কুষ্টিয়ার পদ্মা নদীতে পদ্মায় মাছ ধরার সময় শরিফুল ইসলাম নামে এক জেলের জালে ধরা পড়েছে একটি বিশালাকৃতির কুমির।
আজ মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে মিরপুর উপজেলার তালবাড়ীয়া ইউনিয়নের পদ্মা নদী বালির ঘাট থেকে একটি বিশাল আকৃতির কুমির ধরা পড়ে। ১১ ফুট লম্বা আনুমানিক ২৫০ কেজি ওজনের এই কুমিরটি একনজর দেখতে ভিড় করেন উৎসুক এলাকাবাসী।
জেলে শরিফুল ইসলাম জানান, প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবারও তিনি নদীতে মাছ ধরতে যান। এ সময় একটি কুমির জালে আটকা পড়লে সঙ্গে থাকা আবজাল ও নুর হোসেনের সহযোগিতায় সেটিকে পদ্মার ডাঙায় তোলা হয়। পরে তারা বন বিভাগে এবং মিরপুর থানায় খবর দেন। কুমিরটির দৈর্ঘ্য ছিল আনুমানিক ১১ ফুট এবং ওজন প্রায় ২৫০ কেজির মতো। এলাকার লোকজন সেটি দেখতে ভিড় করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মিরপুর উপজেলা বন কর্মকর্তা জুয়েল আহমেদ জানান, বিভাগীয় বন কর্মকর্তার মাধ্যমে আমরা মঙ্গলবার বিকেলে খবর পেয়ে গড়াই নদীতে যায়। সেখানে স্থানীয় এক জেলে মাছ ধরতে গিয়ে তার জালে একটি কুমির ধরা পড়ে। খবর পেয়ে স্থানীয় জনতা ভীড় জমায়। পরে কুমিরটি আমরা উদ্ধার করে রশি দিয়ে বেঁধে রাখি। যাতে কুমিরটির কোন ক্ষতি না হয়।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পদ্মা নদীর গভীরে অবমুক্ত করতে কুমিরটিকে নিয়ে সামাজিক বন বিভাগ কুষ্টিয়ার কর্মকর্তারা রওয়ানা হয়েছে।
এর আগে কুষ্টিয়া শহর সংলগ্ন পদ্মা নদীর শাখা গড়াই নদী কয়েক দিন ধরে একাধিক কুমির দেখা যায়। কুমির দেখতে প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শহরের জুগিয়া ভাটাপাড়া গোরস্তান এলাকায় গড়াই নদীর পাড়ে ভিড় করে স্থানীয় বাসিন্দারা। নদীতে কম পানিতে কুমিরের দেখা পাওয়ায় জেলেরা মাছ ধরতে পানিতে কম নামে।
এদিকে কুমিরদের খাবার দিতে বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফেডারেশন (বিবিসিএফ) কুষ্টিয়া শাখার সভাপতি ও পাখিপ্রেমী শাহাব উদ্দিন নদের চরে ছাগল ও হাঁস-মুরগি দেন। শাহাব উদ্দিন মিলন বলেন, এখন শুষ্ক মৌসুমে নদের পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। হয়তো কোনোভাবে কুমির এখানে এসেছে। কিন্তু সে কোনো খাবার পাচ্ছে না। এ জন্য হাঁস, মুরগি ও ছাগল আনা হয়। কুমির সংরক্ষণ করতে হবে।
কুষ্টিয়া বন বিভাগের কর্মকর্তা আতিয়ার রহমান জানান, কুমিরটি উদ্ধার করা হয়েছে। বিকেলে বন বিভাগের পিকআপভ্যানে করে কুমিরটিকে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য কুষ্টিয়া বন বিভাগ অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে কুমিরটিকে পদ্মা নদীতে অবমুক্ত করা হবে।