‘ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পড়ছিল, বুলবুলের ভয়ে ফিরতে হল’

বঙ্গোপসাগরে যখন ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ছিল, ঠিক তখনই ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের ভয়ে ফিরে আসতে হয়েছে বলে হতাশার কথা জানিয়েছেন বাগেরহাটের জেলেরা।

জেলার কচুয়া উপজেলার ভাসা গ্রামের ইমারত আলী বলেন, “পুরো ২২ দিনের অবরোধ (নিষেধাজ্ঞা) শেষে পূর্ণিমার গোন শুরু হচ্ছিল। সাগরে ঝাঁকে ঝাঁক ইলিশ মিলছিল। কিন্তু সাগর উত্তাল হওয়ায় টিকতে না পেরে দ্রæত ফিরে আসতে হল।
একই অনুভূতির কথা জানিয়েছেন আরও অনেক জেলে।

জেলার পাথরঘাটা উপজেলার মো. মোহাসিন মিয়া বলেন, তিনি চার দিন আগে সাগরে গিয়েছিলেন। আরও দিন দুই-তিনেক থাকার ইচ্ছা ছিল তাদের।
কিন্তু সাগরে বড় বড় ঢেউ আর বাতাসে টিকে থাকা সম্ভব হল না। তাই তাড়াতাড়ি ফিরে আসছি। যারা যেদিক পারছে উঠে আসছে।

ইলিশ শিকারের মৌসুম হওয়ায় সকালে ১০ নম্বর বিপদ সংকেত উপেক্ষা করেও কিছু জেলেকে শনিবার সকালে বলেশ্বর নদে মাছ ধরতে দেখা গেছে। তবে বেলা ৩টার মধ্যে ফিরে গেছেন অধিকাংশ।

এদিকে ঝড়ের কারণে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত ঘোষণায় সিডর বিধ্বস্ত বাগেরহাটের উপকূলীয় উপজেলা শরণখোলার মানুষের মাঝে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে।
উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নে বগী এলাকায় বেড়িবাঁধের প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন আট সহস্রাধিক মানুষ। তবে ঝুঁকি থাকলেও আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে অনীহা একটি বড় অংশের মানুষের।

স্থানীয়দেন ভাষ্য, ঘর ফেলে সবাই যাবেন না। রাতে বাতাস ও পানির চাপ বাড়লে তখন প্রয়োজন হলে আশ্রয়কেন্দ্রে যাবেন তারা। তবে সন্ধ্যা থেকে ঝঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষদের সরিয়ে নিতে চাপ প্রয়োগ করছে প্রশাসন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মাঝে মাঝে বৃষ্টি বাড়ছে। মাঝে মাঝে থামছে। আবহাওয়া কিছুটা গুমোট। এটা সাইক্লোন সিডরের মতো প্রচÐ ঝড়ের লক্ষণ।

নিজেস্ব প্রতিনিধি




ভোলায় ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাত, আহত ৮

ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে দ্বীপ জেলা ভোলার লালমোহন ও চরফ্যাশন উপজেলায় ঝড়ো বাতাসে সাতটি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। এ সময় ৮ জন আহত হয়েছেন।
গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে লালমোহনের পশ্চিম চর উমেদ ও চরফ্যাশনের

ওসমানগঞ্জ ইউনিয়নের এ ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে প্রাথমিকভাবে তিনজনের নাম পাওয়া গেছে। এরা হলেন পশ্চিম চর উমেদ

৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আব্দুর রশিদ মাল, তার ছেলে ইমরান ও তিশান।
ওই এলাকার বাসিন্দা মো. ইব্রাহিম জানান, রাত সাড়ে ৯টার দিকে একটি ঘুর্ণিঝড়ের বিকট আওয়াজ শুনতে পায়। মুহূর্তের মধ্যে ওই এলাকার রশিদ মালসহ একই বাড়ির আরও দুইটি ঘর বিধ্বস্ত হয়।

এ সময় বাড়ির গাছপালাও উপড়ে পড়ে।

তিনি আরও জানান, একই সময়ে ওই এলাকার পাশের এলাকা চরফ্যাশনের ওসমানগঞ্জ ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের আব্দুল মোতালেব ও তার ছেলে মামুন ও বিল্লালের ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। পাশের আরেকটি বাড়ির আব্দুল মুনাফের বসত ঘরটিও বিধ্বস্ত হয়ে যায়। এ সময় ওই এলাকার রাস্তার গাছপালাও উপড়ে পড়েছে বলে জানান তিনি।

