আবরার হত্যার বিচার দ্রুততম সময়ে: আইনমন্ত্রী

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, আবরার হত্যা মামলার বিচার দ্রুততম সময়ের মধ্যে শেষ করা হবে। তবে কোন আদালতে করা হবে না হবে, তা মামলার অভিযোগপত্র দেওয়ার পরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নোয়াখালীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নতুন ভবন উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

এজাহারে অনেকের নাম নেই—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে আইনমন্ত্রী বলেন, মামলার এজাহার করা হয়েছে। এই মামলার ও হত্যার যে প্রকৃতি, হয়তো অনেকের নাম এজাহারে না-ও আসতে পারে। কিন্তু এজাহার করার পরে একটা তদন্ত হয়, তদন্ত পুলিশ করবে এবং সেই তদন্তে যারা দোষী, তাদের সবার নাম মামলায় যুক্ত হবে।

এর আগে জেলা ও দায়রা জজ সালেহ উদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন আনিসুল হক। এ সময় তিনি বলেন, সব আদালত ভবনকে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হবে। ক্যামেরাগুলো মনিটরিং করা হবে। সাড়ে ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০ তলাবিশিষ্ট ওই আদালত ভবন নির্মিত হয়।

অনুষ্ঠানে নোয়াখালী-৪ আসনের সাংসদ মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরী, নোয়াখালী-৬ আসনের সাংসদ আয়েশা ফেরদাউস, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব গোলাম ছারওয়ার প্রমুখ বক্তব্য দেন।

বিকেলে মন্ত্রী জেলা আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনে আইন পেশায় ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আটজন জ্যেষ্ঠ আইনজীবীকে দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন। এ সময় মন্ত্রী আইনজীবী সমিতির গ্রন্থাগারের বই কেনার জন্য ১০ লাখ টাকা অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দেন।

-নিজস্ব প্রতিনিধি




টাকার পেছনে ছোটায় আইনজীবীদের প্রতি আস্থা হারাচ্ছে মানুষ: রাষ্ট্রপতি

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, আমার মনে হয়ে আইনজীবীদের ওপর থেকে মানুষ আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। তাদের কাছে আইনি সেবা নিতে গিয়ে হয়রানি হয়। কেবল টাকার পেছনে ছোটার যে কালচার তৈরি হয়েছে, তা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। তবেই মানুষ আইনজীবীদের আগের মতো শ্রদ্ধা করবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে কিশোরগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির দেয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, অতীতে রাজনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে আইনজীবীদের যে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা ও ঐতিহ্য ছিল তা অনেকটাই ম্লান হয়ে গেছে। আগে যারা সংসদে এমপি হতেন তাদের একটা বড় অংশই ছিল আইনজীবী। তারা সমাজ ও রাষ্ট্রে নেতৃত্ব দিতেন কিন্তু; বর্তমান সময়ে নানা অবক্ষয়ের কারণে সেটা আর দেখা যায় না।

তিনি পরিসংখ্যান দিয়ে বলেন, ১৯৭০ সালের পার্লামেন্টে আইনজীবীর সংখ্যা ছিল ৫১ ভাগ। অষ্টম সংসদে ছিল মাত্র ৩৩ জন। এখন হয়ত তা আরও কম।

রাষ্ট্রপতি আইনজীবীদের সমালোচনা করে বলেন, আমার মনে হয় কেবল টাকার পেছনে ছোটার কারণে আইনজীবীদের ওপর থেকে মানুষ আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। তাদের কাছে আইনি সেবা নিতে গিয়ে হয়রানি হয়। তবে এই মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তবেই মানুষ আইনজীবীদের আগের মতো শ্রদ্ধা করবে।
-নিজস্ব প্রতিনিধি




