দশ বছরে বিএসএফের গুলিতে ৩ শতাধিক বাংলাদেশি নিহত

গত দশ বছরে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফের গুলিতে ৩২২ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। এরমধ্যে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ২৮ জন।
গত ১১ জুলাই একাদশ জাতীয় সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছিলেন, ২০১৮ সাল পর্যন্ত গত ১০ বছরে বিএসএফের হাতে নিহত বাংলাদেশির সংখ্যা ২৯৪জন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের বিএনপির সংসদ সদস্য এম হারুনুর রশিদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এই তথ্য জানান।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সংসদকে জানান, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ২০০৯ সালে অন্তত ৬৬ জন, ২০১০ সালে ৫৫ জন, ২০১১ ও ২০১২ সালে ২৪ জন করে মোট ৪৮ জন, ২০১৩ সালে ১৮ জন, ২০১৪ সালে ২৪ জন, ২০১৫ সালে ৩৮ জন, ২০১৬ সালে ২৫ জন, ২০১৭ সালে ১৭ জন ও ২০১৮ সালে ৩ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন।
এদিকে মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের তথ্যমতে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সীমান্তে বিএসএফের হাতে ২৮ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার রাজশাহীর চারাঘাটে এক ভারতীয় জেলেকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টায় বিএসএফ-বিজিবির গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ সময় দুই পক্ষের গোলাগুলিতে বিএসএফের এক জওয়ান নিহত হন। বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটি ভুল-বোঝাবুঝি কারণে হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে দুই বাহিনীর প্রধানদের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে, সীমান্তে শান্তি রক্ষায় দুই দেশই তৎপর। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা জানান।

নিজস্ব প্রতিনিধি




যুবলীগের কংগ্রেসে সভাপতিত্ব করবেন কে?

