ভেড়ামারায় গাঁজা সহ মাদক ব্যবসায়ী আটক

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থানা পুলিশের অভিযানে গাঁজা সহ বিদ্যুৎ (৩০) নামের এক মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার সকালে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার ধরমপুর ইউপির হাওয়াখালী মাঠ এলাকা থেকে ১ কেজি গাঁজা সহ ১ মাদক বিক্রেতা কে আটক করতে সক্ষম হয়েছে ভেড়ামারা থানা পুলিশ। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে থানার দায়িত্ব প্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) শেখ ওবায়দুল্লাহ’র নির্দেশে এস আই রুবেল’র নেতৃত্বে সঙ্গীয় ফোর্স সফল এই অভিযানের নেতৃত্ব দেন। আটক মাদক ব্যাবসায়ী বিদ্যুৎ জেলার দৌলতপুর উপজেলার জয়রামপুর গ্রামের চাঁন শেখ’র ছেলে। এ ব্যাপারে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।




গড়াই এ পানি কমছে, বাড়ছে সাপের উপদ্রব

কুষ্টিয়া জেলার পদ্মা ও গড়াইতে পানি কমতে শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার স্থিতিশীল অবস্থায় থাকার পর শুক্রবার বিকেল থেকে পানি কমতে শুরু করে। শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত পদ্মার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে ৪ সেন্টিরমিটার পানি কমে। বর্তমানে পদ্মায় বিপদ সীমার ৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। তবে শনিবার সকাল থেকে আবারও পানি স্থিতিশীল রয়েছে। পদ্মার সঙ্গে সঙ্গে কমতে শুরু করেছে পদ্মার অন্যতম শাখা মাথাভাঙ্গা নদীর পানিও। শনিবার সন্ধ্যার মধ্যে পানি বিপদ সীমার নিচে নেমে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অন্য দিকে শহরের কোলঘেঁষা প্রবাহিত গড়াই নদীর পানিও কমতে শুরু করেছে। গড়াই রেলসেতু পয়েন্টে শনিবার সকাল ৯ টায় ১২ দশমিক ৪১ সেঃ মিঃ ছিল। এখানে বিপদ সীমা ১২ দশমিক ৭৫ সেঃ মিঃ। শুক্রবার এ পয়েন্টে পানি ১২ দশমিক ৪৩ সেঃ মিঃ ছিল। এ দিকে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে বন্যাকবলিত মানুষের দুর্ভোগ অব্যাহত রয়েছে। পানি বাহিত রোগসহ এলাকায় ব্যাপক ভাবে বিষাক্ত সাপের উপদ্রব বেড়ে গেছে। প্রতিদিনই পানিতে ভেসে আসছে বিভিন্ন প্রজাতির বিষধর সাপ। এতে দুর্ভোগের সঙ্গে সাপ আতঙ্ক দেখা দিয়েছে পানিবন্দি মানুষের মাঝে। বন্যা কবলিতরা জানান, দৌলতপুর উপজেলার পদ্মার তীরবর্তী চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ৩৮ গ্রামের ১০ হাজার পরিবারের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ গত ১০ দিন ধরে পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। প্রায় ৩ হাজার পরিবারের বাড়ি ঘরে পানি ঢুকেছে। বাড়ি ঘরে পানি উঠে আসায় বিষাক্ত সাপও ভেসে আসছে। বিভিন্ন প্রজাতির সাপ ঘরের চালায়, গাছপালায় ও পানিতে ভেসে বেড়াচ্ছে। চিলমারী ইউনিয়নের খারিজাথাক গ্রামের বাসিন্দা ইয়াসিন আলী জানান, প্রতিদিনই বিভিন্ন প্রজাতির বড় বড় সাপ দেখা যাচ্ছে। দিনের আলোতে সাপ গুলোকে দেখা গেলেও রাতের অন্ধকারে কখন ঘরের মধ্যে চলে আসছে তা বোঝা যাচ্ছে না। তাই রাতের বেলায় সাপের ভয়ে নির্ঘুম রাত কাটাতে হচ্ছে। বৃহস্পতি ও শুক্রবার গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি দৌলতপুরের বন্যা কবলিত এলাকায় দুর্ভোগ বাড়িয়েছে। মানুষের মধ্যে পানিবাহিত বিভিন্ন রোগ বালাই দেখা দিয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকায় সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে বৃদ্ধ ও শিশুরা। গত এক সপ্তাহে উপজেলায় বন্যার পানিতে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ দিকে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। সরকারি ভাবে ছাড়াও বিভিন্ন সংস্থা ও সংগঠন বন্যার্তদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসছে। পুলিশের পক্ষ থেকে কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাতের নেতৃত্বে শনিবার চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকায় বন্যার্তদের মাঝে দুই হাজার প্যাকেট ত্রাণ বিতরণ করা হয়। এ সময় পুলিশ সুপারের স্ত্রী শারমিন আক্তার, এডিশনাল এস পি এস এম আল বেরুনী ও দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম আরিফুর রহমান সহ জেলা পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। শুক্রবার সংসদ সদস্য আ ক ম সারওয়ার জাহান বাদশাহ দৌলতপুরের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে ত্রাণ ও দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান এনামের সঙ্গে সাক্ষাত করলে প্রতিমন্ত্রী বর্ন্যাতদের জন্য তাৎক্ষণিক ১০০ টন চাল ও নগদ ৫ লাখ টাকা বিশেষ বরাদ্দ দেন। দৌলতপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাইদুর রহমান বলেন, দুর্গত এলাকায় প্রতিদিন ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই চিড়া, বিস্কুট, তেল, নুডুলস সম্বলিত ৬ হাজার প্যাকেট ও ২২ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। আরও ২০ মেট্রিক টন চাল ও এক হাজার মেট্রিক টন শুকনা খাবার বরাদ্দ পাওয়া গেছে। শনি ও রোববার সে গুলো বিতরণ করা হবে। এ ব্যাপারে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মোঃ আসলাম হোসেন জানান, পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙ্গন দেখা দেয়ার আশংকা থাকায় পর্যাপ্ত শুকনা খাবার, ত্রাণ রয়েছে। সার্বক্ষণিক দু জন ম্যাজিষ্ট্রেট নিয়োজিত রয়েছে। সাথে ট্রলারে বিজিবি টহল টিম রয়েছে। ইতিমধ্যে ৫৯ মেঃ টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। ত্রাণ বিতরণে কোন অনিয়ম হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান। এ দিকে পদ্মা নদীতে গত ২৪ ঘণ্টা তেমন পানি বৃদ্ধি পায়নি। বুধবার বিকালে শূন্য দশমিক ১ সেন্টিমিটার পানি কমে বিপদ সীমার শূন্য দশমিক ৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, পদ্মায় বর্তমানে ১৪ দশমিক ৩২ সেন্টিমিটার দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। গত দুই দিন ধরে পানি স্থিতিশীল রয়েছে। তাদের ধারণা, পানি আর বৃদ্ধি নাও হতে পারে। তবে প্লাবিত এলাকা থেকে পানি নেমে যেতে আরও কিছুদিন সময় লাগতে পারে। গত এক সপ্তাহে এ উপজেলায় বন্যার পানিতে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার জেলা সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে মেডিকেল টিম বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে দুর্গতদের খোঁজ খবর নিয়েছেন। এ ছাড়াও কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কালোয়া, কোমরকান্দি ও কল্যাণপুর ভাঙনের কবলে পড়েছে। শিলাইদহ কুঠিবাড়ি রক্ষা বাঁধের ৩০ মিটার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভেঙ্গে যাওয়া অংশ সিসি ব্লক এবং জিও ব্যাগ ফেলে মেরামতের কাজ শেষ করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। পাশাপাশি কুমারখালী উপজেলার মহেন্দপুর এলাকাতেও বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। ফসলের পাশা পাশি এ সব এলাকার বাড়ি-ঘরের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কুষ্টিয়া-৪ আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জর্জ ইতো মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে বন্যা কবলিতদের ত্রাণ সহায়তা দিয়েছেন।




