শিক্ষিত হয়ে কোন যুবককে আত্মহত্যা করতে হবেনা প্রতিটি মানুষের জন্য কর্মস্থান সৃষ্টি করা হবে। আমরা ক্ষমতায় গেলে কাউকে বেকার থাকতে দেবনা প্রতিটি যুবকের হাতকে কর্মীর হাতে পরিনত করা হবে। ঝিনাইদহের জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সভায় এসব কথা বলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডাঃ শফিকুর রহমান। তিনি আরও বলেন বিগত জালিম সরকারের সময় যারা সিন্ডিকেট করেছিলো তারা এখনও এসব করছে এ সিন্ডিকেট ভাঙা সম্ভব হয়নি। তাই এ সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে। আর তারা জাতির ঘাড়ে এখনও বসে আছে। এই সিন্ডিকেট না ভাঙলে দেশের মানুষ আরও নির্যাতিত হবে। তাই সিন্ডিকেট ভেঙে বৈষম্যহীন শাসন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) বিকালে ঝিনাইদহ শহরের ওয়াজির আলী হাই স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে জেলা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত ঐতিহাসিক কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন, ডাঃ শফিকুর রহমান। তিনি বিগত সরকারের অত্যাচার নির্যাতনের কথা তুলে ধরে বলেন, সকলকে দেশে ফিরিয়ে এনে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। আগামী দিনে জামায়াত রাষ্ট্রক্ষমতায় আসলে নারীদের সবোর্চ্চ সম্মানের সাথে সমাজ উন্নয়নে কাজে লাগানো হবে বলেও আশ্বাস দেন।
তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী এমন একটি বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখে যেখানে নারী, পুরুষ, জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে কোনো নাগরিক তার ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে না। যেখানে সবাই মিলেমিশে সামাজিক সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে হিংসামুক্ত সাম্যের সমাজ প্রতিষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, যারা একদিন গর্বকরে বলতেন এ দেশে জালিম কাউকে থাকতে দেওয়া হবেনা। দেশ থেকে জালিমদের বিতাড়িত করতে হবে। অথচ আজ তারা নিজেরাই দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। বিদেশে বন্ধু থাকবে কিন্তু কোনো প্রভুত্ববাদ মেনে নেওয়া হবে না। কেউ যদি প্রভুত্ব করতে আসে তাহলে জাতি তাদের উচিত জবাব দেবে।
জামায়াতের আমীর আরও বলেন, এমন একটি সমাজ গড়া হবে যেখানে আদালত প্রাঙ্গণে কোনো বিচারপ্রার্থীকে হয়রানির শিকার হতে হবে না। বিচারক দুর্নীতিমুক্ত হয়ে স্বাধীনভাবে রাষ্ট্রের আইন ও বিবেক দিয়ে বিচারকার্য পরিচালনা করবে।
জামায়াতের এ শীর্ষ নেতা বলেন, বিগত সাড়ে ১৫ বছরে দেশের মানুষ স্বৈরাচার সরকার দ্বারা নির্যাতিত। তবে দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সবচেয়ে নির্যাতিত ও মজলুমের দল। এই দলের নেতাদের মিথ্যা অপবাদ দিয়ে বিচারের নামে জুলুম করে গুম, খুন করা হয়েছে। বিগত সরকার জামায়াতে ইসলামীকে রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা করতে নানা পাঁয়তারা করেছে।
তিনি আরও বলেন, তারা গণআন্দোলনকে ভিন্ন দিকে নিয়ে যেতে অন্যায়ভাবে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে প্রতীক কেড়ে নেয়। তবে জামায়াতে ইসলামী প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। তবে দেশপ্রেমী এবং আলেম-ওলামাদের যারা হত্যা করেছে তাদের বিচার করতে হবে।
অন্তরর্বতীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ডাঃ শফিকুর রহমান বলেন, স্বৈরাচার সরকারের কোনো দোসর যেন রাষ্ট্রের কোনো স্তরে না থাকে। তারা থাকলে এই দেশ ও সরকারকে ব্যর্থ করে দিবে। জনগণের বিপ্লবকে ব্যর্থ করে ছাত্র-জনতার স্বপ্নের মৃত্যু ঘটাবে।
কর্মী সম্মেলনে ঝিনাইদহ জেলা জামায়াতে ইসলামের আমির আলী আজম মোঃ আবু বকর এর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক প্রচার ও মিডিয়া বিভাগ মোঃ আবদুল হাই’র সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসাবে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চলের পরিচালক মোঃ মোবারক হুসাইন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাও: আজিজুর রহমান, কেন্দ্রীয় ইউনট সদস্য ড. মাও:মোজামম্মেল হক, জেলা সহকারী সেক্্েরটারী মাও: আব্দুল হাই, আব্দুল আলীম, আবু তালিব, ড. হাবিবুর রহমান, ইবি ছাÍত্র শিবিরের সভাপতি এইচ এম আবু মুসা, জেলা ছাত্র শিবিরের সভাপতি মনিরুল ইসলামসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন।