দেশীয় তামাক শিল্প রক্ষার দাবীতে ঝিনাইদহে তামাক চাষীদের মানববন্ধন

তামাকের ন্যায্য মুল্য নিশ্চিত করতে দেশীয় তামাক শিল্প রক্ষার দাবিতে ঝিনাইদহে মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়েছে।

সোমবার (৬ মার্চ) সকালে ঝিনাইদহ শহরের পায়রা চত্বরে এ কর্মসূচীর আয়োজন করে দেশীয় তামাক চাষী কল্যাণ সমিতি। এতে ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে সংগঠনটির জেলা ও উপজেলা শাখার নেতৃবৃন্দ ও তামাকচাষীরা উপস্থিত হয়ে বক্তব্য রাখেন। এসময় বক্তব্য দেন দেশীয় তামাক চাষী কল্যান সমিতির (ঝিনাইদহ-মেহেরপুর জেলার আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন রিন্টু, যুগ্ম-আহ্বায়ক দুদু শাহ্, রুহুল আমিন, সদস্য রমজান আলী মিন্টু, চাষী আমিনুল ইসলাম পিলু, রবিউল ইসলাম জনি, জহুরুল ইসলাম, হোসেন আলী, শাকিরুল ইসলাম,উজ্জ্বল মিয়া, ওমর আলী প্রমূখ।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, দেশীয় মালিকানাধীন তামাক শিল্পের অস্তিত্ব বিলিনের পথে। এই শিল্পকে কে রক্ষার জন্য আইনের দ্রুত বাস্তবায়ন চাই। তারা আরো বলেন, আমাদের মাটি এবং আবহাওয়া তামাক চাষের উপযোগী। সার, তেলসহ বিভিন্ন দ্রব্যের দাম যে ভাবে বেড়েছে তাতে ন্যায্য মূল্যে তামাক বিক্রি করতে না পারায় আজ আমরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি ঠিকমত তামাক চাষ করতে পারছি না। দেশীয় কোম্পানিগুলো ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারলে তামাকের ন্যায্য মূল্য পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সরকার ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে শতভাগ দেশীয় কোম্পানিগুলোর জন্য আলাদা নীতিমালা তৈরির উদ্যোগ নিলেও তা আজও বাস্তবায়ন হয়নি। এতে হুমকির মুখে পড়েছে ৩০টি দেশীয় সিগারেট প্রস্তুতকারী কোম্পানি।

প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বক্তারা বলেন, কাজ করে দু-মুঠো ডাল-ভাত খেতে চাই, তাই আমাদের তামাক চাষের সুযোগ দিন। আমরা দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আনয়নে তামাক উৎপাদন করতে চাই।




ইংল্যান্ডকে ২৪৭ রানের টার্গেট বাংলাদেশের

তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ২৪৭ রানের টার্গেট দিয়েছে বাংলাদেশ। সোমবার (৬ মার্চ) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন টাইগার অধিনায়ক তামিম ইকবাল। প্রথমে ব্যাট করে ২৪৬ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ।

টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই জোড়া উইকেট হারায় বাংলাদেশ। দলীয় ১ রানে শূন্য করে নিটন ও দলীয় ১৭ রানে ৬ বলে ১১ রান করে আউট হন তামিম। এরপর নাজমুল হাসান শান্ত ও মুশফিক মিলে শুরুর ধাক্কা সামাল দেন।

তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৯৮ রান সংগ্রহ করে এই দুই ব্যাটার। অর্ধশতক পূরণ করেন নাজমুল হাসান শান্ত। দলীয় ১১৫ রানে ৭১ বলে ৫৩ রান করে রান আউটের শিকার হন শান্ত।

এরপর ক্রিজে আসা মাহমুদুল্লাহকে সঙ্গে নিয়ে খেলতে থাকেন মুশফিক। তবে দলীয় ১৫৩ ও ১৬৩ রানে ফের জোড়া উইকেট হারায় বাংলাদেশ। মুশফিক ৯৩ বলে ৭০ ও মাহমুদুল্লাহ ৯ বলে ৮ রান করে সাজঘরে ফিরে যান।

এরপর সাকিব ও আফিফ মিলে রানের চাকা সচল রাখেন। সাবলীল ব্যাটিংয়ে নিজের অর্ধশতক পূরণ করেন সাকিব। তবে দলীয় ২১২ ও ২১৯ রানে আবারো জোড়া উইকেট হারায় টাইগাররা।

আফিফ ২৪ বলে ১৫ ও মিরাজ ৬ বলে ৫ রান করে আউট হন। এরপর দলীয় ১২৭ রানে ৬ বলে ২ রান করে সাজঘরে ফিরে যান তাইজুল ইসলাম। এরপর মারমুখি ভঙ্গিতে ব্যাট করতে থাকেন সাকিব। ২৪৬ রানে তবে দলীয় ২৪৬ রানে ৭১ বলে ৭৫ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে আউট হন সাকিব। শেষ ব্যাটার হিসেবে মুস্তাফিজ আউট হলে ২৪৬ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। ইংল্যান্ডের পক্ষে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নেন জোফরা আর্চার।

সূত্র: ইত্তেফাক




শুটিংয়ে গিয়ে গুরুতর আহত অমিতাভ বচ্চন

শুটিং করতে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন বলিউডের শাহেনশাহ অমিতাভ বচ্চন। ভারতীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম তাদের প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানিয়েছে, হায়দ্রাবাদে নতুন ছবি নাগ অশ্বিন পরিচালিত ‘প্রজেক্ট কে’র শুটিং করতে গিয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। দুর্ঘটনায় তিনি পাঁজরে আঘাত পেয়েছেন।

দুর্ঘটনার পর সঙ্গে সঙ্গে তাকে হায়দ্রাবাদের এআইজি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, পাঁজরের কার্টিলেজ ভেঙেছে। তিনি বর্তমানে ডাক্তারদের অবজারভেশনে আছেন। এখন বিশ্রাম নিচ্ছেন অভিনেতা।

খবরটি নিশ্চিত করে অমিতাভ বচ্চন তার ব্লগে লিখেছেন, ‘আমি আঘাত পেয়েছি পাঁজরের কার্টিলেজ ভেঙেছে, ডান দিকের মাংসপেশিতে আঘাত পেয়েছি। শুটিং বাতিল করা হয়েছে। ডাক্তারের পরামর্শ নিয়েছি হায়দ্রাবাদের এআইজি হাসপাতালে, এরপর বাসায় চলে এসেছি। ব্যান্ডেজ করা হয়েছে, বিশ্রাম নিতে বলা হয়েছে। ব্যথার ওষুধও দেয়া হয়েছে।’

প্রসঙ্গত, এর আগেও শুটিং সেটে আঘাত পাওয়ার ঘটনা ঘটেছে অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে। ৮০’র দশকে ‘কুলি’ ছবির শুটিং করার সময় তিনি ভয়ানক আঘাত পেয়েছিলেন। সেই আঘাত এতটাই গুরুতর ছিল, তখন অনেকেই ভেবেছিলেন যে হয়তো তিনি আর সুস্থ হবেন না। তবে সব ভয় কাটিয়ে দিয়ে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসে বলিউডে আবার রাজত্ব করেছেন।

সূত্র: ইত্তেফাক




ঝিনাইদহে তরুণ উদ্যোক্তা মোটরসাইকেল ব্যবসায়ী হিসেবে জনপ্রিয় সোনার বাংলা মটরস্

ঝিনাইদহ শহরে তাসলিমা ক্লিনিকের দক্ষিণ পাশে অবস্থিত সোনার বাংলা মটরস্। প্রোপাইটার- তাপস কুণ্ডু, সনজিত কর্মকার।

ঝিনাইদহ শহরের উত্তপ্ত গ্রাম অঞ্চলে প্রিমিয়াম বাইক থেকে শুরু করে সকল ধরনের বাইক ক্রয় বিক্রয় মানেই সোনার বাংলা মটরস্। প্রতিটা গ্রামে তার কর্মীরা একটিভ থাকে বাইক কালেকশন এর জন্য, ভালো মানের বাইক এবং কম বয়সী বাইক কালেকশন করে থাকে।

কাগজ নিয়ে নেই কোন ঝামেলা ১০০% কাগজ গ্যারান্টি দিয়ে গাড়ি বিক্রয় করে থাকে সোনার বাংলা মটরস্। পিক নয় কাস্টমার সেবায় সোনার বাংলা মটরস্ মূল উদ্দেশ্য শহরে প্রত্যেক ব্যবসায়ীর সাথে গ্যারান্টি দিয়ে সব থেকে কম প্রফিট এ গাড়ি বিক্রয় করে একমাত্র সোনার বাংলা মটরস্।

সর্বনিম্ন ১০০০ টাকা প্রফিট এ গাড়ি বিক্রি করা সোনার বাংলা মটরস্। যার কারনে সবার কাছেই খুবই জন প্রিয় হয়ে উঠেছে। সোনার বাংলা মটরস্ প্রোপাইটার সনজিত কর্মকার বলেন কাস্টমারের সেবা দেয় আমাদের মূল ধর্ম , আমরা সব সময় কাগজ পাতি এবং গাড়ির দিক থেকে ফেরেশ থাকতে চাই।




গাংনীতে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ ও সরকারের উন্নয়ন প্রচারে শোভাযাত্রা

মেহেরপুরের গাংনীতে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ ও ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন পালন এবং জাতিয় শিশু দিবস উদযাপন ও সরকারের উন্নয়ন প্রচারনা মুলক শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ সোমবার সকালে উপজেলা সাবেক ছাত্রলীগের সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম ও জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইমরান হাবিবের নেতৃত্বে একটি শোভাযাত্রা গাংনী শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

শোভাযাত্রাটি গাংনী উপজেলা চত্বর থেকে বের হয়ে সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে উপজেলা চত্বরে এসে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাংনী পৌর মেয়র আহম্মেদ আলী। জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি রাকিবুল ইসলাম টুটুল,উপজেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান পলাশ, উপজেলা কৃষক লীগের সহ সভাপতি মাহামুদ হাসিবসহ উপজেলা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ ও কর্মি সদস্যবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন। এসময় সরকারের নানা উন্নয়ন তুলে ধলে শ্লোগান দেন শোভাযাত্রায় অংশ গ্রহনকারিরা।




ম্যানইউকে গোলবন্যায় ভাসিয়ে নতুন রেকর্ড লিভারপুলের

বিগত কিছুদিন ধরে পুরোনো রূপে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছিলো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। আগের সপ্তাহেই জিতলো লিগ কাপের শিরোপা। তবে এরপর যে অ্যানফিল্ডে এসে এভাবে বিধ্বস্ত হতে হবে লিভারপুলের কাছে সেটি হয়তো ভাবেননি ম্যানইউ কোচ এরিক টেন হাগ। অ্যানফিল্ডে আসার আগে বলেছিলেন মাঠ কোনো ব্যাপার না, খেলাটাই আসল। তবে অ্যানফিল্ডে এসে বুঝলেন কেন এই মাঠকে প্রতিপক্ষের ত্রাস বলা হয়। কোডি গাকপো, ডারউইন নুনেজ ও মোহাম্মদ সালাহর জোড়া গোলে ম্যানইউকে ৭-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে লিভারপুল।

