দুর্গা পূজায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করণে মতবিনিময় সভা

মেহেরপুরে দুর্গা পূজা নিরাপত্তা নিশ্চিত করণে জেলা পুলিশের মতবিনিয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকালে পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেণ জেলা পুলশ সুপার এস এম মুরাদ আলী।

এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম, শেখ মোস্তাফিজুর রহমান (সার্কেল), জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ডা. রমেশ চন্দ্র নাথ, পরিবাকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অলোক কুমার দাস প্রমুখ।




ভৈরব ফিরছে চির চেনা রুপে

মর্তুজা ফারুক রুপক:
অবশেষে ভৈরবের কচুরিপানা অপসারণ করার কাজ শুরু হয়েছে। দির্ঘদিন ধরে কচুরিপানায় ঢেকে থাকা ভৈরব ফিরে পেতে যাচ্ছে তার চির চেনা রুপ। বর্ষার প্রভাব এ বছর কম, সে হিসেবে পানির প্রবাহ কম থাকলেও চোখে পড়ছে ভৈরবের সচ্ছ পানি। ইতিমধ্যে মেহেরপুর থানা ঘাট থেকে যাদবপুর গ্রামের শেষ সীমানা পর্যন্ত কচুরিপানা অপসারনণ করা হয়েছে। তবে জেলা প্রশসনের তথ্য অনুযায়ি মেহেরপুর জেলার শেষ সীমানা পর্যন্ত ধীরে ধীরে অপসারন করা হবে।

২০১৫ সালে প্রায় ৭৩ কোটি টাকা ব্যায়ে ২৯ কিলোমিটার ভৈরব পুনঃখনন করা হয়। খননের পর থেকে বিভিন্ন জলজ উদ্ভিদ ও কচুরিপানায় ঢাকা পড়েছিল ভৈরব। ফলে যে উদ্দেশ্য নিয়ে ভৈরব খনন করা হয়েছিল সেই উদ্দেশ্য ব্যাহত হয়েছিল।
ভৈরবের কচুরিপানা নিয়ে মেহেরপুর প্রতিদিনসহ বিভিন্ন গণ মাধ্যমে একাধিকবার সংবাদ প্রকাশিত হয়। তারপর থেকে প্রাথমিক পর্যায়ে মেহেরপুর সদর উপজেলা চেয়াম্যান অ্যাড. ইয়ারুল ইসলাম বিভিন্ন জন প্রতিনিধিদের নিয়ে সেচ্ছায় কচুরিপানা অপসারণের কাজ শুরু হয়। তারপর থেকে কচুরিপানা অপসারণের কাজ চলতে থাকে। এর পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদুল আলম এর সহায়তায় অপসারণ কাজ আরও গতিশীল হয়।

কচুরিপানা অপসারণে মেহেরপুরের সাধারণ জনগন সাধুবাদ জানিয়েছে। সেই সাথে স্থানীয় জেলেরা ব্যাপক খুশি। সাইফুল, আলমগীর, আনোয়র সহ বেশ কয়েকজন জেলে জানান, আমাদের একমাত্র নদ ভৈরব। নদটি পুনঃখননের পর থেকে কুচুরিপানায় ঢাকা ছিল। এই কচুরিপানা অপসারণ করা হচ্ছে। এটা আমাদের জন্য খুবই সু- সংবাদ। আমরা এখান থেকে মাছ সংগ্রহ করে জীবিকা চালাতে পারবো।

কচুরিপানা অপসারণ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদুল আলম বলেন, দির্ঘদিন ধরে কচুরিপানায় ঢেকে থাকা ভৈরবকে নতুন রুপে ফিরিয়ে নিয়ে আসার উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে এর কাজ মেহেরপুরের থানা ঘাট থেকে যাদবপুর গ্রামের শেষ পর্যন্ত করা হয়েছে। জনপ্রশাসন প্রতিমনত্রী ফরহাদ হোসেন এর নির্দেশনা মোতাবেক জেলা প্রশাসকের তত্বাবধানে এই অপসারনের কাজ চলছে। মেহেরপুর জেলার শুরু থেকে শেষ সীমানা পর্যন্ত সব কচুরিপনা অপসারণ করা হবে। শুধু তায়ই নয় অপসারণের পর পরবর্তিতে যাতে কচুরিপানা বা অন্য কোন ক্ষতিকর উদ্ভিদ ভৈরবে জমতে না পারে সেজন্য তদারকি করা হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাড. ইয়ারুল ইসলাম বলেন, ভৈরব আমাদের অনন্য সম্পদ। এটা রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। কচুরিপানায় ঢেকে ভৈরবের সৌন্দর্য্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল। প্রথমত আমি নিজস্ব উদ্যোগে জন প্রতিনিধিদের নিয়ে সাথে সেচ্ছায় কচুরিপানা অপসারণ করা শুরু করি। পরবর্তিতে জেলা প্রশাসন থেকে এই অপসারণ কাজ শুরু হয় এবং মেহেরপুরের সীমান পর্যন্ত সব অপসারণ করা হবে।




মাদার তেরেসা এ্যাওয়ার্ড পেলেন শাহাবুল ইসলাম

মাদার তেরেসা গোল্ডেন এ্যাওয়ার্ড পেলেন মেহেরপুর সদর উপজেলার সুবিদপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহাবুল ইসলাম। বিশ্ব মানবাধিকার ফাউন্ডেশন থেকে এ্যায়ার্ড দেওয়া হয়।

শুক্রবার ঢাকা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে অয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিচারপতি সিকদার মকবুল হক মাদার তেরেসা এ্যাওয়ার্ড তুলে প্রধান শিক্ষক শাহাবুল ইসলামের হাতে।

নিজস্ব প্রতিনিধি:




গাংনীতে গরু ব্যবসায়ীদের টাকা ছিনতাই ॥ ১টি তাজা বোমা উদ্ধার

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ষোলটাকা ইউনিয়নের শিমুলতলা ও কুঞ্জনগর গ্রামের মাঝামাঝি স্থানে বোমা ফাটিয়ে গরু ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে ডাকাতরা। এসময় ডালিম হোসেন ও মোয়াজ্জেম হোসেন নামের দুই গরু ব্যবসায়ী ধারালো অস্ত্রের কোপে জখম হয়েছেন। আহতদের বাড়ি গাংনী উপজেলার কামারখালী গ্রামে।

বৃহস্পতিবার দিবাগত আনুমানিক রাত ১০ টার দিকে মিকুশিষ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে গাংনী থানার ওসি ওবাইদুর রহমান ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে একটি তাজা শক্তিশালী হাত বোমা ও বিস্ফোরিত বোমার আলামত সংগ্রহ করেন।

আহত ডালিম হোসেন জানান, চুয়াডাঙ্গার শিয়ালমারী হাট থেকে গরু বিক্রি করে স্যালোইঞ্জিন চালিত স্টিয়ারিং গাড়ি যোগে পাঁচজন গরু ব্যবসায়ী কামারখালি গ্রামে ফিরছিলাম। কুঞ্জনগর ও শিমুলতলা গ্রামের মাঠের মধ্যে ও মিকুশিশ স্কুলের সামনে রাস্তার উপর বেঞ্চ ও ধঞ্চি গাছ দিয়ে গাড়ির গতিরোধ করে ডাকাতরা।

প্রথমেই তাদের হাতে থাকা লাঠি দিয়ে মোয়াজ্জেম হোসেনকে বেধড়ক মারপিট করে। একে একে গরু ব্যাপারী ইয়াসিন আলীর কাছ থেকে ৮০ হাজার, কালাম হোসেনের কাছ থেকে ৪৫ হাজার, জহির হোসেনের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। আমার সাথে ধস্তাধস্তির এক পর্যায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ দেয়।