অপরদিকে লালামোহন উপজেলার লর্ডহাডিঞ্জ ইউনিয়নের চরপেয়ারীমোহন এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ে ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়ে অন্তঃত পাঁচ জন আহত হয়েছেন। তবে সেখানকার আহতদের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি।

লালমোহন উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাবিবুল হাসান রুমি বলেন, আমরা লর্ডহাডিঞ্জ ইউনিয়নের রায়চাঁদ এলাকায় গাছ পড়ে একজন আহত হওয়ার খবর পেয়েছি। তবে বাকিদের খবর আমরা পাইনি।

নিজেস্ব প্রতিনিধি




কিছুটা দুর্বল হয়ে বাংলাদেশে আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’

বাংলাদেশের উপকূলের দিকে অগ্রসর হওয়া প্রবল সাইক্লোন ‘বুলবুলের’ কারণে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড়টি আরো উত্তর দিকে অগ্রসর হয়েছে।
সকাল ছয়টা নাগাদ প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে ৫২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং মংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৩৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে।

এই ঘূর্ণিঝড়ের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ১৩০ কিলোমিটার থাকবে, যেটি ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
মংলা এবং পায়রা সমুদ্র বন্দরের জন্য ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারি করা হয়েছে।
উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরায় দ্বীপ এবং চরসমূহ ১০ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

এছাড়া চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, ফেনী, ল²ীপুর, চাঁদপুরের দ্বীপ এবং চরসমূহের জন্য ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারি করা হয়েছে।

সমুদ্র বন্দরগুলোতে এরই মধ্যে পণ্য উঠা-নামা বন্ধ রয়েছে।
সমুদ্রের ঢেউ স্বাভাবিকের চেয়ে আরো পাঁচ থেকে সাত ফুট পর্যন্ত উঁচু হতে পারে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর সতর্ক করে দিয়েছে।

এরই মধ্যে উপকূলীয় বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করে স্থানীয় এলাকাবাসীকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন উপজেলা পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা থেকে শুরু করে এনজিও কর্মী, রোভার ও স্কাউট সদস্যরা।

এদিকে, সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল। বঙ্গোপসাগর উপকূলে দুপুর ১২টা থেকে ঝড়ো হাওয়া শুরু হলেও গতকার শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের অগ্রবর্তী অংশ সুন্দরবনের সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাট অংশে আঘাত হানতে শুরু করেছে।

একই সাথে বেড়েছে ৪ থেকে ৫ ফুট পানির উচ্চতা। এখন ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের অগ্রবর্তী অংশ সুন্দরবনের বঙ্গবন্ধু আইল্যান্ড, হিরণ পয়েন্ট, দুবলারচর, মেহের আলীর চর, অফিসকিল্লা, মাঝেরচর, আলোরকোল, মরণেরচরে আছড়ে পড়েছে।

১২০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া বইছে। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে ক্রেমেই বাড়ছে ঝড়ের তিব্রতা। তছনছ করে দিয়েছে দুবলার চরের অস্থায়ী শুঁটকি পল্লী। ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) দুবলারচর ভিএইচএফ স্টেশনের অপারেটর মো. কাশেম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।

দুবলারচর ভিএইচএফ স্টেশনের অপারেটর আরও জানান, বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের দুবলারচরের অস্থায়ী শুঁটকি পল্লী এলাকার আলোরকোল, মেহেরআলীর চর, মাঝেরকেল্লা, অফিসকিল্লা ও শেলারচরে ২২ বছর আগে নির্মিত হওয়া জরাজীর্ণ ৫টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে ৬ হাজারেরও বেশি জেলেরা আশ্রয় নিতে পেরেছে।

এসব আশ্রয় কেন্দ্রে স্থান সংকুলন না হওয়ায় শুঁটকি পল্লীসহ ঝড়ের কারণে সাগর থেকে আসা আরো কয়েক হাজার জেলে নৌযানে করে ছোট-ছোট খালে আশ্রয় নিয়েছে। ঝড়ের তীব্রতা বাড়ায় নৌযানে করে সুন্দরবনের খালে আশ্রয় নেয়া জেলেদের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না।