চলমান শুদ্ধি অভিযান শুরু হওয়ার পর ক্যাসিনোকান্ডে সুবিধাভোগী হিসেবে নাম আসে যুবলীগের প্রতাপশালী চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী। এরপর থেকে কোনঠাসা হয়ে পড়েছেন তিনি। প্রায় এক মাস ধরে যাচ্ছেন না যুবলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। যাচ্ছেন না নিজের প্রতিষ্ঠিত যুব গবেষণা কেন্দ্রেও।
এদিকে যুবলীগের ৭ম জাতীয় কংগ্রেসের দিনক্ষণ ঘোষণা করা হয়েছে। ২৩ নভেম্বর এই কংগ্রেস হবে। কংগ্রেস সামনে রেখে যুবলীগে চাঙা ভাব লক্ষ্য করা গেলেও সংগঠনটির চেয়ারম্যান আড়ালে দিন যাপন করছেন। নেতাকর্মীরা তার দেখা পাচ্ছেন না। ফোনেও তাকে না পেয়ে ক্ষুব্ধ যুবলীগ নেতাকর্মীরা।
সংগঠনের চেয়ারম্যানকে ছাড়াই হয়েছে যুবলীগের প্রেসিডিয়াম বৈঠক। ওই বৈঠকে তার অনুপস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার ভার দেয়া হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।
কংগ্রেসের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা আনতে রোববার গণভবনে যাচ্ছেন যুবলীগের জ্যেষ্ঠ নেতারা। এই বৈঠকে থাকছেন না ওমর ফারুক চৌধুরী। তাকে গণভবনে যেতে বারণ করা হয়েছে বলে যুবলীগের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। এমতাবস্থায় যুবলীগের আসন্ন কংগ্রেসে কে সভাপতিত্ব করবেন এই প্রশ্ন এখন নেতাদের মুখে মুখে।
৭১ বছর বয়সী ওমর ফারুক চৌধুরীকে বাদ দিয়ে সংগঠনের কোনো জ্যেষ্ঠ নেতাকে যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করার গুঞ্জনও শোনা যাচ্চে। সেক্ষেত্রে ওই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানই ২৩ নভেম্বরের কংগ্রেসে সভাপতিত্ব করবেন।
জানা গেছে, রোববার আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতে ওমর ফারুক চৌধুরীকে বাদ দিয়ে প্রেসিডিয়ামের সিনিয়র কোনো সদস্যকে যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করার প্রস্তাব দেবেন সংগঠনটির নেতারা।
পাশাপাশি আসন্ন জাতীয় কংগ্রেসের প্রস্তুতি কমিটি গঠনসহ সার্বিক আয়োজন, যদি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কাউকে না করা হয়, সেক্ষেত্রে কংগ্রেসে কে সভাপতিত্ব করবেন, ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ যুবলীগের সম্মেলনসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা চাইবেন তারা।
বৃহস্পতিবার বিকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউর কার্যালয়ে যুবলীগ কেন্দ্রীয় নেতাদের এক অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে এসব বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৈঠক সূত্র জানায়, জাতীয় সম্মেলনকে (কংগ্রেস) সামনে রেখে রোববার বিকাল ৫টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে (গণভবনে) যুবলীগ নেতাদের ডাকা হয়েছে। এ সাক্ষাতের বিষয়ে আলোচনা করতেই মূলত বৈঠকের আয়োজন করা হয়।
এতে উপস্থিত ছিলেন যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মো. হারুনুর রশীদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী, মো. ফারুক হোসেন, মাহবুবুর রহমান হিরন, আবদুস সাত্তার মাসুদ, মো. আতাউর রহমান, অ্যাডভোকেট বেলাল হোসাইন, ইঞ্জিনিয়ার নিখিল গুহ, অধ্যাপক এবিএম আমজাদ হোসেনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী বৃহস্পতিবার বিকালে বলেন, এবারের জাতীয় কংগ্রেসের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। তাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আমরা সার্বিক বিষয়ে তার দিকনির্দেশনা চাইব। তিনি যেভাবে দিকনির্দেশনা দেবেন সেই নির্দেশনা মেনেই পরবর্তী সব কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে কোন নেতারা যাবেন এবং কোন কোন বিষয়ে দিকনির্দেশনা চাওয়া হবে, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বৃহস্পতিবার বৈঠকে। হারুনুর রশীদের নেতৃত্বে প্রেসিডিয়াম সদস্য, যুগ্ম ও সাংগঠনিক সম্পাদকরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যাবেন- এ মর্মে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়। তবে যুগ্ম ও সাংগঠনিক সম্পাদকদের বাইরে কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যদেরও নেয়া যায় কিনা- সে ব্যাপারেও সাধারণ সম্পাদকের কাছে প্রস্তাব এসেছে। তবে এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