এসময় আমার হাতের আঙ্গুল কেটে যায়। আমার আন্ডারের পকেট থেকে আড়াই লাখ টাকা ছিনিয়ে নেই। গাংনী থানার ওসি ওবাইদুর রহমান জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল গিয়ে পরিদর্শন করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি তাজা হাতবোমা উদ্ধার ও বিস্ফোরিত বোমার আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। ডাকাতদের চিহ্নিত করতে পুলিশের পক্ষ থেকে অভিযান চালানো হচ্ছে।

ইতোমধ্যে হেমায়েতপুর ক্যাম্প দুজন ব্যক্তিকে সন্দেহ জনকভাবে ওই সময়ে ঘোরাঘুড়ির কারণে নিয়ে আসা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদঘাটন হতে পারে।

এখনই সব কিছু বলা যাচ্ছে না। তদন্ত চরছে এলাকায় বিশাল টিম কাজ করছে যেকোন মূল্যে এ ছিনতাইয়ের রহশ্য উদঘাটন করা হবে।

নিজস্ব প্রতিনিধি:




গাংনীতে ছাগল পালন করে স্বাবলম্বী হাজার পরিবার

গাংনীতে ছাগল পালন করে কয়েক হাজার পরিবার স্বাবলম্বী হয়েছে। গাংনী ছাপিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হচ্ছে এ সব ছাগল। ইতি মধ্যে মেহেরপুরের ব্লাক বেঙ্গল ছাগলের সুনাম দেশ ব্যাপি। ছাগল পালন করে যেমন ঘুরিয়েছে নিজের ভাগ্যের চাকা তেমনি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে রাখছে ব্যাপক ভুমিকা।

গাংনী উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্য মোতাবেক গাংনী উপজেলায় পৌরসভায় ছাগলের সংখ্যা ৬ হাজার টি, কাজীপুর ইউনিয়নে ১৫ হাজার ৯ শ ১০টি, তেঁতুলবাড়িয়া ইউনিয়নে ১৪ হাজার ৮শ ৭টি, কাথুলি ইউনিয়নে ১৪ হাজার ৭শ ২৩টি, বামুন্দী ইউনিয়নে ১৪ হাজার ১শ ৩ টি, ষোলটাকা ইউনিয়নে ১৩হাজার ২শ ৯ টি, রায়পুর ইউনিয়নে ১৩ হাজার ১শ ৩৭টি, ধানখোলা ইউনিয়নে ১৪ হাজার ২শ ৩২টি, মটমুড়া ইউনিয়নে ১২ হাজার ১শ ১২টি, সাহারবাটি ইউনিয়নে ১২হাজার ৪শ ৫টি, পৌরসভাসহ ৯টি ইউনিয়নে ১লক্ষ ৩০ হাজার ৬শ ৩৮ টি ছাগল রয়েছে। ছাগলের খামারী রয়েছে সরকারি রেজিষ্টার্ডভূক্ত ৬৪ টি, রেজিষ্টার্ডবিহীন ৯২ টি। মোট ১৫৬ টি ছাগলের খামার রয়েছে। প্রতিটি খামারে গড়ে ছাগলের সংখ্যা ১৭ টি।

এই বিষয়ে পশ্চিম মালসাদহ গ্রামের ছাগল ব্যবসায়ী বজলুর রহমান বলেন, আমরা বিভিন্ন গ্রাম থেকে বিভিন্ন জাতের মধ্যে বিশেষ করে ব্লাক বেঙ্গল প্রজাতির ছাগল বেশী কিনে আনি এবং এগুলোর চাহিদা ব্যাপক হওয়ায় গাংনী, বামুন্দীসহ বিভিন্ন বাজারে আমরা এগুলো বিক্রয় করে থাকি এবং এগুলো বেশ লাভজনক।

