পিন্টু সভাপতি, রাজ্জাক সম্পাদক নির্বাচিত

আলমডাঙ্গা কুমারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রী-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্টিত। আবু সাইদ পিন্টু সভাপতি ও আব্দুর রাজ্জাক সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত।

বৈরী ও দূর্যোপূর্ণ আবহাওয়া ও বৃষ্টি উপেক্ষা করে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দিপনার মধ্য দিয়ে কুমারী ভ্যাটেনারী অডিটরিয়ামে গতকাল শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৩ টার দিকে ত্রী- বার্ষিক সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন কুমারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রানা উদ্দিন মন্ডল।

প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দার ছেলুন। ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন এর উদ্বোধন করেন আলমডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পৌর মেয়র হাজী হাসান কাদির গণু।

প্রধান অতিথি হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ও দিক নির্দেশনা মূলক বক্তব্য রাখবেন চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগ এর সভাপতি চুয়াডাঙ্গা ১ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন।

তিনি বলেন, যারা আজকে সংগঠনের দায়িত্ব পাবেন তারা দলকে সুসংগঠিত করতে সকলকে নিয়ে কাজ করবেন। যারা পদ পাবেন না, তাদেরও বলি আপারা কাজ করে যান, আপনার কাজের মুল্যায়নে একদিন দল আপনাকে ডেকে পদে বসাবে। মনে রাখবেন একটি চক্রান্ত শীল মহল দেশে অস্থিতি শীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা করছে। আপনারা সজাগ থাকবেন।

জননেন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হব, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে আমাদের সততার সাথে দায়িত্ব পালন করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করতে হবে।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সহ- সভাপতি খুস্তার জামিল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দার টোটন, সাংগাঠনিক সম্পাদক মুন্সি আলমগীর হান্নান, অ্যাড. সামসুজ্জোহা, মাসুদুজ্জামান লিটু বিশ্বাস, উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত ইয়াকুব আলী মাষ্টার, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু মুসা, সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, সাংগাঠনিক সম্পাদক আতিয়ার রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য দেলোয়ার হোসেন,বীর মুক্তিযোদ্ধা হেলাল উদ্দিন।

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাকের উপস্থাপনায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক সহিদুল ইসলাম, কুমারি ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাইদ পিন্টু, মাসুদ রানা তুহিন, জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি আরেফিন রঞ্জু, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আব্দুল কাদের, বিআরডিবি চেয়ারম্যান মহিদুল ইসলাম মুহিদ, খবির উদ্দিন, মজিবর রহমান, শওকত আলী, জেলা যুবলীগের সদস্য পৌর কাউন্সিলর মতিয়ার রহমান ফারুক, সাইফুর রহমান পিন্টু, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মিজানুর রহমান মিজান, ছাত্রলীগের সভাপতি ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাড. সালমুন আহম্মদ ডন, সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি আশরাফুল ইসলাম, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি নয়ন সরকার, সৈকতখান, সাকিব, অটল, চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগ, উপজেলা আওয়ামী লীগ, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ।

সভায় সর্বসম্মতি ক্রমে কুমারি ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাইদ পিন্টুকে সভাপতি ও আব্দুর রাজ্জাক কে সাধারন সম্মাদক করে ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।

আলমডাঙ্গা প্রতিনিধি




মেহেরপুরে উঠতি ফসলের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

মেহেরপুর সহ সারাদেশে টানা বর্ষনে মেহেরপুরের বিভিন্ন গ্রামে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সেই সাথে জন জীবন হয়ে পড়েছে বিপর্যস্ত। গত বুধবার থেকে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টিতে সব থেকে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষরা। কৃষক, ভ্যান-রিক্সা চালক, শ্রমিকরা বসে বসে দিন পার করছেন।

শুধু তাইই নয় লাগাতার বর্ষনে আমন ধান, কপি, নতুন লাগানো পিয়াঁজ, রসুনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। মেহেরপুরের বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়। আবাদি জমিগুলো হাটু পানিতে তলিয়ে গেছে।

শোলমারী গ্রামের আব্দুল জাব্বার জানান, দুই বিঘা আগাম পিয়াঁজ লাগিয়ে ছিলাম কিন্তু টানা বৃষ্টিতে সে জমি এখন পানির নিচে। এতে আমার প্রায় লাখ টাকার ক্ষতি হয়ে গেলো।
তেরোঘরিয়া গ্রামের ফারুক হোসেন জানান, আমন ধান ছিল দুই বিঘা, কপি ছিল এক বিঘা অসময়ের এ বৃষ্টিতে সবকিছু পানির নিচে।

এদিকে ব্যাস্ত মেহেরপুরে বৃষ্টির কারনে অনেকটাই ফাকা দেখা গেছে। নেই মানুষের কোলাহল, নেই গাড়ি-ঘোড়ার চাপ।