নিজেস্ব প্রতিনিধি




বাবরি মসজিদের সেই জায়গায় হাজারবার খুঁড়েও পাওয়া যায়নি মন্দিরের অস্তিত্ব

অযোধ্যায় বাবরি মসজিদের নিচে ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় হাজারবার খুঁড়েও কোনো মন্দিরের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময় থেকে ওই এলাকায় বেশ কয়েকবার খোঁড়াখুঁড়ি চালানো হয়েছে।

কিন্তু কোনো প্রতœতাত্তি¡কই মন্দির পাননি।
এমনকি সর্বশেষ ভারতের প্রতœতত্ব বিভাগ ‘দ্য আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া’র (এআইএ) প্রতœতাত্তি¡ক খননেও কোনো মন্দির মেলেনি। এএসআই’র চূড়ান্ত রিপোর্টেও কোনো মন্দির থাকার কথা উল্লেখ করা হয়নি।

সংস্থাটির দুই প্রতœতাত্তি¡কের মতে, মসজিদের নিচে প্রাচীন মসজিদের ধ্বংসাবশেষ ছিল। বাবরি মসজিদ ভূমি সংক্রান্ত মামলার রায়ে এএসআই’র রিপোর্টের ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন ভারতের সুপ্রিমকোর্টি।

গত শুক্রবার দ্য ওয়ারের এক রিপোর্টে এসব তথ্য উঠে এসেছে। রিপোর্টটি ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে প্রথম প্রকাশ করা হয়েছিল।

এখন থেকে প্রায় ২৬ বছর আগে ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ গুঁড়িয়ে দেয় বর্তমান ক্ষমতাসীন বিজেপি, শিব সেনা ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের উগ্রপন্থীরা। চলতি বছরের লোকসভা নির্বাচন সামনে করে এমনকি চূড়ান্ত রায়ের আগেই সেখানে রাম মন্দির প্রতিষ্ঠার জন্য সরকারকে চাপে রেখেছিল সংগঠনটি।

মসজিদ ধ্বংসের প্রায় ১০ বছর পর ২০০২ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্ট আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়াকে অযোধ্যার বিধ্বস্ত বাবরি মসজিদের জমিতে খনন কাজ চালানোর নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশ অনুযায়ী খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করে প্রতœতাত্তি¡কদের একটি দল।

২০০৩ সালের আগস্টে ৫৭৪ পৃষ্ঠার একটি রিপোর্ট কোর্টে জমা দেয় এএসআই। রিপোর্টে সংস্থাটি দাবি করে, বিধ্বস্ত বাবরি মসজিদের নিচে মাটি খুঁড়ে তারা একটি ‘বিশালাকার কাঠামো’ খুঁজে পেয়েছে। তবে সেটা যে কোনো মন্দিরের, এর পক্ষে কোনো প্রমাণ তারা তাদের রিপোর্টে বলেননি।

এএসআই’র এই রিপোর্ট নিয়ে আপত্তি ওঠে দলের অন্যান্য প্রতœতাত্তি¡কদের মধ্য থেকেই। রিপোর্টকে ‘অস্পষ্ট ও স্ববিরোধী’ নাকচ করে দেয় বাররি মসজিদ মামলার বাদী সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড।

রিপোর্ট নিয়ে আপত্তি জানানো দুই প্রতœতাত্তিক হলেন সুপ্রিয়া ভার্মা ও জয়া মেনন। উভয়েই সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের পক্ষে এএসআই’র খননকার্যে অংশ নিয়েছিলেন।
এএসআই’র রিপোর্ট এবং এরপর এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ের বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে ২০১০

সালে ‘ইকনোমিক অ্যান্ড পলিটিক্যাল উইকলি’ শীর্ষক জার্নালে একটি প্রবন্ধ লেখেন এই দুই প্রতœতাত্তি¡ক।