নিজেদের এই জয়ে ইংলিশ ফুটবলের সবচেয়ে সফল দুটি ক্লাবের মধ্যে পরাজয়ের নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে ইয়ুর্গেন ক্লপের লিভারপুল। ম্যাচ শেষে উচ্ছসিত ক্লপ বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর এটা আমাদের অন্যতম একটি সেরা পারফরম্যান্স। সবাই দেখেছে ছেলেরা কি করতে পারে। প্রথমার্ধটা ভাল কাটেনি। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে আমাদের বিপক্ষে খেলাটা ইউনাইটেডের জন্য কঠিন হয় পড়েছিল।’

সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ২৩ ম্যাচে মাত্র দ্বিতীয় পরাজয়ে কার্যত এক দশক পরে ইউনাইটেডের লিগ শিরোপা জয়ের স্বপ্ন অনেকটাই শেষ করে দিয়েছে। এখনো তৃতীয় স্থানে থাকা ইউনাইটেড টেবিলের শীর্ষে থাকা আর্সেনালের তুলনায় ১৪ পয়েন্ট পিছিয়ে রয়েছে।

কিন্তু মূল কথা হচ্ছে ১৯৩১ সালের পর প্রতিদ্বন্দ্বীতামূলক কোন ম্যাচে সবচেয়ে বড় পরাজয়ে ইউনাইটেডের সম্মানহানির বিষয়টি এখন সামনে চলে এসেছে। এই ধরনের পরাজয়ের রেশ সাধারনত দীর্ঘদিন রয়ে যায়। এর থেকে বেরিয়ে আসাটাও সহজ নয়।

ইউনাইটেড বস এরিক টেন হাগ বলেছেন, ‘ফলাফল বেশ স্পষ্ট, এটা অপেশাদার। আজ অনেক বিষয় ঘটেছে যা আমাকে রাগান্বিত করেছে। সহজ গোল হজম করা যার মধ্যে অন্যতম।’

বিশাল এই জয়ে চতুর্থ স্থানে থাকা টটেনহ্যামের থেকে পয়েন্টের ব্যবধান কমিয়ে তিনে নামিয়ে এনেছে লিভারপুল। হাতে রয়েছে বাড়তি একটি ম্যাচ। গত মৌসুমে দুই লিগ ম্যাচ মিলিয়ে ক্লপের দল ইউনাইটেডের বিপক্ষে ৯-০ ব্যবধানে জয়ী হয়েছিল। কিন্তু এবারের মৌসুমে শুরুতেই জয় তুলে নিয়েছিল রেড ডেভিলসরা। আগস্টে ২-১ গোলে জয়ী হয়েছিল ইউনাইটেড। ইউনাইটেডের বস হিসেবেই সেটাই টেন হাগের প্রথম জয় ছিল। তবে ফিরতি লেগে যে অলরেডদের কাছে এভাবে বিধ্বস্ত হতে হবে সেটি হয়তো তখন কল্পনাতেও আনেননি টেন হাগ।

এদিকে আগের সপ্তাহে ঘরের মাঠে রিয়াল মাদ্রিদের কাছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোর প্রথম লেগে ৫-২ গোলে বিধ্বস্ত হয়ে বিদায়ের মুখে রয়েছে লিভারপুল। তারপরই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের উড়িয়ে দেওয়া এমন পারফরম্যান্স। ক্লপ বলেন, ‘সবাই আমাদের জন্য অনুভব করে। সবাই জানে এখনো আমরা অনেক কিছুই করে দেখাতে পারি। আর এই মুহূর্তে আমরা এটাই প্রমান করে চলেছি।’

২০১৬ সালের পর থেকে অ্যানফিল্ডে জিততে পারেনি রেড ডেভিলরা। এবারো সেই অ্যানফিল্ডেই হতাশ হতে হলো ইউনাইটেডকে। বিরতির দুই মিনিট আগে গাকপোর হাত ধরে গোলের দরজা উন্মুক্ত হয়। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ৪৩ মিনিটে এন্ডি রবার্টসন ইউনাইটেডের রক্ষনভাগকে ফাঁকি দিয়ে ডাচ স্ট্রাইকার গাকপোর দিকে বল বাড়িয়ে দেন। কোনাকুনি শটে গাকপো এগিয়ে দেন লিভারপুলকে।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই লিভারপুলের নতুন সাজানো আক্রমণভাগ শেষ পর্যন্ত জ্বলে ওঠে। হার্ভি এলিয়টের ক্রস থেকে উরুগুইয়ান নুনেজ ৪৭ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুন করেন। তিন মিনিট পর কাউন্টার এ্যাটাক থেকে ডেভিড ডি গিয়াকে পরাস্ত করে গাকপো নিজের দ্বিতীয় গোল করেন।

ম্যাচের ৬৬ মিনিটে নুনেজের থ্রু বল থেকে সালাহ গোল করলে ব্যবধান বেড়ে দাঁড়ায় ৪-০। জর্ডান হেন্ডারসনের ক্রস থেকে একেবাওের ফাঁকায় দাঁড়ানো নুনেজ হেডের সাহায্যে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন। ৮৩ মিনিটে ইউনাইটেডের বিচ্ছিন্ন রক্ষণভাগকে সহজেই কাটিয়ে সালাহ নিজের দ্বিতীয় গোল করেন। লিভারপুলের বিদেশী খেলোয়াড় হিসেবে প্রিমিয়ার লিগে সর্বোচ্চ ১২৯ গোল করলেন মিশরীয় এই তারকা।

