আলমডাঙ্গায় ৩য় ধাপের বেলগাছি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনকে ঘিরে সহিংসতা বাড়ছে। কয়েক দিনের দফায় দফায় নির্বাচন কেন্দ্রীক সহিংসতায় দুই সতন্ত্র প্রার্থীর ৫ জন আহত হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সতন্ত্র প্রার্থী মাহমুদুল হাসান চঞ্চলের ৪ কর্মীকে পিটিয়ে গুরুত্বর জখম করেছে। এঘটনায় এলাকাবাসী ৪ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ১ জনকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে রেফার করে। এ নির্বাচনি সহিংসতায় সজিব নামের এক যুবক আটক করে পুলিশ।
নির্বাচনি সহিংসতার কারণে সেন্টু রহমান বাদি হয়ে আলমডাঙ্গা থানায় ১১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৭/৮ জনের নামের মামলা দায়ের করেছে। এলাকাসূত্রে জানাযায়, আসন্ন আলমডাঙ্গা উপজেলার ১৩ টি ইউনিয়ন পরিষদ ( ইউপি) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামি ২৮ শে নভেম্বর। এ নির্বাচনে বেলগাছি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে বেপরোয়া হয়ে উঠছে সহিংসতার। গত কয়েক দিনের দফায় দফায় হট্টগোলকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ।
এরই সূত্র ধরে গত ১৮ নভেম্বর বৃহস্পতিবার রাতে সতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আমিরুল ইসলাম মন্টু ও মাহমুদুল হাসান চঞ্চলের দুই প্রার্থী সমর্থকদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা সৃষ্টি হয়। এতে সৃষ্টি হয় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের। এতে চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহমুদুল হাসান চঞ্চলের ৪ জন কর্মী গুরুত্বর আহত হয়।
আহত ব্যাক্তিরা হলো- বোমা কালাম ওরফে কালাম, কালামের ভাই সেন্টু, বকুলের ছেলে প্লাবন, রবিউলের ছেলে আশরাফুল, সাইফুল্লাহ। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ছুটে যায় কালামের মা, কাশেম, কালামের মেয়ে পূর্ণিমাও আহত হন। গুরুত্বর আহতদের উদ্ধার করে হারদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। আশরাফুলের অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে তাকে বৃহস্পতিবার কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
চেয়ারম্যান প্রার্থী আমিরুল ইসলাম মন্টু জানান, বোমা কালাম তার প্রতিবেশিদের সাথে জমি কেন্দ্রীক ঝামেলা। যা সৃষ্টি হয়েছে সংঘর্ষের। এ ঘটনাটি মোটেও নির্বাচন কেন্দ্রীক নয়। বরং তাদের প্রতিবেশিদের ঝামেলাকে ইস্যু করে রাজনৈতিক নির্বাচনের মাঠে অস্থিরতা বিরাজের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এ ঘটনাকে নির্বাচনি ইস্যু তৈরির কোন সুযোগ নেই।
এদিকে সতন্ত্র প্রার্থী মাহমুদুল হাসান চঞ্চল দাবি করে বলেন, পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে সতন্ত্র প্রার্থী আমিরুল ইসলাম মন্টুর নেতৃত্বে তার কর্মীদের উপর হামলা করানো হয়েছে। নির্বাচনের মাঠে অস্থিরতা সৃষ্টির লক্ষে বিভিন্ন সময় আমার কর্মীদের উপর হামলা-হুমকির সম্মূখিন হতে হয়। বোমা কালামকে পুঁজি করে বিভিন্ন দোষের সম্মূখিন করে। ইতো পূর্বে ৩ বার তাকে ব্যবহার করে বোমা কালাম তৈরি করে আজ সমাজে নিজেকে সভ্য হিসাবে পরিচিতি করতে চায়।
সূত্র জানাযায়, আলমডাঙ্গার বেলগাছি গ্রামের চিহ্নিত সন্ত্রাসী বোমা কালাম। তিনি চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী। খাস জমি দখল করে অফিস তৈরি করেছে। যা ওই এলাকায় বসবাসরত বাসিন্দাদের দুর্ভোগের অন্যতম কারণ।
অফিসের মধ্যে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি টাঙিয়ে চলে নেশার আড্ডা। বিভিন্ন সময় নেশার দ্রব্যসহ পুলিশের নিকট আটক হয় বোমা কালাম। অন্যত্র অঞ্চল থেকে অপরিচিত মানুষ এসে অফিসে উচ্চস্বরে গানের সাথে নেশার আড্ডা জমায়। এরই কারণে এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত। প্রতিবেশি জাফরের মা ক্যান্সারের রোগী। পাশে আরেক যুবক ঢাকায় রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। তিনি পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হন।
এখন বাড়িতে চিকিৎসাধীন। কালামের অফিসে উচ্চস্বরে গান বাজানোয় তারও প্রচন্ড মাথায় যন্ত্রণা হয়। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাফরদের সাথে কালামের গোলযোগ হলে প্রতিবেশীরা সকলে মিলে জাফরের পাশে দাঁড়িয়ে যায়।
এতে দুই পক্ষে রুপ নেয় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে। এতে বোমা কালামের ভাই সহ ৫ জন গুরুত্বর আহত হয়। এ ঘটনায় আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনে। সহিংসতার ঘটনায় সজিব নামের ১ যুবকে আটক করে পুলিশ। এ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনায় সেন্টু রহমান বাদি হয়ে আলমডাঙ্গা থানায় মামলা দায়ের করেন।