সাকিব আল হাসান। ২০০৬ সালে জিম্বাবুয়ের হারারেতে বাংলাদেশের ক্রিকেটে অভিষেক হয় তার। এর পর থেকেই দ্যুতি ছড়িয়ে যাচ্ছেন টাইগার এই অলরাউন্ডার। এ সময় দেশের ক্রিকেটে কিংবা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বল হাতে কিংবা ব্যাটিংয়ের মাধ্যমে কোনো না কোনো রেকর্ড নিজের নামে লিখে নেন। তাই ভক্তদের কাছে তিনি ‘রেকর্ড আল হাসান’ নামেও বেশ পরিচিত। টাইগার এই বাঁহাতি স্পিন অলরাউন্ডার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থার (আইসিসি) তালিকায় নাম লিখিয়ে ফেলেছেন, সম্প্রতি যা প্রকাশ্যে এনেছে সংস্থাটি। মূলত আসন্ন বিশ্বকাপের ১৩তম আসর মাঠে গড়াবে বৃহস্পতিবার থেকে। এর আগে গতকাল এবারের আসরের সেরা পাঁচ বোলারের তালিকা প্রকাশ করেছে আইসিসি, যেখানে বিশ্বকাপে এ পর্যন্ত ২৯ ম্যাচে ১৪৩৩ রান দিয়ে ৩৪ উইকেট শিকার করে নিউজিল্যান্ডের টিম সাউদির সঙ্গে যৌথ অবস্থানে রয়েছেন তৃতীয় স্থানে। এছাড়া এই তালিকার চূড়ায় রয়েছে অস্ট্রেলিয়ান পেসার মিচেল স্টার্ক।
একনজরে আসরের সেরা পাঁচ বোলার
মিচেল স্টার্ক (৪৯ উইকেট)
২০১০ সালে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে বাঁহাতি পেস বোলার মিচেল স্টার্কের অভিষেক হলো। নিজের প্রথম বিশ্বকাপ খেলেছেন ২০১৫ সালে। এছাড়া অজিদের হয়ে সবশেষ বিশ্বকাপেও ছিলেন তিনি। আর দুই বিশ্বকাপে মাত্র ১৮ ম্যাচ খেলেই নিয়েছেন ৪৯ উইকেট। এখন পর্যন্ত খেলা ক্রিকেটারদের মধ্যে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ উইকেট তার। ঘরের মাঠে ২০১৫ বিশ্বকাপে ২২ উইকেট নিয়ে ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট হয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার এই বাঁহাতি পেসার। আর ২৭ উইকেট নিয়ে গত বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি ছিলেন তিনি। এছাড়া এবারের আসরে প্রস্তুতি ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করে তো এবারের আসরেও সবাইকে প্রস্তুত হওয়ার আবাস দিয়েই দিয়েছেন।
ট্রেন্ট বোল্ট (৩৯ উইকেট)
২০১২ সালে নিউজিল্যান্ডের হয়ে অভিষেক। এরপর ২০১৫ ও ২০১৯ সালে বিশ্বকাপে মোট ১৯ ম্যাচে ৩৯ উইকেট নিয়ে এই তালিকায় ২ নম্বরে আছেন ট্রেন্ট বোল্ট। কিউই বোলারদের মধ্যে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ উইকেটও তার, যার মধ্যে নিজের প্রথম বিশ্বকাপে স্টার্কের সঙ্গে ২২ উইকেট নিয়ে যৌথ সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি ছিলেন বোল্ট। গত বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে করেছেন হ্যাটট্রিক।
সাকিব আল হাসান (৩৪ উইকেট)
এই তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে রয়েছেন বাংলাদেশের সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। টাইগার এই অলরাউন্ডারের সেরা সময় কেটেছে ২০১৯ বিশ্বকাপে। ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হওয়া সেই বিশ্বকাপে ব্যাটে-বলে অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করেছেন তিনি। বোলিংয়ে নিয়েছেন ১১ উইকেট, যার মধ্যে আফগানিস্তানের বিপক্ষে নিয়েছেন ৫ উইকেট। প্রথম বাংলাদেশি বোলার হিসেবে এক ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েন তিনি। ২০১১ ও ২০১৫—এ দুই বিশ্বকাপে আটটি করে উইকেট নিয়েছেন সাকিব। আর ২০০৭ বিশ্বকাপে নিয়েছেন ৭ উইকেট। এটি তার পঞ্চম বিশ্বকাপ।
টিম সাউদি (৩৪ উইকেট)
সাকিবের সঙ্গে সমান উইকেট শিকার করে তালিকার তৃতীয় স্থানে যৌথভাবে রয়েছেন টিম সাউদি। তবে সাউদি আর সাকিবের প্রতিযোগিতা শুধু এখানে নয়, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতেও চলছে। উইকেট নিয়ে কখনো এগিয়ে যান সাকিব, আবার তাকে টপকে শীর্ষে উঠে যান সাউদি। ২০১৫ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৩ রান দিয়ে নিয়েছেন ৭ উইকেট, যা বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের বোলারদের মধ্যে সেরা বোলিং। ২০১১ সালে নিজের প্রথম বিশ্বকাপ খেলেছিলেন কিউই এই ডানহাতি পেস বোলার।
মোহাম্মদ শামি (৩১ উইকেট)
এদিকে এবারের আসরে সেরা পাঁচ বোলারের মধ্যে রয়েছেন ভারতীয় ডানহাতি পেসার মোহাম্মদ শামি। এছাড়া ভারতের বোলারদের মধ্যে বিশ্বকাপে যৌথভাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট মোহাম্মদ শামির। আর এখন পর্যন্ত খেলা ভারতীয় বোলারদের মধ্যে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি তিনি। দেশটির হয়ে ২০১৩ সালে অভিষেক হওয়ার পর এখন পর্যন্ত দলের হয়ে খেলেছেন দুটি বিশ্বকাপ (২০১৫-২০১৯)। এ সময় ১১ ম্যাচে হাত ঘুরিয়ে ৪৮৭ রানের খরচায় উইকেট নিয়েছেন ৩১টি। এছাড়া সবশেষ বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেছেন এই পেসার।