জুগিন্দা গ্রামের মাংশ ব্যবসায়ী করিম মেহেরপুর প্রতিদিনকে বলেন, গাংনীর অধিকাংশ সরকারি অনূষ্ঠান গুলোতে আমি মাংশ সরবরাহ করে থাকি। ব্লাক বেঙ্গল ছাগলের মাংশ সুস্বাদু হওয়ায় মাংশ ক্রয় কারীদের চাহিদা অনেক বেশী গাংনী উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা মোস্তফা জামান’র এর সাথেযোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমাদের জনবলের অভাবে আমরা সকল ছাগল খামারীকে সঠিক সেবা দিতে পারছি না, এই সমস্ত সমস্যাগুলোর সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

গাংনী উপজেলার ধানখোলা ইউনিয়নের পাকুড়িয়া গ্রামের প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবার দেশি-বিদেশী বিশেষ করে ব্লাক বেঙ্গল ছাগল পালন করে আজ তারা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী।ঐ গ্রামের অধিকাংশ মানুষ গরিব এবং বাড়িঘর তেমন উন্নত নয়। পরিবারের এই অস্বচ্ছলতা দূর করতে প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবার নিজেদের সাংসারিক স্বচ্ছলতা আনতে ছাগল পালন করে আজ তারা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন। ঐ গ্রামের পশ্চিম পাড়ার জ্বলেদের স্ত্রী মিনা-রানী (২০ ) বলেন, প্রায় এক বছর পূর্বে আমার বিবাহ হয়।

বিবাহের সময় আমার বাবা-মা ১৫ হাজার টাকা দেন স্বর্ণের গহনা তৈরি করা জন্য কিন্তু বাবা-মায়ের দেয়া সেই টাকা আমি গহনা তৈরি না করে , সেই টাকা দিয়ে একটি পাটি ছাগল ক্রয় করি। সেই একটি ছাগল থেকে এখন আমার বাড়িতে ১১টি ছাগল। গত কোরবানীর সময় ৪ টি ছাগল বিক্রয় করি। বর্তমানে সব ছাগলগুলো বিক্রয় করলে আমি আনুমানিক ২ লক্ষাধিক টাকা পাব। অন্যদিকে একই গ্রামের মিখায়েল বিশ্বাস এর স্ত্রী স্বর্ণমেরী বিশ্বাস(৩৬ ) বলেন,১৫ থেকে ১৬ বছর ধরে আমি ছাগল পালন করে আসছি।

ছাগল পালনে আমরা সাধারনত কিনে আনা কোন খাবার দিতে পারি না। মাঠের ঘাস পাতা খেয়েই সাধারনত তারা জীবন ধারন করে। বর্তমানে আমি ২৩ টা ছাগল পালন করছি। এই ছাগলগুলো বিক্রয় করলে আনুমানিক সর্বনি¤œ হলেও ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা হবে। ছাগল পালন করে আমি আমার পরিবারে স্বচ্ছলতা এনেছি। ছাগল পালন একটা লাভজনক পেশা । অল্প পুঁজিতে ছাগল পালন করা যায়। গৃহের সমস্ত কাজ সেরে আমি নিজেই ছাগল গুলো মাঠে নিয়ে যায়। একই পাড়ার দানিয়েল বিশ্বাস’র স্ত্রী শেফালী বিশ্বাস বলেন, ছাগল পালন এর পূর্বে আমার সাংসারিক অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। চারিদিকে সবার ছাগল পালন দেখে আমিও পরিবারের অভাব দূর করার জন্য ছাগল পালন শুরু করি। বর্তমানে আমার ১১ টি ছাগল রয়েছে। বাইরে থেকে কোন খাবার কেনার সামর্থ না থাকায় এই ছাগলগুলোর খাবারের জন্য ৮ কাঠা জমিতে নেপিয়ার ঘাস লাগিয়েছি। বর্তমানে ছাগলগুলো বিক্রয় করলে আনুমানিক ১লক্ষ ২৫ টাকার কম হবে না। আমরা এখন ছাগল পালন করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হযেছি। ঐ গ্রামের মথির স্ত্রী রুলি বলেন, পরিবারের অভাব ঘোচাতে আমি ছাগল পালন করি।

