পুকুর পাড়ের পরিত্যাক্ত নিজের জমিতে ৬০ কেজি ওজনের মিষ্টিকুমড়া উৎপাদন করে তাক লাগিয়েছেন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার জুগিরগোফা গ্রামের কৃষক সাইফ আহাম্মেদ। উচ্চ ফলনশীল দেশীয় জাতের এ মিষ্টি কুমড়া দেখতে আসছেন বিভিন্ন কৃষকসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ।
বৃহত্তর কুষ্টিয়া ও যশোর অ ল কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় গাংনী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কৃষি প্রযুক্তি মেলা ২০২৩ এর আয়োজন করে। মেলায় অন্যান্য কৃষি প্রদর্শনীর পাশাপাশি ৬০ কেজি ওজনের মিষ্টিকুমড়া প্রদর্শন করে কৃষক সাইফ আহাম্মেদ। সাইফ আহাম্মেদের জমিতে উৎপাদিত মিষ্টিকুমড়া একদিকে যেমন এলাকাবাসীর দৃষ্টি কেড়েছে, অন্যদিকে নজর কেড়েছে মেলার বিচারক মন্ডলীদেরও ।
কৃষক সাইফ আহাম্মেদ জানান, আমার পুকুর পাড়ের একটি পরিত্যাক্ত জায়গায় পরিবারের চাহিদা মেটানোর জন্য অন্যান্য সবজি চাষ করেছি। তার সাথে বেশ কিছ’ উচ্চ ফলনশীল দেশীয় জাতের মিষ্টিকুমড়া গাছ লাগাই। এতে অনেক মিষ্টি কুমড়া হয়েছে। আমার পরিবারের চাহিদা পুরুন করে বেশ কিছ’ টাকার মিষ্টিকুমড়া বিক্রি করেছি। প্রতিটি মিষ্টিকুমড়ার ওজন অনেক ভাল হয়েছে। তবে একটি মিষ্টি কুমড়া হয়েছে অনেক বড় আকৃাতির। যার ওজন হয়েছে ৬০ কেজি অর্থাৎ দেড় মন। বিষয়টি কৃষি অফিসকে জানালে তারা আমাকে কৃষি প্রযক্তি মেলায় অংশ নিতে বল্লে আমি অংশ নিয়েছি। প্রতিযোগীতায় আমি কোন স্থানে থাকবো তা জানিনা তবে মেলা দেখতে আসা দর্শনার্থীরা আমার মিষ্টিকুমড়ার ছবি তুলছে এবং কেউ সেলফি তুলছে। এটিই জেলার একমাত্র বড় ও বেশি অজনের মিষ্টি কুমড়া বলে দাবী করেছেন ওই কৃষক।
‘‘কৃষিই সমৃদ্ধ’’ এ প্রতিপাদ্যে গতকাল সোমবার বেলা ১২ টার সময় গাংনী উপজেলা অডিটোরিয়াম চত্বরে দুই দিন ব্যাপী কৃষি প্রযুক্তি মেলা’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রপ্ত) রনি খাতুনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে কৃষি প্রযুক্তি মেলার প্রদর্শিত স্টল ঘুরে দেখেন গাংনী উপজেলা চেয়ারম্যান এমএ খালেক। এসময় গাংনী উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ফারহানা ইয়াসমিন, কৃষি অফিসার কৃষিবিদ শিকদার মোহাম্মদ মহাইমেনুল ্আক্তার উপস্থিত ছিলেন। কৃষি প্রযুক্তি মেলায় উপজেলায় ১০টি স্টলে সাজানো হয়েছে বিভিন্ন জাতের নতুন নতুন ফসল ও কৃষিতে নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন।
মেলায় ঘুরতে আসা স্কুল শিক্ষক কাকন জানান, এ মেলায় যারা অংশ গ্রহন করেছেন তাদের মধ্যে ৬ কেজি ওজনের মিষ্টিকুমড়ার দিকে সব মানুষের নজর পড়েছে।
নানা মুখি প্রযুক্তি দিয়ে কৃষকদের সমৃদ্ধ করতে সরকার কাজ করছেন। যাতে কৃষকরা নতুন নতুন ফসল ফলাতে পারে এবং অল্প খরচে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসল ঘরে তুলতে পাওে তার জন্য কৃষিকে যান্ত্রিকিকরণ করা হচ্ছে বলে জানান মেলা অংশ গ্রহনকারি সুমিতা খাতুন।
গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ শিকদার মোহাম্মদ মহাইমেনুল আক্তার বলেন, মেহেরপুর জেলার মাটি সবজি উৎপাদনের জন্য খুবই উপযোগী। যে কোন সবজি এ মাটিতে ভাল ফলণ পাওয়া সম্ভব। জেলায় হাইব্রীডসহ দেশীয় বারি-৩,বারি-২,বারি-৭,হাজরি,জলদি,মিটাল মিষ্টিকুমড়ার আবাদ হয়ে থাকে। কৃষক সাইফ আহাম্মেদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিদের্শনা অনুযায়ী এক ইি জমি ফেলে না রেখে পুকুর পাড়ে মিষ্টিকুমড়ার চাষ করেছেন। এতে একটি গাছে ৬০ কেজি ওজনের মিষ্টিকুমড়া হয়েছে। এটিই আমাদের জানামতে সবচেয়ে বেশি ওজন ও বড় সাইজের মিষ্টি কুমড়া। তিনি অন্যান্য কৃষকদেরকে পুকুর পাড়া ও বসত বাড়ির আঙ্গিনা ফেলে না রেখে সবজি উৎপাদনের পরামর্শ দেন।