ব্রেস্ট ক্যান্সার কাদের বেশি হয়?
কাদের বেশি হয় ব্রেস্ট ক্যান্সার?
– ৯৯.৫% ক্ষেত্রে মহিলাদের, ০.৫% ক্ষেত্রে পুরুষদের।
– বয়স : সাধারণত ৩০-৬০ বছর।
– ইউরোপের দেশগুলোর অধিবাসীদের।
– পরিবারে যদি অন্য কারও হয়ে থাকে (মা, খালা ইত্যাদি)।
– যারা হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি নেন। জন্মনিরোধক ওষুধ খান।
– যাদের মাসিক আগে শুরু হয় এবং দেরিতে মাসিক বন্ধ হয়।
– যারা প্রথম বাচ্চা বেশি বয়সে নেন।
– চর্বিযুক্ত খাবার বেশি খান।
– সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ান না।
– যাদের সন্তান নেই।
কী কী উপসর্গ নিয়ে আসেন রোগীরা?
– এক ব্রেস্ট বা দুই ব্রেস্টের আকারে বা গঠনে কোনো পরিবর্তন। চাকা চাকা দেখা যাওয়া।
– নিপল বা স্তনবৃন্ত থেকে রস নিঃসৃত হওয়া। কখনও রক্ত নিঃসৃত হওয়া।
– নিপল ভেতরের দিকে ঢুকে যাওয়া, নিপলে চির ধরা।
– বগলে চাকা চাকা কিছু দেখা যাওয়া।
– অনেক সময় ব্রেস্টের চামড়া গর্ত গর্ত হয়ে যায় (অনেকটা কমলার খোসার মতো)।
– এ ছাড়া ব্রেস্ট ক্যান্সার যদি শরীরের অন্যান্য জায়াগায় ছড়িয়ে যায় তাহলে কাশি, জণ্ডিস, হাড়ে ব্যথা ইত্যাদি উপসর্গ নিয়ে রোগী আসতে পারে।
কীভাবে ব্রেস্ট ক্যান্সার নির্ণয় করা যায়?
১. রোগের যথাযথ ইতিহাস নিয়ে এবং পরীক্ষা করে
২. ইমেজিং :- আল্ট্রাসনোগ্রাফি ,ম্যামোগ্রাফি
৩. হিস্টোলজি :
– FNAC
– বায়োপসি
৪. টিউমার মার্কার্স : যেমন- BRCA- 1, BRCA-2
তবে ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রাথমিক পর্যায়ে নিরূপণের জন্য প্রতি মাসে একবার নিজে নিজে ব্রেস্ট পরীক্ষা (Self Breast Examination) করে দেখতে বলা হয়ে থাকে।
যেভাবে করা যেতে পারে সেল্ফ ব্রেস্ট এক্সামিনেশান :
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে পরীক্ষা :
ক. দুই বাহু মাথার ওপরে বা পেছনে উঁচু করে ধরতে হবে।
খ. লক্ষ্য করতে হবে স্তনের আকার-আকৃতি, উপরের চামড়া বা রঙের কোনো পরিবর্তন আছে কি না। যেমন : চামড়া পুরু হয়ে যাওয়া, লালচে বা কালচে হয়ে যাওয়া, তাপ অনুভব করা।
বিছানায় শুয়ে পরীক্ষা :
ক. ডান কাঁধের ওপর বালিশ রাখতে হবে।
খ. ডান হাত মাথার পেছনে দিতে হবে।
গ. বাম হাতের ৩ আঙুল দিয়ে ডান স্তন চক্রাকারে পরীক্ষা করতে হবে এবং দেখতে হবে কোনো তরল বা রক্ত নিঃসৃত হয় কি না।
ঘ. একইভাবে বাম পাশের স্তন পরীক্ষা করতে হবে।
স্নান করার সময় পরীক্ষা :
ক. একটি হাত মাথায় রাখতে হবে।
খ. অন্য হাতের আঙুল দিয়ে কলার বোনের কয়েক ইঞ্চি নিচ থেকে একদম বগল পর্যন্ত চেপে দেখতে হবে কোনো চাকা বা ব্যথা অনুভূত হয় কি না।
আর যাদের ব্রেস্ট ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি (উপরে উল্লেখ করা হয়েছে) তাদের প্রতি ৬ মাসে একবার আল্ট্রাসনোগ্রাফি বা ম্যামোগ্রাফি করাতে বলা হয়। যাদের বয়স ৩০ বছরের কম তাদের জন্য আল্ট্রাসনোগ্রাফি এবং যাদের ৩০ বছরের বেশি তাদের জন্য ম্যামোগ্রাফি অধিক প্রযোজ্য।
কীভাবে চিকিৎসা করা হয় ব্রেস্ট ক্যান্সারের?
কয়েক প্রকারের চিকিৎসা রয়েছে ব্রেস্ট ক্যান্সারের। যেমন :
১. অপারেশন
২. রেডিওথেরাপি
৩. কেমোথেরাপি
৪. হরমোন থেরাপি
৫. ইমিউন থেরাপি
লেখক: ডা. মারুফ রায়হান খান, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে উচ্চতর ডিগ্রিতে অধ্যয়নরত
সূত্র: যুগান্তর