হাঁপানিয়ায় দান উত্তোলনের নামে স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নিলো তিন প্রতারক হুজুর

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার হাঁপানিয়া গ্রামে মাদ্রাসার দান উত্তোলনের নামে এক গৃহিণীর কাছ থেকে স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নিয়েছে হুজুর নাম ধারী তিন প্রতারক। এর আগে ঐ গ্রামে অর্ধশত বাড়ি থেকে দানের নামে হাজার হাজার টাকা উত্তোলন করে প্রতারক চক্রটি। গত বুধবার দুপুরে এই ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে হাঁপানিয়া গ্রামের কৃষক বজলুর রহমানের বাড়িতে প্রতারক ৩ হুজুর প্রবেশ করে এ সময় বজলুর রহমান বাড়িতে না থাকার সুযোগে তার স্ত্রী ফাহিমা খাতুন কে সংসারে উন্নতির লোভ দেখিয়ে স্বর্ণালঙ্কার, এক মুঠো চাল ও এক গøাস পানি আনতে বলে। তাদের কথা মতো ফাহিমা খাতুন এক জোড়া স্বর্ণের দুল, একটি নাকফুল, চাল ও পানি নিয়ে আসে।
এ সময় প্রতারকরা ফাহিমা খাতুনকে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ে আসতে বলে এবং নামাজ পড়তে পড়তে তারা ঐ জিনিস গুলোতে দোয়া করে ফুঁ দিয়ে দিবেন , যাতে সংসারে উন্নতি হয়। তাদের প্রলোভনে পড়ে সরলমনা ফাহিমা খাতুন নামাজ পড়ার জন্য ঘরে যায়। এ সময় প্রতারক চক্রটি স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে পালিয়ে যায়।

নামাজ শেষে ফাহিমা খাতুন এসে দেখেন স্বার্ণালঙ্কার নেই, হুজুরও নেই। এর আগে প্রতারক চক্রটি গাংনীর বাওট মাদ্রাসার উন্নয়নের জন্য দান উত্তোলনের নামে গ্রামের অর্ধশত বাড়ি থেকে কয়েক হাজার টাকা উত্তোলন করে।

নিজস্ব প্রতিনিধি




গাংনীতে ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু

মেহেরপুরের গাংনীতে শিপন হোসেন (২৭) নামের এক ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে কুষ্টিয়ায় তার মৃত্যু হয়। সে গাংনী উপজেলার কাজিপুর গ্রামের মাসুদ হোসেনের ছেলে। জানা গেছে, বুধবার গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয় শিপন। পুরাতন ডেঙ্গু সন্দেহে চিকিৎসক তার রক্তের আইজিজি পরীক্ষা করালে পজেটিভ পান। ভর্তি থাকা অবস্থায় তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে বৃহস্পতিবার কুষ্টিয়ায় রেফার করেন। ডেঙ্গু রোগীদের তদারকির দায়িত্বে থাকা গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার সজীব উদ্দীন স্বাধীন তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এটা অবশ্যই পুরাতন ডেঙ্গু রোগী হবে। কোন এক সময় তার ডেঙ্গু হয়েছিল কিন্তু তখন চিকিৎসা হয়নি বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। শিপনের পরিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গাংনী থেকে নিয়ে যাওয়ার পর কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন (২নং ওয়ার্ডে) ভর্তি করা হয়। পেটে প্রচ- জালা যন্ত্রণার জন্য এখানে ভর্তি করেন চিকিৎসকরা। জ্বর ছিল না তাই ওখানে ডাক্তার তাকে দেখার পরে ওই ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। মৃত্যুর আগে তার ব্লাড প্রেসার অস্বাভিকভাবে নেমে যায়।




গাংনীর জোড়পুকুর থেকে চোখতোলা পর্যন্ত দুপাশের তাল গাছ তছরুপ

বজ্রপাত প্রতিরোধক হিসেবে মেহেরপুর কুষ্টিয়া সড়কের দুপাশে কয়েক বছর আগে লাগানো হয় তালের আটি। যা থেকে চারা তালগাছ হয়েছে। রক্ষনাবেক্ষন না থাকায় হর হামেসাই যে কেউ কেটে নিয়ে যাচ্ছে তাল গাছের পাতা।

এর ফলে গাছের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যহত হওয়ার পাশাপাশি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে অনেক গাছ।গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে গাংনী উপজেলার জোড়পকুরিয়া গ্রামের ইয়ার আলীর ছেলে এখলাছ সড়কের দুপাশের তালগাছের পাতা কেটে নেই। যার ফলে ছোট গাছ থেকে পাতা কেটে ফেলায় নষ্ট হয়ে যেতে পারে গাছ গুলো।

এর ফলে যে উদ্দেশ্যে তালের আটি রোপন করা হয়েছিল তা ভেস্তে যেতে পারে।

জোড়পুকুরিয়া গ্রামের ইউপি সদস্য সাহাবুদ্দিন জানান, এর আগেও সে ছোট গাছে পাতা কেটেছে তাকে নিষেধ করা হয়েছিল। কিন্তুু আজ আবার গাছের পাতা কেটেছে।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, জোড়পুকুর থেকে চোখদোলা পর্যন্ত আনেক আগে থেকেই সুযোগ বুঝে তালের পাতা কাটে কেউ নিষেধ বা প্রতিবাদ না করায় দুপাশের সব গাছের পাতা কেটে ফেলেছে।

এব্যপারে গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিলার রহমান বলেন, জোড়পুকুর এলাকার সড়কের পাশে তালগাছের পাতা কাটার সংবাদ পেয়ে লোক পাঠিয়েছি। তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তাছাড়া প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা ও বজ্রপাত প্রতিরোধক তাল গাছ কেটে আমরা নিজেরাই নিজেদের ক্ষতি করছি। তালগাছ রক্ষায় উপজেলা প্রশাসন সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহন করবে।




গাংনীতে হোমিও চিকিৎসকের ১ মাসের কারাদন্ড

মেহেরপুরের গাংনীর সাহারবাটির চারচারা বাজারে আহাম্মেদ আলী নামের এক হোমিও চিকিৎসককে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিলারা রহমান। দন্ডপ্রাপ্ত আহাম্মেদ আলী সাহারবাটি গ্রামের মৃত ইয়াহিয়ার ছেলে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ভ্রাম্যান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিলারা রহমান সাহাবাটি বাজারের সাব্বির হোমিও হলের সত্বাধিকারি আহাম্মেদ আলীর দোকানে আদালত বসিয়ে এ দন্ডাদেশ প্রদান করেন।

আদালত সুত্রে জানাগেছে, সাহাবারবাটি চারচারা বাজারের মৃত ইয়াহিয়ার ছেলে আহাম্মদ আলী দির্ঘদিন যাবৎ প্রাতিষ্ঠানিক কোনো সনদপত্র না থাকায় এবং উত্তেজক ওষুধ বিক্রি ও মেয়াদউত্তীর্ণ ওষুধ রাখার অপরাধে ভোক্তা অধিকার আইন ২০০৯ এর ৫১ ধারায় সাব্বির হোমিও হলের সত্বাধিকারি আহাম্মদ আলীকে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। মাস খানেক আগে আহাম্মদ আলীকে চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা করতে নিষেধ করা হলেও তিনি প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দেদারছে বিক্রি করছিল উত্তেজক ট্যাবলেটসহ নিষিদ্ধ নানা প্রকার ওষুধ।

-গাংনী প্রতিনিধি




মেহেরপুর থেকে মিজানুজ্জামানকে অপসারনের দাবিতে আবারও মানবন্ধন

দুর্নীতিবাজ শিক্ষক মিজানুজ্জামন কে মেহেরপুর থেকে অপসারনের দাডিবতে আবারো মানব বন্ধন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকালে জেলা প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানবন্ধন করা হয়। মানবন্ধনে নেতৃত্ব দেয় মেহেরপুর সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জুলকার নাইম বাইজিদ। সদর থানা ছাত্রলীগ সহ মটর শ্রমীক ইউনিয়ন, সেচ্ছাসেবক লীগ, ও সাধারণ জনগন এতে অংশ গ্রহন করে। এ সময় শিক্ষক মিজানুজ্জামানকে অপসারণের দাবিতে বক্তব্য দেন জেলা ছাত্রললীগের সহ সভাপতি দুলাল মাহমুদ, সদর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি জুলকার নাইম বাইজিদ, মেহেরপুর মটর শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যকরি সভাপতি সোহেল আহাম্মেদ, সদর উপজেলা সেচ্ছা সেবকলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান।

উল্লেখ্য, শিক্ষক মিজানুজ্জামানকে দুর্নিতীর দায়ে ঝিনাইদহ থেকে মেহেরপুর সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়। তাকে মেহেরপুর থেকে অপসারনের দাবিতে বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দফা মানব বন্ধন করা হয়। এর আগে বুধবার শ্রমিক ইউনিয়নের উদ্যোগে প্রথমদফা মানববন্ধন করা হয়।

নিজস্ব প্রতিনিধি



মুজিবনগর সোনাপুরে তথ্য সেবা কেন্দ্রের উঠান বৈঠক

মুজিবনগরে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যেমে মহিলাদের ক্ষমতায়ন প্রকল্প (২য় পর্যায়)বাস্তবায়নের লক্ষে মুজিবনগরে তথ্য সেবা কেন্দ্রের আয়োজনে উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে মুজিবনগর উপজেলার বাগোয়ান ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামে পশ্চিমপাড়ায় এ উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা তথ্য সেবা কর্মকর্তা তানিয়া খন্দকার।

প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে তথ্য প্রযুক্তির বিভিন্ন সুবিধার বিষয় ও বাল্য বিয়ের কুফল সম্পর্কে তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন মেহেরপুর জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান শামিম আরা হীরা।

এ সময় তিনি বলেন বলেন, “শেখ হাসিনার বার্তা, নারী পুরুষ সমতা”এই প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে তথ্য আপারা নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আপনারা তথ্য কেন্দ্র থেকে ৬ টি সুবিধা বিনামূল্যে পাবেন। শিক্ষা,স্বাস্থ্য,আইন,ব্যবসা,জেন্ডার ও কৃষি।

অনুষ্ঠানের সভাপতি তানিয়া খন্দকার তার বক্তব্যে বলেন, আপনাদের যেকোন সমস্যায় “তথ্য আপা”এই ডিজিটাল প্লাটফর্মটি থেকে সেবা পাবেন এবং ৩৩৩ এই নাম্বারে যোগাযোগ করে আপনাদের সমস্যা গুলো জানাতে পারবেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথী ছিলেন উপজেলা সমাজসেবা অফিসার আব্দুর রব। এ সময় ইউপি সদস্য সোহরাব হোসেন, ৩ নং ওয়ার্ডের সভাপতি জাহাঙ্গীর গাজী, উপজেলা তথ্য সেবা সহকারী আর্জিনা খাতুন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

-মুজিবনগর অফিস




সাত বছরেও বিএনপির আন্দোলন মাঠে গড়াইনি: হানিফ

আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেছেন, ২০১৩ সাল থেকে খালেদা জিয়া কতবার আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন দেশবাসী তা দেখেছে। দেখতে দেখতে ৭ বছর পার হলেও বিএনপির আন্দোলন মাঠে গড়াইনি। বিএনপির নেতাদের কথা জনগণ এখন আর আমলেও নেয় না। কারণ জনগণ জানে বিএনপির কথা ছাড়া কিছু করার নেই।
তিনি বলেন, আদালতের মাধ্যমে দুর্নীতিবাজ দল হিসেবে বিএনপি এখন প্রতিষ্ঠিত। যখন কোনো ব্যক্তি বা দল ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে তখন তাদের মুখের আস্ফালনই শান্তনা খোঁজার মাধ্যম।
বুধবার বেলা ১১টায় কুষ্টিয়া সার্কিট হাউসের নতুন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হানিফ এ সব কথা বলেন।
তিনি বলেন, কাজের প্রতি দায়িত্বশীল হলেই সফলতা আসবে। আমাদের প্রত্যেকের পরিশ্রম ও আন্তরিকতায় সফলতার সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে জেলার উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কাজ। এ সব কাজ বাস্তবায়নে আপনার সমস্যা যদি আপনি সৃষ্টি করেন তা কোনোভাবেই মেনে নেয়া হবে না।
হানিফ বলেন, নিজের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে হবে। উন্নয়নমূলক কাজের প্রতি দায়িত্বশীল হলে সফলতা আসবেই। সঠিকভাবে তদারকী দায়িত্ব পালন করতে না পারলে সরে দাঁড়াতে হবে। কাজের প্রতি দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিবেন না।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া-১ আসনের সংসদ সদস্য আ. ক. ম. সরওয়ার জাহান বাদশা, কুষ্টিয়া-৪ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম আলতাফ জর্জ, জেলা প্রসাশক আসলাম হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সদর উদ্দীন খান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী রবিউল ইসলাম প্রমুখ।

নিজস্ব প্রতিনিধি




সোহরাওয়ার্দীতে সমাবেশ ডেকেছে ঐক্যফ্রন্ট

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আগামী ২২ অক্টোবর জনসমাবেশের ডাক দিয়েছে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।

বুধবার বিকালে ড. কামাল হোসেনের মতিঝিলের চেম্বারে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির জরুরি বৈঠক থেকে এ ঘোষণা দেয়া হয়। বৈঠক সূত্র জানায়, দেশের সবশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও করণীয় নিয়ে বুধবার জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন।

বৈঠকে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে আগামী ১৮ অক্টোবর রাজধানীতে নাগরিক সমাবেশ করার বিষয়েও আলোচনা হয়। এর আগে গত ১৩ অক্টোবর আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত ঐক্যফ্রন্টের নাগরিক শোকসমাবেশ থেকে ১৮ অক্টোবর নাগরিক শোকসভার কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

নিজস্ব প্রতিনিধি:




ক্ষুধা ও অপুষ্টির নিরিখে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও নেপালেরও পেছনে ভারত

বৈশ্বিক ক্ষুধা ও অপুষ্টির সূচকে ভারতকে আরও পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ। সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ৮৮তম। এই সূচকে শুধু বাংলাদেশ নয় নেপাল ও পাকিস্তানেরও পেছনে আছে ভারত।
মানবিক সহায়তা নিয়ে কাজ করে এমন বৈশ্বিক দুটো সংস্থার তৈরি করা ১১৭টি দেশের তালিকা থেকে এ তথ্য জানা যাচ্ছে। ২০১৮ সালের সূচকেও ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে ছিল। তবে গত বছরের চেয়ে দুই ধাপ নিচে নেমে গেছে বাংলাদেশ। গত বছরে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৮৬ তম। ২০১৭ সালে ১০০ এবং ২০১৮ সালে ভারতের অবস্থান ১০৩।
খাদ্যনিরাপত্তাবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা আয়ারল্যান্ড ভিত্তিক কনসার্ন ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ও জার্মানিভিত্তিক ‘ওয়েলথ হাঙ্গার লাইফ’ যৌথভাবে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে। প্রতিবেদনে ক্ষুধার সংজ্ঞা নির্ধারণে চারটি সূচককে আমলে নেওয়া হয়েছে। অপুষ্টি, খর্বাকৃতি শিশুর সংখ্যা, কৃশকায় বা শীর্ণকায় শিশু ও শিশুমৃত্যুর হার।
‘গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স’ (জিএইচআই) নামের এই বার্ষিক প্রতিবেদন বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার এ বছরের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। জিএইচআই বা বিশ্ব ক্ষুধা সূচক অনুসারে পাকিস্তান ৯৪, বাংলাদেশ ৮৮ ও নেপাল ৭৩ নম্বর অবস্থানে আছে।
বিশ্ব ক্ষুধা সূচক অনুসারে যে ১০০ পয়েন্টের এক ‘তীব্রতা স্কেল’ রয়েছে, যেখানে শূন্য হলো সেরা স্কোর। শূন্য অর্থে, সে দেশে কোনো মানুষ অনাহারে নেই। এই তালিকা থেকে জানা যাচ্ছে, ভারতের স্কোর ৩০ দশমিক ৩। জানানো হয়েছে, ভারতে এই অনাহারের সমস্যা বেশ তীব্র আকার ধারণ করেছে। ২০১৪ সালে ভারত তালিকায় ছিল ৫৫ নম্বরে। এবার নেমে ১০২ নম্বরে এসেছে দেশটি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১১৭টি দেশের ওপর করা গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্সে বলা হয়েছে, ভারত বর্তমানে অবস্থান করছে ১০২ নম্বরে। ওই সূচকে বলা হয়েছে বাংলাদেশে ক্ষুধা কমেছে উল্লেখযোগ্যভাবে। সূচকে বাংলাদেশের অর্জন ২৫ দশমিক ৮ পয়েন্ট। এর আগে ২০১০ সালে বাংলাদেশের এই স্কোর ছিল ৩০ দশমিক ৩। ১০০ পয়েন্টের ওপর ভিত্তি করে এই সূচক প্রণয়ন করা হয়। এ ক্ষেত্রে যে দেশ শূন্য স্কোর করে সেই দেশকে সবচেয়ে উত্তম দেশ ধরা হয়। অর্থাৎ সেই দেশে কোনো ক্ষুধার্ত মানুষের বসবাস নেই। আর ১০০ স্কোর করে যে দেশ সেই দেশ সবচেয়ে খারাপ অবস্থায়। অর্থাৎ সেই দেশে ক্ষুধার্ত মানুষের অবস্থা ভয়াবহ।
ভারতে এই অনাহারের সমস্যা বেশ তীব্র আকার ধারণ করেছে। ভারতের পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপের দিকে যাচ্ছে। ২০১৪ সালে ৭৬টি দেশের মধ্যে ভারত ৫৫ নম্বরে ছিল। এবার নেমে ১০২ নম্বরে এসেছে দেশটি। ২০১৭ সালে ১১৯টি দেশের মধ্যে ভারতের স্থান ছিল ১০০। ২০১৮ সালে ১১৯টি দেশের মধ্যে ১০৩। এবার ১১৭টি দেশের তালিকায় ভারত ১০২ নম্বরে।
জিএইচআই সূচক চারটি সূচককে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে ধরা হয়। তা হলো অপুষ্টি, শিশু মৃত্যু, শিশুদের অপচয় এবং শিশুদের বাড়তে না দেওয়া। এর মধ্যে শিশুদের অপচয় বলতে বোঝানো হয়েছে ৫ বছর বয়সের নিচের শিশুদের, যারা তাদের উচ্চতার তুলনায় কম ওজনসম্পন্ন। এতে প্রচ- অপুষ্টিতে ভোগা বোঝানো হয়।
ওই প্রতিবেদন অনুসারে, বৃহৎ জনসংখ্যার কারণে ভারতের জিএইচআই ওই অঞ্চলের ওপরে প্রভাব ফেলে। ভারতে ‘চাইল্ড ওয়েস্টিং রেট’ অর্থাৎ পাঁচ বছরের নিচে শিশুমৃত্যু বা শিশুদের অপুষ্টিজনিত দৈহিক উচ্চতা ও ওজন হ্রাসের হিসাব ২০ দশমিক ৮ শতাংশ। সারা বিশ্বের মধ্যে যা সর্বোচ্চ। প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়েছে, ক্যালরির অভাব এবং কম পুষ্টির দিকটি এর থেকে উঠে আসে।
এদিকে বিরোধীদলীয় নেতারা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কেন্দ্রীয় সরকারকে এজিএইচআই প্রতিবেদন নিয়ে তুলাধোনা করেছে। দক্ষিণের রাজ্য কেরালার অর্থমন্ত্রী থমাস আইসাক টুইট করে জানিয়েছেন, ২০১৯ বিশ্ব ক্ষুধা সূচক প্রকাশিত হয়েছে। ভারতের র‌্যাঙ্ক আরও নেমে হয়েছে ১০২। প্রধানমন্ত্রী মোদি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এই অবনমন। ২০১৪ সালে ভারত ছিল ৫৫ নম্বরে। ২০১৭ সালে তা হয় ১০০। বিশ্বে অনাহার থাকার মানুষের সংখ্যাধিক্য এখন ভারতে।
কর্ণাটকের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতা সিদ্দারামাইয়াও এই নিয়ে কেন্দ্রকে আক্রমণ করে টুইট করেন। টুইটে তিনি প্রশ্ন তোলেন, অনেকেই বিশ্বাস করেন ‘আচ্ছে দিন আয়েগা’। প্রশ্ন হলো সেই দিন কবে আসবে?

নিজস্ব প্রতিনিধি:




স্থানীয় আধিপাত্য ও বিল নিয়ে বিরোধ হত্যাকান্ডের কারণ

স্থানীয় আধিপাত্য ও বিল নিয়ে বিরোধের কারণেই মেহেরপুর সদর উপজেলার দরবেশপুর গ্রামে দুই চাচাত ভাই যুবলীগ নেতা রোকন বিশ্বাস ও হাসান বিশ্বাসকে খুন করা হয়েছে। আর এ খুনের সাথে প্রত্যক্ষ ও নেপথ্যেভাবে ১৫ থেকে ১৬ জন জড়িত ছিল। এদের মধ্যে ৮ জনকে আটক করা হয়েছে। আটক ৮ জনের মধ্যে ৩ জন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী দিয়েছে।

বুধবার সকাল ১১ টার সময় পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলী তাঁর সম্মেলন কক্ষে জোড়া খুন নিয়ে প্রথমবারের মত প্রেস ব্রিফিংকালে এ তথ্য দেন।
পুলিশ সুপার মুরাদ আলী বলেন, ১১ সেপ্টেম্বর হত্যাকান্ডের পর নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ২২ সেপ্টেম্বর রাত ২টার দিকে আব্দুল হাকিম, আব্দুস সালাম, তারাচাঁদ ফকির ও মামলত মন্ডল নামের চার আসামীকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এদের মধ্যে আব্দুল হাকিম আদালতে ১৬৪ ধারায় জবাববন্দীতে স্বীকার করেন যে, তার আপন বড় ভাই আব্দুল হামিদের (যাবজ্জীবন সাজা প্রাপ্ত আসামী) নির্দেশে হামিদের ছেলে মোক্তার হোসেন হত্যা ও শোলমারী বিলের অংশদারীত্ব হতে বাদ পড়া এবং স্থানীয় নেতৃত্ব নিয়ে কোন্দলের প্রদিশোধ স্বরুপ হামিদ জেলখানা হতে রোকন ও হাসানকে হত্যার জন্য তার ভাই হাকিমকে নির্দেশ দেয়। পরবর্তিতে হাকিমের নির্দেশনা মোতাবেক ঘটনার পূর্বে তার আপন ভাগ্নে ইসমাইল হোসেন বাক্কাকে নগদ ৮০ হাজার টাকা দিয়ে খুনি ভাড়া করে হত্যাকান্ডটি ঘটায়। ইসমাইল হোসেন বাক্কা এ হত্যাকান্ডের কিছুদিন পর একই গ্রামে বন্দুযুদ্ধে নিহত হয়।
পরবর্তিতে এই হত্যা মিশনে জড়িত সন্দিগ্ধ আসামী আবুল কালাম কালুকে ৮ অক্টোবর বারাদি বাজার থেকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসা বাদ করা হয়। এতে সে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।

তার স্বীকারোক্তিতে গত ১২ অক্টোবর রাত ৯টার দিকে গাংনী থানার হাটবোয়ালীয়া রোড থেকে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত সন্দেহে রনি আলম নামের একজনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ঘটনার বর্ণনা দেয়। সে বলে, বাক্কা সহ অন্য আর একজন আসামী রোকনকে কোপাতে থাকে। পরবর্তিতে বাক্কা ও আর একজন আসামী রোকনের পা চেপে ধরে। রনির স্বীকারোক্তিতে গত ১৪ অক্টোবর মুজিবনগর কেদারগঞ্জ থেকে দুই জনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
এর মধ্যে ইসমাইল হোসেন বাক্কা গত ৪ অক্টোবর অজ্ঞাত সন্ত্রাসীদের সঙ্গে বন্দুক যুদ্ধে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। তার বিরুদ্ধে হত্যা একাধিক মামলা বিচারাধীন ছিল।

পুলিশ সুপার আরো বলেন, হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত অন্যান্য পলাতক আসামীদের গ্রেফতারের জোর অভিযান চলছে। তদন্ত স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না।

প্রেস ব্রিফিংকালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম, সদর থানার ওসি শাহ দারা খান, তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আহসান হাবিব, মামলার বাদি আলেয়া খাতুন সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত ১১ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত ১১-১২টার দিকে মেহেরপুর সদরের দরবেশপুর গ্রামের শোলমারী বিলে রোকনুজ্জামান রোকন বিশ্বাস ও হাসানুজ্জামান হাসান কে কুপিয়ে ও গলাকেটে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় রোকনের স্ত্রী আলেয়া খাতুন বাদি হয়ে মেহেরপুর সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মেহেরপুর প্রতিনিধি