আলমডাঙ্গার সাব-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে দলিল গ্রহীতা ও দাতাদের জিম্মি করে দলিল প্রতি মোটা অংকের উৎকোচ নেয়াসহ নানা দুর্নীতি অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। খাজনা খারিজসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সঠিক থাকার পরও দলিল প্রতি মোটা অংকের উৎকোচ না দিলে সাব-রেজিস্ট্রার দলিল স্বাক্ষর করছেন না বলে খোদ দাতা গ্রহীতারা অভিযোগ করেছেন।
এ নিয়ে অফিস চত্বরে হর-হামেশা উচ্চবাচ্য ও হট্টোগোলের ঘটনা ঘটছে। জমির ত্রুটিপূর্ণ কাগজের জন্য মোটা অঙ্কের উৎকোচ। এ অবস্থায় যে সকল গ্রহীতা উৎকোচ দিতে অনিচ্ছুক তারা দিনের পর দিন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। আর যারা বাধ্য হয়ে উৎকোচ দিচ্ছেন তারা সীমাহীন ক্ষতির শিকার হচ্ছেন।
গত বুধবার ২৯ শে মে সরেজমিনে সাব- রেজিস্ট্রার অফিসে গিয়ে দেখা যায়, দাতা গ্রহীতাদের মধ্যে যারা সাব-রেজিস্ট্রার কর্তৃক দলিল প্রতি নির্ধারিত উৎকোচ জমা দিচ্ছেন তাদের দলিলে বিশেষ চিহ্ন দিয়ে এজলাসে দাখিল করা হচ্ছে। আর যারা উৎকোচ দিচ্ছেন না তাদের কাগজপত্রে বিভিন্ন ত্রুটি দেখিয়ে ফেরত দেয়া হচ্ছে।
সাবরেজিষ্ট্রারের লাগামহীন দুর্নীতির মধ্যে পৈত্রিক সম্পত্তি ওয়ারিশ সূত্রে জমি বিক্রি করলে দলিল প্রতি চার হাজার টাকা দিতে হয়। এই টাকা সংগ্রহ করেন সাবরেজিষ্ট্রি অফিসের সাবেক দলিল লেখক সমিতির ক্যাশিয়ার রবিউল হক ঝন্টু। এছাড়া ডিসিআর না থাকলেও দিতে হয় আরোও তিন হাজার টাকা। রেকর্ডীয় বসতবাড়ির জমি বিক্রি অথবা কিনতে গেলে গ্রাহকের গলার কাঁটায় পরিণত হয়। রেকর্ডীয় জমি রেজিস্ট্রির নামে বিভিন্ন অজুহাতে সাবরেজিষ্ট্রার ১০ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থের মাধ্যমে জমি সম্পাদনা করেন।
প্রতি বুধ ও বৃহস্পতিবার দুদিন চুয়াডাঙ্গা সদর সাবরেজিষ্ট্রার অফিসে কর্মরত জর্ডান নামের এক কর্মচারীকে সাথে নিয়ে আসেন। এসব অবৈধ টাকা তাঁর মাধ্যমে সংগ্রহ করেন সাবরেজিষ্ট্রার গোলাম মর্তুজা। এছাড়া হায়ার ভেলুর নামের লাখ প্রতি ৫০০ টাকা নেন আলমডাঙ্গা সাবরেজিস্ট্রি অফিসের ফাতেহা। রশিদ বিহীন দাখিলা বাবদ ৮০০ টাকা ও হেবা নামা দলিলে ১ হাজার ৮ টাকা দাখিলা বাবদ নেন। এসব অপকর্ম খোদ উপজেলা চত্বর প্রাঙ্গণে চললেও দেখার কেউ নেই। হতাশাগ্রস্থ হয়ে ফিরছে অনেক জমি ক্রেতা-বিক্রেতারা। এতে সপ্তাহের দুদিন প্রায় ১৫/২০ লাখ টাকা অবৈধভাবে সংগ্রহ করছেন সাবরেজিষ্ট্রার গোলাম মর্তুজা।
এ বিষয়ে সাবরেজিষ্ট্রারের সহকারী জর্ডান ও দলিল লেখক ঝন্টুর নিকট যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, সাবরেজিষ্ট্রার গোলাম মর্তুজা তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বার কাউকে দেয় না। এইজন্য সাবরেজিষ্ট্রারের সাথে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।