চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনা থানাধীন পারকৃষ্ণপুর মদনা ইউনিয়নের সাড়াবাড়িয়া ও হরিশচন্দ্রপুর গ্রামের মধ্যবর্তী মাঠের মধ্যে সড়কের প্রতিবন্ধী স্কুলের কাছে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।
ছিনতাইয়ের ২০ ঘণ্টার মধ্যে ৩ জন ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করেছে দর্শনা থানা পুলিশ।
গত রবিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সাড়াবাড়িয়া ও হরিশচন্দ্রপুর গ্রামের মধ্যবর্তী মাঠের মধ্যে সড়কের প্রতিবন্ধী স্কুলের কাছে ছিনতাইকারীরা নববধূসহ ২ জনকে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এতে দুজনই গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এ ঘটনায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে সোমবার দুপুর ২টার দিকে ৩ জনকে গ্রেফতার করে। ছিনতাইয়ের ২০ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ প্রধান আসামিসহ তাদের আটক করে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন ওসমানপুর বেঁদেপোতা গ্রামের রমজান আলীর ছেলে আব্দুস সালাম (৫২), কুড়ালগাছি ইউনিয়নের হরিশচন্দ্রপুর গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে মাওলা বক্স (৪৬), পারকৃষ্ণপুর মদনা ইউনিয়নের সাড়াবাড়িয়া গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে শাহাবুদ্দিন বদই (৪৫)।
পুলিশ জানায়, ছিনতাইয়ের প্রধান আসামি আব্দুস সালামকে ধরতে গিয়ে তিনি পানির মধ্যে লুকিয়ে যান। পুলিশ কাদায় নেমে তাকে গ্রেফতার করে।
আহতরা হলেন কুড়ালগাছি ইউনিয়নের নতুন গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে সাগর (২৪), দর্শনা শ্যাম্পুর গ্রামের মজিবর রহমানের মেয়ে ও সাগরের স্ত্রী শাফিয়া খাতুন (১৮)।
আহত সাগর জানান, “আমি দর্শনা শ্যাম্পুর গ্রামে শ্বশুরবাড়ি থেকে স্ত্রীকে নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে হরিশচন্দ্রপুর গ্রামে আমার বাড়ি ফিরছিলাম। সাড়াবাড়িয়া ও হরিশচন্দ্রপুর গ্রামের মধ্যবর্তী সড়কের প্রতিবন্ধী স্কুলের কাছে পৌঁছালে ৪ জন ছিনতাইকারী রাস্তার ওপর বাঁশ ফেলে আমাদের মোটরসাইকেলের গতি রোধ করে এবং সেটি ভাঙচুর করে।
এরপর ছিনতাইকারীরা আমার পালসার মোটরসাইকেলের চাবি কেড়ে নিতে চায়। আমি তাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করি। এ সময় বিপরীত দিক থেকে আরেকটি মোটরসাইকেল আসছিল। তখন আমি কিছুটা সাহস পেয়ে চিৎকার করে ‘বাঁচাও, বাঁচাও’ বলতে থাকি। ছিনতাইকারীরা আমাকে বাম হাতে ও ডান কাঁধে দা দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। আমার স্ত্রীকেও মারধর করে এবং তার কাছ থেকে স্বর্ণের আংটি, চুড়ি, চেইনসহ প্রায় লক্ষাধিক টাকার গহনা ও আমার কাছে থাকা ৪৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়।”
এ সময় বিপরীত দিক থেকে আসা মোটরসাইকেল আরোহী তার গ্রামে ফিরে গিয়ে ঘটনাটি জানায়। খবর পেয়ে গ্রামের লোকজন ছুটে আসলে ছিনতাইকারীরা তাদের ব্যবহৃত একটি বাজাজ মোটরসাইকেল (নং- ঝিনাইদহ-হ ১১-০১৭৮) ফেলে পালিয়ে যায়।
পুলিশ সেই মোটরসাইকেলের সূত্র ধরে তদন্তে নামে এবং তিনজন ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। আমি (সাগর) ছিনতাইকারী ২ জনকে চিনতে পারি এবং পরে পুলিশকে জানাই।
ঘটনার পর দর্শনা থানার অফিসার মুহাম্মদ শহীদ তিতুমীর সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন এবং ছিনতাইকারীদের ফেলে যাওয়া মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান।
দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ শহীদ তিতুমীর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “আমরা ছিনতাইকারীদের মধ্যে ৩ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি।”
এ ঘটনায় সাগর বাদী হয়ে ৩ জনের বিরুদ্ধে ছিনতাই মামলা দায়ের করেছেন।