সালাহ বলেন, ‘মিথ্যা বলবো না, এটা আমার জন্য সত্যিই বিশেষ এক অর্জন। এখানে আসার পর থেকে এই রেকর্ড আমার মাথায় ছিল। প্রথম মৌসুম থেকেই আমি এই রেকর্ডের পিছনে ছুটেছি। ’

বদলি নেমে ৮৮ মিনিটে দলের হয়ে সপ্তম গোলটি করেন রবার্তো ফিরমিনো। শেষ পর্যন্ত ৭-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়েই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের মাঠ থেকে ঘরে ফিরতে হয় ম্যানইউকে।

সূত্র: ইত্তেফাক




গাংনীর করম‌দি দারুসসুন্নাত নেছা‌রিয়া দা‌খিল মাদ্রাসা সুপা‌রের সংবাদ স‌ম্মেলন

মে‌হেরপু‌রের গাংনী‌ উপ‌জেলার করমদি দারুসসুন্নাত নেছা‌রিয়া দাখিল মাদ্রাসার ক্ষতি করার অপচেষ্টা ও সুপারের মান ক্ষুন্ন করার প্রতিবা‌দে স‌ংবাদ স‌ম্মেলন ক‌রে‌ছেন মাদ্রাসার সুপার আবু জাফর।

সোমবার সকাল ১১ টা্র‌দি‌কে মে‌হেরপুর জেলা প্রেস ক্লা‌বে এ সংবাদ স‌ম্মেলন অনু‌ষ্ঠিত হয়।

সংবাদ স‌ম্মেল‌নে লি‌খিত বক্ত‌ব্যে মাদ্রসার সুপার আবু জাফর ব‌লেন, আমি করমদি দারুস্সুন্নাত নেছারিয়া দাখিল মাদ্রাসায় বিগত ১৯৯৪ সাল থেকে অদ্যবধি সুনামের সহিত সুপার পদে দায়িত্বপালন করে আসছি। মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একটি কুচক্রী মহল মাদ্রাসা ও বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডের বিরোধী মত ও পথের অনুসারী আমার সুনাম নষ্ট করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে। কিছুদিন পূর্বে মাদ্রাসায় এসেম্বলী চলাকালীন সময় নবম শ্রেনীর কয়েজন অমনোযোগী ও অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের শাষন করার কারনে তারা আমার উপর ক্ষুব্ধ হয় এবং কুচক্রীমহলের চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রে আমার প্রতিষ্ঠানের নবম শ্রেনীর কিছু শিক্ষার্থী গত ২ মার্চ সন্ধ্যার সময় ভিডিও প্রসঙ্গে জানতে পারি। উক্ত তারিখে আমার মাদ্রাসার কাজ শেষে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের নিকটে যায় এবং উক্ত সাজানো ও উদ্দেশ্যপ্রনোদিত ভিডিও বিষয়ে আমার কোন জানা নাই। গত ৫ মার্চ র‌বিবার সকালে মাদ্রাসায় গেলে তালাবদ্ধ দেখতে পাই। বিশৃংখলা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে কিছু উচ্ছংখল ছাত্র এবং বহিরাগত ষড়যস্তমুলকভাবে মাদ্রাসার শিক্ষকগণকে মাদ্রাসায় প্রবেশ করতে বাঁধা দেয়। আমি মাদ্রাসার নিরাপত্তার জন্য বামন্দি ক্যাম্পের ইনচার্জ এবং গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবগত করি। নির্বাহী অফিসার নিরাপত্তার স্বার্থে প্রশাসনকে অবগত করলে গাংনী থানার পুলিশ মাদ্রাসায় উপস্থিত হয়। কুচক্রীমহল‌দের ওই ভিডিওগুলি ভালোভাবে লক্ষ্য করলে স্পষ্ট বোঝা যায় যে কারও ইন্ধনে কোন বিশেষ মহলের প্ররোচনায় ভিডিওগুলি ধারন করা হয়েছে।

তি‌নি আরও ব‌লেন, গত বছ‌রের ১৫ ই আগষ্ট পালন উপলক্ষে ওই বছ‌রের ২ আগস্ট মাদ্রাসায় ব্যানার টানালে কিছু চক্রীমহলের ইন্ধনে ওই ব্যানার‌টি পর‌দিন ৩ আগস্ট কেটে ফেললে আমি তৎকালীন ইউএনও স্যারকে অবগত করি এবং গাংনী থানায় একটি জিডি করি। যার নং ১৫৪, তাং ৪/৮/২১ ইং। কিন্তু অদ্যবধি ওই কুচক্রীমহল আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত অব্যাহত রেখেছে। এমতাবস্থায় আমাকে মাদ্রাসায় যেতে বাধাপ্রদান ও হুমকি দিচ্ছে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিরাপত্তা চাই।

সংবাদ স‌ম্মেলন‌ে মে‌হেরপুর জেলা প্রেস ক্লা‌বের সভাপ‌তি তোজা‌ম্মেল আযম, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব চান্দু, মে‌হেরপুর প্রতি‌দি‌নের সম্পাদক ইয়াদুল মো‌মিন, বাসস প্রতি‌নি‌ধি দিলরুবা খাতুন, আমা‌দের অর্থনী‌তি প্রতি‌নি‌ধি মাসুদ রানা, মাই‌টি‌ভি প্রতি‌নি‌ধি মাসুদ রানাসহ ক্লা‌বের সদস‌্যরা অংশ নেন।