আবরার হত্যার বিচার বিভাগী তদন্ত দাবি ড. কামালের

গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার হত্যার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন, মত প্রকাশের কারণে কাউকে পিটিয়ে হত্যা সংবিধানের ওপরে আঘাত।
গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে গণফোরাম আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার বিচারের দাবি ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির পরিপ্রেক্ষিতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে গণফোরাম।
ড. কামাল হোসেন বলেন, আবরার হত্যার ‘তদন্ত করে সত্যিকারের ঘটনা উদ্ঘাটন করতে হবে। এটা কোনো দলীয় বক্তব্য নয়। ১৬ কোটি মানুষের একজন হিসেবে আমি এই দাবি জানাচ্ছি’।
এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘লেজুড়বৃত্তি করা ছাত্ররাজনীতি আমরা কোনোদিনই চাই না। তবে স্বাধীন ছাত্ররাজনীতি থাকতে পারে’।
আবরার হত্যাকা-ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত চান কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘বিচার বিভাগীয় তদন্তের সঙ্গে অন্যরাও থাকতে পারেন’।
দেশের বর্তমান সার্বিক পরিস্থিতিতে আপনার দলের সংসদ সদস্য পদত্যাগ করবে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সেটা দলীয় ফোরামে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে’।
এ সময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী। তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইনের মতো আচরণ করছে। হলে হলে টর্চার সেল। বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইডেন মহিলা কলেজ, ঢাকা কলেজের হোস্টেলগুলোতে টর্চার সেল রয়েছে। টার্গেটে থাকা শিক্ষার্থীকে টর্চার করার আগে দেয়া হয় বিরোধী কোনো সংগঠনের তকমা। এটা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক, রাজনৈতিক ভ-ামি ও কৌশলী প্রতারণা।
অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, সার্বিকভাবে বিশ্লেষণ করলে দেশ ধ্বংসের মুখোমুখি। জনগণের মালিকানা ছিনতাই করে ক্ষমতা দখলের কারণে গণতন্ত্রের শেষ চিহ্নটুকুও মুছে যেতে বসেছে। সুশাসন ও জবাবদিহিতা নেই। শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকার লক্ষ্যে রাষ্ট্রের সব অঙ্গ ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করা হয়েছে। গণতান্ত্রিক ন্যূনতম ব্যবস্থার পরিবর্তে কর্তৃত্ববাদী শাসন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ক্ষমতা যেখানে কেন্দ্রীভূত দুর্নীতির মহোৎসব সেখানে দৃশ্যমান। বর্তমান ভিন্নমত দমন, মিথ্যা মামলা, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা, সভা-সমাবেশে বাধা-নিষেধ, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন তৈরির মাধ্যমে সরকার প্রকাশ্যে জনগণের মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করেছে। দেশে ক্যাসিনো সংস্কৃতি চলছে। মানুষের জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই।
গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক আবু সায়ীদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য মেজবাহ উদ্দিন, মহসীন রশিদ, মোকাব্বির খান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক লতিফুল বারি হামিম, ফরিদা ইয়াসমিন প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
-নিজস্ব প্রতিনিধি




সরকারি কাজে বাধা, ছাত্রলীগ নেতার কারাদন্ড

সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার দায়ে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলায় এক ছাত্রলীগ নেতাকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদ- দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। সাজা পাওয়া ওই ছাত্রলীগ নেতার নাম রোম্মান হোসেন। তিনি গোপীনাথপুর ইউনিয়নের ভিকনী গ্রামের বাসিন্দা। তিনি গোপীনাথপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি।

রোম্মানকে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। রোম্মান হোসেনের দলীয় পরিচয় নিশ্চিত করেছেন আক্কেলপুর উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক খাদেমুল ইসলাম।

ভ্রাম্যমাণ আদালত ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রোম্মান হোসেন দলীয় প্রভাব খাটিয়ে ভিকনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রমে বাধা দিতেন। এ সময় তিনি ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণ করতেন। এ নিয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটি রোম্মানের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠকে বসে মিটমাটের চেষ্টা করেছে। এতেও রোম্মান ক্ষান্ত হননি। সকালে রোম্মান দলবল নিয়ে বিদ্যালয়ে যান। এরপর প্রধান শিক্ষককের সঙ্গে অসদাচরণ ও বিদ্যালয় পরিচালনার কাজে বাধা দেন। প্রধান শিক্ষক বিষয়টি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানান।

ভিকনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাছুদা খানম বলেন, রোম্মান হোসেন আগেও একাধিকবার বিদ্যালয়ে এসে শিক্ষকদের সঙ্গে অসদাচরণ ও কাজে বাধা দিয়েছেন। বিদ্যালয় চলাকালে এসে তিনি আবারও একই আচরণ করছিলেন। এ জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ঘটনাস্থলে এসে রোম্মানকে কারাদ- দিয়েছেন।

