২৩ জুন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক শামসুল হকের কিছু কথা

১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর থেকেই পূর্ব বাংলার জনগন তখনকার সরকারী দল মুসলিম লীগের বিরুদ্ধে চেতনাগতভাবে সংঘবদ্ধ হতে শুরু হয়েছিলো। এর প্রথম সরব প্রমান দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক ১৯৪৯ সালের মার্চ/এপ্রিলে টাঙ্গাইলের উপনির্বাচনে মুসলিম লীগের প্রার্থী করটিয়ার জমিদার খুররম খান পন্নীকে পরাজিত করার মাধ্যমে।

জানা যায়, করটিয়ার জমিদার খুররম খান পন্নী। একজন নিপাট প্রজাপ্রিয় ভদ্রলোক। প্রজা নিপীড়ন বা নির্যাতনের কোনো অভিযোগ ছিল না তার নামে। আবার আচরণে নিখুঁত বিনয়ী। তার বিরুদ্ধে শামসুল হক কোনো বিবেচনাযোগ্য প্রার্থী ছিলেন না। খুররম খান পন্নী তার নির্বাচনী জনসভায় বক্তৃতা করার জন্য মাইক নিয়ে এসেছিলেন। টাঙ্গাইলের মানুষ এর আগে কখনো মাইক দেখেনি। একজন মানুষ কথা বললে তাকে শতগুণ মণ্ডিত হয়ে দূরের মানুষের কাছেও পেঁৗছায়, তা এই প্রথম দেখল তারা। করটিয়া সাদাত কলেজের মাঠে সেই সভায় হাজার মানুষের ভিড়। মাঠের এক কোনায় বসেছিলেন শামসুল হক। জমিদার সাহেবের কথা শেষ হওয়ার পর তিনি ধীরে ধীরে গেলেন মঞ্চের ওপর। জমিদার পন্নীকে বললেন, হুজুর এই নির্বাচনে আমিও একজন প্রার্থী। কিন্তু আমার তো আপনার মতো টাকা নেই। আপনার মতো মাইক পাব কোথায়? যদি আমাকে অনুমতি দেন তাহলে এই মাইকে আমি আমার নিজের দুটি কথা বলতে পারি। তিনি বললেন, হ্যাঁ, হ্যাঁ, নিশ্চয়ই। কেন নয়।

শামসুল হক একজন জ্ঞানী মানুষ ছিলেন। লেখাপড়া জানতেন। ইংরেজি বাংলা উভয় ভাষায় লিখতে এবং বলতে পারদর্শী ছিলেন। নিজেই নিজের দলের ম্যানিফেস্টো লিখেছিলেন এবং খুব ভালো বক্তৃতাও করতে পারতেন। মাইক নিয়ে তিনি প্রথমেই ভূয়সী প্রশংসা করলেন তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী খুররম খান পন্নীর। কৃতজ্ঞতা জানালেন প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়া সত্ত্বেও তার মতো একজন সাধারণ মানুষকে জমিদার সাহেব মাইক ব্যবহার করতে দিয়েছেন তার জন্য। তারপর তার মূল কথায় এলেন। শামসুল হক বললেন, জমিদার খুররম খান পন্নীর বিরুদ্ধে আমি প্রার্থী নই। তার মতো ভালো মানুষের বিরুদ্ধে আমার কোনো বক্তব্য নেই। আমার লড়াই মুসলিম লীগের বিরুদ্ধে। আমি মুসলিম লীগের বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছি। শামসুল হকের সেই বক্তৃতার কোনো ডকুমেন্ট আজ কারও কাছে নেই। কিন্তু অসাধারণ বক্তৃতা করেছিলেন তিনি। খুররম খান পন্নীর জনসভায় আসা মানুষও শামসুল হকের বক্তৃতা শুনে জেগে উঠেছিলেন। ভোট দিয়েছে শামসুল হককে। বিশাল ভোটের ব্যবধানে খুররম খান পন্নী পরাজিত হন।

শামসুল হকের এই বিজয় মুসলিম লীগের বিরুদ্ধে পূর্ববাংলার জনগণের প্রথম রায়। টাঙ্গাইলের উপনির্বাচনের বিজয় আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠায় বিশাল, উর্বর একটি জমি তৈরি হয়েছিল এবং শামসুল হক এই জমি ও তার ওপর বাড়ি নির্মাণে অন্যতম কারিগর ছিলেন।

১৯৪৯ সালের ২৩ জুন বিকেল তিনটায় ঢাকার কে এম দাস লেনের ‘রোজ গার্ডেনে’ সম্মেলন শুরু হলো। উপস্থিত ২৫০ থেকে ৩০০ জন। আতাউর রহমান খানের সভাপতিত্বে শুরু হলো সম্মেলন। তাঁরা আলাপ-আলোচনা করে তৈরি করলেন পূর্ব পাকিস্তানের প্রথম বিরোধী দল ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ’। নামকরণ করলেন ভাসানী স্বয়ং। তাঁদের যুক্তি ছিল, তাঁরা সবাই মুসলিম লীগার। তবে আকরাম খাঁ-নুরুল আমীনদের মুসলিম লীগ হলো সরকারি মুসলিম লীগ, তাঁদেরটা হবে আওয়ামের অর্থাৎ জনগণের মুসলিম লীগ। তাঁদের লক্ষ্য হলো, ‘স্বার্থান্বেষী মুষ্টিমেয় লোকদের পকেট হইতে বাহির করিয়া সত্যিকার জনগণের মুসলিম লীগ গড়ে তোলা।’

মাওলানা ভাসানীকে সভাপতি, শামসুল হককে সাধারণ সম্পাদক এবং ইয়ার মোহাম্মদ খানকে কোষাধ্যক্ষ করে নতুন দলের ৪০ সদস্যের কার্যনির্বাহী কমিটি তৈরি করা হয়। তরুণ সংগঠকদের অন্যতম শেখ মুজিবুর রহমান তখন কারাগারে। ভাসানীর আগ্রহ ও ইচ্ছায় তাঁকে দলের যুগ্ম সম্পাদক বানানো হয়। এই গুরুত্বপূর্ণ পদ তৈরি হয়েছিল শেখ মুজিবের কথা মনে রেখেই।

১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারির শেষে জেল থেকে বেরিয়ে শেখ মুজিব ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হন এবং ১৯৫৩ সালে অনুষ্ঠিত দলের কাউন্সিল অধিবেশনে পুরোদস্তুর সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। যুগ্ম সম্পাদক পদটি বিলুপ্ত হয়। শেখ মুজিব মাঠে-ঘাটে-হাটে ঘুরে ঘুরে সংগঠনটির বিস্তৃতি ঘটান। একটানা ১৩ বছর দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে থেকে তিনি দলটিকে দেশের সবচেয়ে বড় ও জনসম্পৃক্ত রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে পরিচিত করাতে পেরেছিলেন।

ফিরে আসি প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদকের কথায়। প্রথম কিভাবে তিনি প্রেক্ষাপট থেকে হারিয়ে গেলেন! ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারির পর পাকিস্তান সরকার শামসুল হক সহ কয়েকজনকে জননিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার করে জেলে প্রেরণ করে। শামসুল হক জেলে থাকাকালীন সময়ে শেখ মুজিবকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।

ঠিক এই পর্যায়ে এসে শামসুল হক পাকিস্তান সরকারের ঘৃন্য অত্যাচার ও পারিবারিক গুটিবাজির শিকার হন। সেই সময়কার নরসিংদির সেকান্দার মাস্টার সাহেবের কন্যা আফিয়া খাতুনকে বিয়ে করেন শামসুল হক। জানা যায়, আফিয়া খাতুন একজন উচ্চাভিলাষী মহিলা ছিলেন। শামসুল হক আরও অনেক বড় হবেন। মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীও হয়ে যেতে পারেন হয়তো এই আশায় তিনি শামসুল হককে বিয়ে করেন। কিন্তু শামসুল হক জেলে যাওয়ার পরে তিনি তাকে ছেড়ে চলে যান। শেষ পর্যন্ত তিনি আমেরিকা চলে যান এবং সেখানে একজন পাকিস্তানিকে বিয়ে করেন।

শামসুল হকের এক কন্যাসন্তান ছিল, পরের ঘরে আরেক মেয়ে সন্তান হয়েছিলো বলে জানা যায়। বড় মেয়ের নাম উম্মেবতুল ফাতেমাজ জহুরা (শাহীন) এবং ছোট মেয়ের নাম উম্মেবতুল তাহেরা (সোয়েফা)। বর্তমানে তারা দুজনেই পিএইচডি ডিগ্রিপ্রাপ্ত এবং বিবাহিতা। সপরিবারে আমেরিকা বসবাস করেন। মেয়েরা একবার টাঙ্গাইলে খুঁজে পাওয়া বাবার কবর দেখতে এসেছিলেন। তাদের নাকি বলা হতো তোমাদের পিতা একজন বদ্ধ উন্মাদ, তার কাছে গেলে সে তোমাদের মেরে ফেলতে পারে।

স্ত্রী আফিয়া খাতুনের উচ্চাভিলাস এবং ক্ষমতাসীন স্বৈরাচারী সরকারের অত্যাচারে জেলখানায় শামসুল হকের মস্তিষ্ক বিকৃতি ঘটে। ১৯৫৩ সালে অত্যন্ত অসুস্থ শরীর এবং জটিল মানসিক ব্যাধি নিয়ে কারামুক্তি লাভ করেন।

১৯৬৪ সাল পর্যন্ত মানসিক ভারসাম্যহীন শামসুল হককে পথে পথে ঘুরতে দেখেছেন অনেকেই। মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে প্রায় ১০ বছর পথে পথে ঘুরে বেরিয়েছেন তিনি। ১৯৬৫ সালে শামসুল হক হঠাৎ নিখোঁজ হন।১৯৬৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে জোকারচর গ্রামের মহিউদ্দিন আনসারী (তৎকালীন নামকরা কংগ্রেস নেতা) কলকাতা থেকে সিরাজগঞ্জ হয়ে বাড়ি ফেরার পথে কোনো এক স্থান থেকে শামসুল হককে বাড়িতে নিয়ে আসেন। তখন শামসুল হক শারীরিক ও মানসিকভাবে ভীষণ অসুস্থ ছিলেন। সে সময় গ্রামের হাতেগোনা কয়েকজন সচেতন ও শিক্ষিত লোক ছাড়া শামসুল হককে কেউ চিনতেন না। অসুস্থ শামসুল হক মহিউদ্দিন আনসারীর বাড়িতে ৭ দিন থাকার পর তার হঠাৎ খুব জ্বর হয়। স্থানীয় হোমিও চিকিৎসক শুকলাল দাস শামসুল হকের চিকিৎসা করেন। প্রচণ্ড জ্বরে শামসুল হক কোন ১১ সেপ্টেম্বর রোজ শনিবার দুপুর ২টা থেকে আড়াইটার মধ্যে মারা যান।

শামসুল হককে টাংগাইল জেলার কালিহালি উপজেলার কদিম হামজানি গ্রামের কবরস্থানে কবর দেওয়া হয়।

অত্যন্ত দুঃখের বিষয় এই যে, এই শামসুল হককে কোথায় কবর দেওয়া হয়েছিলো, কিভাবে তিনি মারা গিয়েছিলেন সেটা ও ২০০৭ সালের আগে জানা ছিলো না।

আমার ইচ্ছে আছে এবার দেশে গেলেই এই প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ শামসুল হকের কবরস্থানে এক গুচ্ছ ফুল রেখে আসার।

টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতি উপজেলায় বংশাই নদীর তীরে কদিম হামজানি নামক গ্রামে অবস্থিত। বর্তমানে এ মসজিদটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান হিসাবে স্বীকৃত এবং প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত একটি স্থাপনা।এই মসজিদের পাশেই রয়েছে বাংলাদেশের আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক শামছুল হক এর সমাধি ।

উল্লেখ্য, তিনি টাঙ্গাইল জেলার দেলদুয়ার উপজেলায় এক নিভৃত গ্রাম মাইঠানে ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারি ১ শামসুল হক তার মামাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।




এডিস মশা সম্পর্কে কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য ও পরামর্শ

ফারজানা ইসলাম
কখনও ভেবে দেখেছেন কি, কেন বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই স্ত্রী এডিস মশা গায়ে বসলে আমরা বুঝতে পারিনা বা অনেক সময় কামড়ানোর পর কেন বুঝতে পারি?
এর কারণ, স্ত্রী এডিস মশার Back biting behaviour. অর্থাৎ এরা Host কে পেছন দিক থেকে আক্রমণ করতে পছন্দ করে। যেমন কানের পিছনে, হাতের কনুই বা পায়ের গোড়ালি, যেনো প্রাথমিকভাবে আপনি তাকে Detect করতে না পারেন।
অফিস আদালত বা স্কুল কলেজে স্ত্রী এডিস মশার দ্বারা সংক্রমিত হওয়ার হার তুলনামূলকভাবে বেশী। কারন- প্রথমত এরা Daytime biter আর দ্বিতীয়ত আমাদের Body position and mind set-up.  টেবিল-চেয়ার ব্যবহার করায় আমাদের শরীরের অর্ধেক অংশই দৃষ্টির আড়ালে থাকে। ছাত্রছাত্রীরা পড়ালেখায় আর আমরা অফিশিয়াল কার্যক্রমে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। আর এই Concentration /focus of mind on one thing exclude our feelings or sensation from the surroundings. আর এর সুযোগটাই স্ত্রী এডিস মশা সম্পূর্ণরূপে কাজে লাগিয়ে থাকে।স্ত্রী এডিসের সবচাইতে Worst বৈশিষ্ট্য হলো intermittent feeding capability এবং একই সময়ে বিভিন্ন Host থেকে রক্ত সংগ্রহের প্রবণতা।এরা কুকুর/বিড়াল/গৃহপালিত পশুপাখি থেকে রক্ত সংগ্রহের পাশাপাশি মানুষ থেকেও রক্ত সংগ্রহ করে ডিম পাড়ার জন্য। আবার অনেক ক্ষেেএ একাধিক মানুষ থেকেও রক্ত সংগ্রহ করে থাকে। এই Host seeking behaviour এদেরকে রোগ সংক্রমণ বা ছড়ানোর ব্যাপারে এতোটা দক্ষ করে তোলে।
তাই এডিস মশার কামড়/দংশন থেকে বাঁচতে আমরা নিম্নলিখিত পদক্ষেপ গুলো গ্রহণ করতে পারি;
(১) পার্সোনাল প্রোটেকশনের ব্যবস্থা করা। বাইরে বের হবার পূর্বে বা ঘরে অবস্থানের সময়ও ফুলহাতা জামা ব্যবহার করা (সাদা/হালকা রঙের)
(২) সাদা রঙের প্যান্ট / পায়জামা এবং অবশ্যই পা-মোজা (সাদা রঙের) ব্যবহার করা।
(৩) বিভিন্ন ধরনের মশা তাড়ানোর ক্রিম/তেল শরীরের উন্মুক্ত স্থানে ব্যবহার করা। যেমন- Odomos, Fabric roll on, neem oil, lavender oil. আর যদি এসবের কোনো কিছুই পাওয়া না যায় তবে নিমপাতা বেটে এর রস হাতে-পায়ে ব্যবহার করতে পারেন।
(৪) স্ত্রী এডিস মশা সবচাইতে বেশী active থাকে সূর্যোদয়ের পর থেকে দুই ঘন্টা পর্যন্ত এবং সূর্যাস্তের বেশ কয়েক ঘণ্টা আগে থেকে। বাড়িতে এবং স্কুল-কলেজে/ অফিসে (অফিস টাইমের পূর্বেই) কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় বা ক্ষেত্রবিশেষে নিজ উদ্যোগে সকাল ৬-৭ টার মধ্যে প্রতিটি রুমে কয়েল জ্বালিয়ে দিন/কীটনাশক স্প্রে করুন (দরজা-জানালা বন্ধ রাখা অবস্থায়)। এর ২/৩ ঘণ্টা পর ফুলস্পিডে ফ্যান চালু করে দিন এবং প্রতিটি রুমের একটি করে জানালা খুলে দিন। এতে করে ক্ষতিকর ধোঁয়া ও মশা দুটোই ইনশাআল্লাহ বেরিয়ে যাবে [আপনার কক্ষটি ১ম/২য় তলায় হলে কয়েল বন্ধ না করাই ভালো]।
বাড়িতে বা সান্ধ্যকালীন অফিসে বিকেল ৪ টার সময় উপরোক্ত প্রক্রিয়াটি পুনরাবৃত্তি করুন এবং এক্ষেত্রে ধোঁয়া ও মশা বেরিয়ে যাবার পর দরজা-জানালা একেবারে বন্ধ করে দিন এবং প্রয়োজনে মশার কয়েল নিভিয়ে ফেলুন।
(৫) আমাদের Body odor বা দেহের গন্ধে স্ত্রী মশা সবাচাইতে বেশি আকৃষ্ট হয়। তাই সম্ভব হলে নিমপাতা সেদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে গোসল করুন।
(৬) ছাদে বা পানির ট্যাংকের পাশে বা গ্যারেজে যে সমস্ত জায়গায় পানি জমে থাকে সেখানে পানি অপসারণ করা না গেলে প্রয়োজনে ১/২ মুঠো লবণ ছিটিয়ে দিন।
(৭) যানবাহন/প্রাইভেট কার রাতে বন্ধ করার পূর্বে কীটনাশক স্প্রে করুন।
(৮) সর্বোপরি ঘরে অবস্থানকালে ঘুমানোর সময়(দিনে/রাতে) মশারি ব্যবহার করুন।
লেখক: সহকারী অধ্যাপক, প্রাণিবিদ্যা বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এবং (সাবেক) জাতীয় পরামর্শদাতা (কীটতত্ত্ববিদ), বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।  (সংগ্রহ- বাংলাদেশ প্রতিদিন)



জংলীদের হাতে ক্ষতবিক্ষত একজন সংগ্রামী মহিলার গল্প

। কতোবার ভেবেছেন আত্মহত্যার করবে । করতে পারেনি, মরতেও পারেনি। মরার মথা মনে হলেই সামনে ভেসে উঠে ছেলেমেয়ের মুখ। আহা এই ছেলেমেয়ে গুলোর যে আল্লাহ আর মা ছাড়া কেউ নেই।

বাবার বাসায় ভাইয়ের সংসারে কষ্ট করে মানিয়ে চলছে সে। ছোটখাটো একটা চাকরি যোগাড় করেছে। দেখতে দেখতে ছেলে কেজিতে পড়ছে । আর মেয়ের বয়স চার পূর্ণ হলো জুন মাসে। হঠাৎ একদিন মনে হলো মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করে দিলে কেমন হয়..? বছরের মাঝামাঝি সময় কোথায় ভর্তি করানো যায় ভাবছিলেন। বাড্ডার একটা প্রাইমারি স্কুলে ভর্তির সুযোগ হতে পারে ভেবে সে এক দুপুরে ঐ স্কুলের গেটে দাঁড়ায়। ভিতরে ঢুকতে চাইলে আয়া ভিতরে ঢুকতে দেয় নি। তখন ভাবে ছুটি হলেই সে ভিতরে ঢুকবে। গেটের কাছে দাঁড়িয়ে থাকলো একা-একা। এক ভদ্রলোক তাকে দেখে এগিয়ে এসে জিজ্ঞেস করলেন আপনি কে ? তখন সে তার নাম বললো “আমি রেনু”। আবার প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন এখানে কেনো আসছেন ? আপনি কি করেন? আপনার বাসা কোথায়? তার প্রশ্ন করার সময় আরো বেশ কিছু মানুষ জড়ো হয়ে গেলো। এতো মানুষ দেখে রেনু ভয় পেয়ে গেলো। সহজ প্রশ্নগুলোর ঠিকঠাক উত্তর দিতে পারলো না। অবশ্য ডিভোর্স হওয়ার পর থেকেই কিছুটা মানসিক অবসাদে ভুগছিলো রেনু। কোথায় যেনো হারিয়ে গিয়েছিলো তার সমস্ত স্বতঃস্ফূর্ততা

তার উত্তর শুনে উপস্থিত পাব্লিক তাকে ছেলে ধরা আখ্যা দিয়ে মুহুর্তেই তার প্রতি চড়াও হয়ে গেলো, সে সবাইকে বুঝানোর চেষ্টা করলো “আমি ছেলে ধরা না”। তাও কিছু উশৃংখল যুবক তার উপর হামলে পড়লো। সে বললো, ” আমি বাসায় রেখে আমার দুইটা ছোট ছেলে-মেয়ে, দয়া করে আমাকে মারবেন না, আমি ভালো ঘরের মেয়ে“। কে শুনে কার কথা? অতিউৎসাহীরা কোনভাবেই ছাড়তে রাজি নয়। হাকডাক দিয়ে জড়ো করে ফেলা হলো শতাধিক মানুষ। সবার উদ্দেশ্য একটাই একজন নারী ছেলে ধরাকে জীবনের মতো শায়েস্তা করবে । শুরু হলো বেধড়ক পেটানো । সে দৌড়ে পালাতে চেয়ে ছিলো তখন উশৃংখল জনগণ তাকে ধরে এনে উপর্যুপরি কিল ঘুষি, লাত্থি মারতে শুরু করলো। কিছু লোক লাটি দিয়ে বেধড়ক পেটালো, সে আর্তচিৎকার করতে লাগলো। কাউকেই থামাতে পারলো না । কেউ একজ এসে এই উশৃংখল উন্মাদ জনতাকে থামাবে ভাবছিলো সে। কেউ থামাতে চেষ্টা করলেও বাকীরা কর্ণপাত করেনি।

একের পর এক আঘাতে শরীর নিস্তেজ হয়ে আসছিলো। একটা ছেলে লাফ দিয়ে বুকের উপর উঠে গেলো। তাখন হৃদপিণ্ডটা থমকে গেছে। আরেকটা ছেলে লাফ দিয়ে বুক আর গলার মাঝখানে আছড়ে পরলো। মাথায় আঘাতের পর আঘাতে সে পুরোপুরি বোধ শক্তি হারিয়ে ফেললো ততক্ষণে , এখন তাকে যতোই আঘাত করা হচ্ছে তার কোথায় কোন ব্যথা অনুভূত হচ্ছেনা। সে ক্ষীণ চোখ মেলে দেখতে পারছে তার উপর পাষণ্ডরা আঘাতের পর আঘাত করছে। তার কোনই কষ্ট হচ্ছে না। সে ততক্ষণে কষ্ট বেদনার অনুভূতি শূন্য হয়ে গেছে।

তার শুধু মনে পড়লো তার ছেলেকে স্কুলে রেখে এসেছে, মেয়েকে খেলনা দিয়ে খেলতে বসিয়ে এসেছে। ছেলেটা কিভাবে স্কুল থেকে বাড়ি ফিরবে ? মেয়েটা মাকে ছাড়া এক রাত কারো সাথে ঘুমায়নি। আহা ফুটফুটে মেয়েটার কি হবে..?? কিছুক্ষণ পর সে আর জনতার হৈ-হুল্লোড় শুনতে পাচ্ছে না। অনুভব করছে শক্ত কোন ফ্লোরে শুয়ে আছে, রাস্তার ঝাঁকুনি তার মৃদু অনুভূত হচ্ছে। পৃথিবীর সমস্ত আলো নিভে গেছে। চোখ অন্ধকার ঘিরে ধরেছে । চোখ খোলার সামর্থ্য তার নেই । অস্তে অস্তে হৃদপিণ্ডের গ্রাফ নিচে নেমে যাচ্ছে, চোখ বেয়ে অনর্গল পানি পড়ছে। সে বুঝতে পারছে হায় দুনিয়া তাকে দূরে ঠেলে দিলো । কি হবে তার ছেলে মেয়ের ?

সারা শরীরে একটুও রক্তক্ষরণ নেই, ঠোঁটে দাঁতের আঘাতে সামান্য রক্ত বেড়িয়েছিলো তাও শুকিয়ে গেছে। তবে সারা শরীরে রক্ত জমাট বেঁধে আছে। সাদা শরীর কালো হয়ে গেছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ নেই। গুলিতেও শরীর ঝাঁজরা হয়নি। তবুও আস্তে আস্তে হৃদপিণ্ডের গ্রাফ নিচে নেমে যাচ্ছে , ধমনিতে স্থবিরতা নেমেছে। অস্তে আস্তে শরীর শীতল হয়ে যাচ্ছে। হাত-পা কিছুই নাড়ানো যাচ্ছে না। কেউ একজন পরম যত্নে তাকে ডাকছে। বলছে তার তৃষ্ণা মেটানোর জন্য  যমযম প্রস্তুত….

কিছুক্ষণ পর ডাক্তার ঘোষণা দিলেন রেনু আর বেঁচে নেই। ময়নাতদন্তে দেখা গেলো রেনুর কষ্টে ভরা বুকের হাড় ভেঙ্গে হৃদপিণ্ডে ঢুকে গেছে, এ যেনো কষ্টের চির অবসান, মাথার মগজ নাক অবধি চলে এসেছে…. হায় দুনিয়া, হায় মানুষ, হায় জীবন । হায় সমাজ, হায় মানবতা হায় মানবাধিকার, হায় অনুভূতি।




আগে নিজে পরিপূর্ণ মানুষ হবার চেষ্টা করি তারপর না হয় নেতা……..এম.এ.এস. ইমন

চলো রাজনীতি করি

যোগ্যতা নেই কিছু করার, আর কতোদিন বেকার থাকবো,  চলো রাজনীতি করি।

লেখাপড়া জানি না, হঠাৎ টাকা হয়েছে, প্রভাব-প্রতিপত্তি দরকার, চলো রাজনীতি করি।

ব্যবসা করি, সাপোর্ট দরকার, চলো রাজনীতি করি।

সামাজিক মর্যাদায় টিকে থাকার জন্য বলি, চলো রাজনীতি করি।

অত্যাচারিত হয়ে প্রতিশোধ নিতে বলি, চলো রাজনীতি করি।

নিজেকে পরিপূর্ণ মানুষ হিসাবে তৈরী করার পর দেশকে ভালবেসে সমাজ বদলের উদ্দেশ্যে নিজ স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে আমরা কয়জন বলছি?

‘চলো রাজনীতি করি‘।

চলো আগে নিজে পরিপূর্ণ মানুষ হবার চেষ্টা করি তারপর না হয় নেতা। কিছু কিছু যুবককে দেখি ২৪ টা ঘণ্টা রাজনীতি নিয়ে পড়ে থাকে। কাজ-কর্ম কিছুই করে না, ধান্দা আর হাত পেতে জীবন জীবিকা চালায়। আর দেখা হলেই আক্ষেপ করে বলে যে, সারাদিন দলের পিছনে সময় দেয় কিন্তু ভাত জোটে না। তাদের কয়েকজনকে না বলে পারলাম না, কি দরকার ২৪ ঘন্টা রাজনীতি করা। এতে না হয় দেশের লাভ, না হয় দলের না হয় তাদের নিজের। কর্ম কর, কর্মের ফাকে রাজনীতিতে সময় দেও। রাজনীতি মানে অন্যের সেবা দেয়া। যে নিজেকেই দাড় করাতে পারে না, সে অন্যের সেবা করবে কিভাবে? পেটে ভাত নেই বেকার আবার সারাদিন চৈ চৈ করে ঘুরে বেড়ানো। সময়ের মুল্য অনেক। নিজেকে গড়ো, মানুষ হও। মানুষের সেবা করো, দলের কাজ করো। এখন ক্যারিয়ার ছাড়া কোন দাম নেই। রাজনীতিতেও ক্যারিয়ারের প্রয়োজন। যার যত বড় ক্যারিয়ার সে রাজনীতিতে তত ভাল করবে। পাচটা হোন্ডা দশটা গুন্ডার দিন শেষ।

এখন সময় এসেছে, মেধা যার রাজনীতি তার।




৮২ টাকার স্থলে ৪৫ টাকার রড ব্যবহার!

মেহেরপুর জেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণে নিম্মমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করায় ক্ষুব্ধ হয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নোটিশ করেছে গণপূর্তের খুলনা বিভাগীয় অফিস।

১৪ কোটি ২৬ লাখ ৩৪ হাজার ৩৯০ টাকা ব্যায়ে মেহেরপুর জেলা মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ পেয়েছেন এন হোসেন শামীম (জেভি), মিশন পাড়া, পুরাতন কসবা, যশোর। প্রতিষ্ঠানটি মডেল মসজিদ নির্মাণের শুরু থেকেই সিডিউল বহির্ভূত নির্মাণ কাজ করছে। আগামি দেড় বছরের মধ্যে কাজটি শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে ঠিকাদার এন হোসেন শামিম মেহেরপুর গণপূর্ত প্রকৌশলী মোহা. জাকির হোসেনের আত্মিয়। তার যোগসাজশেই তিনি ঠিকাদার হিসেবে কাজটি পেয়েছেন।

গণপূর্ত অধিদপ্তরের খুলনা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার বসু গত ২০ সেপ্টেম্বর মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজ সরেজমিনে পরিদর্শনে নানা ধরণের অনিয়ম দেখতে পান। তিনি কাজের দৃশ্যমান কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি অসঙ্গতি উল্লেখ করে সিডিউল মোতাবেক কাজ করার জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে লিখিত নির্দেশও দিয়েছেন। এরপরেও সিডিউল বহির্ভূত নি¤œমানের সামগ্রি দিয়ে নির্মানকাজ করা হচ্ছে। যেভাবে নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে তাতে নির্মাণ পরবর্তী ফ্লোর ফেটে যাওয়াসহ অনাকাংক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে। এমন আশংকা গণপূর্ত বিভাগের বিভাগীয় প্রকৌশলীদের।

গণপূর্তের খুলনা বিভাগীয় অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর লিখিত নির্দেশে উল্লেখ করা হয়েছে, নির্মাণাধীন জেলা সদর মডেল মসজিদের একদিক থেকে কলামের বেইজ ঢালাই করা হচ্ছে অন্যদিকে একবারে ৮-১০ ফুট উচ্চতার ভিতর মাটি ফেলা হচ্ছে । স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী ৬ ইঞ্চি লেয়ারে কম্প্যাকশন করার কথা থাকলেও সেই অনুযায়ী কাজ করা হচ্ছে না । এতে করে ফ্লোর ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সমস্ত মাটি তুলে স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী পুনরায় মাটি ভরাট করে সঠিক নিয়মে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। কাজের সাইটে ব্যবহৃত নির্মাণ সামগ্রীর মধ্যে শক্তিশালি স্টিল রড, পাথর চিপস, বি এস আর এম, আনোয়ার, একেএস কোম্পানির যেকোন একটি ব্র্যান্ডের রড় ব্যবহার করার কথা। সিডিউলে বলা এসব নিয়ম মানা হচ্ছেনা বলে অভিযোগ করা হযেছে নোটিশে।

নোটিশে আরও উল্লেখ রয়েছে, নির্মাণ কাজে ভিতরের মাটি ভরাট ও ক্যাপশন কাজ স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী করার জন্য এবং গ্রহণযোগ্য টেস্ট রেজাল্টের উপর ভিত্তি করে নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের করার কথা থাকলেও নিম্মমানের সামগ্রী দিয়ে চলছে মডেল মসজিদের নির্মাণ কাজ। সরেজমিনে কাজের সাইডে গিয়ে দেখা যায় নি¤œমানের টাইগার নামের রড দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। যার বাজারমূল্য ওই রডের প্রতিকেজির দাম ৪৫ টাকা। অথচ সিডিউলে ৮২ টাকা কেজি দরের বিএসআরএম রড দেয়ার জন্য সিডিউলে বলা হয়েছে। অন্যন্য নির্মান সামগ্রিও নি¤œমানের দেয়া হচ্ছে।

তবে ঠিকাদার এন হোসেন শামিমের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে প্রকল্প এলাকায় তিনি ছিলেন না। সেখানে কর্মরত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কেউ তার সাথে যোগাযোগের কোন ব্যবস্থা করে অপরাগত প্রকাশ করেন।
মেহেরপুর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহা. জাকির হোসেন জানান- বিভাগীয় প্রকৌশলীর নির্দেশে কাজ তদারকি করা হচ্ছে। নি¤œমানের সামগ্রি সরিয়ে দেয়া হয়েছে। টাইগার রড অপসারণ করে আনোয়ার কোম্পানীর রড সংযোজন করা হয়েছে। মাটি কম্প্যাকশন সম্পর্কে তিনি বলেন, এখানে ১২টি গর্ত করা হয়েছে। একেকটি গর্ত হতে দেড় হাজার সিএফটি মাটি উঠানো হয়েছে। স্খান সংকুলান না হওয়ায় ভরাটের কাজটি ওভাবেই করতে হয়েছে। ঠিকাদার শামিম সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, সে তার কোন আত্মিয় না।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. আতাউল গনি নি¤œমানের কাজ হবার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, মেহেরপুর জেলা সদরে মডেল মসজিদ নির্মান কাজে অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছি। কাজে কোন রকম অনিয়ম মেনে নেওয়া হবে না। বিভাগীয় খুলনা গণপূর্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সরেজমিনে নির্মাণকাজ পরিদর্শন করে অনিয়ম দেখেছেন। তিনি মেহেরপুর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীকে নির্দেশ দিয়ে গেছেন সিডিউল মোতাবেক কাজটি দেখভাল করে বুঝে নেবার।




রক্ত পরীক্ষা করে সাধারণ জ্বরকে করা হলো ডেঙ্গু ও টাইফয়েড

মেহেরপুরের গাংনী হাসপাতাল বাজারের অবস্থিত মোল্লা ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টারের ভূল প্রতিবেদনে বিপাকে পড়ে আর্থিক ভাবে হয়রানির শিকার হয়েছেন কুতুব আলী(৩৫) নামের এক রোগী। সাধারণ জ্বরকে ডেঙ্গু ও টাইফয়েড হয়েছে এমন ভূল প্রতিবেদন দিয়ে রোগীকে জরুরি ভাবে কুষ্টিয়ায় পাঠিয়ে আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করেছেন এমন অভিযোগ রোগীর।

ক্ষতিগ্রস্থ রোগী কুতুব আলী গাংনী উপজেলার জুগীন্দা গ্রামের প্রাইমারী স্কুল পাড়ার রেজাউল হকের ছেলে। কুতুব আলী জানান, গত ৩ অক্টোবর রাতে আমার হঠাৎ জ্বর আসে। পর দিন সকাল ১০টার সময় গাংনী উপজেলা স্বাহ্য কমপ্লেক্্ের চিকিৎসার জন্য যায়। জুরুরী বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক আমাকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে রক্ত ও প্রসাব পরীক্ষা করিবার জন্য বললে মোল্লা ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টারে গিয়ে সেখানে রক্ত পরীক্ষা করি। মোল্লা ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টারের মালিক ডা: মশিয়ার রহমান মোল্লা, প্রতিবেদন দিয়ে বলেন আপনার ডেগুু ও টাইফয়েড হয়েছে যত তাড়াতাড়ি পারেন কুষ্টিয়া সরকারী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভতি হয়ে চিকিৎসা নেন। তা না হলে বড় ধরনের সমস্যা হতে পারে।

রোগীর বাবা রেজাউল হক অভিযোগ করে জানান, ছেলেকে বাচাঁনোর জন্য এ্যাম্বুলেস ভাড়া করে কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভতির করি। সেখানে কর্মরত চিকিৎসক কুতুব আলী রক্ত পরীক্ষা করিতে দেন। কুষ্টিয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ল্যাবে রক্ত পরীক্ষা করা হয়। রিপোর্ট দেখার পরে চিকিৎসক বলেন আপনার ছেলের ডেগুু ও টাইফয়েড হয়নি। এটা সাধরন জ্বর কয়েক দিন চিকিৎসা নিলে ভালো হয়ে যাবে। তবে গাংনী মোল্লা ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টারের রিপোট সর্স্পন ভুল ছিলো। যে কারনে ২০-২৫হাজার টাকা অতিরিক্ত খরচ করতে হয়েছে।

ধানখোলা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড সদস্য জাফর আলী জানান, কুতুব আলী আমার ওয়ার্ডের বাসিন্দা। সে পেশায় দিনমুজুর। মোল্লা ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টারের তার চিকিৎসার ভুল রিপোট দেওয়া কারনে ভয়ে পড়ে অনেক গুলো টাকা খরচ করতে হয়েছে, তার পরিবারের জন্য এটি এক ধরনের বড় বোঝা।

এ বিষয়ে ডা: মশিয়ার রহমান মোল্লার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি।
গাংনী উপজেলা স্বাহ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মাহাবুবুর রহমান জানান, গাংনীতে সব ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ডেগুু পরীক্ষা হয় না। এটা সাধারন রোগিদের জানা নেই তাই ডায়গনস্টিক সেন্টার গুলো রোগীদের সাথে প্রতারণা করছে। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

-আল-আমীন,গাংনী




মেহেরপুর ও চুয়াডাঙ্গায় স্বাস্থ্য সহকারিদের আনন্দ র‌্যালি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ কর্তৃক “ভ্যাকসিন হিরো” সম্মানে ভূষিত হওয়ায় বাংলাদেশ হেলথ এসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে আনন্দ র‌্যালী বের করা হয়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে র‌্যালীটি মেহেরপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমী থেকে শুরু করে প্রধান সড়ক হয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্ত্বরে গিয়ে শেষ হয়।
হেলথ এসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তোজাম্মেল হোসেন এর নেতৃত্বে জেলা প্রশাসক মোঃ আতাউল গণিকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।
এ সময় সেখানে সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন, উপজেলা সভাপতি আব্দুল মালেক, উপজেলা সভাপতি আব্দুল মালেক, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম, আশরাফুল ইসলাম, মাসুদ রানা, রাসেল হোসেন, আবু সাঈদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ কর্তৃক ‘ভ্যাকসিন হিরো’ সম্মানে ভূষিত হওয়ায় চুয়াডাঙ্গায় আনন্দ র‌্যালি ও পথসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকালে এ কর্মসূচির আয়োজন করে বাংলাদেশ স্বাস্থ্য সহকারি অ্যাসোসিয়েশন। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল এলাকা থেকে এক আনন্দ র‌্যালি শহর প্রদক্ষিণ শেষে শহরের শহীদ হাসান চত্বরে পথসভা করে। এতে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ স্বাস্থ্য সহকারি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আনিসুজ্জামান মালিক, সাধারণ সম্পাদক হাবিবুল হাসান প্রিন্সসহ অন্যরা।

-প্রতিদিন ডেস্ক :




মেহেরপুরে গৃহবধুকে হত্যার অভিযোগ

মেহেরপুরে তহমিনা খাতুন (৪০) নামের এক গৃহবধুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে সদর উপজেলার গোপালপুর গ্রাম থেকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।

স্থানীয়রা জানান, তহমিনার ১৩ বছর বয়সে বিয়ে হওয়ার ৭ দিনের মাথায় তালাক হয়ে যায়। পরে আর বিয়ে হয়নি। পিতার একখন্ড জমির উপর টিনের ছাউনি দিয়ে তার ভায়ের একমাত্র সন্তান আকাশ (১৭) কে নিয়ে ঐ ঘরে বাস করতো। আকাশের পিতা মাতা কেউ নেই। আকাশ ও ফুপু তহমিনা ক্ষেত খামারে কাজ করে দিনানিপাত করতো তোলার কাজ করতো।

আকাশ অভিযোগ করে জানান, প্রতিবেশী ফজলুল হকের ছেলে মালদ্বীপ প্রবাসী আবু তাহের তার ফুপুর জমিটুকু দখলে নিতে চাই। তহমিনা ও আকাশ ঐ জমি লিখে না দেওয়ায় তাদের বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিয়ে আসছিল। এতে ভিত হয়ে তহমিনা আকাশকে রাতে কাছে রাখতো না। এই সুযোগে বুধবার দিবাগত রাতে কোন এক সময় তার উপর নির্যাতন চালিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে লাশ রেখে পালিয়ে যায়।
মেহেরপুর সদর থানার ওসি শাহ দারা খান জানান, জমি সঙক্রান্ত বিরোধেই তহমিনাকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তহমিনার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায় এবং নাকে রক্ত দেখা যায়। অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছে। তাদের আটকের চেষ্টা চলছে।

-নিজস্ব প্রতিনিধি




গাংনীতে স্বামী পরিত্যক্তা মহিলার লাশ উদ্ধার

মেহেরপুরের গাংনীতে পারভিনা খাতুন (৪৩) নামের এক স্বামী পরিত্যক্তা মহিলার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে উপজেলার হাড়াভাঙ্গা থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। পারভিনা কাজিপুর গ্রামের আতর আলীর মেয়ে ও কাজিপুর ইউপি চেয়ারম্যান রাহাতুল্লাহ শালিকা।

গাংনী থানার ওসি মো: ওবাইদুর রহমান জানান, হাড়াভাঙ্গা মাদ্রাসা বাজারে পারভিনা নামের এক মহিলার লাশ রয়েছে এমন সংবাদ পেয়ে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। হত্যা না আত্মহত্যা এটা সুরতহাল প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর জানা যাবে।

কাজিপুর ইউপি আওয়ামীলীগের সভাপতি আবু নাতেক জানান, গলায় ওড়না বাঁধা এক মহিলার লাশ বাজারের একটি দোকনের সামনে রয়েছে। সকালে স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়া হয়। তবে ঘটনা সম্পর্কে তিনি কিছু বলতে পারেননি।
কাজিপুর ইউপি চেয়ারম্যান রাহাতুল্লাহ জানান, পারভিনা তার বাড়িতেই থাকতো। কখন কিভাবে তার মৃত্যু হয়েছে তিনিও জানেন না।
পারভিনার চাচাতো ভাই নবী উদ্দীন জানান, পারভিনা খাতুন গত দু বছর আগে মাথায় সমস্যা হয়। পারভিনার বিয়ে হয়েছিলো পার্শবর্তী বালিয়াঘাট গ্রামের জুলহাসের সাথে। পরে সেখানে দুজনের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে।

-নিজম্ব প্রতিনিধি 




আবরার হত্যায় প্রথম স্বীকারোক্তি ইফতির

বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার আসামিদের মধ্যে ইফতি মোশাররফ সকাল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা মহানগর হাকিম সাদবির ইয়াসির আহসান চৌধুরীর আদালতে আবরার হত্যার ঘটনায় প্রথম স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন ইফতি।
এর আগে ইফতিকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। রিমান্ডে থাকা ইফতি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হওয়ায় তাকে আদালতে হাজির করা হয় বলে জানায় পুলিশ।
ইফতি দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন বলে জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের অপরাধ তথ্য ও প্রসিকিউসন বিভাগের কর্মকর্তা উপ-কমিশনার জাফর হোসেন।
জবানবন্দি গ্রহণ শেষে ইফতিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। আসামি ইফতি বুয়েটের বায়ো মেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ও বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের উপ-সমাজসেবা সম্পাদক ছিলেন। আবরার হত্যার ঘটনায় অভিযোগ উঠার পর তাকে স্থায়ীভাবে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
আবরার হত্যার ঘটনার পর সোমবার ইফতিসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করে সবাইকেই পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। তাদের মধ্যে ইফতিই প্রথম স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ায় রাজি হলেন।
প্রসঙ্গত ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ায় খুন হন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে। ভারতের সঙ্গে চুক্তির বিরোধিতা করে শনিবার বিকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন ফাহাদ। এর জের ধরে রোববার রাতে শেরেবাংলা হলের নিজের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে তাকে ডেকে নিয়ে ২০১১ নম্বর কক্ষে বেধড়ক পেটানো হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পিটুনির সময় নিহত আবরারকে ‘শিবিরকর্মী’ হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা চালায় খুনিরা।
তবে আবরার কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না বলে নিশ্চিত করেছেন তার পরিবারের সদস্যসহ সংশ্লিষ্টরা।
হত্যাকা-ের প্রমাণ না রাখতে সিসিটিভি ফুটেজ মুছে (ডিলেট) দেয় খুনিরা। তবে পুলিশের আইসিটি বিশেষজ্ঞরা তা উদ্ধারে সক্ষম হন। পুলিশ ও চিকিৎসকরা আবরারকে পিটিয়ে হত্যার প্রমাণ পেয়েছেন।
এ ঘটনায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলসহ ১৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এ ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে তার বাবা চকবাজার থানায় সোমবার রাতে একটি হত্যা মামলা করেন। বুয়েট কর্তৃপক্ষ একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে। পাশাপাশি গঠন করেছে একটি তদন্ত কমিটিও।
এদিকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ মেলায় বুয়েট শাখার সহসভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১১ জনকে ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।

-নিজস্ব প্রতিনিধি