দামুড়হুদায় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদের সাথে রেড ক্রিসেন্টের মতবিনিময় সভা

সারাদেশে রেড ক্রিসেন্ট এর ৬৮ টি ইউনিটে সক্ষমতা বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে জনগোষ্ঠীর কাছে মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর পথ আরো প্রশস্ত করতে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গনের সাথে মত বিনিময় করেছেন বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি।

গতকাল রবিবার সকাল ১০টায় রাজধানীর রেডিসন হোটেলে আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সভার উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন সমবায় মন্ত্রী মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এমপি।

এ সময় তিনি উপস্থিত জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গনের উদ্দেশ্য বলেন সমগ্র দেশব্যাপী রেড ক্রিসেন্ট এর বিস্তৃত স্বেচ্ছাসেবক নেটওয়ার্কে সরকারের বিভিন্ন মানবিক সহায়তা প্রকল্পে সম্পৃক্ত করলে আরো স্বচ্ছ জবাবদিহিতার সাথে কাজ করা সম্ভব হবে। এছাড়া সরকারের সহযোগি সংস্থা হিসেবে বিডিআরসিএস’কে স্থানীয় সরকার বিভাগ সহ সরকারের অন্যান্য সংস্থা গুলো আরো বেশি পরিমাণে আর্থিক সহায়তা প্রদান সহ স্বেচ্ছাসেবকদের মানবিক ও দক্ষ করে গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় কারিগরি সহায়তা প্রদান করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।

মত বিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল অব: এটিএম আবদুল ওয়াহ্হাব। তিনি উপস্থিত ইউনিট চেয়ারম্যান ও সেক্রেটারিদের উদ্দেশ্য বলেন স্থানীয় সম্পদের উপর ভিত্তি করে সকল ইউনিটকেই টেকসই উন্নয়নের মাধ্যমে নিজস্ব উদ্যোগে বিপদাপন্ন মানুষের কাছে মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। তবেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সরকারের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে চলা সম্ভব হবে। সারাদেশে ৬৮ টি ইউনিটের মাধ্যমে রেড ক্রিসেন্ট প্রাকৃতিক ও মানব সৃষ্ট দুর্যোগে বিপন্ন মানুষের কাছে পরিষেবা পৌঁছায়। রেড ক্রস রেড ক্রিসেন্ট আন্দোলনে মূলনীতি অনুসরণ করে আত্মনির্ভরশীল ও টেকসই জাতীয় সোসাইটি হিসেবে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি কে প্রতিষ্ঠিত করতে ইউনিট গুলোর ভূমিকা ও করণীয় সম্পর্কে অবহিত করতেই সভার আয়োজন করা হয়।

সভায় উপস্থিত জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তথা সোসাইটির ইউনিট চেয়ারম্যানদের একত্রিত করে জেলা পরিষদসহ স্থানীয় বিভিন্ন সংস্থা প্রতিষ্ঠান ও দানশীল ব্যক্তির সহায়তায় বিভিন্ন ইউনিট কর্তৃক গৃহীত মানবিক কর্মকাণ্ড সংক্রান্ত তথ্য বিনিময় করা হয়। দিন ব্যাপী সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ৫১ জন ইউনিট চেয়ারম্যান, ৫৬ জন ইউনিট সেক্রেটারি, সোসাইটির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুর-উর-রহমান, ট্রেজার এম এ সালাম, ব্যবস্থাপনা পরিষদের সদস্য বৃন্দ, মহাসচিব, উপমহাসচিব, আই এফ আর সি বাংলাদেশ ডেলিগেশনের প্রধান সঞ্জীব কুমার কাফলে, আইসিআরসি বাংলাদেশের প্রধান কাথিয়া লরেঞ্জ, রেড ক্রিসেন্ট ইউনিট সেক্রেটারি গন, সিপিপি পরিচালক প্রশাসন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব, সোসাইটির বিভিন্ন বিভাগের পরিচালক গণসহ অন্যান্য কর্মকর্তাগণ বৃন্দ, আইএফআরসি, আইসিআরসি, বিভিন্ন পার্টনার, ন্যাশনাল সোসাইটির প্রধান ও প্রতিনিধিগণ এবং সোসাইটির স্বেচ্ছাসেবকবৃন্দ।




ঝিনাইদহে প্রণোদনার কৃষি যন্ত্রপাতি কৃষকের পরিবর্তে সিন্ডিকেটের হাতে

বর্তমান সরকারকে বলা হয় কৃষি বান্ধব সরকার। এই সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই খাদ্যে সয়ংসম্পুর্ণতা অর্জণের লক্ষ্যে কৃষিতে বেশি বরাদ্দ দিয়ে আসছে। নতুন নতুন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে উৎপাদন বৃদ্ধি ও অনাবাদি জমি চাষের আওতায় নিয়ে আসার চেষ্টা করছেন। সরকার ৩ হাজার ২০ কোটি টাকার প্রাক্কলিত বরাদ্দে ২০২১ সালের জুন থেকে শুরু করেছে সমন্বিত ব্যবস্থার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্প। সরকার স্বচ্ছভাবে এই প্রকল্প পরিচালনার চেষ্টা করছে। কিন্তু ঝিনাইদহের চিত্র ভিন্ন। সমন্বিত ব্যবস্থার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পে ঝিনাইদহে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য পাওয়া গেছে।