আলমডাঙ্গার কলা কেন্দ্র পরিদর্শনে সোলায়মান হক ছেলুন জোয়ার্দ্দার

আলমডাঙ্গার কলা কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন চুয়াডাঙ্গা ১আসনের সংসদ সদস্য সোলায়মান হক ছেলুন জোয়ার্দ্দার। গতকাল শনিবার সকাল ১০টায় উপজেলা প্রাঙ্গণে অবস্থিত কলা-কেন্দ্র পরিদর্শনের পূর্বে প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তা ও শিল্পিরা ফুল দিয়ে বরণ করেন।
এম পি ছেলুন জোয়াদ্দার ওই প্রতিষ্ঠানের শিল্পিদের নিকট প্রায় ২ ঘন্টা নৃত্য, আবৃতি ও গান শোনেন। তিনি বলেন, আমাদের সমাজ থেকে সাংস্কৃতিক বৈচিত্র হারিয়ে যাচ্ছে। ঝিমিয়েপড়া সাংস্কৃতিকে জাগিয়ে তুলতে চায় সরকার। এর মাধ্যমে তরুণ ছেলে মেয়েরা সমাজকে বিপথগামী হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে একটি নিরাপদ দেশ উপহার দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এ লক্ষ্যে দেশব্যাপী সাংস্কৃতিক কার্যক্রম প্রসারে সুযোগ-সুবিধা বাড়ছে।
আলমডাঙ্গা কলা কেন্দ্রের কলা কৌশুলি ও শিল্পিদের তড়িৎ উদ্যেগের কারণে দেশের খ্যাতিপূূূূূর্ণ শিল্পিদের তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বর্তমান সরকারের নিকট থেকে আলমডাঙ্গা শিল্পিবৃন্দরা অনেক পুরস্কার প্রাপ্তি হয়েছে। আরো এগিয়ে নিতে হবে চুয়াডাঙ্গা জেলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে। তিনি আরো বলেন, আলমডাঙ্গায় সাংস্কৃতি শিল্পকে টিকিয়ে রাখার জন্য দ্রুত একটি কলা-কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। এখন থেকে তরুন -তরুনিরা শিল্প চর্চা করে জেলার আরো নাম উজ্জল করবে।
আলমডাঙ্গার কলা কেন্দের প্রতিষ্ঠার সভাপতি ইকবাল হোসেনের সভাপতিত্বের সম্পাদিকা রেবা রাণী সাহার পরিচালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলার ১ আসনের এমপি ছেলুন জোয়াদ্দার ,বিশেষ অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদুজ্জামান লিটু বিশ^াস, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান এ্যা. সালমুন আহম্মদ ডন, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন, পৌর আ.লীগের সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, থানার অফিসার্স ইনচার্জ আসাদুজ্জামান মুন্সি, আলমডাঙ্গা সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি আশরাফুল ইসলাম, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি নয়ন সরকার, পিন্টু, সুরুজ, টগর, শাকিব প্রমুখ।




সন্ত্রাসী জিসানকে দেশে আনার কার্যক্রম শুরু : আইজিপি

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে গ্রেফতার শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানকে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। দুবাইয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্দী বিনিময় চুক্তি না থাকলেও কূটনৈতিক ও আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাকে আনা হবে।
গতকাল শনিবার সাংবাদিকদের একথা জানান আইজিপি ড. জাবেদ পাটোয়ারী। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘোষিত দেশের গত এক দশকের শীর্ষ ২৩ সন্ত্রাসীর একজন হলো জিসান। তাকে ধরিয়ে দেয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিল।
এর আগে গত বুধবার রাতে জিসানকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানান পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো) মহিউল ইসলাম।
মহিউল ইসলাম বলেন, ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দুবাই কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশকে জানিয়েছে। এছাড়া দুবাই কর্তৃপক্ষ তাকে (জিসানকে) যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেও জানান তিনি।




ঢাবিতে সুযোগ পাওয়া সেই জমজ বোনের দায়িত্ব নিলেন ডিসি

বাগেরহাট জেলা প্রশাসকের সঙ্গে ঢাবিতে চান্সপ্রাপ্ত মেধাবী জমজ বোন সাদিয়া আক্তার সুরাইয়া ও নাদিরা ফারজানা সুমাইয়া।
বাগেরহাট শহরের হরিণখানা এলাকার জমজ বোন সাদিয়া আক্তার সুরাইয়া ও নাদিরা ফারজানা সুমাইয়ার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছেন বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ।
গতকাল শনিবার দুপুরে বাগেরহাট সার্কিটে হাউসে ওই দুই শিক্ষার্থী ও তার মা সাহিদা বেগমের সঙ্গে কথা বলে তিনি এ আশ্বাস দেন। এসময় বাগেরহাট সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সরদার নাসির উদ্দিন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল হাসান, মোহাম্মাদ শাহজাহান, রাহাত উজ্জামান, বাগেহরহাট পৌর সভার ২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোল্লা নাসির উপস্থিত ছিলেন।