প্রধান শিক্ষক মাছুদা খানম বলেন, ‘কারাদ-ের পর রোম্মান হুমকি দিয়ে বলেছেন, জেল থেকে ছাড়া পেয়ে আমাকে দেখে নেবেন।’
আক্কেলপুর উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক খাদেমুল ইসলাম বলেন, রোম্মান তাঁকে জানিয়েছেন, তাঁর বাড়ির পাশেই ভিকনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়টিতে বেলা দুইটার পর ঠিকমতো পাঠদান হয় না। এরই প্রতিবাদ করতে গিয়েছিলেন রোম্মান। এ ঘটনায় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে তদন্ত করা হবে।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের হাকিম ইউএনও জাকিউল ইসলাম বলেন, সরকারি কাজে বাধা দেওয়ায় রোম্মান হোসেনকে এই সাজা দেওয়া হয়েছে।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কিরণ কুমার রায় বলেন, রোম্মানকে দুপুরে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

-নিজস্ব প্রতিনিধি




যেকোনো হুমকি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে হবে: সেনাপ্রধান

সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ বগুড়া সেনানিবাসে আর্মার্ড কোর সেন্টার অ্যান্ড স্কুলে ষষ্ঠ সাঁজোয়া কোর পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।  সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেছেন, যেকোনো হুমকি মোকাবিলায় সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত থাকতে হবে। তিনি গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বগুড়া সেনানিবাসে আর্মার্ড কোর সেন্টার অ্যান্ড স্কুলে ষষ্ঠ সাঁজোয়া কোর পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।

সেনাপ্রধান বলেন, ‘স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও মানুষের আস্থার প্রতীক হিসেবে সেনাবাহিনী প্রতিষ্ঠিত। শান্তি মিশনে আমাদের সদস্যরা সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে সারা বিশ্বে সুনাম অর্জন করেছেন।’

হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীনতার রূপকার, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে সেনাবাহিনীর প্রধান বলেন, সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া কোরের সদস্যরা ‘প্রাণ দেব, মান নয়’ মূলমন্ত্রে উজ্জীবিত। এই কোরের সদস্যরা দেশের অভ্যন্তরীণ যেকোনো দুর্যোগময় মুহূর্তে ও জাতিসংঘে শান্তিরক্ষা মিশনে দক্ষতার সঙ্গে অংশগ্রহণ করেছেন।

জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন, মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে রয়েছে এই কোরের সদস্যদের এক গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রজ্ঞা, বিচক্ষণতা ও দূরদর্শিতায় অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আরও যুগোপযোগী ও আধুনিক হয়ে গড়ে উঠবে বলে তিনি দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এর আগে সেনাপ্রধান ষষ্ঠ সাঁজোয়া কোর পুনর্মিলনী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন এবং অভিবাদন গ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারাসহ আর্মার্ড কোরের অবসরপ্রাপ্ত ও চাকরিরত কর্মকর্তা এবং অন্যান্য পদবির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
-নিজস্ব প্রতিনিধি




ফলোআপ চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর গিয়েছেন কাদের

ফলোআপ চিকিৎসার জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার আবারও সিঙ্গাপুর গিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
দুপুর ১টা ২৫ মিনিটে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে তিনি ঢাকা ত্যাগ করবেন। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের উপপ্রধান তথ্য অফিসার আবু নাছের যুগান্তরকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
২০ মার্চ কার্ডিও থোরাসিক সার্জন ডা. সিবাস্টিন কুমার সামির নেতৃত্বে সিঙ্গাপুর মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ওবায়দুল কাদেরের বাইপাস সার্জারি হয়।
ওই হাসপাতালের চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে স্বাস্থ্য পরীক্ষার উদ্দেশ্যেই আবারও ওবায়দুল কাদের সেখানে যাচ্ছেন। আজ শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টায় তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
২ মার্চ ভোরে শ্বাসকষ্ট শুরু হলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন ওবায়দুল কাদের। সেখানে তার হৃৎপি-ের রক্তনালিতে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। ৪ মার্চ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাকে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে নেয়া হয়।
– নিজস্ব প্রতিনিধি




