আলমডাঙ্গার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হাদি জিয়া উদ্দিন আহমেদ বাড়ি তৈরির নিয়মনীতি উপেক্ষা করে আলমডাঙ্গা শহরের স্টেশন সড়কে বাড়ি নির্মাণ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বাড়ি নির্মানের ক্ষেত্রে যেসব বিধিমালা মেনে চলা উচিত তা তিনি মানছেন না। এ ব্যাপারে প্রবাসী এক ভুক্তভোগি থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
ভুক্তভোগি প্রকৌশলী রুহুল কুদ্দুস দুবাই প্রবাসী। গত ১৩ মে তার ভাই সাঈদ মোহাম্মদ হিরন আলমডাঙ্গা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ওই অভিযোগে বলা হয়, আলমডাঙ্গা স্টেশন রোডে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসাসংলগ্ন জমিতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হাদি জিয়া উদ্দিন আহমেদ সাত তলা ভবন নির্মাণ করছেন। তার নির্মাণাধীন ভবনের পাশেই ভুক্তভোগির জমি। এই জমিতে একটি গ্রোসারী স্টোর রয়েছে। ডা. জিয়া উদ্দিন আহমেদ আইন কানুন না মেনে ভবন নির্মাণ শুরু করলে প্রবাসীর সীমানা প্রাচীর সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ে। তার কোনো ক্ষতিপূরণ দেননি ডা. হাদি জিয়া উদ্দিন আহমেদ। এছাড়া ভবন নির্মাণ চলাকালে ইট কিংবা রড পড়ে যাতে কোনো ক্ষয়ক্ষতি না হয় সেজন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখার নিয়ম থাকলেও ডা. জিয়া উদ্দিন আহমেদ তা রাখেননি। নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় প্রায়ই ওপর থেকে রড, বাস প্রভৃতি পড়ে নিচের ভাড়াটিয়ারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। গত ১৩ মে একটি বাঁশ দোকানের টিনের চাল ভেদ করে দোকানের ভেতরে ঢুকে পড়ে। এতে দোকানের এক কর্মচারি আহত হন।
থানায় অভিযোগকারি সাইদ মোহাম্মদ হিরন বলেন, আমরা থানায় অভিযোগ দিয়েছি। ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, গত ২৮ মার্চ আলমডাঙ্গা পৌরসভা মেয়র বরবার এ বিষয়ে আবেদন করি। পৌরসভা কর্তৃপক্ষ কোন কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়ার বিবাদী আরো অনিয়ম করে ভবন নির্মাণ অব্যাহত রাখেন।
ভুক্তভোগী রুহুল কুদ্দুস গত ২৪মে ’আমার আলমডাঙ্গা’ গ্রুপের ফেসবুক পেজে বলেন, আমি দেশের মাটি ছেড়ে বিদেশে অনেক কষ্ট করে অর্থ আয় করি। সেই কষ্টার্জিত অর্থ দিয়ে একটি জমি কিনি। আমার জমির পাশে ডা. হাদি নির্মাণ বিধিমালা না মেনে ভবন নির্মাণ করায় আমার জমির সীমানা ঘেষে মাটি কেটে প্রাচীর ভেঙ্গে ফেলে। আমার সম্পত্তির অনেক ক্ষতি হয়েছে। আমার প্রতিষ্ঠিত দোকানের কর্মচারিরা আতঙ্কে কাজ করতে পারছে না। তিনি আরও বলেন, আমি প্রবাস থেকে রেমিটেন্স পাঠাই, সেই রেমিটেন্স কেবল আমারই সম্পদ সৃষ্টি করে না, দেশ ও সমগ্র জনগণের কাজে লাগে। তিনি তার সম্পত্তির সুরক্ষা দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি বিনীত আবেদন জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে ডা. হাদি জিয়া উদ্দিন আহমেদ বলেন, পৌরসভার নিয়ম মেনেই বাড়ি তৈরি করা হচ্ছে। ঝড়ে ওপর থেকে একটি বাঁশ টিনের চালে পড়ে ক্ষতি হয়েছিল। সেজন্য নতুন টিন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে আলমডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র হাসান কাদির গনু বলেন, ডা. হাদি জিয়া উদ্দিন আহমেদ বাড়ির কাজ শুরু করার আগে রুহুল কুদ্দুসের কাছ থেকে আমরা মৌখিক অভিযোগ পেয়েছিলাম। সেই অনুযায়ী উভয় পক্ষকে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছিল। তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করার পরই ডা. হাদি সাহেব কাজ শুরু করেছেন। উভয় পক্ষের গন্যমান্য ব্যক্তিরা এ ব্যাপারে আলোচনা করছেন বলে জানি।