ভর্তুকীর মাধম্যে কৃষকদের মধ্যে বিতরণকৃত পাওয়ার টিলার, সিডার, কম্বাইন্ড হারভেষ্টার, রাইস প্লান্টার বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম ধরা পড়েছে, উঠে এসেছে সিন্ডিকেটের অর্থ বাণিজ্যের তথ্য। শোরুম মালিক, কৃষি কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে এ সিন্ডকেট। কাজেই এই প্রকল্পের সুফল কৃষক পাচ্ছে না, নয়-ছয় করে পকেট ভরছে সিন্ডিকেটের সদস্যরা। ২০২১ সালের জুন থেকে শুরু হওয়া ৫ বছর মেয়াদি প্রকল্পে এপর্যন্ত ঝিনাইদহে ১০ কোটি টাকার বেশি প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রণোদনা কি কৃষক পেয়েছে? প্রকল্প শুরু হওয়ার পর থেকেই কৃষকদের আবেদনের মাধ্যমে প্রণোদনার তালিকা প্রস্তুত করার নিয়ম থাকলেও স্বজন প্রীতি ও ব্যক্তিগত লোক দিয়ে ভর্তুকীর কৃষি যন্ত্রপাতি উত্তোলন করে সেই গুলো বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করছে সিন্ডিকেট। একটি পাওয়ার টিলার বাজারে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একটি সিডার ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ প্রণোদনায় কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তরের অনুমোদিত কোম্পনির ডিলারদের কাছে পাওয়ার টিলার ও সিডারের প্যাকেজ আড়াই লাখের উপরে।

প্রণোদনায় প্রাপ্ত যন্ত্রপাতি ৩ বছরের মধ্যে হস্তান্তর করা যাবে না এবং কৃষি বিভাগের তদারকিতে থাকবে এমন নিয়ম থাকলেও উপজেলা কৃষি অফিসে বিতরণের ফটোশুট করেই বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে এমন তথ্য মিলছে। কেউ বা বাড়িতে নিয়ে যেয়েও বিক্রি করেছে। জেলার সকল উপজেলাতেই এমন অনিয়ম ধরা পড়লেও সবচেয়ে বেশি হয়েছে ঝিনাইদহ সদরে। সদরের বিতরণকৃত তালিকা সরজমিনে অনুসন্ধান করতে যেয়ে দেখা গেছে সদর উপজেলার ফুরসুন্ধি ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামের মৃত খোদাবক্সের ছেলে হায়দার আলী, সুশিল বিশ্বাসের ছেলে শৈলেন বিশ্বাস (ডাক্তার), মৃত আজিম মন্ডলের ছেলে সাহাবুদ্দিন প্রণোদনার সিডার পাওয়ার টিলার পেয়েছেন। কিন্তু তাদের বাড়িতে যেয়ে পাওয়া যায়নি সেই সিডার ও পাওয়ার টিলার।

হায়দারের স্ত্রী শিউলি বেগম জানান, তাদের পাওয়ার টিলার সদর উপজেলার মধুহাটি গ্রামে তার দেবরের বাড়িতে রয়েছে। সাহাবুদ্দিনের স্ত্রী লিপি খাতুন জানান, তার স্বামী সাহাবুদ্দিন ঝিনাইদহের সেচ বিতানে কাজ করে। তারা এই পাওয়ার টিলার পেলেও শোরুম থেকে নিয়ে আসা হয়নি। শৈলেন ডাক্তার জানান, তার আগে থেকেই একটি পাওয়ার টিলার ছিলো। তাই নতুন টা তিনি বিক্রি করে দিয়েছেন। একসাথে দুইটা রেখে লাভ নেই বলেও তিনি জানান।

পার্শ্ববর্তী জিথড় গ্রামের মৃত বাবর আলী বিশ্বাসের ছেলে সাবেক মেম্বার মোস্তফার বাড়িতে পাওয়ার টিলারের খোঁজে গেলে জানা যায় একই ইউনিয়নের মাড়ুন্দি গ্রামের তুকামের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। এই গ্রামের বর্তমান ইউপি সদস্য আসাদুজ্জামান টিপু। তার প্রায় ১০ বছর আগে থেকেই একটি পাওয়ার টিলার রয়েছে।
২০২১-২২ অর্থ বছরে তিনি নতুন আরেকটি পেয়েছেন। তবে তার নিজের যেই টাকা দেওয়ার কথা ছিল তার একটি টাকাও তিনি দেননি। শোরুমের মালিক তার টাকা দিয়ে তার পাওয়ার টিলার তুলে তিনি নিজ দায়িত্বে বিক্রি করে দিয়ে কিছু নগদ টাকা তাকে দিয়ে দিয়েছেন।

আসাদুজ্জামান টিপু মেম্বার জানান, তিনি যদি জানতেন এই পাওয়ার টিলার নিয়ে এমন হবে তাহলে তিনি নিতেন না। সামান্য কিছু টাকার জন্যে তিনি দুর্নামের ভাগিদার হতে রাজি নন। একই গ্রামের মৃত শংকরের ছেলে সঞ্জিত ও মৃত নিরঞ্জনের ছেলে সুরঞ্জনও এই কৃষি অফিস থেকে প্রণোদনার পাওয়ার টিলার পেয়েছেন। সঞ্জিতের পাওয়ার টিলার বিক্রি করে দিয়েছেন।

সঞ্জিতের ছেলে জানান, তার ভাই বিদেশ যাওয়ার জন্য টাকার প্রয়োজন ছিল তাই বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।