ফেসবুক স্ট্যাটাসে বহিষ্কার আ’লীগ নেতা যা বললেন

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক চুক্তিগুলো নিয়ে ফেসবুকে লেখা পোস্ট করায় খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য পদ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে ডা. শেখ বাহারুল আলমকে। এর প্রতিক্রিয়ায় তিনি  বলেন, পুরোটাই সভাপতির একতরফা কাজ। অভিযোগ আনতে হলে সভাপতির বিরুদ্ধেই অভিযোগ আনতে হয়। কারণ উনি দলের গঠনতন্ত্র নিয়মনীতি কিছুই মানেন না’।
এর আগে বুধবার রাতে খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের এক জরুরি সভায় ডা. শেখ বাহারুল আলমকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সাথে তাকে স্থায়ীভাবে বহিস্কার কেন করা হবে না এ মর্মে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তবে এ সিদ্ধান্তকে প্রতিহিংসার প্রতিফলন বলে দাবি করেছেন প্রবীন এ আওয়ামী লীগ নেতা।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে  তিনি বলেন, ‘শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ আনতে হলে অবশ্যই অভিযুক্ত সদস্য বা নেতাকে নোটিশ দিতে হয়। কী বক্তব্যে গঠনতন্ত্রের কোন ধারা লঙ্ঘন করা হয়েছে, তা তাকে জানাতে হয়। তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হয়। প্রয়োজন হলে তার বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করতে হয়। এর কোনোটাই জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি করেননি। নির্ধারিত কোনো সভাও ছিল না।
তিনি বলেন, ওইদিন যে সভায় সিদ্ধান্ত হয়, সে সভা পূর্বনির্ধারিত কোন সভাও ছিল না। সভায় আমার বিষয়টি নিয়ে কোনো এজেন্ডাও ছিল না। অন্য একটি বিষয়ে সভা চলছিল। সেখানে থেকে নেতাকর্মীদের ডেকে এনে অগঠনতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পুরোটাই সভাপতির একতরফা কাজ। অভিযোগ আনতে হলে সভাপতির বিরুদ্ধেই অভিযোগ আনতে হয়। কারণ উনি দলের গঠনতন্ত্র নিয়মনীতি কিছুই মানেন না’।
তার স্ট্যাটাসটি হুবহু যুগান্তরের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-
‘ভারত – বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় চুক্তি বলা হলেও বাস্তবে একপক্ষীয় সিদ্ধান্ত – বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থ ও অধিকার চরম উপেক্ষিত
দুর্বল অবস্থানে থেকে বন্ধু-প্রতিম শক্তিধর প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে বৈঠকে -ফলাফল শক্তিধরের পক্ষেই আসে। বাংলাদেশ- ভারত উভয়-পক্ষীয় সমঝোতা স্মারক নাম দেওয়া হলেও বাস্তবে একপক্ষীয় সিদ্ধান্তই মেনে নিতে হয় দুর্বল রাষ্ট্রকে।
ভারত বাংলাদেশ থেকে তার সকল স্বার্থই আদায় করে নিয়েছে। বিপরীতে বাংলাদেশ ভারতের কাছ থেকে এখনও ন্যায্য হিস্যা আদায় করতে পারেনি।
১) দীর্ঘদিনের আলোচিত তিস্তা নদীর পানি বণ্টন এবারের দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় স্থান পায়নি ।
২) ভারতের প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করে কিছু না বললেও তার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ্ হুংকার দিয়েছে নাগরিক পঞ্জীতে বাদ পড়া জনগণকে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হবে। তারপরেও এবারের সমঝোতা চুক্তিতে ‘অভ্যন্তরীণ’ অজুহাতে বিষয়টি স্থান পায়নি।
৩) বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গা শরণার্থী মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে প্রত্যাবসনের বিষয়ে ভারত কিছু বলে নি ।
৪) তিস্তা নদীর পানি বণ্টন নিয়ে চুপ থাকলেও বাংলাদেশ অংশের ফেনী নদীর পানি ত্রিপুরা রাজ্যের পানীয় জল হিসাবে প্রতিদিন ১.৮২ কিউসেক টেনে নেবে ভারত । এ বিষয়ে বাংলাদেশ সম্মত হয়েছে।
৫) বাংলাদেশের জনগণের তরল গ্যাসের চাহিদা পূরণের ঘাটতি থাকলেও ভারতে তরল গ্যাস রপ্তানির সিদ্ধান্ত হয়েছে এবং যৌথভাবে সে প্রকল্প উদ্বোধনও হয়েছে।
৬) চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ভারত কীভাবে ব্যবহার করবে, তা নির্ধারিত হলেও বাংলাদেশের জন্য ব্যবহারযোগ্য ভারতের কোনও বন্দর সেই তালিকায় ছিল না।
অমানবিক আচরণের শিকার হয়েও বাংলাদেশ পানি ও গ্যাস সরবরাহ দিয়ে মানবিকতার প্রদর্শন করেছে। বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থ ও অধিকার উপেক্ষিত রেখে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষ হয়েছে।
শক্তিধর প্রতিবেশীর আধিপত্যের চাপ এতোই তীব্র যে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বজায় থাকবে কিনা আশংকা হয়। কারণ ভারতের চাপিয়ে দেওয়া সব সিদ্ধান্ত বাংলাদেশকে মেনে নিতে হচ্ছে।’
-নিজস্ব প্রতিনিধি