মেহেরপুর শহরের রিক্স চালক চাঁদ আলী জানান, বাড়ি রাজাপুর, পেটের দায়ে রিক্সা চালায়। দুইদিন ধরে দুইশো টাকার কাজও করতে পারিনি। রাস্তায় তেমন মানুষ নেই যে দুইএকজন আছে তারা সবাই অটোতে যাতায়াত করছে।

দিন মজুর জয়নাল, হাফিজুল, কালাম জানান, রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠে কাজের সন্ধানে মেহেরপুরে চলে আসি। গত বৃহস্পতিবার থেকে কোন কাজ নেই। কেউ কাজের জন্য ডাকছে না। বাড়িতে ছেলে সংসার আছে এইভাবে চলতে থাকলে আমাদের না খেয়ে থাকতে হবে।
টানা বৃষ্টিতে গ্রামের চায়ের দোকান গুলোতে ব্যাপক লোকজনের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। কাজ-কাম করতে না পেরে চা আড্ডাতে মেতেছে অনেকেই।

মুজিবনগর অফিস জানাই, টানা বৃষ্টিতে মুজিবনগর পর্যটন কেন্দ্র পুরোপুরি ফাকা। সেখানকার ব্যবসায়ীরা অনেকটা খেয়ে-ঘুমিয়ে দিন পার করছে। সেই সাথে নতুন ও উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

গাংনী অফিস থেকে জানাই, লাগাতার বৃষ্টিতে জন-জীবন বিপর্যস্ত। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে দিন মজুর, চাকরিজীবি সবাই পড়েছে বিপদে।

স্থানীয় আবহাওয়া অফিস সুত্রে জানা যায়, বুধবার থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টি থাকতে পারে আরও দুইদিন। আগামী সোমবার আবহাওয়া স্বাভাবিক হতে পারে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. আখতারুজ্জামান জানান, যেহেতু মেহেরপুর বন্যা মুক্ত এলাকা তাই এখানে ফসলের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা কম। তবে যদি এরকম বৃষ্টি লেগে থাকে তাহলে শীতকালিন সবজীর কিছুটা ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এখন বৃষ্টি হওয়ার উপযুক্ত সময় না।

দুইদিন ধরে লাগাতার বৃষ্টি হচ্ছে । এতে শীতকালিন সবজীর জন্য জমির জোঁ আসতে দেরি হবে। ফসল চাষ এ বছর একটু পিছিয়ে যাবে। আমাদের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সব সময় তদারকি করছে। ফসলের যেন ক্ষতি না হয় সে বিষয়ে কৃষকদের যে কোন সহায়তা ও পরামর্শ প্রদান করা হবে।

নিজস্ব প্রতিবেদক




আজ স্মৃতির অন্তরালে বাবুই পাখি

বাবুই পাখিরে ডাকি বলিছে চড়াই,
কুঁড়ে ঘরে থেকে কর শিল্পের বড়াই!
আমি থাকি মহা সুখে অট্টালিকা পরে,
তুমি কত কষ্ট পাও রোদ বৃষ্টি ঝড়ে…..

মানুষকে মানবিক ভাবে জাগ্রত করার জন্য কবি রজনীকান্ত সেন এ কবিতাটি রচনা করেন।
তার এ কালজয়ী কবিতাটি এখনো মানুষের মুখে মুখে। বাবুই পাখিকে নিয়ে কবির ‘স্বাধীনতার সুখ’ কবিতাটি আজো মানুষ উদাহরণ হিসাবে ব্যবহার করলেও হারিয়ে যেতে বসেছে বাবুই পাখি ও বাবুই পাখির বাসা।

বাবুই পাখির বাসা আজ অনেকটা স্মৃতির অন্তরালে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। অথচ আজ থেকে প্রায় ১৫/২০ বছর আগেও গ্রাম-গঞ্জে তাল,নারকেল ও সুপারি গাছে দেখা যেত বাবুই পাখির নিপুণ কারু কাজে তৈরি দৃষ্টিনন্দন বাসা।

এসব বাসা শুধু শৈল্পিক নিদর্শনই ছিল না, মানুষের মনে চিন্তার খোরাক জোগাত এবং আত্মনির্ভশীল হতে উৎসাহ দিত। কিন্তু কালের বিবর্তনে ও পরিবেশে বিপর্যয়ের কারণে পাখিটি আমরা হারাতে বসেছি। এক সময় গ্রাম-গঞ্জের তাল, নারিকেল ও খেজুর গাছে এরা বাসা বেঁধে থাকতো। প্রকৃতি থেকে তাল আর খেজুর গাছ বিলুপ্ত হওয়ায় বাবুই পাখিও হারিয়ে যেতে বসেছে।
এক সময় মেহেরপুরে তিন প্রজাতির বাবুই পাখি দেখা যেত।