সুরঞ্জন জানান, তার আগে থেকেই একটি পাওয়ার টিলার রয়েছে। তাই তিনি নতুনটা কিছু দিন আগে বিক্রি করে দিয়েছেন। তার ভাগ্নে কৃষি অফিসে চাকরি করে বলেও তিনি জানান। এর আগের অর্থ বছরে এই গ্রামের কংশো মন্ডলের ছেলে বিদ্যুৎ একটি পাওয়ার টিলার নেন প্রণোদনায়। তার পাওয়ার টিলারটি রয়েছে। তিনি জানান, নতুন করে যাদেরকে দেওয়া হয়েছে। তার একটিও কেও বাড়িতে আনেননি। সবাই ফটোশুট করেই বিক্রি করে দিয়েছেন। সরকারের সাথে টাকার যে অংশ তাদের দেওয়ার কথা, তা কেওই দেননি। সব কিছু শোরুম মালিক দিয়ে তুলে নিয়েছেন। এর বিনিময়ে ৪ থেকে ৬ হাজার করে টাকা দেওয়া হয়েছে যাদের নামে পাওয়ার টিলার বরাদ্দ এসেছে। এরকম অসংখ্য তথ্য মিলেছে সদর উপজেলার হরিশংকরপুর, ঘোড়শাল, সুরাট, পাগলাকানাই, সাগান্না, পোড়াহাটি, হলিধানী ও পৌর এলাকায়।কেউ হারভেস্টার নিয়েছেন, কেউ পাওয়ার টিলার বা রাইস প্লান্টার।

হরিণাকুণ্ডু ও শৈলকুপা উপজেলাতেও এমন অনিয়মের অসংখ্য তথ্য পাওয়া গেছে। কালীগঞ্জ ও মহেশপুরেও হয়েছে দুর্নীতি ও স্বজন প্রীতি। যাদের আগে থেকেই এই সমস্ত কৃষি যন্ত্রপাতি ছিল তাদেরকেই প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। ফলে তারা নতুন একটি পেয়ে বিক্রি করে দিয়েছেন। সম্প্রতি ঝিনাইদহ জেলা শহরের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার সংলগ্ন জিন্নাহ মার্কেটের কামালের মেশিনারিজ দোকানে আনপ্যাক্টড পাওয়ার টিলার বিক্রি করতে দেখা যায়। তারা খরিদ্দার অনুসন্ধান করছিল। ক্ষমতাসীন দলের লোক ক্রেতা হলে বিক্রির পরে ঝামেলা পোহাতে হবেনা তাই এমন খরিদ্দার খুজছিলেন তারা। তাদের দোকানে খোঁজ নিয়ে জানাযায় এগুলো সব প্রণোদনার পাওয়ার টিলার।

এদের মাধ্যমে জানাগেছে, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যানরা ইচ্ছামত নাম দিয়ে প্রণোদনার এই যন্ত্রপাতিগুলোর তালিকা পাশ করিয়ে এনে এভাবে বিক্রি করে দেন। এতে করে শোরুম মালিক, কৃষি কর্মকর্তা ও উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান সবার লাভ থাকে। কিন্তু এতে করে সরকারের এই ভর্তুকীর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পূরণ হচ্ছে?

ঝিনাইদহ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল করিম জানান, প্রণোদনায় প্রাপ্ত কৃষি যন্ত্রপাতিগুলো ৩ বছরের আগে বিক্রি বা হস্তান্তর করতে পারবেন না। ঝিনাইদহে যন্ত্রের প্রকার ভেদে সরকার একেক রকমের প্রণোদনা দিচ্ছেন। একটি হারভেস্টারের সরকার বর্তমানে ১৪ থেকে সাড়ে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ভুর্তকী দিচ্ছেন। সিডারে বর্তমানে ১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ভর্তুকী দিচ্ছেন। শুধু পাওয়ার টিলারে ৫০ হাজার টাকা, পাওয়ার থ্রেসারে ৪৮ হাজার, রিপারে ৯০ হাজার বেড প্লান্টারে ৯০ হাজার ভর্তুকী দিচ্ছেন সরকার। প্রতিবছর উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউপি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে কৃষি অফিসে আবেদন করতে বলা হয়। আবেদনের ভিত্তিতে তালিকা তৈরি করে কমিটির মাধ্যমে ঢাকায় পাঠানো হয়। পাশ হয়ে আসলে বিতরণ করা হয়। মেশিনের দাম সব প্রকল্প অফিস থেকে পাশ হয়ে আসে।

ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয়ের উপ পরিচালক আজগার আলী জানান, কৃষক যদি পাওয়ার পরে বিক্রি করে ফেলেন তাহলে আমরা কি করবো। আমরা তো কৃষকের ভালোর জন্যই দিচ্ছি। এই বিষয়ে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনওদের সাথে কথা বলতে বলেন।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া জেরিন জানান, তিনি গত ডিসেম্বরে ঝিনাইদহে যোগদান করেছেন। তার যোগদানের পরে প্রণোদনার কোন যন্ত্রপাতি বিতরণ করা হয়নি। তবে যেহেতু প্রশ্ন উঠেছে এই বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলে জানান। ঝিনাইদহের অগ্নিবীণা সড়কের সেচ বিতান ও বিসমিল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং মিশনারিজ থেকেই এই কৃষি যন্ত্রপাতিগুলো সরবরাহ করা হয়ে থাকে। এর মধ্য সেচ বিতান থেকেই বেশিরভাগ বিতরণ করা হয়েছে। সেচ বিতানের কর্মচারী সাহাবুদ্দিন নিজে কৃষি কাজ না করলেও তিনি পেয়েছেন প্রণোদনার পাওয়ার টিলার। অন্যান্য সকল ইউনিয়ন বা এলাকা থেকে ফুরসুন্ধি ইউনিয়নের মানুষের নাম বেশি রয়েছে তালিকায়।

