মেহেরপুরের তিন উপজেলার ২০টি ইউনিয়নে কেন্দ্রীয় ঘোষীত আজ শনিবার পদযাত্রা ও বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করার লক্ষ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে বিএনপি। সুবিধামত স্থানগুলোতে তারা এ কর্মসূচী পালন করবে। এদিকে, গতকাল শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কোন কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এমনকি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীও আওয়ামী লীগের কোন কর্মসূচীর খবর পাওয়া যায়নি।
তবে গতকাল সন্ধ্যা থেকে নাশকতার অভিযোগে বিএনপির নেতাকর্মীদের ধরপাকড় শুরু করেছে পুলিশ। গাংনী উপজেলার বামন্দী থেকে ৬ নেতা ও সদরের আমঝুপি থেকে ২ নেতাকে আটক করার খবর পাওয়া গেছে। বামন্দী থেকে দেশী অস্ত্র ও ককটেল উদ্ধারেরও খবর পাওয়া গেছে। পুলিশি অভিযানের আতঙ্কে বিএনপির নেতাকর্মীরা ঘরছাড়া বলে দাবী করেছেন বিএনপির নেতারা। গতকাল এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (রাত ১২ টা পর্যন্ত) ৮ জনকে আটকের খবর পাওয়া গেছে।
আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর কর্মকর্তারা জানান, কোন সংঘাতের আশঙ্কা নেই। সংঘাত হলে আইননুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জেলায় তিন থানা ও ক্যাম্প মিলিয়ে ৩ শতাধিক পুলিশ ফোর্স রয়েছে। পুলিশের দাবি সংঘাত হলে এই সদস্য দিয়েই সংঘাত নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
খোজ নিয়ে জানা গেছে, গাংনী উপজেলার বামন্দী, ধানখোলা ও মড়কাতে বিএনপির এসকল কর্মসূচী পালন করবে পুলিশের বিশেষ শাখাকে অবহিত করেছে। একই ভাবে মুজিবনগরের দারিয়াপুর ও মোনাখালীতেও বিএনপির কর্মসূচী হবে বলে পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে। তবে সদরের কোথায় কোথায় বিএনপি কর্মসূচী পালন করবে তা জানা যায়।
গাংনী থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক জানান, গাংনীর তিন স্থানে বিএনপির কর্মসূচীর খবর পেয়েছি। আওয়ামী লীগের কোন কর্মসূচীর খবর এখনো পায়নি। আশা করি শান্তিপূর্ণভাবে বিএনপি তাদের কর্মসূচী পালন করবে। ব্যতায় হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি আরো জানান, গাংনীতে ৬টি ক্যাম্প ও থানা মিলিয়ে যে সংখ্যাক পুলিশ আছে তা কম হলেও সংঘাত নিয়ন্ত্রণে এ সংখ্যাই যথেষ্ঠ।
জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বামন্দী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল আওয়াল বলেন, আমরা কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর ঘোষণা অনুযায়ী গাংনীর ৯টি ইউনিয়নেই পদযাত্রা কর্মসূচীর প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ চার স্থানে করার অনুমতি দিয়েছে। যে কারণে আমরা চার স্থানের প্রস্তুতি নিয়েছি। এর মধ্যে সন্ধ্যার সময় বামন্দী থেকে চার নেতাকে আটক করেছে পুলিশ। এর পর থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা ঘরছাড়া হয়ে আছে। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যে বৃদ্ধির প্রতিবাদের আমরাদের এ সকল কর্মসূচী। তাতে বিএনপির নেতাকর্মীদের হয়রানী করার জন্য পুলিশ নাশকতার মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।
মুজিবনগর থানার ওসি মেহেদী রাসেল জানান, থানা ও ৩ ক্যাম্প মিলিয়ে যে পুলিশ আছে তাতে উপজেলার শান্তি শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আনতে যথেষ্ঠ। তবে এখানকার উভয়দলের নেতাকর্মীরা শান্ত। সুষ্ঠ পরিবেশেই উভয় দল কর্মসূচী পালব করবে বলে তিনি আশা করেন।
মেহেরপুর সদর থানার ওসি শেখ মইনুল ইসলাম জানান, বিএনপি কয়েকটি স্থানে কর্মসূচী পালন করবে শুনলেও নির্দিষ্ট স্থানের নাম এখনো পায়নি। আওয়ামী লীগের কোন কর্মসূচীর খবর পাইনি। তবে মেহেরপুর শান্তিপূর্ণ জেলা। এখানে কোন সংঘাতের আশঙ্কা নেই।
মেহেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি মাসুদ অরুন নির্দিষ্ট করে স্থানের নাম না বললেও তিনি বলেন, সকল ইউনিয়নে আমাদের পদযাত্রা করার প্রস্তুতি চলছে। সুবিধামত স্থানগুলোতে আমরা কর্মসূচী পালন করবো। আওয়ামী লীগের কোন কর্মসূচী আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, শুনেছি তারাও দুএকটি স্থানে কর্মসূচী পালন করবে। তবে তারা তাদের মত করবে, আমরা আমাদের মত করবো। কোন সংঘাত পরিস্থিতি তৈরি হোক এটা চাই না।