দেশি বাবুই, দাগি বাবুই ও বাংলা বাবুই। তবে বাংলা ও দাগি বাবুই এখন বিলুপ্তির পথে। বর্তমানে কিছু দেশি বাবুই দেখা যায়। বাসা তৈরির জন্য বাবুই পাখির প্রথম পছন্দ তাল গাছ। এরপর নারিকেল, সুপারি ও খেজুর গাছ। এরা খড়ের ফালি, ধানের পাতা, তালের কচিপাতা, ঝাউ ও কাশবন দিয়ে বাসা বাঁধে। বাসার গঠনও বেশ জটিল, তবে আকৃতি খুব সুন্দর। বাসা যেমন দৃষ্টিনন্দন, তেমনি মজবুত।

শুরুতে বাসায় দুটি নিম্নমুখী গর্ত রাখে। অর্ধেক বাসা বাঁধার পর তার সঙ্গীকে খোঁজে। স্ত্রী বাবুইটির পছন্দ হলে মাত্র চার দিনে বাসা বাঁধার কাজ শেষ করে। বাসার নিম্নমুখী একটি গর্ত বন্ধ করে ডিম রাখার জায়গা করে নেয়। অন্যটি খোলা রাখে প্রবেশ ও প্রস্থানের জন্য।
বাসার ভেতরে-বাইরে কাদা লাগিয়ে রাখে। ফলে প্রবল ঝড়ে বা বাতাসেও টিকে থাকে বাসা। রাতে বাসা আলোকিত করার জন্য জোনাকি পোকা ধরে এনে রাখে। সাথী বানানোর জন্য কত কিছুই না করে পুরুষ বাবুই। স্ত্রী বাবুইকে নিজের প্রতি আকর্ষিত করতে খাল-বিল ও ডোবায় গোসল সেরে ফূর্তিতে নেচে বেড়ায় গাছের ডালে ডালে।

সাধারণত মে থেকে আগস্ট বাবুই পাখির প্রজনন মৌসুম। একটি পুরুষ পাখির একাধিক বাসা ও পরিবার থাকতে পারে। বাবুই পাখি দুই থেকে চারটি ডিম দেয়। স্ত্রী বাবুই ডিমে তা দেয়। দুই সপ্তাহের মধ্যে বাচ্চা ফোটে। তিন সপ্তাহ পর বাচ্চা উড়ে যায়। এরা মূলত বীজভোজী পাখি। তাই এদের ঠোঁটের আকৃতি সহজে বীজ ভক্ষণের উপযোগী চোঙাকার। আর ঠোঁটের গোড়ার দিকটা মোটা। এরা সাধারণত খুঁটে খুঁটে বিভিন্ন ধরনের বীজ, ধান, ভাত, পোকা, ঘাস, ছোট উদ্ভিদের পাতা, ফুলের মধু-রেণু ইত্যাদি খেয়ে জীবন ধারণ করে।

সোনালি ও সবুজ রঙের এ বাবুই পাখির কিচিরমিচির ডাক শোনা যেত সন্ধ্যা ও সকালে। এ পাখি যেমন শিল্পী তেমন ঘুম জাগানিয়া। চমৎকার সুরে মানুষের ঘুম ভাঙাতো। এখন নেই কোন বড় তাল আর নারিকেল গাছ। বাসা বাঁধার জায়গা না থাকায় এ পাখি বংশ বৃদ্ধি করতে পারেনি। এলাকা থেকে বিদায় নিয়েছে। পরিবেশ ও পাখি সংরক্ষণের জন্য তাল, নারিকেল গাছ লাগানো প্রয়োজন।

মেহেরপুর গাংনী মহিলা কলেজের জীব বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর রিনা আকতার বলেন, এখন কৃষকরা ক্ষেতে ও বীজতলায় কীটনাশক ব্যবহার করায় বাবুই পাখি মারা যায়। বংশ রক্ষার্থে তারা এলাকা ত্যাগ করেছে। প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় বাবুই পাখির বংশ বিস্তারে তাল, খেজুর ও নারকেল গাছ রোপণ করতে হবে। সেই সাথে কীটনাশকের অপব্যবহার রোধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

গাংনী প্রতিনিধি




জীবননগরে সাংবাদিক সমিতির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত

জীবননগর সাংবাদিক সমিতির মাসিক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৩টার সময় জীবননগর সাংবাদিক সমিতির আয়োজনে থ্রি-স্টার হোটেল এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

জীবননগর সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আতিয়ার রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জীবননগর সাংবাদিক সমিতির উপদেষ্টা ও সাপ্তাহিক জীবননগর বার্তার সম্পাদক ও প্রকাশক শামসুল আলম, অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক সমিতির সহ-সভাপতি জামাল হোসেন খোকন ,শেখ শহিদুল ইসলাম, যুগ্ন সাধারন সম্পাদক মিঠুন মাহমুদ, নুর আলম, বশির উদ্দিন বিশ্বাস, জাহিদুল ইসলাম মামুন, রাসেল হোসেন মুন্নাসহ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জীবননগর সাংবাদিক সমিতির সদস্য রাজেদিন, মাসুম, রিপন, এ আর ডাবলু, শাকিব হোসেন রবিন, অর্পন রকি, শোয়াইব হোসেন, মতিয়ার রহমান, রমজান হোসেন, আহম্মেদ সগির প্রমুখ।

