মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই আজম বীর প্রতীক বলেছেন, ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল এই আম্রকাননে ঐতিহাসিক যে সরকার শপথ গ্রহণ করেছিল তা আমাদের জন্য বীরত্বগাথা অধ্যায়। আমরা গতকালে ফিরে যেতে পারব না। ইতিহাসের উপর কোন কিছু আরোপ করা যায় না। এখানে যে সরকার গঠন করা হয়েছিল সেই বিষয়টি অমলিন হয়ে থাকবে।
ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস পালন উপলক্ষে আজ ১৭ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকালে সূর্যদয়ের সময় মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধাঞ্জলি শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসকল কথা বলেন।
তিনি বলেন, অস্থায়ী সরকারের শপথ গ্রহন জাতীর জন্য একটা গৌরব উজ্জল অধ্যায়। এটা অমলিন থাক। আমরা যেন এটাকে সারাজীবন বরণ এবং উদযাপন করতে পারি। এটা মেহেরপুর, বৈদ্যনাথতলা এবং এই অঞ্চলকে ধন্য করেছে। যারা সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধা আছে তারা প্রতিনিয়তই এটাতে বিব্রতবোধ করেন। যারা মুক্তিযুদ্ধ না করেও নিজেদেরকে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে পরিচিত করাচ্ছেন তাদের ক্ষেত্রে অনেক উদ্যেগ আমরা ইতিমধ্যে গ্রহন করেছি। কিছু বিষয় আছে, যে বিষয়গুলো আদালতের রায়ের অপেক্ষায় আছি আমরা। আদালতে অনেকেগুলো মামলা আছে। আমরা চেষ্টা করছি মামলাগুলো নিষ্পত্তি করা। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি কমপ্লেক্স এর উন্নয়নের বিষয়ে আরও বলেন, এখানে যা কিছু করা হবে তা ঐতিহাসিক বস্তুনিষ্ঠতার নিরিখেই করা হবে। এর বাইরে কোন কিছু আরোপিত করা হবে না। কোন কিছুর সত্যতার ইতিহাস মোচনও হবে না।
ঐতিহাসিক ১৭ এপ্রিলের প্রথম সরকারের শপথ অনুষ্ঠানটি পালন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সূর্যোদয়ের সাথে সাথে বৈদ্যনাথতলা আমবাগানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, গার্ড অব অনার গ্রহণ এবং স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেনে উপদেষ্টা। একই সঙ্গে মুজিবনগর সৃতিসৌধে পতাকা উত্তোলন করেন স্থানীয় প্রশাসন।
এ সময় মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক উপদেষ্টাকে গার্ড অব অনার প্রদান করেন পুলিশ পরিদর্শক (আর আই) আফজাল হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশ, বিজিবি ও আনসার সদস্যের একটি টিম।
পতাকা উত্তোলন শেষে ১৯৭১ সালে অস্থায়ী সরকার গঠনকালে গার্ড অব অনার প্রদানকারী জীবিত ২ আনাসার সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিমদ্দীন এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজ উদ্দিন কে সন্মাননা ক্রেষ্ট তুলে দেন মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক উপদেষ্টা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন,মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক উপদেষ্টার একান্ত সচি তথ্য ও লেঃ কর্নেল(অব:)আব্দুল গাফ্ফার, তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্ত এনায়েত হোসেন, সহকারী একান্ত সচিব আমিরুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সচিব ইসরাত জাহান, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার(সার্বিক) শওকত হোসেন, মেহেরপুর জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজ ও পুলিশ সুপার মাকসুদা আক্তার খানম, মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পলাশ মন্ডলসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ।
পুষ্পার্ঘ অর্পণ শেষে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক উপদেষ্টা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি কমপ্লেক্স এবং আমবাগানের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেন।