আলমডাঙ্গায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন (বীর নিবাস) নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। একই গ্রামে দুই মুক্তিযোদ্ধার দুই ঘর নির্মাণে ভিন্ন মাত্রার অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগসূত্রে জানা যায়,আলমডাঙ্গা উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৪৯ টি “বীর নিবাস’ নির্মাণ করা হচ্ছে। ১৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা ব্যয়ে প্রতিটি বীর নিবাস নির্মাণ করা হচ্ছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় থেকে আলমডাঙ্গা উপজেলায় ৪৯ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে আবাসন (বীর নিবাস) নির্মাণের জন্য ৬৫ কোটি ৮০ লাখ ৭ হাজার টাকা বরাদ্দ পাওয়া যায়।
যার প্রতিটি ঘরের নির্মাণের জন্য ব্যয় ধরা হয় ১৩ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। দরপত্র আহ্বান করা হলে উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ঠিকাদার নির্বাচিত হন আলমডাঙ্গা নীলমণিগঞ্জের বখতিয়ারের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স বখতিয়ার উদ্দীন।
উপজেলার কুমারী গ্রামে দুটি বীর নিবাস নির্মাণ করা হচ্ছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউসুফ আলী ও ফরোজ আলীর পরিবারের জন্য।
কার্যাদেশ পেয়ে ঘরের নির্মাণ কাজ শুরু করেন ওই ঠিকাদার।
কিন্তু ঠিকাদার নির্মাণ কাজের নিয়ম-কানুনের তোয়াক্কা না করে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ১নং ইটের পরিবর্তে ২ নং ইট ব্যবহার ও নির্মাণ কাজে পরিমাণ মতো সিমেন্টও ব্যবহার করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন খোদ উপকারভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউসুফ আলী।
নিবাসটি নির্মাণে ২ নং ইট ও ৬:১ (বালি:সিমেন্ট) হারে ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ফরোজ আলীর নিবাস নির্মাণে বালু: সিমেন্টের পরিমাণ ৫:১ ব্যবহার করা হচ্ছে।
গ্রামবাসীরা অভিযোগ করে বলেছেন যে, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফরোজ আলীর তুলনায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউসুফ আলী বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছেন। সে কারণে তাঁব ঘর নির্মাণে আরও বেশি অনিয়ম হচ্ছে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউসুফ আলী অভিযোগ করে বলেন যে, ২ নং ইট দিয়ে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানের ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। এটা জাতির জন্য কলঙ্কের। তাছাড়া সিমেন্টের ভাগ কম ও বালি বেশি দেওয়া হচ্ছে। এই অনিয়মে আমি খুব কষ্ট পেয়েছি।
সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার বখতিয়ার উদ্দীন জানান, “কাজটি আমি করছি না। আমার নিকট থেকে কিনে নিয়ে মহাসিন নামের এক ব্যক্তি করছেন। নির্মাণ কাজে ২ নং ইট ব্যবহার করা হলে ইট ফেরত নিয়ে ১ নং ইট দিয়ে নির্মাণ করা হবে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এনামুল হক বলেন, “বীর নিবাস” নির্মাণে একটি ঘরেও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ পেলে সেটি মেনে নেওয়া হবে না। কোনো ঘরে এ ধরনের অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ইটসহ নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী গ্রহণযোগ্য হবে না।