দীর্ঘ ১৬ বছর পর আগামী ২৮ অক্টোবর মেহেরপুর শহর আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন। সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল ২০০৩ সালের ৩০ জুন। তারপর ২০১৫ সালে হওয়ার কথা থাকলেও রাজনৈতিক জটিলতার কারনে সে সম্মেলন বাতিল হয়ে যায়। বৃহত্তর রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষে প্রতিটি জায়গায় কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেয় সংগঠনের সভাপতি ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারই অংশ হিসেবে আগামী ২৮ অক্টোবরে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে মেহেরপুর শহর আওয়ামী লীগের সম্মেলন।
এবারের সম্মেলন নির্বাচনের মাধ্যমে হতে পারে বলে জানা গেছে।
এই সম্মেলনকে ঘিরে ইতি মধ্যে শুরু হয়েছে প্রার্থীদের দৌড়ঝাপ। এতো বছর পর কে হবে শহর আওয়ামীলীগের সভাপতি, কে হবে সাধারণ সম্পাদক। এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে মেহেরপুর শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ কর্মীদের মাঝে।
আগামী ২৮ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হতে চলেছে শহর আওয়ামী লীগের সম্মেলন। এই সম্মেলন এ সভাপতি প্রার্থী হিসেবে নাম শোনা যাচ্ছে ৩ জনের এবং সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হিসেবে ৫ জনের।
৩ জন সভাপতি প্রার্থীর মধ্যে রয়েছে বর্তমান শহর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আক্কাস আলী, জেলা আওয়ামীলীগের প্রচার সম্পাদক ইকবাল হোসেন বুলবুল ও মেহেরপুর জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি সাজ্জাদুল আনাম।
৫ জন সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীর মধ্যে রয়েছে, বর্তমান শহর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য অ্যাড. খ. ম. ইমতিয়াজ বিন হারুন জুয়েল, মেহেরপুর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মফিজুর রহমান, শহর ৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সেলিম খান, সাবেক ছাত্রনেতা মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল ও জেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক নিশান সাবের।
সভাপতি প্রার্থী ইকবাল হোসেন বুলবুল বলেন, আমি বর্তমানে মেহেরপুর জেলা আওয়ামীলীগের প্রচার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। আমি আওয়ামীলীগ পরিবারের সন্তান। সততা ও নিষ্ঠার সাথে দলীয় প্রতিটি কাজ করেছি। আমি আশা করছি আগামী ২৮ অক্টোবর শহর আওয়মীলীগের সম্মেলনে দল ও দলীয় কর্মীরা আমাকে সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করবে।
সভাপতি প্রার্থী আক্কাস আলী বলেন, ২০০৪ সালের পর থেকে আমি মেহেরপুর শহর আওয়মীলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে কাজ করছি। দীর্ঘ বছর পর আবার শহর সম্মেলন হতে চলেছে। এবার আমি সভাপতি প্রার্থী হিসেবে আছি। আমি আশা করছি দীর্ঘ বছরের কাজের ভিত্তিতে দলীয় কর্মীরা আমাকে সর্মথন করবে।
সভাপতি প্রার্থী সাজ্জাদুল আনাম বলেন, আমি দীর্ঘ দিন ধরে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাথে জড়িত। আপনারা জানেন আমি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলাম, মেহেরপুর জেলা যুবলীগের সভাপতি ছিলাম। আমার রাজনীতিতে কোন দায়িত্বহীনতা ছিল না। সে হিসেবে আমি আশা করছি দলীয় কর্মীরা আমাকে শহর সভাপতি হিসেবে সাদরে গ্রহণ করবে।
সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী নিশান সাবের বলেন, আমি ছাত্র রাজনীতি থেকে শুরু করে যুবলীগ ও পরে আওয়ামীলীগের সাথে জড়িত। দীর্ঘ রাজনীতির বয়সে আমি সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেছি। প্রতিটি মানুষের একটি উচ্চ আকাঙ্খা থাকে সে হিসেবে আমি আগামী শহর সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হয়েছি। আমি আশা করি সুন্দর পরিবেশে যোগ্য নেতৃত্ব উঠে আসবে।
সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মফিজুর রহমান বলেন, আমি মেহেরপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে সফলভাবে দায়িত্ব পালন করেছি। আমার পরিবার আওয়মীলীগ, আমি আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত দীর্ঘদিন ধরে। প্রগতিশীল মানসিকতা সুস্থ্য ধারার রাজনীতির মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নের লক্ষে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অবিচল আস্থা রেখে সংগঠনে কাজ করতে চাই। আমি মনে করি আগামী ২৮ অক্টোবর মেহেরপুর শহর সম্মেলনে আমাকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দলীয় কর্মীরা মনোনিত করবে।
সধারণ সম্পাদক প্রার্থী অ্যাড. খ.ম ইমতিয়াজ বিন হারুন জুয়েল বলেন, আমি বাংলাদেশ আওয়ীলীগের সাথে জড়িত দীর্ঘদিন যাবত সেই সাথে মেহেরপুর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। ২০০৩ সালের ৩০ জুন সর্বশেষ শহর সম্মেলনে ইকবাল হোসেন বুলবুল ও আমি প্যানেলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলাম। কিন্তু বর্তমান কমিটির সভাপতি অ্যাড. ইয়ারুল ও সাধারণ সম্পাদক আক্কাস আলী প্যানেলের কাছে পরাজিত হই। আমি স¦চ্ছ রাজনীতিতে বিশ্বাসী। মেহেরপুর শহর আওয়ামীলীগকে আরও শক্তিশালী সুসংগঠিত করতে সম্মেলন করা হচ্ছে। আমি আশা করি এই সম্মেলনে দলীয় কর্মীরা আমাকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ভোট দিবে।
সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী সেলিম খান বলেন, আমি এরশাদ হঠাও আন্দোলন থেকে শুরু করে বিএনপির আমলে সাহসের সাথে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলাম। এখন সময় এসেছে ভালো কিছু করার। তাই আগামী শহর সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছি।
এছাড়াও মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল সাধারণ সম্পাদক হিসেবে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন। তবে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
শহর আওয়ামীলীগের সম্মেলন নিয়ে বর্তমান সভাপতি অ্যাড. ইয়ারুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ বেশ কয়েক বছর পর আবার মেহেরপুর শহর সম্মেলন হতে যাচ্ছে। আমরা আশা করছি এই কাউন্সিলের মাধ্যমে সঠিত নেতৃত্ব উঠে আসবে। এ সময় ব্যক্তিগত প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি দীর্ঘ সময় শহর আওয়ামীলীগের দায়িত্ব পালন করেছি। আগামীতে যদি আওয়ামীলীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে চাই তবে জেলা আওয়ামীলীগে সাংগঠনিক দায়িত্বে যাওয়ার চেষ্টা করবো।
মর্তুজা ফারুক রুপক