দাফন সম্পন্ন হয়েছে মাফিজুর রহমানের। এরপর ও একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে কান্না থামছে না,তাঁর মায়ের। গতকাল শুক্রবার কাঁদছিল আর প্রলাপ করছিল,বলছিল মটর সাইকেল ডিলারের কারনে আমার ছেলেটা আজ হারিয়ে গেল। এ বিষয়ে তিনি আদালতে মামলাও করবেন বলে জানিয়েছেন।
জানা যায়,গেল এক বছর হল কোটচাঁদপুরের ঢাকা মটরস থেকে কিস্তিতে মটর সাইকেল কেনেন মাফিজুর রহমান মাফি(২০)। ইতোমধ্যে পরিশোধ ও কিস্তির ১ লাখ ১০ হাজার টাকা।
বাকি পড়েছে কয়েকটি কিস্তি। ওই টাকা পরিশোধে সময় নেন ২৬ আগষ্ট পর্যন্ত। এরমধ্যে শো-রুম থেকে ডাকা হয় গেল বুধবার। রেখে দেন মটর সাইকেলটি। মাফিজুর মটর সাইকেল রেখে এসে, নিজ দোকানের মধ্যেই গলায় রশি দেন গামছা দিয়ে।
পরিবারের লোকজন উদ্ধার করে,হাসপাতালে নেয়ার আগেই সে মারা যায় বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। পরে কোটচাঁদপুর থানা পুলিশ তাঁর মৃত দেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ঝিনাইদহ মর্গে পাঠান।বৃহস্পতিবার বিকেলে সম্পন্ন হয়, তাঁর জানাযার নামাজ। গতকাল শুক্রবারও কান্না থামছিল না মাফিজুর রহমানের মা আমেনা খাতুনের। তিনি কাঁদছিল আর প্রলাপ করছিল। অভিযোগ করছিল মটর সাইকেল শো-রুম কতৃপক্ষের বিরুদ্ধে। মাফিজুরের মা বলছিলেন,তারা টাকা পাবেন,টাকা নিতে পারবেন আজ অথবা কাল।তারা মটর সাইকেলটি কেড়ে নেওয়ায় আমার একমাত্র বুকের ধন আজ হারিয়ে গেল।
তিনি বলেন, আমি তাদের টাকা পরিশোধ করে দিচ্ছি, তারা আমার ছেলে কে ফিরিয়ে দিক। তাদের কারনে আমি আমার ছেলেকে হারালাম। আমি তাদের বিচার চাই। এ বিষয়ে তিনি আদালতে ওই মটর সাইকেল শো-রুম মালিকের বিরুদ্ধে মামলা করব।
মাফিজুর রহমান কোটচাঁদপুরের শালকুপা গ্রামের আকিমুল ইসলামের ছেলে। সে ছিলেন, কোটচাঁদপুর ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেনীর ছাত্র।
বিষয়টি নিয়ে মটর সাইকেল শো-রুমের মালিক আলমগীর হোসেন বলেন,তাঁর মটর সাইকেল কেড়ে রাখা হয়নি। সে নিজে থেকে রেখে গেছেন। তিনি বলেন,তিন মাসের কিস্তিতে মটর সাইকেল নেন মাফিজুর রহমান (মাফি)। হয়ে গেছে এক বছর। এরপরও এখনো শোধ হয়নি।
মটর সাইকেলটির মূল্য ছিল ২ লাখ ৪৬ হাজার টাকা। আজ পর্যন্ত সে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করেছেন। বাকি টাকা দেয়ার কথা ছিল ২৬ আগষ্ট। এরমধ্যে সে আমাকে বলে সাইকেলটি বিক্রি করার কথা। বুধবার সে এসেছিল। এরপর মটর রেখে চলে যান। যার প্রমান সিসিটিভিতে রয়েছে এমন দাবি তাঁর।
ওই ঘটনায় কোটচাঁদপুর থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন, কোটচাঁদপুর থানার ডিউটিরত উপপরিদর্শক (এসআই) আল মামুন।