছবিটি মন্দের ভালো সাড়া পেয়েছিল। এটুকু গুঞ্জনের জন্ম হয়েছে তখন, পর্দার রসায়ন তারা ব্যক্তি জীবনেও চর্চায় রেখেছেন!

বলা হচ্ছে- ঢালিউড তারকা শাকিব খান ও তরুণী নায়িকা পূজা চেরীর কথা। একজনের বয়স ৪৩, এরই মধ্যে সিনেমা ক্যারিয়ার ২৪ বছরের। অন্যদিকে পূজা সবে ২২ বছরের তরুণী। শিশু চরিত্র পেরিয়ে নায়িকা হয়েছেন ২০১৮ সালে। তারা দুজন জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন ‘গলুই’ ছবিতে। এসএ হক অলিক নির্মিত ছবিটি মুক্তি পায় গেল বছরের রোজার ঈদে।

‘গলুই’ সূত্রে শাকিব-পূজার নানান রসালো গল্প ছড়িয়েছে শোবিজ পাড়ায়। প্রেমের কানাঘুষা থেকে বিয়ে অবধি গড়িয়েছিলো গুঞ্জনের জল। এমনকি দেশ ছেড়ে তারা মার্কিন মুলুকে ঘর বাঁধবেন বলেও রব ওঠে! তবে তারা দুজনই সেটা স্পষ্ট বাক্যে অস্বীকার করেছেন। এই গুঞ্জন ঝড়ের কবলে শাকিবের নতুন সিনেমা ‘মায়া’ থেকেও নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন পূজা।

বদলেছে দিন, বদলেছে ক্যালেন্ডারও। গেল বছরের ঈদে ‘গলুই’য়ে চড়ে তারা ভেসেছিলেন সঙ্গী হয়ে। বছর ঘুরতেই বদলে গেছে সেই সমীকরণ। শাকিব-পূজা এবার আর সঙ্গী নয়, একেবারে প্রতিপক্ষ, প্রতিদ্বন্দ্বী! আসন্ন রোজার ঈদে মুক্তি পাচ্ছে তাদের ভিন্ন দুটি ছবি।

এর মধ্যে শাকিব অভিনীত সিনেমাটির নাম ‘লিডার-আমিই বাংলাদেশ’। এতে নায়িকা হিসেবে আছেন শবনম বুবলী। ছবিটি সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র পেয়েছে অনেক আগেই। সম্প্রতি ঈদে মুক্তির ঘোষণা করা হয়েছে।

অন্যদিকে পূজার ছবিটির নাম ‘জ্বীন’। এটি অনেক আগের ছবি। তবে নানা কারণে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ-মাল্টিমিডিয়ার কার্যক্রম থমকে থাকায় আটকে ছিল এর মুক্তি। এবারের ঈদে বন্দিদশা থেকে মুক্তির আলোয় আসছে ছবিটি। এতে পূজার নায়ক ছোটপর্দার অভিনেতা আব্দুন নূর সজল।

এক বছরের ব্যবধানে শাকিবের সঙ্গী থেকে প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়ার বিষয়টি কেমন, তা জানতে পূজার মুঠোফোনে কল করা হলেও সাড়া মেলেনি। তবে নিজের ছবিটি নিয়ে তার আবেগ-আগ্রহের নজির মিলল সোশ্যাল হ্যান্ডেলে।

পূজার ভাষ্য- “সবার মতো আমারও ইচ্ছা এবং আশা ছিলো ভিন্ন ভিন্ন কিছু গল্প এবং চরিত্রে অভিনয় করবো। একজন সিনেমাপ্রেমী কিংবা একজন অভিনেত্রী হিসেবে এ ইচ্ছা থাকতেই পারে। শুরু করেছি রোমান্টিক গল্পের সিনেমা ‘নূরজাহান’ ও ‘পোড়ামন-২’ দিয়ে; যা আমার স্বপ্ন পূরণের একধাপ এগিয়ে নিয়ে গেছে। এরপর ‘দহন’ ও ‘প্রেম আমার-২’ করলাম। এই দুইটা সিনেমা করার পরই ‘জ্বীন’ সিনেমাটির কথা আসে। যেটাতে আমি একটু অবাক হই। কারণ ভৌতিক সিনেমার প্রতি আমার একটা আলাদা ভালোলাগা আছে।”