সূত্র আরও জানায়, যুবলীগে যাদের বিরুদ্ধে অনৈতিক কর্মকাÐে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে, শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী তাদের ছাড়াই কংগ্রেসের আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী ও সংগঠনের প্রভাবশালী প্রেসিডিয়াম সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন না। এমনকি জাতীয় কংগ্রেস আয়োজনের সব কার্যক্রম থেকেও তাদের দূরে রাখার বিষয়ে আলোচনা হয় গতকালের বৈঠকে।
রাজধানীতে মাদক-দুর্নীতি-টেন্ডারবাজির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হওয়ার পরও ভোকাল ছিলেন যুবলীগ চেয়ারম্যান। সভা-সমাবেশে জোরালো বক্তব্য দিয়েছেন। শুরুতেই ‘শুদ্ধি অভিযান’ নিয়ে নেতিবাচক বক্তব্য দেয়ায় যুবলীগ চেয়ারম্যান সমালোচনার মুখে পড়েন। অবশ্য বাস্তবতা বুঝতে পেরে দ্রæত নিজেই অবস্থান বদল করেন। অভিযানকে স্বাগত জানিয়ে ওমর ফারুক বলেন, ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় অবৈধভাবে ক্যাসিনোর পেছনে যুবলীগের অনেকে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। সংগঠনের সভাপতি হিসেবে এটি তার ব্যর্থতা বলে তিনি মনে করেন।
১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ওরফে ক্যাসিনো খালেদ গ্রেফতার হওয়ার পর ধাক্কা খান ওমর ফারুক। এর পর আরেক যুবলীগ নেতা জিকে শামীম গ্রেফতার হন। তাদের জবানবন্দি থেকে বেরিয়ে আসে থলের বিড়াল।
পরে দিন পনেরো রাজনৈতিক অঙ্গনে সবচেয়ে বেশি আলোচিত হন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন সম্রাট ও যুবলীগের দফতর সম্পাদক কাজী আনিসুর রহমান। এরা দুজনই ওমর ফারুকের আশীর্বাদপুষ্ট। তাকে রাজনৈতিক গুরু মানে এই দুজনই। ওমর ফারুক চূড়ান্ত বেকায়দায় পড়েন ক্যাসিনো সম্রাট গ্রেফতার হওয়ার পর।
যুবলীগের প্রভাবশালী নেতারা ওমর ফারুকের আশকারায় বেপরোয়া হয়ে উঠেন বলে অভিযোগ ওঠে। গ্রেফতার যুবলীগ নেতারা ক্যাসিনোর অবৈধ আয় থেকে ওমর ফারুককে নিয়মিত মাসোয়ারা দিতেন বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংক হিসাব তলব করা হয় ওমর ফারুকের। বিদেশ যেতে বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়। এর পর থেকে অনেকটাই গৃহবন্দি যুবলীগ চেয়ারম্যান। বাসা থেকে বের হচ্ছেন না। সাড়া দিচ্ছেন না ফোনে। রয়েছেন গ্রেফতার আতঙ্কেও। এই আতঙ্ক নিয়েই সময় কাটছে তার।
সর্বশেষ গত ২০ সেপ্টেম্বর উত্তরায় যুবলীগ ঢাকা মহানগর উত্তরের একটি ওয়ার্ড কমিটির সম্মেলনে দেখা গিয়েছিল ওমর ফারুক চৌধুরীকে। এর পর থেকে কেটে গেছে ২৪ দিন। এই সময়ে তার দেখা পাননি নেতাকর্মীরা। শুক্রবার যুবলীগের গুরুত্বপূর্ণ প্রেসিডিয়াম সভায়ও হাজির হননি ওমর ফারুক চৌধুরী। কাউন্সিলের আগে অনুষ্ঠিত রুদ্ধদ্বার ওই বৈঠকে তার অনুপস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। যুবলীগের ইমেজ ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য তাকে দায়ী করা হয়। তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর ভার দেয়া হয়। শোনা যাচ্ছে, যুবলীগের আসন্ন কংগ্রেসে তাকে সভাপতিত্ব করতে দেয়া হবে না।
গত বুধবার যুবলীগের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। ২৩ নভেম্বর যুবলীগের ৭ম কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হবে। কংগ্রেসের তারিখ ঘোষণার পর চাঙ্গাভাব দেখা দিয়েছে যুবলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে। পদপ্রত্যাশীরা সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। নেতাকর্মীদের অনেকে ধারণা করেছিলেন, ওমর ফারুক চৌধুরী সংগঠনের কার্যালয়ে আসবেন। তবে গত কয়েক দিন ধরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অসংখ্য নেতাকর্মী অপেক্ষা করেও তার দেখা পাননি। ফোনেও তাকে পাচ্ছেন না তারা।
ব্যাংক হিসাব তলব ও অনুমতি ছাড়া বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারির পর ওমর ফারুক চৌধুরী প্রকাশ্যে আসছেন না। ধানমÐির ৫ নম্বর সড়কে তার প্রতিষ্ঠিত যুব গবেষণাকেন্দ্রের কার্যালয়ে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। ধানমÐির ৮/এ সড়কে তার বাসায় অবস্থান করছেন।
ওমর ফারুক চৌধুরী যে বাসায় থাকেন, ‘ইস্টার্ন হেরিটেজ’ নামের সেই বাসার দারোয়ান মেহেদি বলেন, গণমাধ্যমকর্মী বা দলীয় নেতাকর্মী কারোরই ভেতরে যাওয়ার অনুমতি নেই। ওমর ফারুক চৌধুরী বাসায় আছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি তো আমি বলতে পারব না।’
এদিকে ওই বাসার আশপাশের বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগে সেখানে প্রায়ই নেতাকর্মীদের লাইন লেগে থাকত। অভিযান শুরুর পর প্রথম দিকে অনেক নেতাকর্মী যুবলীগ চেয়ারম্যানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে সেখানে গেছেন। কিন্তু কয়েক দিন হলো সেখানে কারও দেখা মিলছে না।