প্রবন্ধে তারা বলেন, ‘খননকালে এএসআই এমন পদ্ধতি ব্যবহার করেছে যাতে মনে হয়েছে এএসআইর অন্য সদস্যরা মনে মনে আগেই একটা ফলাফল তৈরি করে রেখেছিলেন।’
এএসআই’র রিপোর্ট নিয়ে কেন আপত্তি জানিয়েছিলেন সে বিষয়ে স¤প্রতি হাফিংটন পোস্টকে এক সাক্ষাৎকারে সবিস্তারে জানিয়েছেন জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের পতœতত্ত¡ বিভাগের অধ্যাপক সুপ্রিয়া ভার্মা।

তিনি বলেন, ‘আজও পর্যন্ত এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি যে, বাবরি মসজিদের নিচে কোনো মন্দির ছিল।’ তার মতে, ‘মসজিদের নিচে আসলে পুরনো মসজিদের ধ্বংসাবশেষ ছিল।’

ইতিপূর্বে বাবরি মসজিদ এলাকায় আরও বেশ কয়েকবার খনন হয়েছিল বলে জানান ভার্মা। প্রথমবার ১৮৬১ সালে খনন করেন এএসআই’র প্রথম মহাপরিচালক আলেক্সান্ডার কানিংহাম। খোড়াখুড়িতে তিনিও ধ্বংষাবশেষ পেয়েছিলেন। তবে সেগুলো কিছুটা বৌদ্ধ ধর্মীয় স্থাপত্য ও বিহার ধরনের। কিন্তু এ বিষয়ে তার রিপোর্টে কিছু উল্লেখ নেই।

১৯৬৯ সালে দ্বিতীয়বারের মতো খনন করে বারানসি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতœতত্ত¡ বিভাগ। তারা তাদের রিপোর্টে জানায়, ওই এলাকায় প্রাগৈতিহাসকি ও মধ্যযুগেও মানববসতি ছিল। তবে মন্দির বিষয়ক কোনো কথা বলেননি তারা।

নিজেস্ব প্রতিনিধি




মুজিবনগরে শিশু নির্যাতনের অভিযোগ

মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলায় সোনাপুরে হিমেল নামের শিশুকে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে একই গ্রামের আনারুলের স্ত্রীর বিরুদ্ধে।

বৃহস্পতিবার সকালে মুজিবনগর উপজেলার সোনাপুর গ্রামের আসাদুল ইসলামের ছেলে হিমেল (৮) নামের শিশুকে নির্যাতন করেছে একই গ্রামের আনারুল ইসলামের স্ত্রী রিক্তা।

হিমেলের মা রিজিয়া খাতুন মেহেরপুর প্রতিদিনের কাছে লিখিত অভিযোগের মাধ্যমে জানান  জানান, মহল্লাই ঝগড়া হচ্ছিল রাস্তা দিয়ে হিমেল হেটে যাচ্ছিল রাস্তায় দাড়িয়া থাকা রিক্তার গায়ে ধাক্কা লাগে।  এতে রিক্তা রাগান্নিত হয়ে হিমেলকে ধরে পেটাতে থাকেন।

এ সময় হিমেলের মা রিজিয়া খাতুন সহ অনেকেই হিমেলকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসলে রিক্তা বাধা দেন এবং হিমেলের মাকেও মারধর করে। রিক্তা শিশু হিমেলকে চড় থাপ্পড় কিল ঘুষি দিতে দিতে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যেতে থাকেন।

তাকে আমি  উদ্ধার করে মুজিবনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি। দুদিন চিকিৎসা থাকার পরে শনিবার বিকালে তাকে বাড়ি নিয়ে আসা হয়।

-মুজিবনগর অফিস




উপকূলের আরও কাছে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল

বঙ্গোপসাগর থেকে উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’। উপকূলের আরও কাছে এগিয়ে এসেছে এই ঘূর্ণিঝড়। আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, আজ শনিবার সন্ধ্যার পর বুলবুল পশ্চিমবঙ্গ ও খুলনা উপকূল দিয়ে সমতলে আঘাত হানবে।

এ সময় বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার। উপকূলের আটটি জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, বরগুনা, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, ভোলা ও চাঁদপুর ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

সাগরে বুলবুলের বেগ আরও বেশি। আজ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সবশেষ বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ উত্তর-উত্তর পূর্ব দিকে প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ১৫ কিলোমিটার বেগে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় (২১.০ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮.০ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে।