পূজা জানান, ‘জ্বীন’র নির্মাণ প্রক্রিয়ার শুরু থেকেই এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন পূজা। তাই টিমের অন্যদের মতো তিনিও ছবিটি ঘিরে আগ্রহী। আশান্বিত মনে পূজা বললেন, ‘আমরা সকলে মিলে চেষ্টা করেছি একটি ভালো সিনেমা বানানোর। আশা রাখছি আমার ভালোবাসার এবং প্রিয় দর্শকরা এই চেষ্টার মূল্যায়ন অবশ্যই করবে।’

উল্লেখ্য, নাদের চৌধুরী পরিচালিত ‘জ্বীন’ ছবিতে পূজা-সজল ছাড়াও অভিনয় করেছেন- জিয়াউল রোশান, জান্নাতুন নূর মুন, সুজাতা প্রমুখ।

সৃত্র: যুগান্তর




এসএসসি পাসে নিয়োগ দেবে হাতিল

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে হাতিল। প্রতিষ্ঠানটিতে ব্যাচ প্লান্ট অপারেটর পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। আগ্রহী যোগ্য প্রার্থীরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।

পদের নাম

ব্যাচ প্লান্ট অপারেটর।

শিক্ষাগত যোগ্যতা

প্রার্থীকে এসএসসি পাস হতে হবে। অভিজ্ঞতার ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিলযোগ্য। বয়স ২২ থেকে ৪০ বছর। পুরুষ প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন। নিজ হাতে কাজ করার অভিজ্ঞতা কমপক্ষে ৫ বছর।

কর্মস্থল

গাজীপুর।

আবেদন প্রক্রিয়া

আগ্রহী প্রার্থীরা বিডিজবস অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।

আবেদনের শেষ তারিখ

১০ এপ্রিল, ২০২৩।

সূত্র : বিডিজবস




বামন্দীতে রমজানের প্রথম দিনেই জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ও বাণিজ্য খ্যাত একটি বাজার বামন্দী। যেখানে রয়েছে জেলার সর্ব-বৃহৎ পশু হাট। বাজারে শাক-সবজি, মাছ-মাংস, ক্ষুদ্র কুটির শিল্প সামগ্রী থেকে শুরু করে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য ও মালামাল বিক্রয় করে ব্যাবসায়ীরা। এসব দোকানের পাশাপাশি রয়েছে সুপার মার্কেট, শপিংমল, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, অফিস, একাধিক শাখা ব্যাংক ও চিকিৎসাকেন্দ্র, কলকারখানা সহ হাজারের অধিক দোকান-পাট। এ বাজারে শুধুমাত্র চায়ের দোকানের ব্যাবসার উপর নির্ভর করে চলে প্রায় শতাধিক পরিবার।

সপ্তাহে দু’দিন শুক্রবার ও সোমবার সাপ্তাহিক হাট বসে বামন্দীতে। এবারের রমজানের প্রথম দিন (২৪শে মার্চ) শুক্রবার বামন্দী বাজারের সাপ্তাহিক হাট সরেজমিনে ঘুরে জিনিসপত্রের অস্বাভাবিকভাবে দাম বৃদ্ধি চোখে। যা ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণ শাকসবজি থাকলেও উচ্চমূল্যের কারণে হতাশার চিত্র ক্রেতাদের চোখেমুখে। স্বাভাবিকের বাইরে মূল্য থাকায় অনেকেই রমজানের প্রথম দিনে ক্রয় করতে পারেননি শাক-সবজি।

বামন্দী বাজারের সবজি হাটে বেগুন, সজনে ডাটা, কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজ, রসুন, আদা, আলু, পটল, টমেটো, গাজর, শসা, সিম, পুইশাক, লাউ, লেবুর মূল্য প্রায় দ্বিগুন থেকে তিনগুণ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে পাইকারির তুলনায় খুচরা বাজারে শাক-সবজির দাম তুলনামূলকভাবে আরো বেশি।