জীবননগর প্রতিনিধি




চুয়াডাঙ্গায় ও ঝিনাইদহে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালো-৩

চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের রেলবাজার এলাকায় ইজিবাইকের ধাক্কায় আবু নাঈম জোয়ার্দ্দার টিপু (৬৫) নামে একজন নিহত হয়েছেন।

শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে এ দূর্ঘটনা ঘটে। নিহত আবু নাঈম জোয়ার্দ্দার টিপু শহরের মাঝেরপাড়ার আবু মোতালেব জোয়ার্দ্দারের ছেলে।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু জিহাদ মো. ফখরুল ইসলাম খান জানান, শুক্রবার সকালে শহরের রেলবাজার এলাকার শহর পুলিশ ফাঁড়ির সামনের রাস্তা পার হওয়ার সময় একটি ইজিবাইক পিছন থেকে আবু নাঈম জোয়ার্দ্দার টিপুকে ধাক্কা দেয়।

এ সময় তিনি রাস্তায় ছিটকে পড়ে মাথায় ও বাম হাতে আঘাত পান। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি জানান, ঝিনাইদহে ট্রাকের চাপায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে শহরের চক্ষু হাসপাতালের সামনে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- সদর উপজেলার চুটলিয়া গ্রামের আতিয়ার রহমানের ছেলে হাসানুজ্জামান ও একই এলাকার রওশন ম-লের ছেলে রাশেদুল ইসলাম।

তারা সম্পর্কে চাচা-ভাতিজা বলে জানা গেছে। ঝিনাইদহ ফায়ার সার্ভিসের সাব-স্টেশন অফিসার রউফ মোল্লা জানান, মোটরসাইকেল আরোহী রাশেদুল ও হাসানুজ্জামান মাগুরা থেকে ঝিনাইদহের দিকে আসছিল।

পথিমধ্যে ঝিনাইদহ চক্ষু হাসপাতাল এলাকায় পৌঁছালে সামনের দিক থেকে আসা একটি সবজি বোঝাই ট্রাক মোটরসাইকেলটিকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়।
তিনি আরও জানান, মৃতদেহ দুটি সদর হাসপাতালে রাখা হয়েছে।

ঘাতক ট্রাকটিকে আটক করা হয়েছে। তবে চালক পলাতক রয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি




জেলা বিএনপি’র উদ্যোগে ইসলাম আলী মাস্টারের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী পালন

মেহেরপুর জেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ইসলাম আলী মাস্টারের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার বিকালে পৌর ঈদগাহ সংলগ্ন জেলা বিএনপির কার্যালয়ে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক কাজি মিজান মেনন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য ও পিচ এম্বাসেডর জাকির হোসেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির সহ সভাপতি ওমর ফারুক লিটন, যুগ্ম সম্পাদক ফয়েজ মোহাম্মদ, যুবদলের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আলতাব হোসেন, নেতা আপেল, শিমুল, ছাত্রদলের সহ সভাপতি নাহিদ মাহাবুব সানি, সহ সাধারণ সম্পাদক ফরিদুল ইসলাম, নবিন দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি উজ্জল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন জেলা যুবদলের সদস্য মনিরুল ইসলাম মনি।

:নিজস্ব প্রতিনিধি




অনিয়মই যার কাছে নিয়ম

চুয়াডাঙ্গা ফাযিল মাদরাসার সহকারি শিক্ষক (কৃষি) ওয়াহেদ মো. রাশেদীন আমিন প্রতিষ্ঠানের পাবলিক পরীক্ষায় অবৈধ অর্থ আদায়ের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়ে নানা অপতৎপরতা চালানোর চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

তিনি প্রতিষ্ঠানের নানা অনিয়মের সাথে জড়িত থাকার কারণে সম্প্রতি ওই প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন প্রতিবাদমূখর হয়ে উঠলে তিনি তাদের বিরুদ্ধে নানা কুৎসা রটিয়ে বেড়াচ্ছেন। অভিযুক্ত রাশেদীন আমিন সাংবাদিক পরিচয়ে অনেকের সাথেই প্রতারণা করেছেন বলেও শহরে গুঞ্জন রয়েছে। ওই শিক্ষকই সরকারের তিনটি প্রতিষ্ঠান (চুয়াডাঙ্গা ফাজিল মাদরাসা, বিটিভি ও বাসস) উত্তোলন করেন বেতন-ভাতা।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রাশেদীন আমিন চুয়াডাঙ্গা ফাযিল মাদরাসায় যোগদানের পর থেকে নানা অনিয়মের সাথে জড়িয়ে পড়েন। ওই প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষায় তিনি অসদূপায় অবলম্বন করে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা দেয়ার কথা বলে অর্থ আদায় করে থাকেন।

