গ্লোবাল ওয়ার্মিং এবং জলবায়ু পরিবর্তনের সম্ভাব্য বিপর্যয়কর প্রভাব ঠেকাতে বৈদ্যুতিক যানবাহন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বিশ্বের অনেক উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে পরিবেশবান্ধব ইলেকট্রিক গাড়ি ব্যবহার ক্রমেই জনপ্রিয় হচ্ছে।
এ ছাড়া একদিকে জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়া, অন্যদিকে আধুনিকতা; সব মিলিয়ে বৈদ্যুতিক যানের চাহিদা বেড়েই চলছে। তার বাস্তব চিত্র ধরা দিল এবারের পরিসংখ্যানে। বেশ কয়েক বছর থেকেই ইলেকট্রিক যানের প্রতি ঝুঁকছে পুরো বিশ্ব।
ইভি ভলিউমের এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে বিশ্বজুড়ে বিদ্যুৎচালিত গাড়ি বিক্রি হয়েছে ৬.৫ মিলিয়নেরও বেশি, যা কেবল ডিসেম্বরেই এ জাতীয় গাড়ি বিক্রির সংখ্যা ছিল ৯ লাখ ৭ হাজার ইউনিট।
বিশ্বব্যাপী মোটরগাড়ি শিল্পের গতিবিধির ওপর নজর রাখেন তারাই বলছেন, সেই সময় প্রায় এসে গেছে, যখন ইলেকট্রিক গাড়ির বিক্রি দ্রুতগতিতে পেট্রল আর ডিজেলচালিত গাড়ির বিক্রি ছাড়িয়ে যাবে। অন্তত মোটরগাড়ি নির্মাতারা তাই মনে করছেন। ২০২১ সাল যেতে না যেতেই সেই ভবিষ্যদ্বাণী সত্যি হতে চলেছে। টেসলার মডেল তিন গাড়িই বিক্রি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। টেসলার এ বৈদ্যুতিক গাড়িটি যে বাজিমাত করবে তা আগেই বলেছিলেন প্রযুক্তি গবেষকরা।
মডেলভিত্তিক বিক্রির ক্ষেত্রে ২০২১-এ বিশ্বে শীর্ষস্থানে রয়েছে টেসলা মডেল ৩, পরবর্তী দুটি জনপ্রিয় গাড়ি হলো উলিং-এর হং গুয়ান মিনি ইভি এবং টেসলা মডেল ওয়াই। চীনের বাজারেই সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে বৈদ্যুতিক গাড়ি। এর পরের অবস্থানে রয়েছে নরওয়ে ও ইউরোপের অন্যান্য দেশ।
ইভি ভলিউমের সেই বিপোর্টে বলা হয়, ২০২১ সালের নভেম্বরের তুলনায় ডিসেম্বরে এ জাতীয় গাড়ির বিক্রি বেড়েছে। ২০২১ সালের নভেম্বরে ৭ লাখ ২০ হাজারের বেশি ইলেকট্রিক যানবাহন বিক্রি হয়েছিল পুরো বিশ্বে।
অন্যদিকে ডিসেম্বরে বিক্রির শতকরা হার ছিল ২০২০ সালে বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রির ৫৯ শতাংশ বেশি। ২০২০ সালে বিশ্বে ৫ লাখ ৭১ হাজার বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রি হয়েছিল। রিপোর্টে আরও দাবি করা হয়েছে, ২০২১ সালে বিশ্বে প্রায় ৬.৫ মিলিয়ন নতুন প্যাসেঞ্জার প্লাগ-ইন ইলেকট্রিক গাড়ি নিবন্ধিত হয়েছে, যা ২০২০ সালের তুলনায় প্রায় ১০৮ শতাংশ বেশি। ২০২০ সালে নিবন্ধিত হয়েছিল ৩.১ মিলিয়ন গাড়ি।
বিশ্বজুড়ে বৈদ্যুতিক গাড়ির বিক্রি বৃদ্ধির নেপথ্যে বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কারণ রয়েছে। প্রথমত, আন্তর্জাতিক বাজারে জীবাশ্ম জ্বালানির দাম আকাশছোঁয়া হয়েছে, পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের সরকার কঠোর নির্গমন বিধি চালু করেছে। বিশেষজ্ঞরা দাবি করছেন, ইলেকট্রিক গাড়িই যানবাহন শিল্প অর্থাৎ অটোমোবাইল ইন্ডাস্ট্রির ভবিষ্যৎ।