তামাকের বিকল্প ‘টেন্ডু পাতা’ বিক্রির মাধ্যমে তার পেশাগত জীবন শুরু হয়। বিড়ি শ্রমিক লীগ, জাতীয় পার্টির অঙ্গ সংগঠন যুব সংহতির রাজনীতি করে আসা ওমর ফারুক ২০০৯ সালে যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হন। ২০১২ সালে যুবলীগের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেয়ার পর সংগঠনের কার্যনির্বাহী কমিটি নয়, সব বিষয়ে তার সিদ্ধান্তই শেষ কথা হয়ে দাঁড়ায়। তার দাপটে সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারাও টু শব্দটি পর্যন্ত করার সাহস পাননি।
অভিযোগ রয়েছে, যুবলীগের চেয়ারম্যান হওয়ার পর কেন্দ্রীয় কমিটিতে নিজের অনুগতদের বসিয়েছেন যুবলীগ চেয়ারম্যান। ঢাকা মহানগর ও দেশব্যাপী জেলা কমিটিগুলোও হয়েছেন তার পকেটের লোক দিয়ে।
নিজেকে তরুণ ভাবাপন্ন ৭১ বছর বয়সী ওমর ফারুক চৌধুরী যুবলীগের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই একক ক্ষমতাবান হয়ে ওঠেন। শুরুতে সাবেক নেতাদের পরামর্শ ছাড়াই একটি ঢাউস কমিটি গঠন করেন তিনি। অভিযোগ আছে, মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তিনি অনেক নেতাকে কমিটিতে স্থান দিয়েছেন। পদভেদে ১০ লাখ থেকে শুরু করে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত নিয়েছেন। ফ্রিডম পার্টি ও যুবদলের অনেকে টাকার বিনিময়ে ঠাঁই পেয়েছেন যুবলীগে বলেও অনেকে অভিযোগ করেন।
যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির একাধিক নেতা জানান, বিগত সাত বছরে তারা চেয়ারম্যানের ভয়ে তটস্থ ছিলেন। মুখ বুজে সব অপকর্ম সহ্য করেছেন। সংগঠনে সব সিদ্ধান্ত তিনি এককভাবে নিয়েছেন। আমাদের শুধু সম্মতি দিতে হয়েছে। তার সিদ্ধান্তের বিপক্ষে মত দিলেই তাৎক্ষণিক বহিষ্কার, অফিসে আসতে বারণ পর্যন্ত করা হয়েছে। তারা বলেন, তার সব অপকর্ম জায়েজ করার মেশিন ছিল যুব জাগরণ প্রকাশনা। এখান থেকে নানা বই ও প্রকাশনা বের করে সবার কাছে ভালো সাজার চেষ্টা করতেন। পুরো সাত বছরে যুবলীগ বলতে আমরা শুধু তাকেই বুঝতাম।
প্রসঙ্গত ১৪ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির এক সভায় চাঁদা দাবির অভিযোগে ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও গোলাম রাব্বানীকে অপসারণের নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি যুবলীগ নেতাদের বিষয়েও চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, যুবলীগের এক নেতা অস্ত্র উঁচিয়ে চলে। আরেকজন প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি করে বেড়ায়।
এর পর গণমাধ্যমে যুবলীগ নেতাদের সংশ্লিষ্টতায় ঢাকার ৬০টি জায়গায় ক্যাসিনো পরিচালনার খবর প্রকাশ হয়। ১৮ নভেম্বর ফকিরাপুলের ইয়াংমেনস, ওয়ান্ডারার্স এবং গুলিস্তানে মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া সংসদে অভিযান চালিয়ে ক্যাসিনোর সরঞ্জাম, বিপুল পরিমাণ মদ ও ৪০ লাখের বেশি টাকা উদ্ধার করে র‌্যাব। ক্যাসিনো পরিচালনার অভিযোগে ওই দিনই যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করা হয়, যিনি ইয়াংমেনস ক্লাবের সভাপতি ছিলেন।
পাশের ওয়ান্ডারার্স ক্লাব থেকেও জুয়ার সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। এ ক্লাব পরিচালনার নেতৃত্বে ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাওসার। এর পর ধানমÐির কলাবাগান ক্রীড়াচক্রে অভিযান চালিয়েও ক্যাসিনো চালানোর প্রমাণ পায় র‌্যাব। অস্ত্র-গুলি ও ইয়াবাসহ গ্রেফতার করা হয় ক্লাবের সভাপতি কৃষক লীগের সহসভাপতি শফিকুল আলম ফিরোজকে।
এর মধ্যে যুবলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে ঠিকাদারি করা গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জিকে শামীমকে গ্রেফতার করা হয়। পরে গ্রেফতার করা হয় মোহামেডান ক্লাবের ডিরেক্টর ইনচার্জ ও বিসিবির পরিচালক লোকমান ভূঁইয়াকে।
দুবাই থেকে গ্রেফতার করা হয় শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানকে। পরে গ্রেফতার করা হয়েছে ক্যাসিনো সম্রাট যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চলমান অভিযানকে ‘শুদ্ধি অভিযান’ নাম দিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সন্ত্রাস, চাঁদবাজি, টেন্ডারবাজিসহ বিভিন্ন অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ক্যাসিনো ব্যবসায়ীদের ভাসানচরে পাঠানো হবে।
ক্যাসিনো ব্যবসায় যুবলীগ নেতাদের মদদ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর বিরুদ্ধে। এরই মধ্যে তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। তলব করা হয়েছে ব্যাংক হিসাব।