পৌর কাউন্সিলর মোল্লা নাসির উদ্দিন জানান, আমার ওয়ার্ডের হরিনখানা এলাকার এই দুই মেধাবী শিক্ষার্থী ঢাবিতে সুযোগ পাওয়ার বিষয়টি প্রথমে ফেসবুকে পোস্ট দেয়। বিষয়টি অবগত হবার পর শুক্রবার তাদের বিষয়ে আলোচনার সূত্রপাত হয়।
একপর্যায়ে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. মানুনুর রশীদ দেখতে পেয়ে তাদের গতকাল শনিবার সার্কিট হাউজে ডেকে নিয়ে সহায়তার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
কাউন্সিলর নাসির বলেন, বাগেরহাট পৌরসভার তহবিল থেকে মেয়র খান হাবিবুর রহমানও এ দুই শিক্ষার্থীর পড়াশোনার জন্য ৫০ হাজার টাকা দেওয়ায় ঘোষণা দিয়েছেন। আমরা পৌরসভার কাউন্সিলর সবার সর্বসম্মতিক্রমেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
গতকাল শনিবার সার্কিট হাউজে উপস্থিত হলে বাগেরহাট সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সরদার নাসির উদ্দিন মেধাবী ওই দুই শিক্ষার্থীকে দু’টি সিম্পনী আলফা মোবাইল ফোনও উপহার দেন।
বাগেরহাট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক সরদার নাসির উদ্দিন বলেন, বিষয়টি জানতে পেরে আমি বাগেরহাট-২ (সদর ও কচুয়া উপজেলা) আসনের সংসদ সদস্য শেখ সারহান নাসের তন্ময়কে জানিয়েছি। তিনি মেধাবী এই দুই ছাত্রী নির্বিঘ্নে যাতে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারেন সে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেছেন। আমরা তাদের সহযোগিতার জন্য পাশে রয়েছি।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, তাদের মায়ের সঙ্গে কথা বলেছি তাদের ভর্তির জন্য কত টাকা প্রয়োজন এবং তাদের আর কী সাহায্য দরকার সেটা জানতে চেয়েছি। এ বিষয় সাহিদা বেগম আমাকে বলেছেন দ্রুতই খোঁজ নিয়ে জানাবে। আমরা তার দুই কন্যার জন্য জেলা প্রশাসন থেকে সহযোগিতার কথা নিশ্চিত করেছি তাকে।
বাগেরহাট সদর উপজেলার হরিনখানা এলাকার রাজমিস্ত্রি দিনমজুর মহিদুল হাওলাদারের জমজ মেয়ে সাদিয়া আকতার সুরাইয়া ও নদিরা ফারজানা সুমাইয়া। অর্থাভাবে টিউশনি করিয়ে পড়াশোনা চালিয়েছেন তারা। মাধ্যমিকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত বাগেরহাট আল ইসলাহ একাডেমিতে ও পরে বাগেরহাট আদর্শ বিদ্যালয় থেকে বাণিজ্য বিভাগে সুরাইয়া ৪.৮৬, সুমাইয়া ৪.৯১ গ্রেড পেয়ে এসএসসি পাস করেন।
বাগেরহাট সরকারী পিসি কলেজ এইচএসসিতে জমজ এ দুই বোনই জিপিএ গোল্ডেন পান।
ঢাবিতে ভর্তি পরীক্ষায় গ-ইউনিটে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (গ-ইউনিট) বাণিজ্য অনুষদে সুমাইয়ার মেধাক্রম ৮৪৬ এবং সুরাইয়ার মেধাক্রম ১১৬৩।
মেধাবী জমজ দুই কন্যার গর্বিত মা সাহিদা বেগম বলেন, অর্থকষ্টে থাকার পরও সাধ্যমত তাদেও পড়ালেখা করার জন্য চেষ্টা করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়ার পর অনেক চিন্তিত ছিলাম- কী করব তাদের বিষয়ে। তারা ফেসবুকে প্রথমে বিষয়টি সকলের দৃষ্টি আর্কষণের জন্য চেষ্টা করেছে। তাতে সাড়া দিয়ে জেলা প্রশাসক, পৌর মেয়র , উপজেলা চেয়ারম্যানসহ যারা ইতিমধ্যে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তাদের প্রতি চির কৃতজ্ঞ থাকবো।
ছবি-১৪
সরকারের সাথে সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির সমঝোতা হতে পারে না: খালিদ মাহমুদ
নিজস্ব প্রতিনিধি
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, মসজিদ, মন্দির ও এতিমের টাকা আত্মসাত অপরাধের কোনো ক্ষমা নেই। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া শপথ গ্রহণের পরেও এতিমের টাকা আত্মসাত করেছেন। খালেদা জিয়া ছাড়া বাংলাদেশের ৪৮ বছরের ইতিহাসে কারো বিরুদ্ধে এতিমের টাকা আত্মসাতের মামলা হয়নি। খালেদা জিয়ার জামিনের জন্য রাজনৈতিক প্রপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে। বেগম খালেদা জিয়ার জামিন দেয়ার ইখতিয়ার একমাত্র আদালতের। বর্তমান সরকার বিচার বিভাগকে স্বাধীন করে দিয়েছে। শেখ হাসিনার সরকারের সাথে কোন অপরাধীর, কোন সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির কোন প্রকার সমঝোতা হতে পারে না। এটি করা হলে দেশের আইনের শাসন বিঘ্নিত হবে। এই অপরাধীদের সঙ্গে সরকারের কোন সমঝোতা হতে পারে না এবং কোন ধরনের অপরাধীদের সঙ্গে এ সরকারের কোন আপোষ নাই।
গতকাল শনিবার দুপুরে দিনাজপুরের বিরল উপজেলার মোহনা মঙ্গলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের নবনির্মিত স্কুল ভবনের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন কাজের উদ্বোধন শেষে এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
পরে দুপুরে তিনি মঙ্গলপুর সিনিয়র আলিম মাদ্রাসার ৪তলা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন কাজের শুভ উদ্বোধন ও সমাবেশে বক্তব্য রাখেন তিনি।
বিকালে প্রধান অতিথি খালিদ মাহমুদ চৌধুরী শারদীয় দুর্গা পূজা উপজেলার বিভিন্ন ম-প পরিদর্শন করেন।
বিদ্যালয় কমিটির সভাপতি আব্দুল হামিদ শাহের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিরল উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম মোস্তাফিজুর রহমান বাবু, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম রওশন কবীর, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহেদুল করিম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম. আব্দুল লতিফ, পৌর মেয়র সবুজার সিদ্দিকী সাগর প্রমুখ।