এটি আজ শনিবার বিকেল তিনটায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৪৫ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণ পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৪৫ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণ পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ২৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছিল।

এটি আরও উত্তর ও উত্তর পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আজ সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত নাগাদ পশ্চিমবঙ্গ-খুলনা উপকূল

(সুন্দরবনের নিকট দিয়ে) অতিক্রম করতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় দমকা ও ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে।

-প্রতিদিন ডেক্স




গাংনীতে জোরপুর্বক জমি দখল করে প্রাচীর নির্মান

জোরপূর্বক জমি দখল করে প্রাচীর নির্মানের প্রতিবাদ ও প্রাচীর নির্মান কাজ বন্ধের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন গাংনীর শিশিরপাড়া গ্রামের মোতালেব হোসেন ও তার পরিবারের সদস্যরা।

শনিবার (০৯ নভেম্বর) বিকেলে গাংনী প্রেসক্লাবে মোতালেব হোসেনের পরিবারের পক্ষ থেকে জমি দখলের বিভিন্ন অভিযোগ করে প্রতিকারের জন্য সংশ্লিষ্ঠদের সু-দৃষ্টি কামনা করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্যে মোতালেব হোসেন বলেন, আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তির অংশ থেকে ৮৯ শতক জমি ক্রয় করেন গাংনী উপজেলা চেংগাড়া গ্রামের আজিজুল। তার রেজিস্ট্রিকৃত জমির দাগ নং ৩৭১, ৩৭৫, ৩৭৬, ৩৭৭, ৩৩২৯। দলিল অনুযায়ী তার জমি র্পাঁচ দাগ থেকেই নিতে হবে। কিন্তু আজিজুল গং জোরপুর্বক দখল করেছেন ৩৭৫, ৩৭৬, ৩৭৭ দাগ থেকে। এ তিনটি দাগের জমি শিশিরপাড়া গ্রামের ঝিনেরপুলের কাছে পাশাপাশি।

ধানখোলা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের (গাড়াডোব) তহশীলদার জাকির হোসেন ও গাংনী ভূমি অফিসের সহকারী শাহজাহানকে ম্যানেজ করে আজিজুলের কেনা জমি খারিজ সম্পাদন হয়েছে। যা অবৈধ ভাবেই সম্পাদন করা হয়। খারিজের সময় জমির অন্যান্য অংশিদারদেরকে লিখিত বা মৌখিক নোটিশ দেওয়া হয়নি।

মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে গোপনে খারিজ করা হয়েছে বলে আমারা মনে করছি। এই অবৈধ খারিজ বাতিলের জন্য আমরা গাংনী উপজেলা ভূমি অফিসে আবেদন করেছি।

কিন্তু খারিজ বাতিলের বিষয়ে তহশিলদার জাকির হোসেন দিনের পর দিন আমাদেরকে হয়রানি করছেন।

ওই জমির এসএ এবং আরএস রেকর্ড আমার নামে (মোতালেব হোসেন) থাকা সত্তেও লাঠিয়াল বাহিনী দ্বারা জোপুর্বক প্রাচীর নির্মান করছে আজিজুল গং। আমরা বাধা দিতে গেলে তাদের লাঠিয়াল বাহিনীর লোকজন প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে।

শুধু ভূমি অফিসে নয় আদালতেও মামলা চলমান রয়েছে উল্লেখ করে ভুক্তভোগী মোতালেব হোসেন বলেন,

আদালতে বিচারাধীন মামলা দুটির মধ্যে দেওয়ানী ১৩৫/১৯ এবং ফৌজদারী মামলা ৪৪৫, পিটিশন নং ৩২৩/১৯। যেখানে মামলা বিচারাধীন সেখানে তারা শুধুমাত্র গায়ের জোরেই প্রাচীর নির্মান করছেন। পেশিশক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে আমাদের পৈত্রিক জমির জবর দখল করছে।

-গাংনী প্রতিনিধি




গাংনীতে বিদ্যুতায়িত হয়ে অটোভ্যান চালক নিহত

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার হিন্দা গ্রামে বিদ্যুতায়িত হয়ে এক অটোভ্যান চালক নিহত হয়েছে।
আজ শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নিজ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যাক্তি হলো হিন্দা গ্রামের পশ্চিমপাড়ার আনিচুর রহমানের ছেলে।