এসব কারণে অনেক শিক্ষার্থী অভিমান করে পরবর্তিতে অন্য প্রতিষ্ঠানে চলে গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক শিক্ষার্থী বলেন, চুয়াডাঙ্গা ফাযিল মাদরাসায় যেকোনো পাবলিক পরীক্ষা হলেই পরীক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠানের কৃষি শিক্ষকের দ্বারা নানাভাবে শোষিত হতে থাকে। তারা বলেন, তিনি পরীক্ষার হলে বাড়তি সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার কথা বলে এবং কেন্দ্রে ম্যাজিস্ট্রেট আসবে না বলে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করেন।

এছাড়া ব্যবহারিক পরীক্ষায় বাড়তি নম্বর দেয়ার আশ্বাস দিয়ে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে কৌশল করে অর্থ আদায় করে থাকেন। কয়েক বছর আগে দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহনকারী চুয়াডাঙ্গা ফাযিল মাদরাসার ৯ জন মেধাবি পরীক্ষার্থীর নিকট নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষার উত্তরপত্র সেট কোড পরির্তন করে তাদের পাশ করার পথ রুদ্ধ করে দেন। তাদের অপরাধ ছিল ওয়াহেদ মো: রাশেদীন আমিনের চাহিদা মত টাকা দিতে না পারা।

এসব অভিযোগ অবগত হয়ে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইতিপূর্বে তাকে (ওয়াহেদ মো. রাশেদীন আমিন) সকল পাবলিক পরীক্ষায় দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকতে লিখিত নির্দেশ দেন। যার স্মারক নং-ইআবি/ফাজিল পরীক্ষা/২০১৮/৮০৮ তারিখ-০৮.১০.২০১৮খ্রিঃ।
চুয়াডাঙ্গা ফাযিল মাদরাসার অনেক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, কৃষি শিক্ষক রাশেদীন আমিন প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত ক্লাস নেন না।

তিনি সকালে মাদারাসায় এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করার পর তার গোত্রের কয়েক শিক্ষককে নিয়ে গল্প-গুজবে মত্ত হয়ে পড়েন। প্রতিষ্ঠানের প্রত্যাহিক সমাবেশে তার অনুপস্থিতি নিয়মে পরিণত হয়েছে। প্রায় দিনই তিনি নানা অজুহাতে ২/৩ পিরিয়ড পরে প্রতিষ্ঠান ত্যাগ করেন। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ তাকে কিছু বলতে সাহস পান না।

জাতীয় দিবসগুলোতে দূর দূরান্তের শিক্ষকরা মাদরাসায় আসলেও তিনি নিজ ক্ষমতা বলে মাদরাসায় অনুপস্থিত থাকেন। মাদরাসায় চাকুরী করার পাশা-পাশি বাসস ও বিটিভি’র ভয় দেখিয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় নিয়োগ নিশ্চিত করার প্রতিশ্রæতি দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

শহরের একটি পরীক্ষা কেন্দ্রে রাশেদীন আমিনের দু-জন নারী নিকট আতœীয় ইয়ার ফোনের মাধ্যমে নকল করে পরীক্ষা দেওয়ার অপরাধে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাদের দু-জনকে ৭ দিনের শাস্তি প্রদান করেন। সেই শাস্তি মওকুফ করার জন্য অপকৌশল অবলম্বন করে রাশেদীন আমিন সেই দু-জন অবিবাহিত নারীকে আদালতের কাছে গর্ভবতী বলে উপস্থাপন করেন।

রাশেদীন আমীন বাংলাদেশ সরকারের তিনটি প্রতিষ্ঠান (চুয়াডাঙ্গা ফাযিল মাদরাসা, বিটিভি ও বাসস) থেকে কিভাবে বেতন-ভাতা ভোগ করেন সে অভিযোগের প্রেক্ষিতে সে সময় দুদক কুষ্টিয়া অফিস তাকে তলব করেন এবং স্বল্প সময়ের মধ্যে জবাব দাখিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। তলব করা চিঠির স্মারক নং- ৯৯৯, তাং- ১৯-০৯-১৮ ইং।

শোনা যাচ্ছে, দুদকের পত্রে তার অর্জিত সম্পদের যথাযথ বিবরণ ও অর্জনের উৎস ব্যাখ্যাসহ দুদক কর্তৃপক্ষকে জানানোর জন্যও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাশেদীন আমিন তার অর্থ আয়ের উৎস হিসেবে মৎস্য খামারের কথা উল্লেক করলেও স্থানীয় মৎস্য বিভাগ তার কোনো মৎস্য খামার নেই বলে জানান।

এসব বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা ফাযিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মীর মো. জান্নাত আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তিনি কাউকেই মানেন না। তাকে আমরা কোনো ভাবেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। একজন মাত্র শিক্ষক রাশেদীন আমিনের কারনেই মাদরাসার শিক্ষকদের মধ্যে নানা মতবিরোধের সৃষ্টি হয়েছে।

