আলমডাঙ্গার বাড়াদি আলহাজ্ব মীর খোস্তার আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গোপনে অফিস সহায়ক (পিয়ন) আয়া ও পরিচ্ছন্নতা কর্মী নিয়োগের অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষক ও স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে। নিয়োগ পক্রিয়াটি স্কুলের অন্য শিক্ষক ও কমিটির অনেক সদস্যের অজান্তেই হয়েছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ওই দুজন টাকার বিনিময়ে গোপনে নিয়োগের সব প্রক্রিয়া শেষ করেছেন। ২৮ বছর দায়িত্বরত অফিস সহায়ক (পিয়ন) থাকতেও পূণরায় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির মেয়েকে ওই দায়িত্বে নিয়োগ দেবার অভিযোগ উঠেছে ।
জানা গেছে, গত ডিসেম্বরে গোপনেই নিয়োগ বোর্ড গঠন করে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়। পরীক্ষায় সাজানো গুটি কয়েকজন প্রার্থী অংশ নেন। ওই নিয়োগে ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আব্দুল হান্নানের মেয়েসহ দুই প্রার্থীকে চূড়ান্তভাবে বাছাই করা হয়। স্কুলে অফিস সহায়ক, আয়া ও পরিচ্ছন্নকর্মী পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। নিয়োগে স্কুল কমিটির সভাপতি আব্দুল হান্নানের মেয়ে দিলরুবা অফিস সহায়ক, মহর আলীর ছেলে সামাদ পরিচ্ছন্নকর্মী ও নবির স্ত্রী আয়া পদে নিয়োগ পায়।
নিয়োগের আগে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার কাজও গোপনে করা হয়েছে। এমনকি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির নোটিশও বিদ্যালয়ে টাঙানো হয়নি। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি সম্পর্কে ব্যবস্থাপনা কমিটির অনেক সদস্যই জানেন না।
তবে গত ২৮ বছর যাবৎ শেখ আব্দুল মাস্টারের ছেলে শেখ আল মামুন কবির অফিস সহায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। সভাপতির মেয়ে নিয়োগ পাওয়ায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে মামুনের পদ পরিবর্তন করে দেওয়া হচ্ছে নিরাপত্তাকর্মী ।
নাম না প্রকাশ শর্তে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির কয়েকজন সদস্য বলেন, ‘স্কুলের নিয়োগের বিষয়ে আমাদের কিছু জানানো হয়নি। শুনেছি সভাপতি এসে নিয়োগ দিয়েছেন। প্রধান শিক্ষকের কাছে জানতে চাইলে তিনি আমাকে বলেন, কোনো নিয়োগ হয়নি।’
স্কুলের কয়েকজন শিক্ষক বলেন, ‘সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক মিলে সবকিছু করেন। প্রধান শিক্ষক আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। এ জন্য চাকরির স্বার্থে এসব বিষয়ে কেউ মুখ খোলেন না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন এলাকাবাসী বলেন, ‘বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি টাকার বিনিময়ে রাতের অন্ধকারে নিয়োগ দিয়েছেন। তাঁরা কাউকে বিষয়টি জানতে দেননি। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি সহ কারা নিয়োগ পেয়েছে এটা এখনো খোলামেলা করেনি স্কুল কতৃপক্ষ।
প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন (ভারপ্রাপ্ত) বলেন, ‘স্কুলের নিয়োগ সম্পর্কের কোন বিষয় জানাতে পারব না। নিয়োগ আইননুসারে হয়েছে। নিয়োগের সব কাগজপত্র ও ডকুমেন্ট তাঁর কাছে আছে। এ বিষয়ে আমি আর কিছু বলতে পারব না।’
নিয়োগের বিষয়ে জানতে একাধিকবার চেষ্টা করেও স্কুলের সভাপতি আব্দুল হান্নান তথ্য দিতে অপারগতা স্বীকার করেন। তিনি জেলা ও উপজেলা শিক্ষা অফিস হতে তথ্য নিতে নির্দেশ করে।
তিনি আরো বলেন,‘স্কুল সভাপতির সাংবিধানিক ক্ষমতাবলে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাতে আপনাদের সমস্যা কোথায়? নিয়োগের বিষয়ে আপনাদের বলতে হবে এমন তো কোনো কথা নেই।’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ইমরুল ইসলাম বলেন, ওই বিদ্যালয়ের কর্মচারী নিয়োগে কোনো অনিয়ম হয়নি। ৫ সদস্য কমিটি গঠনের মাধ্যমে নিয়োগ পক্রিয়া শেষ হয়েছে।