আলমডাঙ্গা পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে গ্রন্থগারিক (লাইব্রেরিয়ান) শিক্ষক কুলছুম খাতুনের বিরুদ্ধে ভুয়া সনদে চাকুরির অভিযোগ উঠেছে। তিনি পাবনা জেলার সাথিয়া উপজেলার বাসিন্দা। গত ১৮ অক্টোবর ২০১০ সালে তিনি ৮ লাখ টাকা বিনিময়ে আলমডাঙ্গা পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। ২০১৯ সালের ২৪ শে জানুয়ারি বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কতৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) যাচাইয়ে ওই গ্রন্থগারিক (লাইব্রেরিয়ান)’র শিক্ষিকার সনদ জালিয়াতি ধরা পড়ে। তবে অভিযুক্ত লাইব্রেরিয়ানের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি কতৃপক্ষ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আলমডাঙ্গা পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে গ্রন্থাগারিক (লাইব্রেরিয়ান) শিক্ষক পদে কুলছুম খাতুন ২০১০ সালের ৫ অক্টোবর নিয়োগ লাভ করেন। একই বছরের ১৮ অক্টোবর তিনি স্কুলে যোগদান করেন। পরবর্তীতে ২০১০ সালেই তিনি এমপিওভুক্ত হন।
কিন্তু অবশেষে এটিআরসিএর জালে আটকে যায় ভুয়া সনদধারী ওই শিক্ষিকা। সরকারি সার্কুলার অনুযায়ী নিবন্ধন সনদ যাচাইয়ের জন্য প্রেরণ করা হলে এনটিআরএ যাচাই প্রতিবেদনে ওই শিক্ষিকার নিবন্ধন সদনটি জাল ও ভুয়া বলে এনটিআরসি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। তার এইচএসসি ভুয়া সনদে উল্লেখ করা হয়েছে কুলছুম খাতুন পিতা কাইউম উদ্দীন খাঁন। এছাড়াও সনদে সাথিয়া ডিগ্রি কলেজ ব্যবহার করা হয়। যার রোল নম্বর ১২১৯৯৪ ও রেজিষ্টেশন নম্বর ৮৫৬৫৭৬/১৯৯৫-৯৬। উচ্চমাধ্যমিক ওয়েব-সাইটে যাচাইয়ের চেস্টা করা হলে ভুল নম্বর বলে ব্যর্থ রিপোর্ট দেয়।
এদিকে, জাল সনদে চাকরিরত গ্রন্থাগারিক শিক্ষিকা কুলছুম খাতুন এমপিওভুক্তির পর দীর্ঘ ১২ বছর অবৈধপন্থায় সরকারি বেতন-ভাতা ভোগ করছেন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ভুয়া ওই শিক্ষিকা এখনো স্বপদে রয়েছেন বহাল-তবিয়তে। এছাড়াও তিনি গত ২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ৬ মাসের মাতৃত্ব কালীন ছুটি নেন। সে গর্ভবতী না হয়েও ভুয়া মাতৃত্বকালীন ছুটি নিয়ে সরকারি সুযোগসুবিধা ভোগ করেন।
নাম না প্রকাশ শর্তে স্কুলের অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকা দাবি করেন, বিগত দিন কুলছুম খাতুন প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামানের নিকটতম আত্নীয় হবার সুবাদে নিয়োগ পায়। বিগত শিক্ষিকা কুলছুম নিজেকে সাবেক জামায়াতের আমির ও যুদ্ধাপরাধী মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামী মতিউর রহমান নিজামীর ভাগ্নে পরিচয় দেয়। প্রধান শিক্ষকের ঘনিষ্ঠ হবার কারণে সহকারি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সাথে বিরুপ আচরণ করে প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান।
আলমডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মনিরুজ্জামান জানান, বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত। তবে এনটিআরসির লিখিত নির্দেশনা না আসায় এখনো ভুয়া সনদধারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। নির্দেশনা হাতে পেলে সে মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান। অভিযুক্ত গ্রন্থাগারিক শিক্ষিকা কুলছুম খাতুনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সম্ভব হয়নি।
এবিষয়ে আলমডাঙ্গা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ফজলুল হক জানান, কিছুদিন পূর্বে আমি দায়িত্ব গ্রহন করেছি। ভুয়া সনদে নিয়োগের বিষয়ে জানি না। এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলেই তদন্তের মাধ্যমে আসল রহস্য জানা সম্ভব হবে।