সম্প্রতি দু-একটি পাবলিক পরীক্ষায় রাশেদীন আমিন দায়িত্ব পালনের নামে অনৈতিক অর্থ আয়ের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে চলতি ফাযিল-২০১৯ পরীক্ষায় দায়িত্বরত দুই শিক্ষক আবুল হাশেম ও আতিয়ার রহমানকে জড়িয়ে সংবাদ প্রকাশের জন্য সাংবাদিকদের কাছে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য সরবরাহ করেন।

এসব বিষয়ে ওই দুই শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, উক্ত সংবাদে আমাদের (মো. আবুল হাশেম ও মহাম্মদ আতিয়ার রহমান) নাম ব্যবহার করে জোরপূর্বক ফাযিল পরীক্ষায় কেন্দ্র সচিবের দায়িত্ব পালন করার অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে। যা আদৌ সত্য নয়। ফাযিল পরীক্ষা-২০১৯ (১ম, ২য় ও ৩য় বর্ষ) পরিচালনার জন্য যে সময় কমিটি গঠন করা হয় সে সময় আমি অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) হিসেবে দায়িত্বরত ছিলাম।

যে কারণে জেলা প্রশাসন ও ইসলামি আরবি বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের মাধ্যমে পরীক্ষা পরিচালনার অনুমোদন দেন। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক স্বাক্ষরিত পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির পত্রের স্মারক নং-০৫.৪৪.১৮০০.১০৪.৫৫.০১৫.১৯-৩৪৬ তারিখ-০৩.০৯.২০১৯খ্রিঃ।

প্রকৃতপক্ষে অত্র মাদরাসায় যেসব বোর্ড/বিশ^বিদ্যালয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে সেসব পরীক্ষায় অত্র মাদরাসার অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ সহকারি শিক্ষক (কৃষি) ওয়াহেদ মো. রাশেদীন আমিনের সহযোগিতায় কেন্দ্র ফি’র টাকা তছরুপ করেন বলে পূর্ব থেকে অভিযোগ আছে। মাদরাসার অন্য কেউ পরীক্ষা পরিচালনা করলে তাদের অর্থ তছরুপের বিষয়টি সামনে চলে আসতে পারে, এ আশংকায় উল্লেখিত অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ এবং ওই সহকারি শিক্ষক অনুমোদিত কমিটি বানচাল করতে নানা মহলে ধর্ণা দেন।

এতেও ফল না হওয়ায় প্রকাশিত সংবাদের সাংবাদিকের কাছে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। তারা আরো বলেন, সংবাদের একাংশে উল্লেখ করা হয়েছে যে ‘ইসলামী আরবি বিশ^বিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কেন্দ্র সচিব আবুল হাশেম ও সহকারি কেন্দ্র সচিব আতিয়ার রহমানকে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষকে কেন্দ্র সচিবের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে বলেন।’ যা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। এ ধরনের কেউ আমাদের কাছে কোনো বার্তা দেননি।

বরং রাশেদীন আমিনের সহযোগিতায় অত্র মাদরাসার উপাধ্যক্ষ মো. খালেদ সাইফুল্লাহ নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে একই প্রতিষ্ঠানে (চুয়াডাঙ্গা ফাযিল মাদরাসা) থাকা অবস্থায় স্ব-বেতনে তিনবার হজ্জ পালন করেন। অভিযোগ রয়েছে মাদরাসার উপাধ্যক্ষ হজ্জ পালনের নামে মোয়াল্লেম (হাজীদের গাইড/লাইন ম্যান) হিসেবে দায়িত্ব পালন করে থাকেন। এতে তিনি মোটা অংকের অর্থ লাভ করেন। এসব বিষয় সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানে এবং মাদরাসা পরিচালনা কমিটির মধ্যে সমালোচনার জন্ম দেয় ।

উপাধ্যক্ষের এ অপকর্মকে আড়াল করতে একটি মহল নানা নীলনকশা প্রণয়ন করতে থাকে।

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি




চা-বিক্রিই ভরসা অবুঝ ৪ ভাই বোনের

বাবা মাকে হারিয়ে অথয় সাগরে ভাসছে মেহেরপুরের গাংনীর কসবা গ্রামের ৪ অবুঝ শিশু। মায়ের মৃত্যু’র পর অবুঝ শিশুদের ছেড়ে তাদের বাবা নতুন বিয়ে করে সংসার পেতেছে অন্যত্র।

বাবা মাকে ছাড়াই বৃদ্ধ দাদার ঘরে অনাহারে অর্ধহারে অবহেলায় মানবেতর জীবন যাপন করছে ঐ শিশুরা। ছোট তিন ভাই বোনের আহার ও পড়াশুনার খরচ জোগাতে ভাঙ্গাচোরা চায়ের দোকান দিয়েছে শিশু আশিক (১২)।

