কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে নয়ন কুমার সরকার (২২) নামের এক কলেজছাত্রকে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদে মরদেহ নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার দুপুরে উপজেলার নন্দনালপুর ইউনিয়নের নন্দনালপুর বাজার এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলে নিহতের স্বজন, প্রতিবেশী ও শত শত গ্রামবাসী উপস্থিত ছিলেন।
মিছিল শেষে ইউনিয়নের হাবাসপুর বহলার চরে লাশটি মাটিচাপা দেওয়া হয়। নিহত যুবক ইউনিয়নের নন্দনালপুর গ্রামের যগেশ কুমার সরকারের ছেলে ও আলাউদ্দিন আহমেদ ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র।
মিছিলে বিক্ষোভকারীরা বলেন, ‘কলেজছাত্র নয়নকে কৌশলে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা ঘাতকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
এদিকে কলেজছাত্র নয়ন কুমার সরকারকে হত্যার অভিযোগে মো. আলম (৩৮) নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার রাতে জেলার খোকসা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আজ দুপুরে আদালতের মাধ্যমে আসামিকে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। আলম নন্দনালপুর ইউনিয়নের বাঁশআরা গ্রামের মো. মুন্সীর ছেলে।
পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, নন্দনালপুর ইউনিয়নের বাঁশআড়া গ্রামের করিম আলীর মেয়ের সঙ্গে কলেজছাত্র নয়ন কুমার সরকারের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পারিবারিকভাবে নয়নকে শাসন করা হয়েছিল। এ নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে বিরোধ চলছিল।
এরই মধ্যে গত শনিবার মধ্যরাত থেকে নিখোঁজ ছিলেন নয়ন। নিখোঁজের পরদিন গতকাল রোববার ভোররাতে নন্দনালপুর ইউনিয়নের সোন্দাহ নতুনপাড়া মাঠের মধ্যে সড়কের পাশ থেকে নয়নকে অবস্থায় পাওয়া যায়। খবর পেয়ে স্বজনেরা উদ্ধার করে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠান। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে পাঠান। পরে ওই দিন দুপুরে ঢাকা যাওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। পরে মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায় পুলিশ।
এ ঘটনায় কলেজছাত্রের বাবা হত্যার অভিযোগে গতকাল রোববার রাতে কুমারখালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় প্রেমিকার চাচাসহ ৮ জনকে আসামি করা হয়।
নিহতের বাবা যগেশ কুমার সরকার বলেন, ‘করিমের মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিল নয়নের। এ নিয়ে করিমের পরিবার হুমকি দিয়ে আসছিল। প্রেমের জেরেই ছেলেকে আসামিরা ডেকে নিয়ে হাতুড়ি, লোহার রডসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে। থানায় মামলা করেছি। উপযুক্ত বিচার চাই আমি।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, প্রেম সংক্রান্ত ঘটনার জেরে হত্যার অভিযোগে থানায় মামলা করেছেন নিহতের বাবা। এরই মধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।