দেশীয় ফ্যাশন হাউসে একবার গিয়ে দেখুন। গামছার শাড়ি, কুর্তি, ব্লাউজ আর কটি এখন বাড়তে শুরু করেছে। গামছা দিয়ে বানানো ব্যাগ, টুপি, হেডব্যান্ড এমনকি পার্সও এখন দেদারসে ব্যবহৃত হচ্ছে।
গামছার মতো জিনিস কিভাবে ফ্যাশন অনুষঙ্গ হলো তা বোঝা জরুরি। পরতে আরামদায়ক ও টেকসই বলে গামছার কাপড় সব সময়ই সমাদৃত হয়ে আসছে। আর এই আরামদায়ক পোশাক গরমের সময় অনেক আরামদায়ক, বর্ণিল ও রঙিন হওয়ায় অনেক কাজে আসে।
শাড়ি ব্লাউজ কুর্তিতে
গোসলখানা থেকে গামছা ফ্যাশনে আসে শাড়ি হয়ে। বৈশাখ, ফাল্গুন, গায়েহলুদের মতো অনুষ্ঠানের জন্য একসময় অনেকে বেছে নিয়েছিলেন গামছা প্রিন্টের শাড়ি।সময় বদলে গেছে। এখন সুতির পাশাপাশি সিল্ক, হাফসিল্ক শাড়িতেও গামছা চেক দেখা যায়। তবে তাঁতের শাড়ির মধ্যে গামছা চেক দেখা যায় বেশি। শুধু যে বাঙালি উৎসবে গামছা শাড়ি পরিধান করা হয়, তা কিন্তু নয়। অনেকে ফরমাল অনুষ্ঠানেও এসব গামছার পোশাক পরছেন। অনেকে সাধারণ তাঁতের শাড়ির সঙ্গে গামছা প্রিন্টের ব্লাউজ ব্যবহার করছেন। সে ক্ষেত্রে গামছা ব্লাউজ ঘটি হাতা কিংবা বোট গলা দিয়ে বানানো যেতে পারে। কিংবা গলা দিয়ে কোমর পর্যন্ত ব্লাউজ বানিয়ে ভাঁজ করে শাড়ি পরলে আলাদা একটা লুক পাওয়া যায়। কিছু শাড়ির পাড়ে গামছার প্যাচওয়ার্কও করা হচ্ছে।গামছার কুর্তিও রয়েছে। এগুলো অফিস, ক্লাস কিংবা প্রতিদিনের ব্যবহারের জন্য বেশ আরামদায়ক।
কটি, কাফতান, টপস, ফতুয়া ইত্যাদি সব ক্ষেত্রে গামছার ব্যবহার দেখা যাচ্ছে এখন। গামছা দিয়ে বানানো পোশাক জাঁকজমকপূর্ণ করা হয় না বটে; কিন্তু এর সঙ্গে মানানসই অনুষঙ্গ ব্যবহারে দিতে পারে একেবারে ভিন্ন লুক। ভিন্নতা আনার জন্য কড়ি কিংবা কাঠ-পুঁতির ব্যবহার করা যায় এতে। অনেক গামছা পোশাকে কিছুটা হাতে করা সুতার কাজ দেখা যায়। বাজারের প্রচলিত গামছা দিয়ে পোশাক বা অন্যান্য অনুষঙ্গ তৈরি হয় না। সে জন্য বিশেষ গামছা তৈরি করা হয়, যাতে পাকা রঙের ব্যবহার থাকে। ফলে পোশাক থেকে সহজে রং বিবর্ণ হয়ে যাওয়ার চিন্তা থাকে না।
গয়না ও অন্যান্য
গামছা দিয়ে যে শুধু পোশাক তৈরি হচ্ছে, তা নয়। গামছার কাপড় দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে হাতে তৈরি গয়না। অনেক গয়না প্রেমী বৈচিত্র্য ও ভিন্নধর্মী গয়নার খোঁজে থাকেন। তাদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে গামছা দিয়ে তৈরি গয়না। এ ছাড়া অনেকে নিজের ঘর নান্দনিকতা ও দেশীয় ঐতিহ্যের ছোঁয়ায় সাজিয়ে রাখতে ভালোবাসেন। তাদের জন্যও পাওয়া যাচ্ছে গামছা প্রিন্টের চাদর, কুশন, পর্দা, ডাইনিং রানার ইত্যাদি।
পশ্চিমি পোশাকে গামছা
টপস, স্কার্ট, গাউন, কটি ইত্যাদি পোশাক তৈরিতে এখন গামছার ব্যবহার দেখা যাচ্ছে। ছেলেদের জন্যও তৈরি করা হচ্ছে শার্ট, পাঞ্জাবি, ফতুয়া ইত্যাদি। এ ছাড়া রয়েছে গামছার ব্লেজার ও কটি। কটিগুলো সাধারণত এক রঙের পাঞ্জাবির ওপর পরা হয়। তবে গামছা নিয়ে কাজ করার সময় অনেক সময় ফ্যাশন হাউজকে নানা সমস্যায় পড়তে হয়। কারণ মানুষের কাছে সবসময় নতুন ট্রেন্ডের ওপর আস্থা তৈরি করা কঠিন। তাও এখন আস্তে আস্তে এর গুরুত্ব বাড়ছে।
দাম কেমন হয়?
গামছা পোশাকের দাম নির্ভর করে ডিজাইন ও ফ্যাশন হাউসের ওপর। পণ্য ও ধরন-ভেদে ১ হাজার ৫০০ থেকে ৬ হাজার টাকার মধ্যে এ পোশাক পাওয়া যায়। এখন অনলাইন ও অফলাইন অনেক ভেন্ডর ফিউশনধর্মী পোশাক করছেন। সেখানে রয়েছে গামছার ব্যবহারও।
সূত্র: ইত্তেফাক