রমজানের প্রথম হাটে বামন্দীতে বেগুন বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা কেজি দরে; যা এক সপ্তাহ আগেও ছিল ৪৫ টাকা কেজি। শসা বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৭০-৮০ টাকা দরে; যা এক সপ্তাহ আগেও ছিল কেজিপ্রতি ৫০ টাকা। পটল কেজিপ্রতি ৮০ টাকা, সজনে ডাটা ১২০ টাকা, পুইশাক ৪০ টাকা সহ আলু-পেঁয়াজ-রসূনের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ২০-৩০ টাকা করে। লেবু বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা প্রতিপিচ। এছাড়াও অন্যান্য সবজির দাম কেজিপ্রতি ১০ টাকা থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

অপরদিকে বেড়েছে মাছ মাংসের দাম। বামন্দী বাজারের মাছের হাটে সবধরনের মাছ কেজিপ্রতি ৩০-৬০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। গরুর মাংস সাড়ে ৭’শ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে যা ছিলো সাড়ে ৬’শ টাকা। ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ৯’শ টাকা কেজি দরে। ব্রয়লার মুরগী কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৯৫ টাকা দরে। লেয়ার ও সোনালি মুরগী ২৬০-৩২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

দাম নিয়ে ক্রেতাদের অভিযোগ থাকলেও ব্যবসায়ীরা বলছেন ভিন্ন কথা। বামন্দী বাজারের সবজি ব্যবসায়ী মনিরুল ইসলাম বলেন, প্রতিবছরেই রমজানের সময় বাজারে জিনিসপত্রের দাম বেশি থাকে। এবছরেও কেজিতে ১০-২০ টাকা বেড়েছে; আবার কিছুদিন পরে কমে যাবে।

সবজি ব্যবসায়ী তাহিরুল ইসলাম বলেন, আমি খুলিশাকুন্ডী থেকে বেগুন কিনে এনেছি ৭০ টাকা কেজি দরে; এখন বিক্রি করছি ৮০ টাকা। ১০ টাকা লাভ হচ্ছে।

আরেক সবজি ব্যবসায়ী বাবুল ইসলাম বলেন, আমরা কিনে এনে বিক্রি করি। মোকামে যে দাম ধরে আমরা তার চেয়ে ২০-৩০ টাকা বেশি দামে বিক্রি করি। আমাদের হাতে কিছু নেই সবকিছু মোকাম থেকে নির্ধারন করা হয়।

তবে ভিন্ন প্রতিক্রিয়া ক্রেতাদের মধ্যে। সাজ্জাদুল ইসলাম স্বপন নামের এক ক্রেতা বলেন, রমজানের অজুহাতে প্রতিবছর ব্যবসায়ীরা জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা এতে কোন নজরদারি রাখেনা।

আরেক ক্রেতা রাশিদুল আলম বলেন, বামন্দীতে বাজার মনিটরিং করা হয়না কোনদিন। নিয়মিত যদি দায়িত্বশীলরা একটু দেখভাল করতো তবে এতটা অস্বাভাবিক হতো না বাজার দর।

বাজার মনিটরিং বিষয়ে জানতে বামন্দী বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।

গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাজিয়া সিদ্দিকা সেতু বলেন, গাংনী বাজারে গতকাল আমারা মনিটরিং করেছি তবে পর্যায়ক্রমে সব জায়গায় দেখভাল করা হবে। আমাদের মোবাইল কোর্টের অভিযান রমজান মাসব্যাপী পরিচালনা করা হবে।

তবে বাজার মনিটরিং বিষয়ে বাজার কমিটির দায়িত্ব কতটুকু রয়েছে কিংবা উপজেলা প্রশাসনের কোন নির্দেশনা আছে কিনা? এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, আমি সবেমাত্র যোগদান করেছি; এখনো সবার সাথে বসা সম্ভব হয়নি। তবে খুব দ্রুত সবার সাথে বসে বিষয়টি নিয়ে সীধান্ত নেওয়া হবে।