আলমডাঙ্গায় ভ্রাম্যমাণ আদালতে দুইজনের ৭দিনের জেল

যৌন-উত্তেজক এ্যালকোহল জাতীয় পানিয় বিক্রয়ের দায়ে ২ জনকে ৭ দিনে বিনাশ্রম কারান্ডাদেশ প্রদান করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬ টার দিকে আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহি অফিসার লিটন আলী ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।

জানাগেছে, আলমডাঙ্গার পৌর এলাকার গোবিন্দপুর গ্রামের মৃত-আ: বারীর ছেলে মজিবর রহমান (৫২) দীর্ঘদিন যাবৎ উপজেলা পরিষদের সামনে চায়ের ব্যবসা চালিয়ে আসছেন। চায়ের ব্যবসার পাশাপাশি গোপনে তিনি যৌন উত্তেজক এ্যালকোহল পানিয় বিক্রয় করে আসছিলো। এমন সংবাদের ভিত্তিতে আলমডাঙ্গা থানাপুলিশের সহযোগিতায় উপজেলা নির্বাহি অফিসার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে। ভ্রাম্যমাণ আদালত মজিবরের দোকান তল্লাশি করে যৌন উত্তেজক এ্যালকোহল পানিয় উদ্ধার করে।

এ সময় আটকৃত মজিবরের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত আলমডাঙ্গার ফরিদপুর বাজারের সালেহিন হোমিও হলে অভিযান চালায়।অভিযান পরিচালনার সময় দোকানেমাত্রাতিক যৌন উত্তেজক এ্যালকোহল পানিয় উদ্ধার করে এবং দোকান মালিক আজিবর রহমানের ছেলে তৌমুর সালেহিন (পল্লব)কে আটক করে।সন্ধ্যা ৭টার দিকে পৃথক স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালতে মাধ্যমে আটকৃত দুইজনকে যৌন-উত্তেজক এ্যালকোহল জাতীয় পানিয় বিক্রয়ের দায়ের ৭ দিনে বিনাশ্রম কারান্ডাদেশ প্রদান করেন।
– আলমডাঙ্গা প্রতিনিধি




মুজিবনগরে বসত ঘরে আগুন লেগে নিঃস্ব মল্লিক শেখ

মুজিবনগর উপজেলার সোনাপুর মাঝপাড়া গ্রামের মৃতঃ হোসেন শেখের ছেলে মল্লিক শেখ (৭০)। একটা হাত প্রতিবন্ধি তার।ঠিকমত কাজও করতে পারে না।ছেলারা সবাই আলাদা হয়ে নিজের নিয়ে ব্যাস্ত।মজিদ শেখ ও তার স্ত্রী মাঠ কুড়িয়ে তাদের সংসার চালায়। মাঠে যেয়ে ধান,গম, ভ্ট্টূা, পেয়াজ কুড়িয়ে নিয়ে এসে সেগুলো বিক্রি করে চলে তাদের সংসার। সরকারী খাস জমিতে একটা ছোট কুড়ে ঘর করে বসবাস করতো তারা। তাদের ঘরের সাথেই একটি ছোট ছাগলের ঘর।

প্রতিদিনের ন্যায় বুধবার সন্ধার আগে তিনি ছাগলের কাছে সাজাল দিতে যায়। সাজাল দেওয়ার সময় আগুনের ফুলকি উড়ে কোন ভাবে ঘরের পাশে রাখা পাটখড়িতে লেগে যায়। তার কয়েক মিনিটের মধ্যেই আগুনের লেলিহান শিখা পুড়ো ঘরে লেগে গেলে ভয়াভহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে । গ্রামের মানুষ একত্রিত হয়ে ঘন্টা ব্যাপী পানি ঢেলে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনতে সক্ষম হয়। এর মধ্যে ঘরের ভিতর থাকা সমস্ত মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে যায়। আগুনে তার একটি মাত্র ছাগলও মারা যায়।

