নানা জল্পনা কল্পনা শেষে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কোভিট ভ্যাকসিনেশন কাজে নিয়োজিত স্বেচ্ছা সেবকদের নামে উত্তোলনকৃত দুই লাখ টাকার হিসেব মিলেছে। এযাবৎ টাকার বিষয়টি অস্বীকার করলেও উক্ত টাকা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সুপ্রভা রানীর কাছেই জমা আছে বলে দায় স্বীকার করেছেন তিনি। তবে স্বেচ্চা সেবকদের তালিকা পেলে তাদের মাঝে টাকা বিতরণ করবেন বলে জানিয়েছেন এ কর্মকর্তা।
জানা গেছে, করোনা মহামারির সময় ভ্যাকসিনেশনের জন্য স্বেচ্চা সেবক নিয়োগ করা হয়। প্রতিটি দলে তিনজন করে পাঁচটি দলে মোট ১৫জন স্বেচ্চাসেবী কাজ করে। সেসময় প্রতি জনের জন্য ৩৫০ টাকা করে সম্মানী প্রদানের কথা বলা হয়। এক বছর শ্রম দেয়ার পর গত ৩০ জুন প্রায় ৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ পায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এদের মধ্যে অধিকাংশ স্বেচ্চা সেবক তাদের সম্মানীর টাকা পেলেও অনেকেই তাদের পাওনা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। কার কাছে চাইবেন তাদের পাওনা এ নিয়ে পড়ে জীবন বাজি রাখা সেই সকল টিকাদানকারিরা পড়েন নানান বিড়ম্বনায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বেশ কয়েকজন স্বেচ্চা সেবক জানিয়েছেন,তারা করোনা মহামারীকে উপেক্ষা করে সাধারণ মানুষকে ভ্যাকসিন প্রদান করেছেন। অথচ তাদের প্রাপ্য সম্মানীটা আজো বুঝে পাননি। স্বেচচা সেবকদের নামে বরাদ্দকৃত অর্থের দুই লক্ষ টাকা উত্তোলন করে তা পবিতরণ না করে নিজের কাছে রেখেছেন উপজেলা স্বাস্থ ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব সুপ্রভা রানী। দুই লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে দোষ চাপিয়ে আসছেন ইপিআই টেকনিশিয়ান আব্দুল রশিদের ওপর। আব্দুর রশিদের কাছ থেকে নেয়া দুই লাখ টাকা বুঝে নেয়ার তিন মাস অতিবাহিত হলেও টাকা বিতরণ করেননি টিকাদানকারি স্বেচ্চা সেবকদের মাঝে। এ নিয়ে টিকাদানকারিদের মাঝে শুরু হয় নানা ক্ষোভ। টিকাদানকতারিরা ইপিআই টেকনিশিয়ান আব্দুর রশিদের কাছে তাদের পাওনা টাকার দাবী করলে তা দিতে ব্যর্ত্থ হন আব্দুর রশিদ। বিষয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে জানালে তিনি কোন টাকা পাননি বলে আব্দুর রশিদকে বিপদে ফেলার চেষ্টা করেন। আব্দুর রশিদ টাকা হারিয়ে পড়েন মহা বিপাকে। একদিকে টিকাদানকারিদের চাপাচাপি,অন্যদিকে টাকার বিষয়ে কর্মকর্তার অস্বীকার এনিয়ে হাসপাতাল পাড়ায় শুরু হয় নানা গুঞ্জন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরতরা একে অপরের দোষ নিয়ে নেমে পড়েন কাদা ছোড়াছুড়িতে। অবশেষে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সাংবাদিকদের কাছে দুই লক্ষ টাকা আব্দুর রশিদের কাছ থেকে বুঝে নিয়েছিলেন বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এব্যপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সুপ্রভা রানী বলেন, তিন মাস আগে ইপিআই টেকনিশিয়ান আব্দুর রশিদের কাছ থেকে দুই লক্ষ টাকা বুঝে নিয়েছিলাম। আমার কাছে কোন স্বেচ্চা সেবক টাকার জন্য আসেনি তাই টাকা বিতরণ করা হয়নি। পরে আমি আব্দুর রশিদকে স্বেচ্চা সেবকদের তালিকা প্রদান করতে বলেছি। তালিকা পেলে তালিকা অনুযায়ী আমার কাছে জমাকৃত টাকা বিতরণ করবো।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মৌসুমী খানম জানান, টিকাদানকারীদের মাঝে তাদের পাওয়না টাকা কেনোা বিতরণ করা হয়নি তার লিখিত কারন দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্ত পুর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।