খালেদা জিয়া প্যারোলে মুক্তি নেবেন না: গয়েশ্বর

সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, খালেদা জিয়ার মৃত্যু জেলখানায় হয় তাহলে লাশের ওজন বহন করার ক্ষমতা শেখ হাসিনার নেই। তিনি (খালেদা জিয়া) কোনো আপস, সরকারের সঙ্গে সমঝোতা বা প্যারোলে মুক্তি নেবেন না। গতকাল শনিবার খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবির প্রতিবাদে এক আলোচনা সভায় তিনি এ সব কথা বলেন।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এ প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে জিয়া শিশু-কিশোর মেলা কেন্দ্রীয় সংসদ।
সরকারের উদ্দেশে গয়েশ্বর বলেন, বর্তমান প্রজন্মকে যে রাজনৈতিক শিষ্টাচার শিক্ষা দিচ্ছেন। আগামীতে এর পরিণতি ভোগ করতে হবে, অপেক্ষা করুন।
বিএনপি চেয়ারপারসন আপসহীন নেত্রী এই উপাধি খারিজ করতে গিয়ে ধরা খেয়েছে সরকার- এমন মন্তব্যও করে গয়েশ্বর।
জিয়া শিশু-কিশোর মেলা কেন্দ্রীয় সংসদের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর শিকদারের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ সংগঠনটির নেতারা বক্তব্য রাখেন।
গয়েশ্বর বলেন, জিয়াউর রহমান জাতীয়তাবাদী শক্তি একত্রিত করেছিলেন, দেশপ্রেমী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। যার দেশপ্রেম নেই, সে তো দেশের কিছু হলে প্রতিবাদ করতে পারবে না। দেশপ্রেমিকদের সমবেত করার জন্যই জিয়াউর রহমান মাঠে মাঠে ঘুরেছেন। দেশাত্মবোধের অভাব। দেশপ্রেমিক লোক আছে, জনগণ আছে। কিন্তু দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক নেতা নেই।
তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন কত মামলার রায় হয় কিন্তু খালেদা জিয়ার মামলার রায় হয় না। আদালত বিব্রতবোধ করেন। যারা ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন তারা একদিন এর পরিণতি ভোগ করবেন।
গয়েশ্বর বলেন, যে দেশের প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতিকে লালন করেন, প্রশয় দেন সেই দেশে ছোটখাটো দু-একটা টোকাই ধরে কিছু সময়ের জন্য চমক সৃষ্টি করা যেতে পারে। প্রকৃত অর্থে দুর্নীতির হাত থেকে দেশকে রক্ষা করা যায় না।