নিজস্ব প্রতিনিধি




আফগানিস্তানে মসজিদে হামলা, নিহত অন্তত ৬২

আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ নানগারহারে জুমার নামাজ চলাকালীন মসজিদে দুটি বিস্ফোরণের ঘটনায় অন্তত ৬২ মুসল্লি নিহত এবং আরও অন্তত ৬০ জন আহত হয়েছেন। প্রাদেশিক গভর্নরের মুখপাত্র আতাউল্লাহ খোগানি এ হামলার খবর নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম টোলো নিউজের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, নানগারহার প্রদেশের হাসকা মায়েনা জেলার জাও দারা নামক এলকায় মসজিদটি অবস্থিত। গভর্নরের মুখপাত্র জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় দুপুর দেড়টার দিকে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

কর্মকর্তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, মসজিদটির ভেতরে বিস্ফোরক পুতে এবং লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। যখন মুসল্লিরা সবাই নামাজ আদায় করছিলেন তখন সেগুলোর বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। যারা আহত হয়েছেন তাদের অনেকের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।

নাঙ্গারহার প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য সোহরাব কাদেরি জানিয়েছেন, হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। বিস্ফোরণের ধ্বংসস্তূপ থেকে মরদেহ এখনও বের করছে উদ্ধারকর্মী ও স্থানীয়রা। গভর্নরের মুখপাত্র আতাউল্লাহ জানান, বিস্ফোরণে মসজিদের ছাদ ধসে পড়েছে।

দেশটিতে নিয়মিত হামলা চালানো আফগান তালেবান মসজিদে হামলার দায় স্বীকার করেনি। এছাড়া কোনও জঙ্গি গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে এই হামলার দায় স্বীকার করা হয়নি। প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির মুখপাত্র সাদিক সিদ্দিকী টুইট বার্তায় এ হামলায় শোক প্রকাশ করে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।




হরিণাকুন্ডুতে খেলার মাঠে স্কুল ভবন নির্মাণের প্রতিবাদে মানববন্ধন

ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডুতে খেলার মাঠে ভবন নির্মাণের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী ।
শুক্রবার ছুটিরদিনে উপজেলার ৪নং দৌলতপুর ইউনিয়নের সোনাতনপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালেয়ের পুরাতন ভবনটি পরিত্যাক্ত হওয়ায় নতুন ভবন নির্মাণের জন্য কতৃপক্ষ প্রতিষ্ঠানের সামনে খেলার মাঠের মাঝে নতুন ভবন নির্মাণের প্রতিবাদে এ মানববন্ধন করেন।
মানববন্ধনে ৪নং দৌলতপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জনাব আবুবক্কর সিদ্দিক,সাংবাদিক সোহরব হোসেন, শান্ত, শফিউর রহমান, মতিয়ার, মোতালেব সহ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অভিভাবকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এসময় প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী বিদ্যালয়ের খেলারমাঠে নতুন ভবন নির্মাণের প্রতিবাদে জোরালো শ্লোগান তোলেন। তারা বলেন, পুরাতন ভবনের জায়গায় নতুন ভবন নির্মান করলে যেমন বিদ্যালয়ের সৌন্দর্য বাড়বে তেমনি খেলারমাঠও থাকবে। এলাকাবাসীর দাবি সোনাতনপুর খেলার মাঠ চাই।

হরিণাকুন্ডু প্রতিনিধি:




আলমডাঙ্গার চিৎলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত

আলমডাঙ্গার চিৎলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার বিকাল ৪টার সময় রুইতনপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে এ সম্মেলন আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা চুয়াডাঙ্গা ১ আসনের সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার সেলুন।
এ সময় সম্মেলনের প্রধান অতিথি বলেন দির্ঘ ১৮ বছর আগে এই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের কমিটি গঠিত হলেও পরবর্তিতে আর কমিটি গঠন হয়নি, ওই সময় থেকে যারা আওয়ামী লীগের নেতৃতিতে দিয়ে আসছিল তারা যুবলীগের নামধারি কিছু নেতার পকেটে থেকে রাজনীতি করতো, যুবলীগের ঐই সকল ষড়যন্ত্র কারিদের চিহ্নিত করে, ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব বজায় রাখতে বলে সকল ধরনের ষড়যন্ত্র পতিহত করে দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যহত রাখতে দলকে আরো শক্তিশালী করতে হবে।
তৃণমুল পর্যায় থেকে দলকে সুসংগঠিত করে জননেত্রি শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতেই সম্মেলন করা হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশকে এগিয়ে নিয়েছে। তিনি ক্ষমতায় এসে দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসাবে রুপান্তর করেছে, পৃথিবীর উন্নয়নশীল দেশগুলো এখন বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসাবে দেখছে। দেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত দেশ হিসাবে গড়ে তুলেছে।
বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে মাননিয় প্রধানমন্ত্রি রাতদিন পরিশ্রম করে যাচ্ছে। পদ্মসেতু, মেট্রো রেল ফ্লাইওভারের মত বড় প্রকল্প হাতে নিয়েছে। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয় সহ রাস্তাঘাট নির্মান করে চলেছে।
তাই আওয়ামী লীগের প্রতি আস্তা ও বিশ্বাস রেখে দলকে সুসংগঠিত করে দেশের উন্নয়ন অব্যহত রাখতে হবে। সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিতকায় এক শ্রেণীর নামধারি আওয়ামী লীগনেতা ও কিছু আওয়ামী লীগের সহযোগি সংগঠন দলকে দ্বিখন্ডিত করতে উঠে পড়ে লেগেছে, দেশের বা জেলার উন্নয়নের ধারা অব্যহত রাখতে এ সব ঘাপটি মেরে থাকা নামধারি নেতাদের চিহ্নিত করে দাঁতভাঙ্গা জবাব দিতে হবে।
এসময় তিনি বিএনপিনেতা খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, একুশে আগষ্ঠ গ্রেনেড হামলা চালিয়ে মাননিয় প্রধানমন্ত্রি শেখ হাসিনা সহ কেন্দ্রিয় নেতাদের হত্যা করতে চেয়েছে ছিল, আল্লাহ অশেষ মেহেবানিতে তিনি অলৈকিক ভাবে বেঁচে গেলেও আমাদের কেন্দ্রিয় অনেক প্রাণপ্রিয়নেতা মারাযান। বিএনপির আমলে মানুষ রাত্রে ঘুমাতে পারতোনা, খুন, গুম, চাঁদাবাজি, টেন্টারবাজি সহ সরকারি টাকা লুট করে দেশকে এক অরাজগতা সৃষ্টি করেছিল। ঘরেঘরে বিদ্যুৎ ছিলনা, যা ছিল তাও বিদ্যুৎ যাওয়ার সময় ছিল কখন আসবে কেউ জানতোনা, কৃষককে লাইনে দাঁড়িয়ে সার, তেল নিতে হত। এখন ঘরেঘরে বিদ্যুৎ পৌছে গেছে, কাউকে বিদ্যুৎতের জন্য অপেক্ষা করতে হয়না, কৃষককে লাইনে দাঁড়াতে হয়ন সার তেলের জন্য।
ছেলুন জোয়ার্দ্দার এমপি আরো বলেন বঙ্গবন্ধ দেশটাকে সোনার বাংলায় রুপান্তিত করতে চেয়েছিল। আল্লাহ সেই সপ্ন এই বাংলার মাটিতে বাস্তবায়ন করবেন বলে হয়তো তারই সুযোগ্য কন্য প্রধানমন্ত্রি শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে আজ বাংলাদেশকে সার্বিক উন্নয়ন করে সোনার বাংলায় রুপান্তরিত হতে চলেছে।
সম্মেলনে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজি লিহাজ উদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের উদ্ভোধনি বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পৌর মেয়র হাসান কাদির গনু। বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি খুস্তার জামিল, যুগ্ন সাধারন সম্পাদক সাবেক পৌর মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন, যুগ্ন সাধারন সম্পাদক সামসুজ্জোহা, সাংঠনিক সম্পাদক মুন্সি আলমগীর হান্নান, লিটু বিশ্বাস, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য দেলোয়ার হোসেন, এ্যাড বেলাল হোসেন, জেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি আফজালুল হক বিশ্বাস, সাবেক জেলা যুবলীগের আহবায়ক আরেফিন আলম রন্জু, আব্দুল কাদের।
বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ইয়াকুব আলী মাষ্ঠার, মহাসিন আলী, আওয়ামী লীগনেতা বীরমুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান নান্টু, তোহিদুল ইসলাম ফকা, দেলোয়ার হোসেন দিপু, মহিবুল হক মন্টু, সাবেক জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি রুবাইত বিন সুস্তির, কলেজ ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক তামিম হাসান তারেক । অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগনেতা ইউনুস আলী মাষ্ঠার।
সম্মেলনের আলোচনা শেষে অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসান কাদির গনুর সভাপতিত্বে আলমডাঙ্গার চিৎলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের শাহ্ আব্দুল বাতেনকে সভাপতি, মোজাম্মেল হককে সাধারন সম্পাদক ও খাইরুল ইসলামকে যুগ্ন সাধারন সম্পাদক করে কমিটি গঠন করা হয়।

আলমডাঙ্গা প্রতিনিধি




জাগো মেহেরপুর এর ৭ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত

জাগো মেহেরপুর সংগঠনের ৭ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করা হয়েছে। জাগো মেহেরপুর একটি সামাজিক সংগঠন। ২০১৩ সালের আজকের এই দিনে একটি মানববন্ধনের মাধ্যমে সংগঠনটির যাত্রা শুরু হয়েছিল।

