মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার করমদী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে মাঝারি থেকে বড় সাইজের ৮টি গাছ কর্তন করেন। গত ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসের ১৫ তারিখ থেকে ১৭ তারিখ তিনদিন ধরে তিনি মোট ৮টি গাছ কর্তন করেন।
গাছ কাটার ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক মুহাঃ আলম হুসাইন কোন প্রকার নিয়ম কানুন না মেনে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নিজের ইচ্ছায় তিনি গাছ গুলো কাটেন।
এ ব্যাপারে তিনি সাংবাদিকদের বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির মিটিং করে রেজুলেশন খাতায় সকলের স্বাক্ষর করে সকলের মতামতের ভিত্তিতে গাছ কাটা হয়েছে বলে জানান। অথচ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি লাইলা আরজুমান শিলা সাংবাদিকদের জানান, প্রধান শিক্ষক মৌখিকভাবে গাছ কাটার বিষয়ে জানিয়েছিল।
কিন্তু সভাপতি প্রধান শিক্ষককে নিয়মের বাইরে কোন কিছু করা যাবেনা বলে জানিয়ে দেন। এদিকে প্রধান শিক্ষক আলম হুসাইন সভাপতিকে বোঝাতে সক্ষম হন বিদ্যালয়ের গাছ বিদ্যালয়ের কাজে ব্যবহার হবে এতে কোন অসুবিধা হবেনা।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বসার জন্য বেঞ্চ দরকার তাই গাছগুলি কাটতে হয়েছে বলে প্রধান শিক্ষক মুহাঃ আলম হুসাইন সাংবাদিকদের জানালেও বিদ্যালয়ের সভাপতি সাংবাদিকদের জানান, প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর করবে বলে সে গাছ কাটতে চায়। তবে সভাপতি প্রধান শিক্ষককে আইন বা নিয়মের বাইরে কোন কিছু না করার জন্য বার বার শতর্ক করেন।
এদিকে প্রধান শিক্ষকের নিকট রেজুলেশন খাতা দেখতে চাইলে তিনি প্রথমে বলেন রেজুলেশন খাতা তার বাসায় আছে পরে দেখানো যেতে পারে। পরে আবারও দেখতে চাইলে তিনি বলেন বিদ্যালয়ে আছে। আসলে রেজুলেশনে সভাপতির কোন স্বাক্ষরই নেই।
কারণ সভাপতি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন তিনি গাছ কাটার বিষয়ে কোন রেজুলেশনে স্বাক্ষর করেননি। তাছাড়া তিনি ঢাকায় অবস্থান করছেন। কিভাবে রেজুলেশনে স্বাক্ষর করবেন। এ ধরণের মিথ্যাচার করে প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের গাছ কেটে নিয়মের কথা বলে বেড়াচ্ছেন।
তারপরও প্রধান শিক্ষক মুহাঃ আলম হুসাইন প্রচলিত নিয়মকে তোয়াক্কা না করে নিজের ইচ্ছাতে বিদ্যালয়ের বড় বড় গাছ কেটে হজম করেছেন।
স্থানীয় অনেকেই জানান, শিক্ষক মুহাঃ আলম হুসাইন দীর্ঘদিন জামায়াতের রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। তিনি বিএনপি জোট সরকারের আমলে কাজিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন।
পরে আর চেয়ারম্যান নির্বাচিত না হতে পেরে করমদি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা উৎকোচ দিয়ে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ লাভ করেন বলে জানা যায়। তার এ নিয়োগ নিয়ে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা মুরাদ আলী বিরোধীতাও করেন যা হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়ায়।
এলাকাবাসি প্রধান শিক্ষক মুহাঃ আলম হুসাইনের মিথ্যাচারের বিষয়ে চাপা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
এদিকে গাছ কর্তনের বিষয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিলারা রহমান জানান, সভাপতির কাঁধে ভর দিয়ে নিয়ম ভাঙ্গা যাবেনা। তাছাড়া আইন অমান্য করে গাছ কাটা হলে আমরা এর ব্যবস্থা গ্রহন করব।
-এ সিদ্দিকী শাহীন, গাংনী