তিনি বলেন, আমরা মনে করি এই জনসমর্থনহীন সরকার, ভোটারবিহীন সরকার অর্থনৈতিক সংকট, ব্যাংক খাত নিঃস্ব করার মধ্য দিয়ে দেশকে একটি দেউলিয়া রাষ্ট্রে পরিণত করছে। পরিস্থিতি থেকে জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে সরানোর জন্য ছোটখাটো খুচরা নাটক করছে।
গয়েশ্বর বলেন, ব্যাংকে গচ্ছিত টাকার হিসাব অনুযায়ী দেশে ৭৬ হাজার কোটিপতি রয়েছেন। পাঁচ বছর আগে যা ছিল ১৯ হাজার। যে পরিমাণে টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে সেই হিসাব করলে দেশে কোটিপতির সংখ্যা কত হবে তার ঠিক নেই। কোটিপতিদের তালিকা প্রকাশ করা হলে দেখা যাবে সবাই আওয়ামী লীগ করেন। আওয়ামী লীগ ছাড়া কেউ কোটিপতি হয়নি। সাধারণ মানুষ নিঃস্ব হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, উন্নয়নের অপর নাম এখন দুর্নীতি। যেভাবে হচ্ছে ভবিষ্যতে তা বুমেরাং হয়ে দাঁড়াবে। এ টাকা পরিশোধ করতে হবে জনগণকে।
এ দিকে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ইচ্ছে মতো বাড়ানো হয়েছে। তাদের বেতন দিতে গিয়ে জুলুম-অত্যাচার করা হচ্ছে জনগণ ও ব্যবসায়ীদের ওপর। এমন কোনো ব্যবসায়ী সমিতি নেই যা নীরবে চাঁদা দিতে হচ্ছে না।
ওই আলোচনা সভায় বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, সরকার যখন রাষ্ট্রকে ট্রাস্ট বানিয়ে ফেলে তখন এর পরিণতি ভালো হয় না। বর্তমান সরকার রাজনৈতিক যে সংস্কৃতি তৈরি করছে এর শেষ পরিণতি আপনাদের হবে। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে আন্দোলনের মাধ্যমে মুক্ত করা হবে।




একটি কু-চক্রীমহল এই অভিযানে খুশি নন: ওবায়দুল কাদের

তিনি বলেন, সারা দেশে যে শুদ্ধি অভিযান চলছে তা কোনো দল বা গোষ্ঠীর মধ্যে নয়। বাংলাদেশ থেকে দুর্নীতির চক্র ভেঙে দিতেই এ অভিযান। প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতি-দুর্বৃত্তায়ন এবং মাদক-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছেন। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। এ অভিযান দেশের শান্তির জন্য।
গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে দুস্থদের মধ্যে বস্ত্র বিতরণ শেষে তিনি এ সব কথা বলেন।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ এবং মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির উদ্যোগে এই বস্ত্র বিতরণ কার্যক্রমের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের বলেন, একটি কুচক্রী মহল এই অভিযানে খুশি নন। তারা দেশের মানুষের শান্তি চায় না। এরা সবার শত্রু, ওরা হিন্দুদের সম্পদের দিকে তাকায়। দখল করতে চায়। এই মহলের বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।
যত বড় প্রভাবশালী হোক যারা সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করে দিতে চায় তারা কেউই ছাড় পাবে না- এমন হুশিয়ারি উচ্চারণ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে অভিযানের পাশাপাশি যারা অনুপ্রবেশকারী তাদের প্রতি দলের সভাপতির নির্দেশ রয়েছে। তৃণমূলের কমিটি গঠনে বিতর্কিতদের স্থান না দেয়ার নির্দেশনা আছে।
তিনি বলেন, এ অভিযান দলে অনুপ্রবেশকারী, স্বাধীনতাবিরোধী, অপকর্মকারী, চাঁদাবাজ ও টেন্ডারবাজদের বিরুদ্ধে। যারা মাইনোরিটির’ সম্পদ দখল করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে এ অভিযান।
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক রয়েছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ভারত সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক রয়েছে। আমরা একসঙ্গে সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে কাজ করব।
হিন্দু সম্প্রদায়ের উদ্দেশে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে হিন্দু সম্প্রদায় তাদের ধর্মীয় কর্মকা-, বিশেষ করে পূজা উৎসব শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পালন করতে পারেন।
পূজা উৎসবকে ঘিরে সারা দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে আপনারা মাথা উঁচু করে চলবেন। আপনাদের কোনো ভয় নেই। আপনারাও এ দেশের প্রথম শ্রেণির নাগরিক। মুসলমানদের চেয়ে আপনাদের মর্যাদা কম নয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আপনাদের পাশে রয়েছে। পূজা উদযাপনে কোনো অপশক্তি যেন বাধা সৃষ্টি করতে না পারে সেদিকেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দৃষ্টি রাখতে হবে।
এ সময় অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, স্থানীয় সংসদ সদস্য হাজী সেলিম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসিবুর রহমান মানিক, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মিলন কান্তি দত্ত ও সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জী, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি শৈলেন্দ্র নাথ মজুমদার ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কিশোররঞ্জন ম-ল প্রমুখ।




শোভন-রাব্বানী নিয়ে এবার মুখ খুললেন আন্দালিভ পার্থ

বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান (বিজেপি) আন্দালিভ রহমান পার্থ বলেছেন, শোভন-রাব্বানীর তেমন কোনো দোষ নেই। তারা তো কোনো সিস্টেমের বাইরে নয়।
সম্প্রতি লন্ডনে ‘প্রবাস সংলাপ’ অনুষ্ঠানে ক্যাসিনো বাণিজ্য নিয়ে কথা বলতে গিয়ে এ কথা বলেন আন্দালিভ পার্থ। গত ১৪ সেপ্টেম্বর জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ অর্থ থেকে চাঁদা দাবি করার অভিযোগে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয় ছাত্রলীগের সাবেক রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও গোলাম রাব্বানীকে।

এ ঘটনায় বিএনপিসহ আওয়ামী লীগ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো শীর্ষ নেতারা নানা ধরনের বক্তব্য দিলেও এ বিষয়ে এতোদিন কোনো মন্তব্য করেননি আন্দালিভ পার্থ।
তবে এবার সম্প্রতি চলমান শুদ্ধি অভিযান প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে পার্থ শোভন-রাব্বানীর চাঁদা দাবির কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, শোভন আর রাব্বানী ৮৫ কোটি টাকা ঘুষ চেয়েছে, এতে সমস্যাটা কোথায়? তারা তো কোনো সিস্টেমের বাইরে যাননি। তারা দেখছে যে ৭ হাজার কোটি টাকা বেসিক ব্যাংক খেয়ে ফেলছে। ১ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। মহাসচিবদের হাতে রোলেক্স ঘড়ি, সবার লাইফস্টাইল চেঞ্জ হয়ে যাচ্ছে। ব্যাংক খেয়ে ফেলছে ক্ষমতাসীন নেতারা। প্রতিদিনই পত্রিকায় আসছে যে, এ গাড়ি নিয়ে গেছে, ও লুট করছে। তাহলে শোভন-রাব্বানীর দোষটা কোথায়?
পার্থ’র মতে এটা সিস্টেমেরই একটা অংশ।
তিনি যোগ করেন, ব্যাংক খালি করে ফেলা হচ্ছে, ১ লাখ কোটি টাকা সিঙ্গাপুরে পাচার হচ্ছে, এটা তো শোভন রাব্বানীরা বুঝছে না, ওরা শুধু শুনছে। ওরা তাহলে ভাবছে যে আমরা কি করব!
ক্যাসিনো অভিযান প্রসঙ্গে পার্থ বলেন, এই ক্যাসিনো বা শুদ্ধি অভিযান গত ৮-৯ বছর ধরে চলঝে। এগুলো যারা করছে, এর মাঝে সম্রাটের নাম আসছে, আরও অনেকের নাম আসছে। এসব শোভন-রাব্বানী দেখছে। কিন্তু তারা তো একটা ব্যাংক খেয়ে ফেলতে পারেনা না। হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করতে পারেন না। তারা পারেন লোকাল ব্যবসা করতে। এজন্য তারা এটাই চিন্তা করেছে।




