কুষ্টিয়ায় ছাত্র-জনতার গণ আন্দোলন চলাকালে ৫ আগস্ট আশরাফুল ইসলাম ও সুরুজ আলী বাবু গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। ময়নাতদন্ত ছাড়াই তাদের দাফন করা হয়। পরে এ হত্যার ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা করা হলে মরেদহ ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।
আজ বুধবার (৯ অক্টোবর) মরদেহ উত্তোলনে গেলে দুই পরিবারই আপত্তি জানায়। এতে কবর থেকে মরদেহ উত্তোলন না করেই ফিরে যান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ ও সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আদালতের নির্দেশে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত বাবু ও আশরাফুলের মরদেহ উত্তোলনের জন্য কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হাটশ হরিপুর কেন্দ্রীয় কবরস্থান যায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, পুলিশ সদস্যরা সহ সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু মরদেহ উত্তোলনে নিহত দুই পরিবারই আপত্তি জানায়। এ অবস্থায় কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করেও মরদেহ উত্তোলন না করেই ফিরে যান জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
নিহত দুই পরিবারের সদস্যরা জানান, বাবু ও আশরাফুল নিহতের দুই মাস পার হয়ে গেছে। তাই তারা লাশ তুলতে দেবেন না।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলন চলাকালে ৫ আগস্ট বিকাল ৩টা ৫০ মিনিটের দিকে কুষ্টিয়া শহরের থানাপাড়ার আড়ংয়ের সামনে রাস্তার উপর আন্দোলনকারী বাবুকে এলোপাথাড়িভাবে মারপিট ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় রাইসুল হক বাদী হয়ে ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়। অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ৪০/৫০ জনকে। নিহত বাবু কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হাটশ হরিপুর গ্রামের শালদহ এলাকার মৃত নওশের আলীর ছেলে। বাবু পেশায় স্বর্ণকার ছিলেন।
দায়িত্বরত কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাহিদ হাসান বলেন, মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আদালতের নির্দেশে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত বাবু ও আশরাফুলের মরদেহ উত্তোলনের জন্য কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হাটশ হরিপুর কেন্দ্রীয় কবরস্থানে এসেছিলাম। নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে বাধা দেওয়ায় মরদেহ উত্তোলন করা সম্ভব হয়নি।
ছাত্র-জনতা আন্দোলন চলাকালে ৫ আগস্ট দুপুর দেড়টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের বকচত্বরের উত্তর দিকে শতাব্দী ভবনের সামনে আশরাফুল ইসলামকে তলপেটে, বাম পায়ের উরুসহ শরীরের বিভিন্নস্থানে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ২০ আগস্ট নিহত আশরাফুল ইসলামের স্ত্রী লাবণী আক্তার ইতি কুষ্টিয়া মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
এ মামলায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকর্মী সহ মোট ২৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ৫০-৬০ জনকে। নিহত আশরাফুল ইসলামকে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার শালদহ গ্রামের কফিল উদ্দিনের ছেলে। তিনি রঙ মিস্ত্রির কাজ করতেন।