মেহেরপুর সদর উপজেলার সীমান্তবর্তী শোলমারী ও শুভরাজপুর গ্রামে দিয়ে প্রবেশ করছে ভারতীয় পানি। এতে প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে সীমান্তবর্তী গ্রামের শত শত বিঘা জমির ফসল। ইতি মধ্যে বেশ কয়েক বিঘা জমির ফসল পানির নিচে তলিয়ে গেছে। শনিবার সকাল থেকে মেহেরপুর সদর উপজেলার শোলমারী ও শুভরাজপুর গ্রাম দিয়ে প্রবেশ করছে ভারতীয় জলাঙ্গী নদীর পানি। এই পানি শোলমারী, শুভরাজপুর ও কুতুবপুর গ্রামের পাশ দিয়ে মেহেরপুরের ভৈরব নদে প্রবেশ করছে। এতে তিন গ্রামের নদীর পাশের জমির বিভিন্ন ফসল পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ করে এইভাবে পানি প্রবেশে ক্ষতির মুখে পড়েছে স্থানীয় চাষিরা।
ভারতের নদীয়া জেলার বিক্রমপুর থানার নন্দনপুর রাউথবাড়ি দিয়ে জলাঙ্গী নদীর পানি মেহেরপুরের শোলমারী হয়ে বাংলাদেশের ভৈরব নদে প্রবেশ করেছে।
২০১৫ সালে ভৈরব ২৯ কিলোমিটার পুনঃখনন করা হয়। কিন্তু কাথুলি ব্রিজের পর ভৈরব অনেকটা সমতল থাকায় হঠাৎ করে পানি প্রবেশে ফলে ভৈরব সংলগ্ন আবাদী জমি গুলো পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে।
শোলমারী গ্রামের চাষী আসমত আলী বলেন, গত শুক্রবার পর্যন্ত তেমন একটা পানি ছিল না। কিন্তু শনিবার সকালে গরুর ঘাস কাটতে গিয়ে দেখি মরা ভৈরবে
পানি আসছে। প্রথমে বুঝতে না পারলেও পরে বুঝলাম ভারত থেকে এই পানি আসছে। তিন ঘন্টার ব্যবধানে আশেপাশের ধান, কলাই, মরিচসহ বিভিন্ন ফসলের জমি পানির নিচে তলিয়ে গেলো।
হাবু আলী বলেন, ভৈরবের পাশে আমার ১৫ কাঠা কলাই ছিল। গরুর খাবারের জন্য বিদেশি ঘাস লাগানো ছিল। পানি ওঠার খবর পেয়ে দ্রুত জমিতে গেলেও কিছুই খুজে পাইনি।
শুভরাজপুর গ্রামের আসাদুল ইসলাম বলেন, শোলমারী দিয়ে পানি প্রবেশ করছে খবর শুনে নদের ধারে যায়। সেখানে আমার পাটখড়ি শুকাতে দেওয়া ছিল। কোন রকম সেটা উদ্ধার করলেও ২ বিঘা জমির উঠতি ধান চোখের সামনে তলিয়ে গেলো।
শোলমারী গ্রামের ইউপি সদস্য আখতার হোসেন বলেন, শুক্রবার পর্যন্ত কোন পানি ছিল না। শনিবার সকাল থেকে পানি প্রবেশ করছে। এতে আমাদের গ্রামের অনেক ফসলি জমি পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে।
শোলমারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহাবুব জানান, বেশ কয়েক বছর এরকম পানি আমাদের দেশের ভিতর হঠাৎ করে প্রবেশ করেননি। তবে শনিবার সকাল থেকেই ক্রমেই পানি বেড়েই চলেছে। এতে স্থানীয় কৃষকরা বেশ ক্ষতির মুখে পড়েছেন। যদি ভারতীয় পানি নিয়ন্ত্রন সুইচ গেট সব গুলো খুলে দেয় তবে শোলমারী, শুভরাজপুর গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা আছে।
এ বিষয়ে মেহেরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদুল আলম বলেন, আমরা কৃষি বিভাগের সাথে বলেছি বিষয়টি দেখার জন্য। তাদের তথ্য অনুযায়ি এখনো তেমন কোন ক্ষতি হয়নি। তবে এইভাবে পানি বাড়তে থাকলে ফসলের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
-মর্তুজা ফারুক রুপক