জানাগেছে, সেচ বিতানের মালিক রিপনের বাড়ি ফুরসুন্ধি ইউনিয়নে। তার চেষ্টাতেই এই ইউনিয়নের লোকজনের নাম বেশি এসেছে। চলতি অর্থবছরে একটি সিডার ও পাওয়ার টিলার দিয়ে প্রকল্পে মূল্য ধরা হয়েছে দুই লাখ পঞ্চান্ন হাজার। কিন্তু খোলা বাজারে একই ব্রান্ডের একটি পাওয়ার টিলার ১ লাখ ৭০ হাজার টাকার মধ্যে ও একটি সিডার ৩০ হাজার টাকার মধ্য অর্থাৎ দুই লাখ টাকার মধ্যে পাওয়া গেলেও শোরুম গুলো প্যাকেজের মূল্য নিচ্ছেন দুই লাখ ৫৫ হাজার। যেখানে প্রচলিত মূল্যের থেকে ৫৫ হাজার টাকায় বেশি নেওয়া হচ্ছে।

সেচ বিতানের মালিক রিপন অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, তিনি নিজের টাকা দিয়ে কারো নামে প্রণোদনার যন্ত্রপাতি উত্তোলন করেননি। যার তা সে নিজেই করেছে। সরকারের নির্ধারিত দামেই আমরা যন্ত্রপাতি সরবরাহ করছি।

জনতা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মালিক আলমগীর হোসেন জানান, ঝিনাইদহের বাজারে যেই পাওয়ার টিলারগুলো পাওয়া যাচ্ছে সেই গুলো মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গার। ওগুলো ঝিনাইদহের নয়। জেলায় সব থেকে বেশি সাপ্লাই দেয় সেচ বিতান, তিনি নিজের টাকা দিয়ে কোন গ্রাহকের নামে যন্ত্রপাতি উত্তোলনের সাথে জড়িত নন বলে জানান।

ঝিনাইদহ জেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম জানান, আমরা প্রণোদনার পাওয়ার টিলারসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি বাজারে বিক্রি হচ্ছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে জেলার বিভিন্ন জায়গায় তদন্ত করেছি। অনেকগুলো জায়গায় এর সত্যতা পেয়েছি। আমরা আরও তদন্ত করবো। এই বিষয়ে আমরা মাননীয় কৃষিমন্ত্রীর কাছে জানাবো।

সমন্বিত ব্যবস্থার কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের পরিচালক তারিক মাহমুদুল ইসলাম জানান, সারাদেশে খুব সচ্ছভাবে এই প্রকল্প পরিচালিত হচ্ছে। ঝিনাইদহে কিছু অনিয়মের তথ্য আমি শুনেছি। আমরা তদন্ত করবো। সত্যতা পেলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

উল্লেখ্যঃ প্রকল্পটি গত ২০২০-২১ অর্থবছর থেকে শুরু হয়েছে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত চলবে। এই প্রকল্পের প্রাক্কলিত বরাদ্দ ৩ হাজার ২০ কোটি টাকা। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ৫ বছরে ১৫০০০টি কম্বাইন হারভেস্টার বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। হাওর ও উপকূলীয় এলাকা দুর্যোগ প্রবণ ও ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এবং ৭০% ভর্তুকি থাকায় যন্ত্র ক্রয়ে আগ্রহ অনেক বেশি। সমতল এলাকায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিগণ পরিবারের সকলের সহযোগিতায় নিজেই চাষাবাদ করেন। প্রকল্পের মাধ্যমে ৬০০০টি রিপার বিতরণ করা যাবে। জেলার সচেতন মানুষ দাবি তুলেছেন সরকারি অর্থ সঠিক ভাবে প্রকৃত কৃষকদের উন্নয়নে কাজে লাগাতে হবে। ঝিনাইদহে সরকারি প্রণোদনার কৃষি যন্ত্রপাতি বরাদ্দ ও বিক্রির এই সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তারা।




মুজিবনগরে,৭ই মার্চ, জাতীয় শিশু দিবস ও স্বাধীনতা দিবসের প্রস্ততি সভা 

ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ দিবস, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস, ২৫ মার্চ গণহত্য দিবস এবং স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালন উপলক্ষে মুজিবনগরে প্রস্ততিমূলক সভা করেছে উপজেলা প্রশাসন।

রবিবার বেলা সাড়ে ১১ টার সময় উপজেলা পরিষদ অডিটরিয়ামে এই প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রস্তুতি সভায় মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনিমেষ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্হিত ছিলেন,মুজিবনগর উপজেলা চেয়ারম্যান জিয়াউদ্দীন বিশ্বাস।

প্রস্তুুতি সভায় আরো উপস্হিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আফরোজা খাতুন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: আসাদুজ্জামান,উপজেলা সমাজসেবা অফিসার আব্দুর রব, উপজেলা শিক্ষা অফিসার আলাউদ্দীন,উপজেলা যুবমহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদিকা তহমিনা খাতুন,বীর মুক্তিযোদ্ধা আহসান আলী খান, বাগোয়ান ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আয়ূব হোসেন, মোনাখালী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মফিজুর রহমান সহ উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা,স্কুলের প্রধান শিক্ষক,এনজিও প্রতিনিধি,পুলিশ প্রতিনিধি,বিজিবি প্রতিনিধি,সাংবাদিকবৃন্দ।