ছাগল পালন করে আমার আর্থিক সমস্যা অনেকাংশে দূর হয়েছে। আমার বাড়িতে বর্তমানে ১৫ টি ছাগল আছে। যার আনুমানিক মূল্য ১লক্ষ ৫০ হাজার টাকা । ছাগলের প্রতি একটু খেয়াল রাখলে তেমন কোন রোগ হয় না । অন্যদিকে ঐ গ্রামের শুকেশের স্ত্রী সুখি বলেন, আমাদের এই পাড়ায় অধিকাংশ বাড়িতে ছাগল পালন করে, আমি প্রথমে একটি ছাগল ক্রয় করি, আস্তে আস্তে দু-এক বছরের মধ্যে আমার এখন ১২ টি ছাগল।যা বিক্রয় করলে বর্তমান বাজার মূল্যে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা হবে বলে আমার বিশ্বাস। অপরদিকে একই পাড়ার সেবাস্তীনের স্ত্রী মরি বলেন, আমরা গরিব মানুষ গরু পালন করা আমাদের সম্ভব নয়।আমি প্রথমে একটি ছাগল ক্রয় কর্ িসেই থেকে আজ আমাদের ১৩ টি ছাগল। এই ছাগলগুলো ঠিকমত খেতে দিতে পারি না ।

মাঠের ঘাস-পাতা খেয়েই জীবন ধারন করতে হয় তাদের। বাজার থেকে ছাগলগুলোর জন্য যদি খাবার কিনে আনতে পারতাম তাহলে স্বাস্থ্যবান হতো এবং আমরাও আরো বেশী লাভবান হতে পারতাম। ঐ গ্রামের বাসিন্দা অঞ্জনা রানী (৩৮)বলেন, আমরা অনেকদিন থেকে ছাগল পালন করি ।বর্তমানে আমার বাড়িতে ১৫ টি ছাগল রয়েছে। যার বর্তমান মূল্য আনুমানিক ১লক্ষ ৭০ হাজার টাকা। ছাগল পালন করে আমাদের সংসারের অনেক উপকার হয়েছে। ঐ গ্রামের পায়েল (৩০) বলেন, আমাদের বাড়িতে ২০ টি ছাগল আছে। যার বর্তমান বাজার মূল্য আনুমানিক ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। অপরদিকে একই পাড়ার ঊষারানী (৩৫) বলেন, আমার বাড়িতে বর্তমানে ১২ টি ছাগল আছে যার বর্তমান বাজার মূল্য আনুমানিক ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা।

অপরেিদক মরিয়ম নামের একজন ছাগল পালন কারী বলেন, আমাদের গ্রামে অধিকাংশ বাড়িতেই ছাগল পালন করে। আমারও ১০ টি ছাগল আছে। যার বর্তমান বাজার মূল্য আনুমানিক ১ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা হবে। এখানে সবাই গৃহের কাজ সেরে প্রায় সবাই ছাগল নিয়ে মাঠে চলে যায়। ছাগল গুলো সাধারনত গৃহিনীরাই লালন-পালন করে থাকে। এছাড়া ও ঐ গ্রামের অধিকাংশ ছাগল পালন কারীরা বলেন, পরিবারের ছোট- ছোট সমস্যা গুলো সমাধানের জন্য ছাগল পালন সবচেয়ে উপকারি বলে তারা সে¦চ্ছায় আনন্দের সাথেই ছাগল পালন করছেন। কেননা ছাগল পালনে খরচ কম।বর্ষাকালে একটু খেয়াল রাখলে রোগ বালাই তেমন চোখেই পড়ে না।