শিশু আশিক জানায়, মুস্তাকিম (১০), কুলসুম (৮) ও রিয়াজ (৬) নামের তিন ভাই বোন রয়েছে মায়ের মৃত্যু’র পর বাবা অন্যত্র বিয়ে করে তাদের ছেড়ে চলে গেছে। বৃদ্ধ দাদা দাদীর কাছে থাকে সে সহ তার ভাই বোনেরা। বৃদ্ধ দাদার অভাবের সংসার ঠিকমত চলেনা দু বেলা দুমুঠো ভাতও জোটেনা।

পরে বাড়ির সাথে একটি চায়ের দোকান চালিয়ে ভাই বোনদের পড়াশুনা ও দু বেলা আহার জোটানোর চেষ্টা করছি। আশিক আরো জানান, তারা কুড়ে ঘরে থাকেন পানিতে ভিজে অনেক রাত কাটাতে হয়েছে। তাই একটি ও দোকান থাকার জন্য একটি ঘর হলেই চার ভাই বোন মিলে কিছুটা শান্তির সাথে থাকতে পারবো।

আশিকের দাদী সালমা খাতুন জানান, ৪ জন শিশুকে নিয়ে তিনি মহা বিপাকে পড়েছেন। অভাব অনটনের সংসারে তাদের ঠিকমত খেতে দিতে পারিনা। শিশুরা বিভিন্ন সময়ে মায়ের জন্য কান্না করে। মা আসছে আসবে বলে অনেক সময় তাদের ঘুম পাড়িয়ে দিই। এভাবে চলে তাদের জীবন সংগ্রাম। সরকারী ভাবে সহায়তা কামনা করেছেন তিনি।

শিশু রিয়াজ জানায় সকালে সে নুন (লবন) দিয়ে পানতা ভাত খাইছে। সে বলে আমাদের মা নেই তাই কেউ ভালোবাসেনা ঠিকমত খেতেও দেয়না।

স্থানীয়রা জানায়, শিশুদের মা মনোয়ারা খাতুনের মৃত্যু’র পর তাদের বাবা ধানখোলা ইউনিয়নের কসবা গ্রামের রাশিদুল ইসলাম পুনরায় বিয়ে করে অন্যত্র বসবাস করলেও ৪ শিশুর খোজ খবর নেয়না।

শিশুদের দাদা বৃদ্ধ নালান হোসেন অনেক কষ্ট করে কোন রকম দু বেলা দু মুটো ভাত কাপড়ের জন্য রাতদিন পরিশ্রম করে। কিন্তু বয়সের ভারে নালান হোসেন ঠিকমত কোন কাজ করতেও পারেন না। বৃদ্ধ দাদার কষ্ট সহ্য করতে না পেরে সব স্বপ্ন শেষ করে সংসারের বোঝা মাথায় তুলে নিয়েছে কিশোর আশিক।

আশিকের দাদা লালন জানান, কি বলবো বাবা ৪ শিশুকে নিয়ে কষ্টের সংসার চলছে। বয়স হয়েছে ঠিকমত চলাচল করতে পারিনী। কি করে অবুঝ শিশুদের মুখে ভাত তুলে দেবো সেই ভাবনায় থাকতে হয়। সরকারী ভাবে যদি মাসে ৩০ কেজি চাউল,দোকান সংস্কার করে কিছু মালামাল উঠানো যেত তাহলে হইতো কষ্টটা কিছুটা হলেও লাঘব হতো।

ধানখোলা ইউপি সদস্য কসবা গ্রামের বাসিন্দা নিলু জানান, শিশুদের দেয়ার মত সরকারী ভাবে বরাদ্দ কিছু নেই। তবে তাদেও সহায়তার জন্য সকলেল এগিয়ে আসা উচিৎ।

ধানখোলা ইউপি চেয়ারম্যান আখেরুজ্জামান জানান,পরিবারটি মানবেতর জীবন যাপন করছে। ইউনিয়ন পরিষদ ও ব্যক্তিগত ভাবে তাদের সহায়তা করার আশ্বাস দেন তিনি। গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিলারা রহমান জানান, শিশুদের খোঁজ খবর নিয়ে সহায়তা করা হবে।

