একটা সময় ছিল যখন মোবাইল ফোনের ব্যাটারি খুলে ফেলা যেতো। আর যেহেতু পাওয়ার ব্যাঙ্ক ছিল না, তাই বেশ কিছু মানুষ সঙ্গে একাধিক ব্যাটারি রাখতেন, যাতে ফোনের চার্জ শেষ হয়ে গেলে একটি ব্যাটারি বদলে আর-একটি লাগিয়ে নেওয়া যায়। বাজারে তখন ফোনের চাইতে ব্যাটারি বেশি পরিমাণে বিক্রি হত। এবং শুধু ফিচার ফোনের ক্ষেত্রেই নয়, স্মার্টফোনের ক্ষেত্রেও এরকম ঘটনা বহুদিন ধরে ঘটেছে।
কিন্তু সেসব দিন এখন অতীত, যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সম্পূর্ণভাবে বদলে গেছে স্মার্টফোনের ডিজাইন। এখন বাজারে যে সমস্ত স্মার্টফোন আসছে, সেগুলোর ভিতরে ব্যাটারি ফিক্স করা থাকে, অর্থাৎ সহজ প্রচলিত কথায় বললে নন-রিমুভেবল। ফলে চাইলেই এখন ফোন থেকে ব্যাটারি খুলে ফেলা যায় না। কিন্তু আপনি কি কখনও ভেবে দেখেছেন যে, কেন রিমুভেবল ব্যাটারি ধীরে ধীরে স্মার্টফোন থেকে অদৃশ্য হয়ে গেল? তাহলে চলুন, আজ জেনে নেওয়া যাক, কেন মোবাইল ফোন থেকে রিমুভেবল ব্যাটারিকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
স্মার্টফোনকে স্লিম এবং হালকা করার জন্য
আপনারা খেয়াল করলে নিশ্চয়ই দেখবেন, আগেকার তুলনায় এখনকার ফোনগুলো তুলনামূলকভাবে অনেক হালকা এবং স্লিম হয়ে গেছে। এর মূল কারণ হল ফোনে নন-রিমুভেবল ব্যাটারির ব্যবহার। মোবাইল ফোনকে অনেক বেশি স্লিম এবং হালকা করার জন্য এখন সব মোবাইল কোম্পানিই ফোনে নন-রিমুভেবল ব্যাটারি ব্যবহার করছে। এর ফলে ফোনটিকে অনায়াসে পকেটে রাখার পাশাপাশি অত্যন্ত সহজে ব্যবহার করা সম্ভবপর হচ্ছে।
মোবাইলকে ওয়াটারপ্রুফ করার জন্য
আজকাল অনেক ওয়াটারপ্রুফ মোবাইল ফোন বাজারে পাওয়া যায়, ইউজারদেরও এই ধরনের ফোনের প্রতি চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু ফোনে যদি রিমুভেবল ব্যাটারি থাকে, তাহলে তাকে কোনোমতেই ওয়াটারপ্রুফ করা যাবে না। তাই এখনকার স্মার্টফোনগুলো ওয়াটারপ্রুফ করার জন্যই সেগুলোতে নন-রিমুভেবল ব্যাটারি ব্যবহার করা হচ্ছে।
ইউজারদের সুরক্ষার জন্য
শুধু নন-রিমুভেবলই নয়, এখনকার দিনে প্রায় সব স্মার্টফোনেই ৫০০০ কিংবা ৬০০০ এমএএইচ-এর শক্তিশালী ব্যাটারি দেখা যায়। কিন্তু সেইসঙ্গে গ্রাহকদের সুরক্ষার দিকে নজর রাখাও একান্ত আবশ্যক। তাই ইউজারদের সুরক্ষা তথা নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই এখনকার স্মার্টফোনে নন-রিমুভেবল শক্তিশালী ব্যাটারি ব্যবহার করা হচ্ছে। এর ফলে যেহেতু ফোন থেকে ব্যাটারিকে আলাদা করার কোনো উপায় নেই, তাই শর্ট-সার্কিটের ঝুঁকিও সম্পূর্ণভাবে এড়ানো সম্ভব। সেইসঙ্গে ব্যাটারিকে জলের সংস্পর্শ থেকেও দূরে রাখা যায়।
ব্যাটারির আয়ু বাড়ানোর জন্য
রিমুভেবল ব্যাটারিকে স্মার্টফোন সরিয়ে নেওয়ার অন্যতম কারণ হলো, রিমুভেবল ব্যাটারি দীর্ঘক্ষণ ব্যাটারি ব্যাকআপ দিতে পারে না। অন্যদিকে, নন-রিমুভেবল ব্যাটারি থাকার সুবাদে এখন স্মার্টফোনকে একবার চার্জ দিয়ে দীর্ঘক্ষণ ব্যবহার করা যাচ্ছে। সেইসঙ্গে ফোন থেকে যেহেতু ব্যাটারিকে আলাদা করার কোনো উপায় নেই, তাই ফোনটির সঙ্গে ব্যাটারির কানেকশন আরও মজবুত হয়, এর ফলে মোবাইলের ব্যাটারি লাইফ অনেকটাই বেড়ে যায়।