ছাগল পালনের জন্য একটু উঁচু করে ঘর বানাতে হয়, কারন বর্ষাকালে ঘরে যেন কোনভাবেই পানি জমতে না পারে সেজন্য সতর্ক থাকতে হয়।আর এর জন্য বাঁশের মাচা ও টিনের ছাউনি দিয়ে ঘরগুলো সাধারনত তৈরি করা হয়। এভাবে ছাগল পালনকারীরা একদিকে নিজেরা যেমন অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে অন্যদিকে তারা মাংশের চাহিদাতেও রাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করছে। এই বিষয়ে ৮ নং ধানখোলা ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন মেহেরপুর প্রতিদিনকে বলেন, পাকুড়িয়া গ্রামের প্রায় অর্ধশতাধিক গৃহিনী ছাগল পালন করে তাদের সংসারে অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনেন।

ঐ গ্রামের বাসিন্দা মেহেরপুর জেলা সিনিয়র আইনজীবী সুজন কুমার মন্ডল মেহেরপুর প্রতিদিনকে বলেন, আমাদের গ্রামে এক সময় অধিকাংশ মানুষ অর্থনৈতিকভাবে অস্বচ্ছল ছিল,বর্তমানে ছাগল পালন করে তারা স্বালম্বী হয়েছে । এটা সত্যিই আনন্দের কথা। আমরা তাদেরকে নিয়ে গর্ব করি । তারা আমাদের গ্রামের অহংকার।

নিজস্ব প্রতিবেদক:




মেহেরপুরে শিশু পরিস্থিতি বিষয়ক গন শুনানি অনুষ্ঠিত

মেহেরপুর জেলায় এনসিটিএফ এর আয়োজনে শিশু পরিস্থিতি বিষয়ক গন শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে মেহেরপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

এনসিটিএফ এর সভাপতি মেহেরাব হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মোঃ আতাউল গণি।
বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইবাদত হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসএম মোস্তাফিজুর রহমান, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক গাংনী উপজেলা চেয়ারম্যান এম এ খালেক, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক আতাউল হাকিম লাল মিয়া, মুজিবনগর উপজেলা চেয়ারম্যান জিয়া উদ্দিন বিশ্বাস প্রমুখ।

গন শুনানিতে বক্তব্য রাখেন সেভ দ্য চিলড্রেন প্রতিনিধি আবু জাফর, এনসিটিএফ এর প্রতিনিধি রোজা খাতুন, জামিলা খাতুন, রাজন আলী, আরশা আক্তার, সুরাইয়া খাতুন, তানভীর, রাজিয়া সুলতানা, মোশারফ হোসেন। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন ফারিহা আফরিন এলিসা ও মুশফিকুর রহমান রিয়াদ।




মেহেরপুর পৌর কবরস্থানে চির নিদ্রায় শায়িত হলেন নাসির উদ্দিন মিরু

মেহেরপুরের পৌর কবরস্থানে চির নিদ্রায় শায়িত হলেন মেহেরপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমীর প্রথম সাধারন সম্পাদক ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক নাসির উদ্দিন মিরু।

বৃহস্পতিবার বিকাল ৪.৩০ মিনিটে মেহেরপুর শহীদ ড. শামসজ্জোহা পার্কে তার জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় প্রিয় মানষুটাকে এক নজর দেখতে পার্ক প্রাঙ্গনে জনতার ঢল নামে। পরে যথাযোগ্য মর্যাদায় মেহেরপুর পৌর কবর স্থানে দাফন করা হয়।




মেহেরপুরে বি এ ডি সি’র চাষীদের সাথে আলোচনা সভা

মেহেরপুরে বি এ ডি সি  উদ্যেগে  আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় ।বৃহস্পতিবার সকালে মেহেরপুর বিএডিসি অফিসে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় চুক্তিবদ্ধ চাষীদের সাখে  ১৯-২০ বোরো উৎপাদন মৌসুমে বীজ উৎপাদন সম্পর্কিত বিভিন্ন কলা কৌশল সম্মন্ধে আলোচনা করা হয় ।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর বি এ ডি সি   বীজ প্রক্রিয়াজাত করণ কেন্দ্রের উপপরিচালক কৃষি বীদ মো: হাসমত আলী মিয়া, মেহেরপুর বি এ ডি সি (ক:গ্রো) উপপরিচালক  কৃষি বীদ  কে এম আবুল কালাম, বিএডিসি উপপরিচালক কৃষি বীদ মো: কামরুল হাসান ।

সভায় বিভিন্ন গ্রামের কৃষকরা   তাদের বিভিন্ন সমস্য গুলো সেখানে তুলে ধরেন। পরে কৃষিবীদরা সমস্যা সমাধানের সকল করণীয় দিক নির্দেশনা গুলো চাষীদের মাঝে তুলে ধরেন ।

নিজস্ব প্রতিনিধি




মুজিবনগরে তথ্য সেবা কেন্দ্রের উঠান বৈঠক

মুজিবনগরে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যেমে মহিলাদের ক্ষমতায়ন প্রকল্প (২য় পর্যায়)বাস্তবায়নের লক্ষে মুজিবনগরে তথ্য সেবা কেন্দ্রের আয়োজনে উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্প্রতিবার সকাল সাড়ে এগারোটার  দিকে মুজিবনগর উপজেলার দারিয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদ হলরুমে এ উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা তথ্য সেবা কর্মকর্তা তানিয়া খন্দকার।
প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে তথ্য প্রযুক্তির বিভিন্ন সুবিধার বিষয় ও বাল্য বিয়ের কুফল সম্পর্কে তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন দারিয়াপুর ইউপি চেয়ারম্যান তৌফিকুল বারী বকুল।
এ সময় ইউপি সদস্য মাসুদ রানা,ময়নদ্দীন,শাহাজাহান,আর্জিনা খাতুন, উপজেলা তথ্য সেবা সহকারী শান্তনা আক্তার ও আর্জিনা খাতুন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উঠান বৈঠক অনুষ্ঠানে বাল্য বিবাহের কুফল সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।
মুজিবনগর প্রতিনিধি



মেহেরপুরের মডেল ভূমি অফিস গাংনী

আকরারুজ্জামান,গাংনী :
পরিচ্ছন্ন রেকর্ড রুম ব্যাবস্থাপনা, ই্-মিউটিশন (অনলাইন মাধ্যম) চালু,দুর্নীতিমুক্ত অফিস পরিছন্ন পরিবেশ ও কাজে স্বচ্ছতায় বদলে গেছে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ভূমি সংক্রান্ত সেবার মান। দিন বদলের সাথে সাথে গাংনী উপজেলার ভূমি অফিসে ডিজিটাল সেবায় উপকৃত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। সহকারি কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তা সুখময় সরকার বিগত ০৭/০৭/২০১৯ ইং তারিখে যোগদান করেই দুর্নীতির শিকড় উপড়ে ফেলেছেন এ অফিসে।

তিনি অফিসে বসেই সকল স্টাফদের দুর্নীতিমুক্ত হওয়ার হুশিয়ারী দেন।এছাড়াও অফিসের কোন স্টাফ যেন অবেধ অর্থিক লেনদের না করতে পারে সেজন্য প্রতিটি কক্ষে স্থাপন করা হয়েছে সিসি ক্যামেরা।
অফিস চলাকালীন সময় সকলেই থাকেন সিসি ক্যামেরার আওতায়। সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষ সেবা পেতে হয়রানী না হন তাদের জন্য নির্মান করা হয়েছে একটি গোল ঘর। তবে গোল ঘরটি বেশ কয়েকমাস আগে নির্মান করা হলেও তা ব্যাবহারের অযোগ্য হয়ে পরিত্যাক্ত ছিল। সব সময়ই থাকতো তালাবদ্ধ। সুখময় সরকার সহকারি কমিশনার (ভুমি) গাংনী উপজেলায় ভূমি কর্মকর্তা হিসেবে যোগদানের পরপরই গোলঘরটি মানুষের বসার ব্যাবস্থা করেছেন।

সে গোল ঘরেই বিভিন্ন সমস্যার শুনানী হয়ে থাকে। সুময় সরকার যোগদানের দু’একদিন পরেই উন্নত ভূমি সেবা প্রদানের লক্ষ্যে চালু করেছেন ই-মিউটিশন। গাংনীতে এই প্রথম ইন্টারনেটের মাধ্যমে নামজারী করা হচ্ছে। এতে খুব কম সময়ে কাজ করতে পারছেন সেবা প্রত্যাশীগণ। গাংনী উপজেলায় মোট ৯ টি ইউনিয়ন ভূমি অফিস রয়েছে।

যাদের মাধ্যমে জনগনকে ভূমি সংক্রান্ত সেবা প্রদান করছেন উপ-সহকারি কমিশনারগণ । তাদেরকেও সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছেন এ কর্মকর্তা।
ই-মিউটিশনের সুবিধা ভোগীরা জানান, খুবই অল্প সময়ে অল্প খরচে কোনো রকম ভোগান্তি ছাড়াই ই-নামজারি করা হচ্ছে। ই-মিউটিশন চালু করায় সময়,অর্থ,ভোগান্তি যেমন নেই তেমন কাজের রয়েছে চরম স্বচ্ছতা।

সুখময় সরকার ইমিউটিশনে দক্ষ অফিসার হিসেবেও ক্ষ্যতি রয়েছে। এব্যাপারে নিজ উদ্যোগে ইউনিয়ন পরিষদের ইউডিসি,ইউপি সচিব,উপসহারি ভুমি কর্মকর্তাসহ ভূমি সংক্রান্ত ব্যাক্তিদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়েছেন ভূমি কর্মকর্তা সুখময় সরকার। ই-নথির কাজ চালু করা হওয়ায় সাধারনের ভোগান্তিও কমেছে। ভ’মি সংক্রান্ত সেবা নিতে আসা সাহারবাটি গ্রামের মকলেসুর রহমান জানান, বর্তমানে কাজ করতে তার কোনো ভোগান্তি হচ্ছেনা। স্বল্প সময়েই তিনি নির্ভূল কাজ করতে পেরেছেন।

নওপাড়া গ্রামের জিয়ারুল ইসলাম জানান,জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের সমস্যা নিয়ে ভ’মি অফিসে এসেছিলাম সহজেই আমার কাজ হয়েগেছে। আমার কাছে কোনো অতিরিক্ত অর্থ নেয়া হয়নি বরং আগের চেয়ে কাজের মান অনেক বেড়েছে। হাড়াভাঙ্গা গ্রামের ইদ্রিস আলী জানান,ই-নামজারির আবেদন করলাম,কাগজ পত্রের ত্রুটি না থাকলে নির্ভুল কাজ হবে। ভবিশ্যতে জমিজমা নিয়ে কোনো ভোগান্তি থাকবেনা।
গাংনী উপজেলা ভূমি অফিস সুত্রে জানা গেছে,২০১৯-২০ অর্থ বছরে ই-নামজারির জন্য আবেদন গ্রহন করা হয়েছে ৮০১ টি, এর মধ্যে মঞ্জুর হয়েছে ২১৫ টি। কাগজ পত্রের ত্রুটি থাকায় ৬৩ টি আবেদন না মঞ্জুর করা হয়েছে। প্রক্রিয়াধীন রয়েছে ৫২৩ টি আবেদন।
২০১৮-১৯ অর্থ বছরে গাংনীতে ১১৩৬ টি ই-নামজারি অনলাইন আবেদন করা হয়।

সেবার মান নির্নয়ে মেহেরপুর জেলার শীর্ষে রয়েছে গাংনী উপজেলা ভুমি অফিস। সুত্র জানায়,মেহেরপুর সদর উপজেলায় ৯৪৪ টি,মুজিবনগর-৩৮৪ টি ই-নামজারির জন্য আবেদর করা হয়। বাংলাদেশের খুলনা বিভাগীয় পর্যায়ে গাংনী ভূমি অফিস এখন মডেল ভূমি অফিস হিসেবে পরিচিত বলে জানালেন সহকারি কমিশনার (ভুমি) সুখময় সরকার।