গতকাল শুক্রবার বিকেলে মেহেরপুর শিশু পরিবারে জাগো মেহেরপুর এর সপ্তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করা হয়। অনুষ্ঠানটি দুটি ভাগে ভাগ করে প্রথম ভাগে শিশু পরিবারের শিশুদের বিভিন্ন প্রতিযোগিতা ও বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতাণ ও দ্বিতীয় ভাগে জাগো মেহেরপুরের সকল সদস্য ও শিশু পরিবারের বাচ্চাদের রক্তের গুরুপ নির্ণয় করেন।

অনুষ্ঠানে জাগো মেহেরপুর এর সংগঠক নাসিম রানা বাঁধনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন জাগো মেহেরপুরের মুখপাত্র শোয়েব রহমান, দৈনিক সমকালের জেলা প্রতিনিধি ফারুক হোসেন, জাগো মেহেরপুর এর উপদেষ্টা মুস্তাকিম, শিশু পরিবারের তত্ত¡াবধায়ক সোহেল মাহমুদ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাগো মেহেরপুরে সভানেত্রী সুখি ইসলাম, সংগঠক আলিম, রিন্টু রহমান, হিজল করিম, হৃদয় খান, দুলাল মাহমুদ, বাবলি, রুদ্র প্রমুখ সহো জাগো মেহেরপুরের সংগঠক বৃন্দ। তারা বিভিন্ন প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণীর পরে কেক কেটে জাগো মেহেরপুর এর সপ্তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানের সমাপ্তি করে।

নিজস্ব প্রতিনিধি




মেহেরপুরের সুবিদপুরে বঙ্গবন্ধু হা-ডু-ডু টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত

মেহেরপুর সদর উপজেলার সুবিদপুর গ্রামবাসীর উদ্যোগে সুবিদপুর উওরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু হা-ডু-ডু টুর্নামেন্টে অনুষ্ঠিত হয়।

টুর্নামেন্টে আশরাফপুর দল চ্যাম্পিয়ন এবং রাজনগর দল রানার্সআপ হয়। টুর্নামেন্ট শেষে বিজয়ী দলের মাঝে পুরষ্কার বিতরণ করা হয়। জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহŸায়ক সরফরাজ হোসেন মৃদুলের সভাপতিত্বে পুরষ্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামি লীগের যুগ্ম সম্পাদক এ্যাড.ইব্ররাহিম শাহীন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ইদ্রিস আলী মাষ্টার, সাধারণ সম্পাদক মো: বাবুল আক্তার।

নিজস্ব প্রতিনিধি




মুজিবনগরে এসএস কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টারে সনদ বিতরণ

মুজিবনগরে এসএস কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টারে ৬ মাস ব্যাপী প্রথম কোর্স শেষে শিক্ষার্থীদের মাঝে সনদপত্র বিতরন করা হয়েছে। শুক্রবার সকাল দশটার দিকে বাগোয়ান পাঠানপাড়ায় চৌরাস্তার মোড়ে অবস্থিত ট্রেনিং সেন্টারে সনদ বিতরন অনুষ্ঠানে মোট ২৭ জন শিক্ষার্থীর মাঝে আনুষ্ঠানিক ভাবে এ সকল সনদ বিতরন করা হয়।

এসএস কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টারের পরিচালক ছাবিরিন রহমানের সভাপতিত্বে অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন বাগোয়ান মাধমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোবারক হোসেন, সহকারী শিক্ষক কামরুজ্জামান রুবেল, আনন্দবাস মিয়া মিনসুর এমএম একাডেমির সহকারি শিক্ষক শফিকুল আলম, বাগোয়ান ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আজিজুর রহমান মোংলা, আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল ইসলাম ঝুটিকা প্রমুখ। অনুষ্ঠানের সার্বিক সনচালনায় ছিলেন তানজিনুল হক শান্ত।

মুজিবনগর অফিস




সাধুর সঙ্গ সাঙ্গ করে ছেউড়িয়া ছাড়ছে ভক্তরা

বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ্ এর তিরোধান স্মরনোৎসবের শেষদিনে সাধুর সঙ্গ সাঙ্গ করে আপন ঠিকানায় ফিরেছেন দুর দুরান্ত থেকে ছেউড়িয়ার তীর্থধামে আসা বাউল, সাধু-ভক্ত, অনুসারীরা।
শুক্রবার সকাল থেকেই ৩দিনের সাধুসঙ্গের ইতি টানতে সঙ্গে আনা গাট্টি, বোচকা গুছিয়ে শেষ বারের মতো ভক্তদের সাথে ভক্তি-কুশল বিনিময়ের মধ্যদিয়ে অশ্রুভরা চোখে বিদায় নিয়ে বাউলরা আখড়াবাড়ি ছেড়ে রওয়ানা হয়েছেন নিজ নিজ আশ্রমের উদ্দেশ্যে। তারা বলছেন এই মহামিলনের শিক্ষা মানবপ্রেম ছড়িয়ে দেবেন দেশ থেকে দেশান্তরে।
আখড়া বাড়িতে অনুষ্ঠিত তিরোধান দিবসের ৩দিনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে উৎসবকে কেন্দ্র করে জমজমাট আখড়াবাড়ি এখন অনেকটাই ফাকা। তাদের গুরু বানী ও সবকিছুর কিছুর মুলে পরম মমতায় শ্রদ্ধাভরে গুরুকে বারবার প্রনাম ও নানা রকম ভক্তি জানিয়ে বিদায় নেন শিষ্যরা। তাদের আবার দেখা হবে লালনের দোল অনুষ্ঠানে। বাউল ফকির আর সাধুদের ছাড়াই নাম মাত্র অনুষ্ঠানিতায় শুক্রবারও লালন মঞ্চে আলোচনা সভা ও লালন সংগীত পরিবেশিত হয় রাতভর।
বিদায় বেলায় রাজশাহী থেকে আসা ফকির আমিরুল শাহ অশ্রুসিক্ত নয়নে বলেন, সাধুদের সব কিছুর মুলে গুরু ভক্তি। গুরুকে ভজেই সর্বদা তারা পরমত্মার সন্ধান করে ফেরে। সেই গুরুকে বারবার প্রনাম ও ভক্তি জানিয়ে শির্ষ্যরা বিদায় নিলেও আবারও তারা ঘুরে ঘুরে আসেন গুরু’র এই তীর্থধামে। তাদের যে গুরুর চরনস্পর্শ করা বড়ই দরকার। নইলে সে তো পাবে না আর দ্বিন-দরিয়ার পাড়।
ঢাকা সাভার থেকে আসা এনাম শাহ বলেন, সমাজের অসঙ্গতি, সা¤প্রদায়িকতা, মানুষে মানুষে অযথা হানাহানি দূর করে চিরন্তন মানবধর্ম প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন লালন। সাঁইজি তার পদাবলী ও বাণীতে মানুষকে প্রকৃত শুদ্ধ মানুষ হওয়ার আহবান জানিয়েছেন। তাই এই উৎসব কেবল উৎসব নয় এখান থেকে লালনের এমন শিক্ষা ও মানবপ্রেম ছড়িয়ে দেবেন দেশব্যাপী।
শুক্রবার দুপুরে অখড়াবাড়ী ঘুরে দেখা যায়, ১৬অক্টোবর থেকে ১৮অক্টোবর পর্যন্ত ৩দিনের এই আয়োজনে এবার উৎসুক দর্শনাথীদের ভীড় ছিলো চোখে পড়ার মতো। তবে এসময় খেলাফতধারী সাধুদের চোখে পড়েনি খুব একটা। ঘুরে ফিরে স্থানীয় বাউলদেরই চোখে পড়ে। খেলাফতধারী সাধু না থাকলেও থেমে নেই অনুষ্ঠান। দর্শনার্থীদের সমাগম থাকায় মেলার স্টলগুলোতে সারাক্ষনই ভীড় রয়েছে। নাগর দোলা ঘুরছে তার আপন গতিতে। মেলায় আসা দোকানীরা জানালেন বিকিকিনিও বেশ ভালো।
সংস্কৃতি মন্ত্রনালয় ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় লালন একাডেমীর সভাপতি জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেনের সভাপতিত্বে সন্ধা ৭টায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি বিভাগীয় কমিশনার লোকমান হোসেন মিয়া এবং প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. হারুন উর রশিদ আসকারী। আলোচনা সভা শেষে রাতভর চলে লালন একাডেমীর শিল্পীবৃন্দ ও দেশের খ্যাতনামা শিল্পীদের পরিবেশনায় লালন সংগীতানুষ্ঠান।

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি




গাংনীতে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ষোলটাকা গ্রামে পানিতে ডুবে মহাম্মদ আলী (৫) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সে ওই গ্রামের মোবারক হোসেনের ছেলে।

শুক্রবার দুপুরের দিকে বাড়ির পাশে একটি পুকুরে ডুবে মহাম্মদ আলীর মৃত্যু হয়।
পারিবারিক সূত্র জানায়, মহাম্মদ আলী বাড়ির নিকট একটি পুকুরের পাশে খেলা করতে গিয়ে অসাবধানবশত সে পুকুরের পানিতে পড়ে ডুবে মারা গেছে বলে মনে হচ্ছে।

গাংনী প্রতিনিধি