নিহতের পরিবার সুত্রে জানা যায়, নিহত আহার মাঠ থেকে ভেজা শরীরে বাড়িতে এসে অটোভ্যানে চার্জ দিতে গেলে সে পড়ে যায়।
এসময় পরিবারের লোকজন তার জ্ঞান হারিয়েছে ভেবে মাথায় পানি দেয়। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতিন হলে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে।
কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
ডাক্তার জানান সে এখানে আসার আগেই মারা যায়।

-গাংনী প্রতিনিধি




পাঁচদিনেও কোন অগ্রগতি নেই

কিশোরগঞ্জ ও শরিয়তপুর টিটিসির পর মেহেরপুর কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (টিটিসি)তে রাতের আধারে দুঃসাহসিক চুরির ঘটনা ঘটেছে।

টিটিসির ৭৫টি কম্পিউটারের র‌্যাম, প্রসেসর এবং একটি ল্যাপটপ চুরি হয়েছে। যেগুলোর আনুমানিক মূল্য ১৪ লাখ টাকা।

একই কক্ষে মূল্যবান দুটি প্রিন্টার ও দুটি প্রজেক্টর থাকলেও সেগুলো অক্ষত রয়েছে। চুরি হওয়া পাঁচ দিন পার হলেও এখন পর্যন্ত চোর শনাক্তের কোন অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। ফলে পরবর্তিতে একের পর এক টিটিসি গুলো এভাবেই চুরির কবলে পড়ে সরকারি সম্পদ খোয়া যাবে এমন আশংকা থেকেই যাচ্ছে।

তিনটি জেলার টিটিসিতে একই কায়দায় চুরির ঘটনা ঘটেছে। ফলে পুলিশের ধারণা সারাদেশে একই চক্র এই চুরির ঘটনা ঘটাচ্ছে। সিসিটিভির ফুটেজ ও চুরির ধরন দেখে মনে হচ্ছে সারা দেশের টিটিসি গুলোই তাদের টার্গেট।

রবিবার দিবাগত রাত ১টা থেকে সাড়ে ৩টার মধ্যে দুটি ট্রেডের তালা ভেঙে এ চুরির ঘটনা ঘটেছে। তবে কারা এর সাথে জড়িত এ বিষয়ে নিশ্চিৎ করা না গেলেও চোররা যে কম্পিউটার বিষয়ে পারদর্শি তাতে সন্দেহ নেই দাবি পুলিশের।

সরকারি ভবনে এতো বড় চুরির ঘটনায় জনমনে নানা প্রশ্ন উঠেছে। লাখ লাখ টাকার যন্ত্রপাতির কোন সুরক্ষা থাকেনা সরকারি অফিসে।

এ দায় কার প্রশ্ন সাধারণ জনগণের। ২.০২ একরের বিশাল ক্যাম্পাসে পাঁচটি ভবনে মাত্র একজন নিরাপত্তা কর্মী দিয়ে নিরাপত্তার কাজ করা হচ্ছে যা কখনোই নিরাপত্ত দেওয়া সম্ভব নয়।

নিরাপত্তা ব্যবস্থার জোরদার না করলে এ ধরণের ঘটনা বারবার ঘটতে থাকবে।
এদিকে চুরি হওয়ার পর থেকে শুধুমাত্র তত্তি¡য় ক্লাস গুলো হচ্ছে কোন ধরণের ব্যবহারিক ক্লাস হচ্ছে না। ফলে শিক্ষার্থীরাও বিপাকে পড়েছেন। তাদের মধ্যেও উৎকন্ঠা ছড়িয়ে পড়েছে।

টিটিসির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম জানান, প্রতিদিনের ন্যায় রাত ১২টা পর্যন্ত আমি জেগে ছিলাম। এর পর ঘুমিয়ে যায়। সকালে অফিসে চুরির খবর পেয়ে কম্পিউটার রুমে গিয়ে দেখি দুটি কক্ষের তালা ভাঙা।

