বিপুল পরিমাণ চিনি আত্মসাতের ঘটনায় কুষ্টিয়া সুগার মিলের এক কর্মকর্তাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) কুষ্টিয়া সদর থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়।
কুষ্টিয়া সুগার মিলের কর্মকর্তাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা
কুষ্টিয়া দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত কার্যালয়ের উপ সহকারী পরিচালক নীল কমল পাল মামলাটি করেন। এ মামলায় কুষ্টিয়া সুগার মিলের উপ-ব্যবস্থাপক (ভান্ডার) আল আমিন, গুদামরক্ষক ফরিদুল হক ও শ্রমিক সরদার বশির উদ্দিনকে আসামি করা হয়েছে।
জানা গেছে, গত মৌসুমে উৎপাদন বন্ধ থাকা কুষ্টিয়া সুগার মিলের গুদামে ১১০ টনের বেশি চিনি মজুত ছিল। গত ৫ আগস্ট মিলের কর্মকর্তারা স্টক রেজিস্টারের সঙ্গে মজুত চিনির পরিমাণ মেলাতে গিয়ে দেখতে পান সেখানে প্রায় ৫২ টন চিনি কম আছে। যার বাজার মূল্য ৩৩ লাখ ২০ হাজার ১০০ টাকা। বিষয়টি নিয়ে চারদিকে তোলপাড় শুরু হলে নড়েচড়ে বসে চিনিকল প্রশাসন। এঘটনায় গঠন করা হয় একাধিক তদন্ত কমিটি। তদন্তের নামে দুর্নীতি দমন কমিশন।
দীর্ঘ তদন্তের পর কুষ্টিয়া সুগার মিলের উপ-ব্যবস্থাপক (ভান্ডার) আল আমিন, গুদামরক্ষক ফরিদুল হক ও শ্রমিক সরদার বশির উদ্দিন এঘটনায় জড়িত থাকার প্রমাণ পায়।
পরে বৃহস্পতিবার এ ঘটনায় চিনি কর্মকর্তা নীল কমলসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলার এজাহারে বলা হয়, ওই তিন কর্মকর্তা কর্মচারিরা পরস্পর যোগসাজসে চিনিকলের ৫২ মেট্রিকটন চিনি আত্মসাত করেন।
উল্লেখ্য, লোকসানসহ নানা কারণে দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ১৫টি চিনিকলের মধ্যে কুষ্টিয়াসহ ছয়টি চিনিকলের উৎপাদন বন্ধ করে দেয় সরকার। মিলের উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ হলেও গত তিন মৌসুমের উৎপাদিত বিপুল পরিমাণ চিনি অবিক্রীত রয়ে যায়।
সূত্র জানিয়েছে, কুষ্টিয়া চিনিকলে অনিয়ম-দুর্নীতির ঘটনা এটিই নতুন নয়। দুর্নীতির দায়ে ২০২০ সালের ১৮ নভেম্বর কুষ্টিয়া চিনিকলের তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম মুর্শেদ (এমডি) সুগারমিলের সিবিএ সভাপতি ফারুক হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমানকে একযোগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
গত ১৯ বছরে কুষ্টিয়া সুগারমিলে লোকসান হয়েছে ৪২০ কোটি টাকা। ফলে শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের দৌরাত্ম্য, চরম দুর্নীতি, ব্যবস্থাপনায় ক্রুটি ও ক্রমাগত লোকসানে ২০২০-২১ অর্থবছর মিলে আখ মাড়াই ও চিনি উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।