স্থানীয়রা জানান,মল্লিক শেখ খুব অসহায় একজন মানুষ। স্বামি-স্ত্রী মাঠ কুড়িয়ে ধান,গম, ভ্ট্টূা, পেয়াজ কুড়িয়ে যেটুকু পাই। সেগুলো সব বিক্রি করে চলে তাদের সংসার। কিন্তু এমন একটা নির্মম পরিহাস তাদের জন্যে আরো দুঃখ বয়ে আনলো।নিজেরাই ঠিকমত চলতে পারে না। একবেলা খেয়ে একবেলা না খেয়ে দিন কাটাই। কিন্তু একটা ঘর তৈরি করতে তো অনেক টাকার বিষয়। যেখানে ঠিকমত নিজেদের খাবরই জোগার করতে পারে না সেখানে এত টাকা খরচ করে নতুন করে ঘর তৈরি করবে কিভাবে। তবে সরকার থেকে তাদের জন্য যদি সহযোগীতা করা হয় তাহলে হয়তো তারা একটু মাথা গোঁজার ঠাই পাবে।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বাগোয়ান ইউপি চেয়ারম্যান আয়ূব হোসেন বলেন, মল্লিক শেখ যাতে একটা ঘর তৈরি করার জন্য সু্বধিা পায় সে জন্যে আমার ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে তাকে সর্বান্তক সহযোগীতা করবো।
– মুজিবনগর অফিস




