ইরান সরকার যে দাবি করেছে, দেশটিতে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা তার চেয়েও তিনগুণ বেশি। বিবিসি পারসিয়ান সার্ভিসের এক অনুসন্ধানে এমন তথ্য পাওয়ার দাবি করা হয়েছে।
সরকারি উপাত্ত বলছে, ইরানে গত ২৫ জুলাই পর্যন্ত কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত ৪২ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে ১৪ হাজার ৪০৫ জন মৃত্যুর দাবি করেছে।
আর আক্রান্তের সংখ্যাও সরকারি হিসাবের দ্বিগুণ হবে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। তেহরানের হিসাবে, দুই লাখ ৭৮ হাজার ৮২৭ মানুষ মহামারীতে আক্রান্ত হয়েছেন। কিন্তু বিবিসির অনুসন্ধান বলছে, এই সংখ্যা চার লাখ ৫১ হাজার ২৪ জন।
একটি অজ্ঞাত সূত্রের পাঠানো নথি অনুসারে বিবিসি এই প্রতিবেদন তৈরির দাবি করেছে।
ইরানের বাইরে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত দেশগুলোর একটি ইরান। নথি অনুযায়ী, ইরানে কোভিড-১৯ এ প্রথম মৃত্যু রেকর্ড করা হয় ২২ জানুয়ারি। অথচ শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটি তাদের ভূখণ্ডের ভেতর প্রথম রোগী শনাক্তের কথা প্রকাশ করেছিল তার প্রায় একমাস পর।
দেশটিতে প্রাদুর্ভাব শুরুর পর থেকেই আক্রান্ত ও মৃত্যুর সরকারি হিসাব নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে আসছিলেন অনেক পর্যবেক্ষক।
তারা বলে আসছিলেন, ইরানের জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে যেসব তথ্য পাওয়া যায়, তার মধ্যে মিল না থাকার কারণেই তাদের সন্দেহ তৈরি হয়েছে।
বিস্তৃত আকারে পরীক্ষা না করতে পারায় বিশ্বের প্রায় সব দেশেই কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত-মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা সরকারি হিসাবের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি হবে।
কিন্তু ইরান যে ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের মৃত্যুর সংখ্যা ধামাচাপা দিয়েছে; তা হাতে আসা নথিগুলো থেকে স্পষ্ট হয়েছে বলে বিবিসির দাবি।
নথিগুলোতে ইরানের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর নাম, বয়স, জেন্ডার, উপসর্গ, হাসপাতালে থাকার সময় ও রোগীর পরিস্থিতির তথ্য দেয়া আছে।
মহামারী নিয়ে ইরান যে রাজনৈতিক খেলা খেলছে তা বন্ধে সত্যের উপর আলোকপাত করতেই বিবিসিকে এ নথি পাঠানো হয়েছে বলে ইমেইলে বলা হয়েছে।
বিবিসি লিখেছে, যিনি ওই নথি পাঠিয়েছেন, তিনি ইরানের কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠানের কেউ কি না, কিংবা তিনি কীভাবে এসব নথি জোগাড় করেছেন, সে বিষয়ে তারা নিশ্চিত হতে পারেনি।
সূত্র-যুগান্তর