মেহেরপুরে ১ টাকা কেজি কপি, ১ শত টাকায় মিলছে সাত কেজি আলু এতে ক্রেতারা খুশি হলেও উৎপাদন খরচ উঠছেনা ফলে দুশ্চিন্তা চাষিদের। সবজির এমন দরপতনে আগামীতে সবজি আবাদে আগ্রহ হারাবেন চাষিরা। তবে চাল ডাল, তেল, মসলার দাম উর্ধমুখী। এখানে সস্তি নেই স্বল্প আয়ের মানুষের।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মেহেরপুরে পাইকারি বাজারে শীতকালীন সব ধরনের সবজি ও পেঁয়াজের দরে ধস নেমেছে। পূর্বের সব রেকর্ড ভেঙে পাইকারিতে প্রতি কেজি বাঁধাকপি ও ফুলকপি ১ টাকা কেজি এবং ১০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে ১০ কেজি আলু। গত শনিবার গাংনী কাঁচা বাজারে পাইকারি প্রতি কেজি আলু ৮ থেকে ১০ টাকা, পেঁয়াজ ২৫ থেকে ২৬ টাকা, টমেটো ৮ থেকে ১০ টাকা, শসা ১৫ থেকে ১৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
পূর্বমালসাদ গ্রামের চাষি আতিয়ার রহমান জানান, তিনি এবার এক বিঘা জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদ করেন যার খরচ হয় প্রায় ৮০ হাজার টাকা। পেঁয়াজ বিক্রি করে যে টাকা হয়েছে তাতে লোকসান হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার টাকা।
একই গ্রামের আলুচাষি কুদ্দুস আলী জানান, এক বিঘা জমিতে আলু চাষ করে চরম বিপাকে রয়েছেন। আলুর যা দাম তাতে খেত থেকে তুলে আনার শ্রমিক খরচই উঠছে না।
সাহারবাটি গ্রামের সবিজচাষি হাসিবুল ইসলাম বলেন, গেল কয়েকদিন গবাদি পশুতে খেয়েছে বাঁধাকপি ও ফুলকপি। পরবর্তী আবাদ করার জন্য চাষীরা খেত পরিষ্কার করার চেষ্টা করছেন। তাই অনেকেই খেত থেকে বিনামূলে কপি তুলে হাটে বিক্রি করছেন। এ দিকে চাহিদার চেয়ে উৎপাদন কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ায় দর পতন বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
তবে সারাদেশে আবাদ বৃদ্ধি পাওয়ায় মেহেরপুর জেলার সবজি খুব বেশি পরিমাণ অন্য জেলায় যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন গাংনী কাঁচাবাজারের পাইকারি সবজি আড়তদার নাজমুল ইসলাম। সবজি বিক্রি করে চাউল, ডাউল মসলা ও তেল কিনতে নাভিশ্বাস উঠছে চাষিসহ সাধারন মানুষের।
তিনি বলেন, মেহেরপুর তহহাট ও গাংনী কাঁচা বাজার থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সবজি সরবরাহ করা হয়। কিন্তু বিভিন্ন জেলায় প্রচুর পরিমাণে সবজি আবাদ হওয়ায় চাহিদা কমে গেছে। বাজারে বিপুল পরিমাণ সবজি আসলেও পানির দরে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন চাষিরা। এতে ক্রেতারা খুশি হলেও পথে বসছেন চাষিরা।