অপরাধী যেই হোক ছাড় পাবে না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, অপরাধী যেই হোক, কোনো ছাড় পাবে না। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। সরকারি কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদ বা যে দলের নেতাই হোক না কেন, অপরাধ করলে তাকে আইনের মুখোমুখি হতেই হবে। রাজধানীর স্বামীবাগে শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম ও মন্দিরে গতকাল শনিবার দুস্থদের মধ্যে বস্ত্র বিতরণ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শুধু শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানই নয়, অপরাধী যেই হোক, কোনো ছাড় পাবে না। সে দেশেই থাকুক আর বিদেশেই থাকুক, তাকে আইনের মুখোমুখি হতেই হবে। হোক, কাল হোক শাস্তি তাকে পেতেই হবে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে গ্রেফতার হওয়া তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানকে অবশেষে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সেখানকার পুলিশের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ আছে। জিসানকে দেশে আনার প্রক্রিয়া চলছে। শিগগিরই তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে আইনের আওতায় আনা হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আরব আমিরাতের সঙ্গে আমাদের বন্দি বিনিময় চুক্তি নেই। এ বিষয়ে ইন্টারপোল যুক্ত রয়েছে। যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া মেনে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। এখনও যারা ইন্টারপোলের তালিকায় রয়েছে, বাকিদেরও এভাবে গ্রেফতারের মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) আনিসুর রহমানের বিষয়ে তদন্ত করা হবে বলে জানান।
এর আগে, বস্ত্র বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করে তিনি বলেন, ২০০৯ সালে শেখ হাসিনা যখন ক্ষমতায় আসেন, তখন ২৪ হাজার ম-পে পূজা হতো। এবার প্রায় ৩২ হাজার ম-পে পূজা হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু যে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন, তার কন্যা সেই পথেই চলছেন।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, আমরা সব ধর্মীয় উৎসব একসঙ্গে উদযাপন করি ও করব। ধর্ম যার যার উৎসব সবার। সেভাবে ধর্ম যার যার রাষ্ট্রও সবার।
বস্ত্র বিতরণ কার্যক্রমে শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম ও মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি পংকজ নাথের সভাপতিত্বে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সাধারণ সম্পাদক বিষ্ণুপদ ভৌমিক।




ভোমরা বন্দর দিয়ে ভারতের পেঁয়াজ ঢুকছে

ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের আগেই ভারতের ঘোজাডাঙ্গায় ৭০ থেকে ৮০ ট্রাক পেঁয়াজ বাংলাদেশে ঢোকার অপেক্ষায় ছিল। সাতক্ষীরার ভোমরা বন্দর দিয়ে ওই সব পেঁয়াজ গতকাল শনিবার বাংলাদেশে ঢোকা শুরু হয়েছে। পেঁয়াজবাহী ওই সব ট্রাক বেলা পৌনে দুইটা থেকে বাংলাদেশে ঢোকা শুরু করেছে। ভোমরা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণার আগেই এসব পেঁয়াজ বাংলাদেশে আমদানির জন্য কেনা হয়েছিল। বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের লিখিত অনুমতির পর পেঁয়াজের ট্রাকগুলো ভোমরা বন্দরে ঢোকা শুরু করে। তিনি বলেন, সন্ধ্যা পর্যন্ত এই ট্রাকগুলো ভোমরা বন্দরে ঢুকবে। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ওই পেঁয়াজ বাংলাদেশে ঢুকলে সাতক্ষীরা অঞ্চলে পেঁয়াজের দাম কিছুটা হলেও কমতে পারে। বর্তমানে সাতক্ষীরার খুচরা বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে এবং দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে। ভোমরা কাস্টমস শুল্ক স্টেশনের রেভিনিউ কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, পেঁয়াজ ছাড়াও অন্যান্য পণ্যবাহী ৩০০ ট্রাক ভারত থেকে বাংলাদেশে ঢুকবে। বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত ৪০ ট্রাক পেঁয়াজ বাংলাদেশে এসেছে। ভোমরা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক মো. রেজাউল করিম বলেন, দুর্গাপূজা ও সরকারি ছুটি মিলিয়ে রোববার থেকে ভোমরা বন্দর টানা ছয় দিন বন্ধ থাকবে। এ সময় সব ধরনের আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকবে। তবে পাসপোর্টধারী যাত্রীরা চলাচল করতে পারবেন।