আবারও পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত বিশ্বের প্রতি পূর্ণ ও দৃঢ় প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বাংলাদেশ। শুক্রবার জাতিসংঘের বেশকিছু সদস্যরাষ্ট্র আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ প্রতিশ্রুতির কথা জানান সংস্থাটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তি কার্যকর করার ঐতিহাসিক মুহূর্ত উদযাপন করতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক, সুইজারল্যান্ডের জেনেভা ও অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় একযোগে হয় এই ভার্চুয়াল অনুষ্ঠান। এতে অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশও যোগ দেয়। অনুষ্ঠানটি অস্ট্রিয়া, ব্রাজিল, কোস্টারিকা, ইন্দোনেশিয়া, আয়ারল্যান্ড, মেক্সিকো, নাইজেরিয়া, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও থাইল্যান্ডের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়। এতে অন্যান্যের মধ্যে ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব রেডক্রস ও ইন্টারন্যাশনাল কোয়ালিশন টু অ্যবোলিশ নিউক্লিয়ার উইপনের প্রধানেরা বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানটি উপলক্ষে একটি ভিডিও বক্তব্য দেন আন্তোনিও গুতেরেস।
বিশ্বকে পারমাণবিক যুদ্ধের বিভীষিকা থেকে মুক্ত করতে ১৯৭৪ সালে সাধারণ পরিষদে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছিলেন, অনুষ্ঠানে তা উদ্ধৃত করে রাবাব ফাতিমা বলেন, পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের প্রতি অটল থাকা বাংলাদেশের সাংবিধানিক প্রতিশ্রুতি। যার ফলে এই চুক্তি স্বাক্ষরকারী প্রথম ৫০টি দেশের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশও।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বানে সাড়া দিয়ে ২০১৭ সালের ২০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তিতে স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ। পরে জাতিসংঘের ৭৪তম অধিবেশন চলাকালে ২০১৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ চুক্তিটি অনুসমর্থন করে।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের কাছে ২০২০ সালের ২৪ অক্টোবর ৫০তম অনুসমর্থনকারী দেশ হিসেবে হন্ডুরাস দলিল জমা দেয়। এর ৯০ দিন পর ২২ জানুয়ারি থেকে চুক্তিটি কার্যকর হয়েছে।
পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ–সম্পর্কিত চুক্তি (টিপিএনডব্লিউ) স্বাক্ষরকারী দেশগুলোর জন্য পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার, বিকাশ, পরীক্ষা, উৎপাদন, মজুতকরণ, কেন্দ্র স্থাপন, স্থানান্তর ও হুমকি প্রদান নিষিদ্ধ। এসব লক্ষ্য অর্জনে এটিই প্রথম আন্তর্জাতিক কোনো চুক্তি। এটি এ পর্যন্ত ৮৬টি দেশ স্বাক্ষর করেছে এবং ৫১টি দেশ অনুসমর্থন করেছে।