আলমডাঙ্গা নাগদহ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের (নৌকা) ও স্বতন্ত্র বিদ্রোহী (চশমা)’র প্রার্থীর কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
গত শনিবার (১১ মার্চ) রাত ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ইউনিয়নের জহুরুলনগর, বলিয়ারপুর নাগদহ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীর (স্বতন্ত্র) নির্বাচনী অফিস এবং কর্মীদের চারটি মোটরসাইকেল ও বাড়ি-ঘর ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে স্কুলছাত্রীসহ বিদ্রোহী প্রার্থীর (স্বতন্ত্র) তিনজন এবং নৌকা প্রার্থীর আটজন আহত হয়েছেন। তাদেরকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নৌকা প্রতীকের আহত আট কর্মী হলেন- বাবলুর রহমান (৫০), কেসমত আলী (৪০), আকরামুল হোসেন (৩৫), খবির উদ্দিন (৫৫), আনিছুর রহমান (৪৫), দবির আলী (৪০), মিয়া জান (৩৫) ও আব্দুস সেলিম (৪৬)। এর মধ্যে খবির উদ্দিনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেছেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থীর আহত কর্মীরা হলেন- ইসরাইল হোসেন বুদো (৪০), তার ছেলে মামুনুর রশিদ (২৪) ও মেয়ে নবম শ্রেণির ছাত্রী আয়েশা খাতুন (২৫)। এর মধ্যে ইসরাইল হোসেন বুদো স্বতন্ত্র প্রার্থীর বাড়িতে ভাঙচুর চালায় নৌকা প্রার্থীর কর্মীরা। এ সময় তার দুই ছেলে ও মেয়েকে বেধড়ক পিটিয়ে জখমের অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে এ ঘটনায় পুরো এলাকা জুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম।
নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মতিয়ার রহমান হায়াত আলি বলেন, জহুরুলনগর গ্রামে আমার কর্মীরা নির্বাচনী প্রচারণার কাজ করছিলেন। এ সময় স্বতন্ত্র প্রার্থী উপস্থিত থেকে তার কর্মীদের দিয়ে আমার কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এতে আমার কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছেন। এছাড়া আমরা কোনো নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর করিনি। তারা নিজেরা নিজেদের অফিস ভাঙচুর করে আমার কর্মীদের ওপর দোষ চাপাচ্ছে। এ ঘটনায় আমি থানায় অভিযোগ করব।
আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী (স্বতন্ত্র) চশমা প্রতীকের এজাজ ইমতিয়াজ বিপুল বলেন, রাতে জহুরুলনগর আমার নির্বাচনী অফিসের কাছাকাছি ছিলাম। এ সময় নৌকা প্রার্থীর ২০/৩০ জন কর্মী মোটরসাইকেলযোগে এসে আমার নির্বাচনী অফিস ও চারটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। বলিয়ারপুর গ্রামে এক কর্মীর বাড়ি ভাঙচুর করে ও তার দুই ছেলে-মেয়েকে পিটিয়ে জখম করে। এছাড়া তারা নিজেরা নৌকার অফিস ভাঙচুর করে আমাদের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আব্দুল কাদের বলেন, ১১ জনের সবার শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। আহতদের মধ্যে দবির আলীর শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে ধারণা করছি। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। এছাড়া বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ভর্তি করা হয়েছে।
আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, চশমা ও নৌকা প্রার্থীর কর্মীদের মধ্যে মারামারি ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বিদ্রোহী প্রার্থীর অফিস ও তার কর্মীদেরও কয়েকটা মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেছে। এতে উভয়পক্ষের মোট ৪ জন আহত হয়েছেন বলে জেনেছি। এখনো কোনো পক্ষ অভিযোগ করেনি। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।