আল-আমীন, গাংনী




মেহেরপুরের ২৫ টি সহ এমপিও হলো ২৭৩০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর অবশেষে মেহেরপুরের ২৫ টি সহ এমপিও ভুক্ত হলো দেশের ২৭৩০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
গতকাল বুধবার গনভবনে প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন এমপিও ভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা ঘোষণা করেন। নতুন এমপিও’র তালিকায় মেহেরপুরের ২৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৪টি নিম্ন  মাধ্যমিক, ৩টি মাদ্রসা ও ১টি ভোকেশনাল রয়েছে।
মেহেরপুরের নতুন এমপিও ভুক্ত প্রতিষ্ঠান গুলোর মধ্যে সদর উপজেলার চকশ্যামনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বর্শিবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সিএমসি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মোমিনপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বলিয়ারপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়। মুজিবনগর উপজেলায়, মুজিবনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মোনাখালি মাধ্যমিক বিদ্যালয়। গাংনী উপজেলায়, এসকেএস মাধ্যমিক বিদ্যালয়, গাংনী পৌর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, এমএইসএ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, যুগিন্দা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ধলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ধানখোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, এনপি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বাঁশবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়। নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে মেহেরপুর সদর উপজেলায় শোলমারী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, সিএইসএস মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কেআরআরএস মাধ্যমিক বিদ্যালয়। গাংনী উপজেলায়, মোহাম্মদপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়। মাদ্রাসার মধ্যে মেহেরপুর সদর উপজেলায়, আমঝুপি আলিম মাদ্রাসা, পিরোজপুর দাখিল মাদ্রাসা। গাংনী উপজেলায়, কাজিপুর দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসা। ভোকেশনালের মধ্যে মুজিব নগর উপজেলার আনন্দবাস মিয়া মুনসুর একাডেমি।
এদিকে এমপিও পেয়ে মেহেরপুরের শিক্ষকদের মাঝে বইছে আনন্দের বন্যা। বহুল প্রতিক্ষিত এমপিও পেয়ে অনেকের চোখেই আনন্দের অশ্রæ দেখা যায়।
নতুন এমপিও পেয়ে অনুর্ভুক্তির কথা জানতে চাইলে শোলমারী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহাবুব রহমান বলেন, নতুন এমপিও পেয়ে একদিকে যেমন আনন্দিত অন্যদিকে সিনিয়র শাখা না হওয়াতে কষ্ট পেতে হচ্ছে। ২০০৪ সাল থেকে শ্রমদিয়ে আসছে আমার প্রান প্রিয় শিক্ষকরা। তারপরও আল্লাহর কাছে শুক্রিয়া আদায় করি এবং দোয়া করি যেন সিনিয়র শাখাটিও দ্রæত এমপিও হয়ে যায়।
বর্শিবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল কালাম বলেন, একসাথে দুইটি শাখা এমপিও পেয়ে আমি অনেক খুশি। সেই সাথে ধন্যবাদ জানায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। আমাদের দীর্ঘ দিনের দুঃখ-কষ্ট এবার লাঘব হবে।
কেআরআরএস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বজলুর রহমান বলেন, আনন্দ প্রকাশ করার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর অবশেষে এমপিও নামের সোনার হরিনের মুখ দেখতে পেলাম।
আমঝুপি আলিম মাদ্রাসার সহকারি শিক্ষক সাজ্জাদুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ ১০ বছর পরিশ্রমের পর এমপিওর ঘোষনা পেলাম। এর চাইতে খুশির খবর আরকি হতে পারে।
এ বিষয়ে উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার আনারুল ইসলাম বলেন, যে সব প্রতিষ্ঠান নতুন করে এমপিও ভুক্ত হয়েছে তাদের অভিনন্দন জানাই। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার যে লক্ষ্য নিয়ে সরকার কাজ করছে তাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোকে এমপিও ভুক্তির আওতায় নেওয়া অনেক জরুরী ছিল।
জেলা শিক্ষা অফিসার শাহিন আক্তার বলেন, যোগ্য প্রতিষ্ঠান গুলো এমপিও ভুক্তির আওতায় এসেছে। তবে এমপিও ধরে রাখতে হলে শিক্ষার মান ভালো থাকতে হবে। না হলে এমপিও বাতিল হতে পারে।

নিজস্ব প্রতিবেদক




মেহেরপুরে উন্মুক্ত পাঠগৃহ ও সামাজিক কল্যান সংস্থার আলোচনা সভা ও পুরুষ্কার বিতরণ

মেহেরপুরে উন্মুক্ত পাঠগৃহ ও সামাজিক কল্যাণ সংস্থার আয়োজনে বার্ষিক পুরুষ্কার বিতরণী, আলোচনা সভা ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। শুক্রবার সকালে মেহেরপুর শিল্পকলা একাডেমি এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উন্মুক্ত পাঠগৃহ ও সামাজিক কল্যাণ সংস্থার সভাপতি মোস্তাকুর রহমান তুষার। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান, অধ্যাপক নুরুল আহমেদ, ডা. আবুল বাশার, সাংবাদিক রুহুল কুদ্দুস টিটু, প্রফেসর খরচু ইসলাম, মীর রওজান আলি মনা, সুমনা রহমান।

অনুষ্ঠান শেষে সেরা পাঠকদের মাঝে পুরুষ্কার নিরতণ করা হয়।

সেই সাথে সিলন সুপার সিঙ্গার প্রতিযোগিতায় দেশের মধ্যে দ্বিতীয় রানার্সআপ হওয়ায় সুমনা রহমানকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানটি সার্বিক সহযোগিতা করে মেহেরপুর আড্ডা সংগঠন।