কুষ্টিয়ায় কৃষি বিপণন আইন, বিধি এবং নীতির সংবেদনশীলতা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ শনিবার (২১ ডিসেম্বর) সকালে কুষ্টিয়া শহরের দিশা টাওয়ারের অডিটোরিয়ামে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের উদ্যোগে এবং ফিড ফিউচার পলিসি লিঙ্ক এগ্রিকালচারাল পলিসি একটিভিটি এর সহযোগিতায় এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা বাজার ও সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মোঃ সুজাত হোসেন খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মোঃ জাহিদুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আবু জাফর মোল্লা ও দেশ এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজের সত্বাধিকারী এম এ খালেক।
কর্মশালায় কৃষি বিপণন নীতি প্রণয়নের যৌক্তিকতা তুলে ধরে বলা হয় বর্তমান কৃষি বান্ধব সরকার কৃষকের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ন্যায্য মূল্য নিশ্চিতকরণে বদ্ধপরিকর। স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের কৃষি ও কৃষক উন্নয়নে অসংখ্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। অধিকাংশ উদ্যোগে কৃষি উৎপাদনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। যার ফলে কিছু উৎপাদনে আমরা আজ ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছি।
টেকসই উৎপাদনের সফলতা নির্ভর করে দক্ষ কার্যকর বিপণন ব্যবস্থার উপর। কৃষকের উৎপাদিত কৃষি পণ্যের প্রকৃত মূল্যায়ন করে কৃষিকে একটি নিশ্চিত লাভজনক বাণিজ্যিক কর্মে রুপান্তর করতে পারলেই কেবল কৃষকের প্রকৃত উন্নয়ন হবে এবং একটি দীর্ঘ মেয়াদি স্থিতিশীল অর্থনীতির নিশ্চয়তা পাওয়া যাবে। কৃষি বিপণন আইন ২০১৮ অনুযায়ী বিপণন অধিদপ্তরের গুরুত্বপূর্ণ কার্যাবলী হিসেবে কৃষি বিপণন তথ্য ব্যবস্থাপনা, কৃষি পণ্যের মূল্য নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন কৃষি পণ্যের গুণগত মান নির্ধারণ ও পরিবীক্ষণ, কৃষিভিত্তিক সংগঠন ব্যবস্থাপনা, কৃষি পণ্যের সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ ও বাস্তবায়ন, কৃষি পণ্যের মূল্য সহায়তা প্রদান, বাজার অবকাঠামো নির্মাণ, প্রক্রিয়াজাতকরণ সহায়তাসহ বিপণন সংক্রান্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আরোও অনেক দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। উক্ত আইন বিধি ও কার্যাবলী সম বাস্তবায়নে একটা কার্যকর কৃষি বিপণন নীতি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
বর্তমানে একদিকে কৃষক ন্যায্য মূল্য হতে বঞ্চিত হচ্ছে, এক শ্রেণীর ব্যবসায়ীরা অস্বাভাবিক মুনাফা করছে অন্যদিকে সাধারণ ভোক্তা অধিক মূল্যে কৃষি পণ্য ক্রয় করছে এবং বিপণন সংক্রান্ত বিভিন্ন অভিযোগ তুলছে। ফলে কৃষি বিপণন ব্যবস্থার উন্নয়নে একটি সুপরিকল্পিত বিপণন নীতি অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। প্রণীত জাতীয় কৃষি বিপণন নীতি ২০২৩ সকলের সহযোগিতায় যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করলে কৃষক অন্যতম মূল্য সহায়তা পাবে, কৃষি পণ্যের জন্য সর্বোচ্চ যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করে দেয়া যাবে, বাজার অবকাঠামো উন্নয়ন হবে, কৃষিতে নারীর ক্ষমতায়ন হবে, তরুণ-তরুণীরা কৃষি উদ্যোক্তা হয়ে উঠবে, একটি সুসংজ্ঞায়িত সাপ্লাই চেন উন্নয়ন সম্ভব হবে, কৃষি পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে, কৃষিতে নারী উদ্যোক্তা বাড়বে, গ্রাম ও শহরের অর্থনৈতিক বৈষম্য হ্রাস পাবে এবং কৃষি ব্যবসায় দায়িত্বশীলতা আসবে। সর্বোপরি কৃষি বিপণন ব্যবস্থায় গতিশীলতা আসবে এবং কৃষকের ন্যায্যমূল্য প্রদানের মাধ্যমে একটি টেকসই কৃষি বিপণন ব্যবস্থার উন্নয়ন হবে। কর্মশালায় বিভিন্ন শ্রেণীর ব্যবসায়ী, খাজানগরের চালকল মিল মালিকগণ, কৃষি সেক্টরের প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করেন।
পলিসি এক্টিভিটি টিমের সিনিয়র ম্যানেজার মো: আশিক বিল্লাহ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রেজেন্টেশন পরিবেশন করেন সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মোঃ জাহিদুল ইসলাম।