শক্তিমান প্রতিবেশীকে খুশি করে মসনদ টিকিয়ে রাখার ব্যর্থ চেষ্টা

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে ‘দেশের স্বার্থ হানিকর সব চুক্তি’ বাতিল চেয়েছে বিএনপি। সরকারের সমালোচনা করে দলটি বলেছে, এ সব চুক্তি নিজ দেশ ও জনগণের স্বার্থ বিকিয়ে দিয়ে শক্তিমান প্রতিবেশীকে খুশি করে ক্ষমতার মসনদ টিকিয়ে রাখার সাময়িক ও ব্যর্থ চেষ্টা মাত্র।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির নেতারা এক আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করে দেশের স্বার্থ বিরোধী সব চুক্তি বাতিল দাবি করেন। স্থায়ী কমিটির জ্যেষ্ঠ সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন লিখিত বক্তব্য পড়েন।
বক্তব্যের শুরুতেই মোশাররফ বলেন, জনগণের ভোটে নির্বাচিত না হওয়ায় জনগণের কাছে দায়বদ্ধ নয়, এমন একটি শক্তি যখন কৌশলে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে— তখন তার পরিণতি দেশ ও জনগণের জন্য কতটা ভয়াবহ ও ক্ষতিকারক হয়, তার সাম্প্রতিক প্রমাণ প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের ফলাফল। তিনি বলেন, এ সফরে বাংলাদেশ ফেনী নদীর ১ দশমিক ৮২ কিউসেক পানি ভারতকে ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে, বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূলে যৌথ পর্যবেক্ষণের জন্য রাডার বসানোর এবং ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে এলপিজি গ্যাস সরবরাহের নিশ্চয়তা দিয়েছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আগেরবার ভারত সফর শেষে দেশে ফিরে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, আমরা যা দিয়েছি তা ভারত চিরদিন মনে রাখবে। তাহলে এবার আরও এত কিছু দেওয়ার কি প্রয়োজন ছিল? মোশাররফ বলেন, বিদেশিদের গ্যাস দিতে রাজি হননি বলে ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসতে পারেননি। তাহলে এবার আমদানি করা ডিউটি ফ্রি এলপিজি দেওয়ার উদ্দেশ্য কী?
খন্দকার মোশাররফ বলেন, অথচ বহু বছর ধরে তিস্তা এবং ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা পাওয়ার ব্যাপারে শুধুই আশ্বাস চলছে। আসামের নাগরিক পঞ্জির পরিপ্রেক্ষিতে কয়েক লাখ আসামবাসীকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে ভারদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ আসাম রাজ্য ও কেন্দ্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের স্পষ্ট হুমকির মুখে দুই প্রধানমন্ত্রীর যৌথ বিবৃতিতে এ ব্যাপারে ইতিবাচক কোনো স্পষ্ট প্রতিশ্রুতির উল্লেখ নেই। ভারতে পাটজাত দ্রব্যসহ অন্যান্যে পণ্য রপ্তানির ওপর আরোপিত অন্যায় বাধা অপসারণে নিশ্চয়তা আদায় করতেও সরকার ব্যর্থ হয়েছে।
বিএনপি নেতা মোশাররফ বলেন, চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ায় বাংলাদেশের অবকাঠামো, নাগরিক পরিবহন চলাচল এবং অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতির নিশ্চিত সম্ভাবনা রয়েছে। সমুদ্র উপকূলে যৌথ নজরদারির ফলে জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বলেন, দেশের স্বার্থ অনিশ্চয়তায় ঝুলিয়ে রেখে অন্যের স্বার্থ পূরণ করা সরকারের নতজানু নীতির প্রমাণ।
কারবালা ঠেকাতে দেশের সর্বনাশ
ফেনী নদীর পানি চুক্তির সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ফেনী নদী যৌথ নদী ছিল না। বর্তমান সরকার আরও ৬টি যৌথ নদীর সঙ্গে ফেনী নদীর নাম সংযুক্ত করে এবং এ সব নদীর পানি বণ্টন দিয়ে আলোচনায় রাজি হয়। এবার ফেনী নদীর পানি ভারতের একটি শহরে দেওয়ার চুক্তি হলো।
ফেনী নদীর এই পানি না দিলে সাব্রুম শহর কারবালা হয়ে যেত’ সম্প্রতি বিবিসিকে দেওয়া পররাষ্ট্রসচিবের এ মন্তব্যের উল্লেখ করে মোশাররফ বলেন, কারবালা কারওরই কাম্য নয়। কিন্তু বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিবের তো প্রথমে দেশের জনগণের স্বার্থ দেখার কথা। ফেনী নদীতে শুকনা মৌসুমে পানির অভাবে চাষাবাদের ক্ষতি, মুহুরি প্রকল্প অকার্যকর হওয়ার নিশ্চিত সম্ভাবনা দেখেও তিনি ও তাঁর সরকার সাব্রুমকে কারবালা হতে না দিতে যতটা উদ্যোগী,Ñনিজের দেশের সর্বনাশ তাঁদের কাছে ততই মূল্যহীন। এটা কোনো দেশপ্রেমিক ব্যক্তি কিংবা সরকারের অবস্থান হতে পারে না।
‘ঠাকুর শান্তি পুরস্কার’ ছাড়া কী পেলাম?
ভারতে এলপিজি রপ্তানি চুক্তির বিরোধিতা করে বিএনপি বলেছে, বাংলাদেশ এলপিজি আমদানি করে। প্রতিবেশীর প্রয়োজনে তা রপ্তানির জন্য ইতিমধ্যে ওমেরা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড ও বেক্সিমকো এলপিজি ইউনিটকে লাভবান করার এই উদ্যোগ ব্যক্তি ও গোষ্ঠী বিশেষকে লাভবান করবে, দেশকে নয়। এতে ভারতের প্রায় দেড় হাজার কিলোমিটার পথ এখন মাত্র ২০০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে এলপিজি গ্যাস ভারত পৌঁছাবে। ভারতকে এই সুবিধা দেওয়ার বিনিময়ে আমরা ‘ঠাকুর শান্তি পুরস্কার’ ছাড়া কী পেলাম?
মোশাররফ বলেন, আগেরবার ভারত সফর শেষে দেশে ফিরে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, আমরা যা দিয়েছি তা ভারত চিরদিন মনে রাখবে। তাহলে এবার আরও এত কিছু দেওয়ার কি প্রয়োজন ছিল? তিনি বলেছেন, বিদেশিদের গ্যাস দিতে রাজি হননি বলে ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসতে পারেননি। তাহলে এবার আমদানি করা ডিউটি ফ্রি এলপিজি দেওয়ার উদ্দেশ্য কী?
গঙ্গা চুক্তি: অসত্য তথ্য
ক্ষমতায় থাকতে বেগম খালেদা জিয়া ভারত সফরের সময় গঙ্গা নদীর পানির কথা বলতে ‘ভুলে’ গিয়েছিলেন বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এটাকে ‘অসত্য ও ব্যর্থতা ঢাকার অপচেষ্টা’ বলে মন্তব্য করে মোশাররফ বলেন, ‘ওই সফর শেষে প্রকাশিত যৌথ ইশতেহারে বলা হয়, “সমতা ভিত্তিক দীর্ঘ মেয়াদি সমন্বিত প্রক্রিয়ায় দুই দেশের জনগণের সর্বোচ্চ স্বার্থে পানি বণ্টনের বিষয়ে উভয় পক্ষ একমত হন।’ তিনি প্রশ্ন তোলেন, কোনো আলোচনা না হলে যৌথ ইশতেহারে এই বক্তব্য থাকল কী করে?
মোশাররফ বলেন, প্রকৃতপক্ষে ১৯৭৫ সালের আগে গঙ্গার পানি নিয়ে কোনো চুক্তি হয়নি, সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছিল। চুক্তি হয়েছে ১৯৭৭ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আমলে। এই চুক্তিতে যে গ্যারান্টি ক্লজ ছিল, তা ১৯৯৬ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক স্বাক্ষরিত চুক্তি থেকে বাদ দেওয়া হয়। যার ফলে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আবরার বাংলাদেশের কণ্ঠস্বর
বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিএনপির স্থায়ী কমিটি। তারা বলেছে, রাতের অন্ধকারে ভোট ডাকাতির অবৈধ সরকার দেশের স্বার্থ ও সার্বভৌমত্ব বিরোধী চুক্তি করেছে। এর প্রতিবাদ করায় জীবন দিতে হয়েছে আবরারকে। আবরারের পুরো বক্তব্যটি বাংলাদেশের স্বার্থের পক্ষে, তাই আবরার বাংলাদেশের কণ্ঠস্বর। তাঁর এই নির্মম মৃত্যু বৃথা যেতে পারে না। বৃথা যেতে দেওয়া হবে না, দেশের জনগণ বৃথা যেতে দেবে না।
মোশাররফ বলেন, দেশের স্বার্থবিরোধী এ সব চুক্তির প্রতিবাদে জনগণ ফুঁসে উঠেছে। সচেতন ছাত্র সমাজ আন্দোলনে সোচ্চার হয়েছে। সমালোচনায় ভীত সরকার তাদের দলীয় লাঠিয়ালদের দিয়ে ফেসবুকে প্রতিবাদী পোস্ট দেওয়ার জন্য বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরারকে খুন করেছে। কিন্তু এই নৃশংস হত্যাকা- আন্দোলনের আগুনে ঘৃতাহুতি দিয়েছে মাত্র কাউকে ভীত করতে পারেনি। জনগণ মুক্তিযুদ্ধের সোনালি ফসল গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে এই দুরাচারী শাসকের পতন চায়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ, মো. শাহজাহান, যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন প্রমুখ।