ভিতরে প্রবেশ করার পর চোখে পড়ে কম্পিউটারের সিপিইউ গুলো খোলা অবস্থায় পড়ে আছে। সেগুলো থেকে র‌্যাম, প্রসেসর গুলো চুরি করা হয়েছে। এছাড়া একটি ল্যাপটপও চুরি হয়েছে। সিসি ক্যামেরার সময় অনুযায়ী রাত ১ টা থেকে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত ঘটনাটি ঘটেছে।
চুরির খবর পুলিশকে জানানো হলে পুলিশের একটি দল এসে চুরির আলামত সংগ্রহ করে এবং চুরি যাওয়া কক্ষ দুটি তাদের হেফাজতে নিয়েছে বলে তিনি জানান।

মেহেরপুর সদর থানার ওসি শাহ দারা খান জানান, সিসিটিভির ফুটেজ ও চুরির ধরণ দেখে মনে হচ্ছে অন্যান্য টিটিসির চুরির সাথে এই চুরির মিল রয়েছে।

পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলী জানান, একই ভাবে এর আগে কিশোরগঞ্জ ও শরিয়তপুর টিটিসি তে চুরি হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। ওই দুই স্থানের চুরির সাথে এই চুরির যথেষ্ট মিল রয়েছে।

পরিদর্শক পর্যায়ের একজন গোয়েন্দা অফিসারকে তদন্তের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত শেষ হলেই বিস্তারিত জানা যাবে। তবে মেহেরপুর টিটিসির নিরাপত্তা ব্যবস্থা অত্যন্ত দুর্বল।

মেহেরপুর জেলা প্রশাসক মো: আতাউল গনি জানান, চুরির ঘটনার পরই টিটিসির নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করা হয়েছে। এ ধরণের নিরাপত্তা ব্যবস্থা দিয়ে প্রতিষ্ঠান নিরাপদ করা সম্ভব না।

নিজেস্ব প্রতিবেদক




প্রেমের টানে ঘর ছাড়া স্বামী – পরিবার নিয়ে অসহায় স্ত্রী

প্রেমের টানে পর স্ত্রীকে ভাগিয়ে নিয়ে অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমিয়েছে আবুল কাসেম নামের ৪৫বছরের এক ব্যাক্তি। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে এমন কাজ করায় এলাকার মানুষের মাঝে মুখোরোচক গল্পের জন্ম দিয়েছে। মেহেরপুর জেলার মুজিবনগর উপজেলার মহাজনপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

এদিকে স্বামী হারিয়ে পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে অসহায় স্ত্রী।

এ প্রসঙ্গে অসহায় স্ত্রী বলেন, আমাদের দীর্ঘ সংসার জীবনে দুইটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। ইতিমধ্যে আমার বড় মেয়ের বিয়ে হয়েছে এবং ছোট মেয়ে পড়াশুনা করছে।

আমার স্বামী আবুল কাসেম ২০০৮সালে জীবিকার তাগিদে মালায়েশিয়া পাড়ি জমায়। সেখানে থাকা অবস্থায় আনন্দবাস গ্রামের জামাল রাজ মিস্ত্রির স্ত্রী ফাতেমা অরফে ফতে’র সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে।

এনিয়ে বেশ কয়েকবার আমাদের মধ্যে ঝামেলাও হয়। পরকীয়ার কারনে কোর্টে মামলা করলে আবুল কাসেম ২দিনের জেলও খাটে। পরে মুচলেকা দিয়ে জেল থেকে বের হয়ে আসে। জেল থেকে বের হওয়ার পর পুনরায় সে আবার সম্পর্ক চালাতে থাকে।

এই সম্পর্কের ইন্ধন দেয় আমার বড় ভাসুর জান মোহাম্মদ ও তার স্ত্রী পারভিন খাতুন। কারণ আমার ছেলে না থাকায় আমাদের সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার পায়তারা করছে তারা দুজন।

এর মধ্যে গত ৩০ অক্টোবর আবুল কাসেম ও ফতে অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমায়। অনেক খোঁজা খুজি করেও কোন লাভ হয়নি। আমরা এ বিষয়ে খোঁজা খুজি করলে জান মোহাম্মদ ও তার স্ত্রী পারভিন খাতুন আমাদের বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেয়।

এমন অবস্থায় সংসার নিয়ে মানবের জীবন যাপন করছি। যদি এর যদি সে ফিরে না আসে তবে মুজিবনগর থানায় একটি মামলা দায়ের করবো।

নিজস্ব প্রতিনিধি