মেহেরপুরের গাংনীতে মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবনদানকারি শহীদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবীতে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার গাংনীর ভাটপাড়া নীলকুঠিতে দিনব্যাপী স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিজয় দিবস ও ভাটপাড়া মুক্ত দিবস উদযাপন কমিটির আয়োজনে স্মরণ সভার উদ্বোধন করেন লেঃ কর্নেল (অব) বীর মুক্তিযোদ্ধা মকছুদুল হোসেন।
মেহেরপুর সরকারি কলেজের সহকারি অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল আমিন ধমকেতুর সঞ্চালনায় চারুশিল্পি বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মেহেরপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম।
মুখ্য আলোচক হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মৃতিচারণ মুলক আলোচনা করেন সাবেক সচিব মুহাম্মদ আলকামা সিদ্দিকী। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পশ্চিমবঙ্গের কবি ও গবেষক ইতিহাসবিদ মলয়চন্দন মুখোপাধ্যায়।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের মহা ব্যবস্থাপক খালেদুজ্জামান জুয়েল, রাঙামাটি জেলা জজ আদালতের সহকারি জজ মিল্টন হোসেন, গাংনী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট একেএম শফিকুল আলম, সাহারবাটি ইউপি চেয়ারম্যান মশিউর রহমান, কাথুলী ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান রানা, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রাকিবুল ইসলাম টুটুল প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন, ষাটের দশকে বাঙালি সংস্কৃতির প্রগতিশীল বিকাশ উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, বঙ্গবন্ধাুর অসহযোগ আন্দোলন এবং একাত্তরের সম্মুখ যুদ্ধে বীরোচিত ভুমিকা পালন করে গাংনীর কাজলা নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলির সাহসী জনগন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীণ সময়ে পাকবাহিনীর র্মিমমতায় রক্তাক্ত হয় ভাটপাড়া নীলকুঠি প্রাঙ্গন ও সাহারবাটির টেপুখালী মাঠ। নিপিড়িত শোষিত মানুষকে পাকিস্তানীদের হাাত থেকে রক্ষা করে একটি স্বাধীন রাষ্টের সুচনা করতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য শহীদ হন মুক্তিযুদ্ধের বলিষ্ট সংগঠক এমলাক হোসেন, উজির মালিথা, আবুল কাশেম সরকার, হাফিজউদ্দিন, আবুল কাশেম, নওপাড়া গ্রামের মজিবর রহমান, আফছার আলী মালিথা, শাকের আলী, জবতুল্লাহ, হিন্দা গ্রামের আজিজুল হক, বাবর আলী, মনসুর আলী, নুরবকসো, গাড়াবাড়িয়া গ্রামের মুছা, ইরফান আলী ও ভাদু বিশ্বাসসহ নাম না জানা শহীদদের রক্তশ্রোতে লাল হয় সাহারবাটির টেপুখালির মাঠ। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের বলিষ্ঠ প্রত্যয় এবং স্বাধীনতাকামী জনতার দুর্মর স্বপ্ন-শপথে উজ্জল হয়ে আছে এ জনপদের গ্রামগুলির ইতিহাস।
বক্তারা বলেন, স্বাধীনতার ৫১ বছর পার হলেও সে সকল শহীদদের নাম স্মৃতিফলক আজো উন্মোচন করা হয়নি । রাস্ট্রীয়ভাবেও নেই তাদের স্বীকৃতি। তাদের পরিবারের দাবী ওই সকল শহীদদের জীবনের বিনিময়ে এদেশের স্বাধীনতা অর্জন হয়েছে। বর্তমান সরকার স্বাধীনতার পক্ষের স্রকার। দির্ঘদিন ক্ষমাতায় থাকাকালীণ সময়েও আজো তাদের রাষ্ট্রিয় স্বীকৃতি মেলেনি। ওই সকল শহীদদের রাষ্ট্রিয় ভাবে স্বীকৃতি দেয়ার দাবী জানান পরিবার সহ এলকাবাসীর।
স্মরণসভায় বীর মুক্তিযোদ্ধা,শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের সদস্য সহ গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গরা অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহন করেন। এর আগে সকাল ১০ টায় শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনে নীলকুঠি স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যদিয়ে অনুষ্ঠান সুচনা করা হয়।