ছবি-৭
সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই কমবেশি র‌্যাগিং আছে: শিক্ষামন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিনিধি
দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই কমবেশি র‌্যাগিং আছে উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, সরকারের একক প্রচেষ্টায় র‌্যাগিং বন্ধ করা সম্ভব না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক, পরিবার—সবার ভূমিকা রয়েছে। র‌্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে বৈশ্বিক শিক্ষা পরিবীক্ষণ (জিইএম) প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন। ‘অভিবাসন, বাস্তুচ্যুতি এবং শিক্ষা: দেয়াল নয়, প্রয়োজন সেতুবন্ধন’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের হত্যাকা-ের ঘটনায় আমরা ক্ষুব্ধ, লজ্জিত। একজন মেধাবীর এমন নৃশংস হত্যাকা- মেনে নেওয়া যায় না। হত্যায় জড়িত হিসেবে যাদের নাম এসেছে, তাদের দ্রুত ধরা হয়েছে। অবশ্যই দ্রুততম সময়ের মধ্যে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে।’
বুয়েটে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীদের নির্যাতন করলেও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি—শিক্ষার্থীদের এমন অভিযোগের বিষয়ে সাংবাদিকেরা শিক্ষামন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন। জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বুয়েটে ছাত্রলীগসহ অন্য ছাত্রসংগঠনগুলোও শক্তিশালী। শুধু সরকারসংশ্লিষ্ট বলে ছাত্রলীগ এমন করছে, সেটি বলাও গ্রহণযোগ্য না। যেকোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে র‌্যাগিং বন্ধে সম্মিলিত উদ্যোগ নিতে হবে।
বুয়েটের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করছেন—এ বিষয়ে সরকারের ভাবনা কী, তা জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, একজন উপাচার্য থাকবেন কি না, তাঁকে অপসারণ করা হবে কি না, সেটি ভিন্ন ব্যাপার। কিন্তু যাঁরা এখন আন্দোলন করছেন, তাঁরা দীর্ঘদিন এমন অন্যায় মেনে নিয়েছেন এবং চলতে দিয়েছেন। অন্যায় প্রতিরোধে নৈতিকতার জায়গা থেকে তাঁরা কী করেছেন। শিক্ষকেরা আগে সরব হলে এমন মর্মান্তিক ঘটনা হয়তো প্রতিরোধ করা যেত।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সোহরাব হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মুনশী শাহাবুদ্দীন আহমেদ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জি এম হাসিবুল আলম, ঢাকাস্থ ইউনেসকোর প্রধান বিয়াট্রিস কালদুন, বাংলাদেশ ইউনেসকো জাতীয় কমিশনের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল মনজুর হোসেন প্রমুখ।
– নিজস্ব প্রতিনিধি